www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

৭১ এর সেক্টর ও সেক্টর কমান্ডার

১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল গঠিত হয় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার। ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীসভার বৈঠকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাতে বলা হয়ঃ

সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে সিদ্ধান্ত হল যে প্রধান সেনাপতি অফিসারদের একটি তালিকা প্রস্তুত করবেন। সেনা কমান্ডকে সমন্বিত করে কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে। বাংলাদেশ বাহিনীতে প্রশিক্ষণার্থীদের বাছাইপর্বে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।


পরবর্তীতে ১১ই জুলাই মুজিবনগরে কর্নেল আতাউল গনি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিয়োগ করা হয়। অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের  পক্ষ থেকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের সমগ্র ভূখণ্ডকে ১১টি যুদ্ধক্ষেত্র বা সেক্টরে ভাগ করা হয়। । প্রতিটি সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন একজন সেক্টর কমান্ডার।

নিচে সেক্টর নং, সেক্টর আওতা, সেক্টর কমান্ডার ও আরো কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হলো।

সর্বাধিনায়ক ও প্রধান সেনাপতি মুক্তিবাহিনী

কর্নেল মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী  


উপ প্রধান সেনাপতি ও বিমানবাহিনী প্রধান

গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার


উপ প্রধান সেনাপতি ও সেনাবাহিনী প্রধান
লে.কর্নেল আবদুর রব



মানচিত্রে ১১টি সেক্টর

১নং সেক্টর

সেক্টর কমান্ডার : মেজর জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) (এপ্রিল- জুন)


সেক্টর কমান্ডার : মেজর রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) (জুন - ডিসেম্বর)

এলাকা : চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার ফেনী মহকুমার অংশ বিশেষ (মুহুরী নদীর পূর্বপাড় পর্যন্ত)।
এই সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল পাঁচটি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ২১০০ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ২০,০০০।





২নং সেক্টর

সেক্টর কমান্ডার মেজর এ.টি.এম হায়দার (সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর)


সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফ (বীর উত্তম) (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর)

এলাকা : কুমিল্লা জেলার অংশ, ঢাকা জেলা ও ফরিদপুর জেলার অংশ।
এই সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল ছয়টি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ৪,০০০ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ৩০,০০০।





৩নং সেক্টর

সেক্টর কমান্ডার মেজর কে.এম. শফিউল্লাহ (বীর উত্তম) (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর),


সেক্টর কমান্ডার মেজর এ.এন.এম নুরুজ্জামান (বীর উত্তম) (সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর)

এলাকা : কুমিল্লা জেলার অংশ, ময়মনসিংহ জেলার অংশ, ঢাকা ও সিলেট জেলার অংশ।
সাব-সেক্টর ছিল সাতটি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ৬৬৯৩ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ২৫,০০০।





৪নং সেক্টর

সেক্টর কমান্ডার মেজর জে: চিত্তরঞ্জন দত্ত (বীর উত্তম)

এলাকা : সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল এবং খোয়াই-শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট-ডাউকি সড়ক পর্যন্ত।
এই সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল ছয়টি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ৯৭৫ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ৯,০০০।




৫নং সেক্টর

সেক্টর কমান্ডার মেজর মীর শওকত আলী (বীর উত্তম)

এলাকা : সিলেট-ডাউকি সড়ক থেকে সিলেট জেলার সমগ্র উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল ও ময়মনসিংহ জেলার অংশ।
এই সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল ছয়টি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ১৯৩৬ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ৯,০০০।




৬নং সেক্টর

উইং কান্ডার খাদেমুল বাশার

এলাকা : সমগ্র রংপুর জেলা এবং দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমা।
এই সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল পাঁচটি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ২৩১০ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ১১,০০০।




৭নং সেক্টর

সেক্টর কমান্ডার মেজর নাজমুল হক ( অগাস্ট পর্যন্ত )


সেক্টর কমান্ডার মেজর কাজী নুরুজ্জামান (বীর উত্তম)

এলাকা : রংপুর জেলার অংশ, রাজশাহী জেলার অংশ, পাবনা জেলার অংশ ও দিনাজপুর জেলার অংশ, বগুড়া জেলা।
এই সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল নয়টি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ২৩১০ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ১২,৫০০।




৮নং সেক্টর

সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরী (এপ্রিল- আগস্ট),


সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ মুঞ্জুর (বীর উত্তম) (আগস্ট-ডিসেম্বর)

এলাকা : যশোর জেলা, ফরিদপুর জেলা, কুষ্টিয়া জেলা, খুলনা ও বরিশাল জেলার অংশ।
এই সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল সাতটি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ৩৩১১ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ৮,০০০।





৯নং সেক্টর

সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ জলিল মিঞা (এপ্রিল-ডিসেম্বর প্রথমার্ধ),

সেক্টর কমান্ডার মেজর জয়নুল আবেদীন ( ডিসেম্বর এর অবশিষ্ট দিন)

এলাকা : দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়ক থেকে খুলনার দক্ষিনাঞ্চল এবং সমগ্র বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা।
এই সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল তিনটি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ৩৩১১ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ৮,০০০।




১০নং সেক্টর

কর্নেল মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী  (সর্বাধিনায়ক ও প্রধান সেনাপতি মুক্তিবাহিনী)

এলাকা : প্রধান সেনাপতির নিয়ন্ত্রণে (নৌ সেক্টর) সমগ্র বাংলাদেশ। এই সেক্টরটি গঠিত হয়েছিল নৌ-কমান্ডোদের দিয়ে। বিভিন্ন নদী বন্দর ও শক্র পক্ষের নৌ-যানগুলোতে অভিযান চালানোর জন্য এঁদের বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো হতো।
যে সেক্টর এলাকায় কমান্ডো অভিযান চালানো হতো, কমান্ডোরা সেই সেক্টর কমান্ডারের অধীনে কাজ করত। নৌ-অভিযান শেষে তারা আবার তাদের মূল সেক্টর- ১০ নম্বর সেক্টরের আওতায় চলে আসত।
নৌ-কমান্ডোর সংখ্যা ছিল ৫১৫ জন।




১১নং সেক্টর

সেক্টর কমান্ডার মেজর আবু তাহের (বীর উত্তম) (আগস্ট-নভেম্বর),


সেক্টর কমান্ডার স্কেয়াড্রন লিডার হামিদুল্লাহ (নভেম্বর-ডিসেম্বর)

এলাকা : কিশোরগঞ্জ মহকুমা বাদে সমগ্র ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা এবং নগরবাড়ি-আরিচা থকে ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত যমুনা নদী ও তীর অঞ্চল।
এই সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল সাতটি।
সেক্টর ট্রুপস্ ছিল ২৩১০ সৈন্য এবং গেরিলা ছিল ২৫,০০০।



টাংগাইল সেক্টর

কাদের সিদ্দিকী।

এলাকা : সমগ্র টাংগাইল জেলা ছাড়াও ময়মনসিংহ ও ঢাকা জেলার অংশ




আকাশ

গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ.কে. খন্দকার

এলাকা: বাংলাদেশের সমগ্র আকাশসীমা



তথ্য সূত্র :
সেক্টর কমান্ডারর্স ফোরাম
গুণীজন  
উইকি
গুগল

প্রথম প্রকাশ:

এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ১১৭১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৫/১১/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • জহির রহমান ১১/১১/২০১৩
    মরুভূমির জলদস্যু মানেই ভিন্ন স্বাদের ভিন্ন কিছু!
    সারোয়ার ভাই, বরাবরের মতই চমৎকার উপস্থাপন!
    শুভ কামনা।
    • আমি শুধু চেষ্টা করে যাই ভিন্ন কিছু উপস্থাপন করতে। ভালো রাগাটা আপনাদের গুণ।
      • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
        এভাবে বলবেন না ভাই। আমি জানি আপনি ব্যস্ত থাকেন। এই ব্যস্ততার মাঝেও আপনি এত সুন্দর উপস্থাপনায় আমি বরাবরই মুগ্ধ!
        • ধুর, আর হাওয়া দিয়েন না, এমনিতেই আমি মোটা মানুষ, ইদানিং আরো মোটা হয়ে গেছি।
          • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
            কি বলেন ভাই! বেশি মোটা হয়েন না। বেশি মোটা মানুষ ভালো লাগেনা...
            • ভাত খাইনি ৩দিন, তবে আজ সকালে খিচুড়ি খেয়েছি।
              সকালে পরটা, দুপুরে ও রাতে ফ্রুট সালাড আর মুড়ির উপর দিয়ে চলছে।
              • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
                কতদিন চলবে এভাবে?
                • দেখি কত দিন চালানো যায়।
  • ইসমাত ইয়াসমিন ০৫/১১/২০১৩
    অসম্ভব ভাল লেগেছে, সত্যি কথা বলতে কি, এই সব মহাপুরুষের নাম অনেক শুনেছি, হয়তবা ৩/৪ জঙ্কে চিনতাম, আজ সবাইকে দেখলাম। দেখলাম সেই সব বীর গাথাদের, যারা আমাদের এই মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। অনেক ভাল লাগল।
    • আসলে এই বিষয়গুলিতে আমাদের জানার পরিধি আরো অনেক বড় থাকা দরকার, কিন্তু আমরা জানি খুব কম, আর জানার চেষ্টা করি তারচেয়েও কম।
  • ভাই আপনি বলেছিলেন যে আপনার লেখালেখি তেমন ভালো না।তবে এতো সুন্দর একটি লেখা কিভাবে লিখলেন? আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে।আজ অনেক কিছু জানলাম।খুবই খুশি হবো যদি এই জাতীয় লেখা আরও পোস্ট করেন।ধন্যবাদ।
    • সাখাওয়াৎ ভাই, এটি ঠিক লেখার তালিকায় পরে না আমার মতে। এটা হচ্ছে এক ধরনের তথ্য উপস্থাপন, নিজের মত করে কিছু করা হয়নি। সমস্যা হচ্ছে এগুলি তৈরি করতে অনেক সময় দিতে হয়, তাই আগের মত আর হয়ে উঠে না। এটাও কিন্তু অনেক আগে তৈরি করা।
      ধন্যবাদ আপনাকে উৎসাহ দেয়ার জন্য।
 
Quantcast