www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

কাল্পনিক গল্প মহাকাশ ভ্রমণ

আজ থেকে একশত বছর পরে হতে পারে এমন কাল্পনিক গল্প...............

সকালবেলা, বিছানার পাশে ছোট্ট টেবিলে রাখা ডিজিটাল ঘড়ির এলার্ম শুনে ঘুম থেকে জেগে দিনের শুরু হলো কিশোর সাহী আলমের। সাহী একটি ভার্চুয়াল স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে, তাদের এই ভার্চুয়াল স্কুলে সারা বিশ্বের সব দেশেরই শিক্ষার্থী আছে। আর আজ সকাল ৮:০০ টায় তাদের সাহীদের একটি বিশেষ মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।
ইত্যাদি ভাবতে ভাবতে সাহী ওয়াশ রুমে থাকা অদ্ভুত ধরনের যন্ত্রের কয়েকটি বাটন চাপে, সাথে সাথে তার সামনে সেই যন্ত্রের উপরের দিকে একটি ফাঁকা জায়গা দিয়ে চলে আশে একটি ব্রাশ আর যার মাঝে টুথপেস্ট পরিমাণমতো দেয়া। সাহী দাঁত ব্রাশ করে নিজের মাকে ডাকে।
- মা, ও মা।
সাহীর মা বললেন
- আসছি।

সাহী - নাস্তা করবো কিছু দাও, তাড়াতাড়ি করো মা মিটিং আছে।
সাহীর মা - দিচ্ছি বাবা, দিচ্ছি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো।
সাহী - আচ্ছা।
সাহীর মা দু এক মিনিট পর সাহীর জন্যে নাস্তা নিয়ে আসলেন এবং বললেন
- এই নাও বাবা।
সাহী - মা সবার নাস্তা কি শেষ নাকি, কেউ ত নেই এখানে।
সাহীর মা - সবাই কখন খাবার শেষ করে নিজের রুমে যারযার কাজ শুরু করে দিয়েছে। ( সবাই ভার্চুয়াল অফিসে কাজ করেন )
সাহী আচ্ছা বলে খাবার খেতে শুরু করলো।
ঠিক তখন সাহীর হাতে থাকা স্মার্ট হাত ঘড়িতে একটি বিজ্ঞপ্তি এলো। যে মিটিং শুরু হতে আর আধা ঘন্টা বাকি।

খাবার খাওয়া শেষ, এখন সাহী নিজের ঘরে কম্পিউটার চালু করে তার সাথে বড় একটি পর্দা সংযুক্ত করে এরপর মাইক্রোফোন, স্পিকার ও ক‍্যামেরা লাগিয়ে নেয় এবং বিদ‍্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে মিটিংয়ে অংশ নেয়। মিটিংটি ছিলো বাৎসরিক মহাকাশ ভ্রমণ নিয়ে ( এবছর থেকে তাদের এই ভার্চুয়াল স্কুল থেকে মহাকাশ ভ্রমণে দুই জন ছাত্র ছাত্রী কে পাঠানো হবে )
আলোচনা। সাহী ও তার অনলাইন সহপাঠী মীম।
স‍্যার দুজনকে সব কিছু মিটিংয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন, তারপরও বললেন তোমরা আজ বিকেলে ইমেইল পাবে সেখানে ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য থাকবে এবং মিটিং শেষ করার আগে বলে দিলেন যে তোমরা আগামীকালই যাচ্ছো। সংবাদটি বাসার সবাইকে জানাতে দেরি হয়নি তার,
আজ সাহীদের বাসায় যেনো উৎসব।

মীমের বাড়ির ও একই অবস্থা বলে জানালো মীম।
দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা, সাহী মেইল চেক করে তার স‍্যারের পাঠানো মেইলের যাবতীয় বিষয় বস্তু বুঝে নেয়।
এবং রাতের খাবার খেয়ে আনন্দিত মন নিয়ে ঘুমিয়ে পরে।

ঠিক সেই সকালের মতো ঘুম কাটিয়ে নাস্তা শেষ করে এবং বাসার সবাইকে জানায় যে তার সাথে সবাই আন্তর্জাতিক স্পেসে যেতে হবে । সবাই রাজি!

এর মধ্যে স‍্যার ও মীমের সাথে অনেকবার কথা হয়ে গেছে। অনলাইনে নিজের বন্ধুদের অভিনন্দন বার্তাও পড়েছে।

এখন সাহীর বাসার ছাদে হেলিকপ্টার তাদের জন্যে অপেক্ষায় আছে, সাহী সবাইকে সঙ্গে করে হেলিকপ্টারে উঠলো।
তাদের পরিবারের সদস্য মাত্র চার জন।
হেলিকপ্টারে বসা মাত্র স‍্যারের ফোন আসলো।
স‍্যার - সাহী হেলিকপ্টার বাসায় পৌঁছালে জানাবে।
সাহী - স‍্যার আমরা উড্ডয়ন করেছি বিশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছাবো।
স‍্যার - ঠিক আছে।

সাহীরা এখন আন্তর্জাতিক স্পেসে আছে।
মীমের বাসারও সব এসেছেন এদিকে মীম আর সাহী স‍্যারের সাথে আলোচনা করছে ইতিমধ্যে দুজন মহাকাশ যাত্রীর পোশাক পড়ে নিয়েছে।

এখন রকেটে উঠার পালা বিদায় নিয়ে নিয়েছে। স‍্যার ডেকে দুজনের হাতে দুটি ট‍্যাবলেট ধরিয়ে দিয়ে বললেন তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও। দুজন একসঙ্গে কি উচ্চারণ করলে স‍্যার বললেন এটি খাবার পর ছয় মাস খিদে থাকবেনা। খেয়ে নিলো দুজন এরপর লিফটে করে রকেটে উঠে বসে পরে। এখানে সব কিছু সাজানো ছিলো যেমন যোগাযোগ করার ছোট্ট একটি যন্ত্র এবং কম্পিউটার। রকেটে চালু হয়ে গেলো সাথে সাথে দুজন অক্সিজেন মাস্ক পরে নিলো।

কিছুক্ষণ আগে ছিলো সজীব পৃথিবীর বুকে এখন দুজন মহাশুণ‍্যে রকেটে ভাসছে। স‍্যার একটি সংযোগ পাঠালেন যুক্ত হওয়া মাত্র স‍্যার বললেন
- কি অসুবিধা হচ্ছে।
দুজন বললো
- না।

কেটে গেছে একদিন। এখন দুজন মঙ্গল গ্রহের কাছাকাছি। বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে তুলল লাল গ্রহের কয়েকটি ছবি দুজন যখন মঙ্গল গ্রহে নামলো চোখ মেলে দেখে এক মরুভূমির মতো মাঝে মাঝে কিছু পাহাড়। দুজন মিলে টাঙিয়ে দিলো প্রিয় বাংলাদেশের পতাকা ও ভার্চুয়াল স্কুলের পতাকা। একবার পৃথিবীর দিকে তাকালো কিন্তু পৃথিবী থেকে ৭.৮ কিলোমিটার দূরে থাকা মঙ্গল গ্রহ থেকে মিলেনি দেখা।
এদিকে স্পেসের কন্ট্রোল রুমের সাথে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় যোগাযোগ হচ্ছে, পৃথিবীর ভিবিন্ন দেশের ভিবিন্ন টিভিতে লাইভ দেখাচ্ছে তাদের আর ভিবিন্ন পত্রিকায় তারা দুজন হয়েছে শিরোনাম।

অবশেষে মাত্র ১৭ ঘন্টা ২১ মিনিট ২৭ সেকেন্ড পর সাহী ও ১৭ ঘন্টা ২১ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড পর মীম মঙ্গল গ্রহ ত‍্যাগ করে রকেটে পা রাখলো। এই সময় টুকু দুজন মঙ্গল গ্রহের মাটি সহ ছবি তোলা ইত্যাদি করতে ব‍্যায় করে। অবশেষে রকেটে পৃথিবীর দিকে রওনা হয় এবং মঙ্গল গ্রহকে বিদায় জানায়।

অবশেষে আর ২৪ ঘন্টা ৪৯ মিনিট ২৯ পর পৃথিবীর বায়ু মন্ডলের ছোঁয়া পায়।
শেষ পযর্ন্ত দুজন রকেট ছেড়ে প‍্যারাসুটে করে নিছে নামতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে সাহীর প‍্যারাসুট ছিরে যায় এবং নিছে সমুদের হাটু পানিতে পড়ে যায়।
মীম হাসতে হাসতে পৃথিবীর মাটিতে পা রাখে।

সঙ্গে সঙ্গে সাহীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। তার বিশ্বাসই হচ্ছিলো না যে এতক্ষণ সে স্বপ্ন দেখছিলো।
আফসোস করে সত্যি যদি এমন হতো।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮৫২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২১/০১/২০২১

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast