আমি কেন লিখি
আমি কেন লিখি? কেনই বা এত অস্থির হই, ছটফট করি, নিজের ভেতরে এত শব্দ তোলপাড় তোলে? এই প্রশ্নের উত্তর একটাই। আমি লিখি, কারণ আমি বেঁচে থাকতে চাই। আমার ভেতরে বেঁচে থাকার তীব্র আকাঙ্ক্ষা আছে। জীবনের যত ইচ্ছা, স্বপ্ন আর প্রাপ্তি অপূর্ণতায় ছেয়ে গেছে। তাই সব ইচ্ছাকে বিসর্জন দিয়ে কেবল বেঁচে থাকার ইচ্ছাটাকেই লালন করছি। আমি ততদিন বেঁচে থাকতে চাই, যতদিন না স্রষ্টার কাছে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করতে পারি।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মৃত্যু যেন আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। প্রতিটি নিঃশ্বাসে তার ছায়া টের পাই। মৃত্যু অবধারিত, এই সত্য জানি; তবুও মানুষ বেঁচে থাকতে চায়। আমিও চাই। তবুও আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। ভয় পাই অপমৃত্যুকে। এই এক ভয়, যা প্রতিনিয়ত বুকের ভেতর দাউ দাউ করে জ্বলে। ভয়টাকে দূরে ঠেলে সাহস জোগানোর মতো কেউ নেই পাশে। পৃথিবীর কোথাও এতটুকু আশ্রয় বা শান্তনা খুঁজে পাইনি। তাই আমি লিখি নিজেকে সাহস দেওয়ার জন্য, শব্দের মধ্যে আশ্রয় খোঁজার জন্য।
আমার হৃদয়ে জমে আছে সহস্র বিরহবেদনা। না-পাওয়ার ক্ষতগুলো দিনে দিনে গাঢ় হচ্ছে, তবুও আমি সেগুলোকে বুকের ভেতর আগুনের মতো ধরে রেখেছি। কারণ এই বেদনাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখে, লিখতে শেখায়। বাস্তব জীবনের যত অসঙ্গতি, অন্যায় আর হতাশা, সবই আমার লেখার উপাদান হয়ে ওঠে। রাতের নির্জনতায় যখন ঘুম চোখের পাতা ছুঁয়ে না, তখন নিস্তব্ধতাই হয়ে ওঠে আমার সঙ্গী। সেই নির্জনতার ভেতরে আমি শব্দে শব্দে গড়ে তুলি আমার বেঁচে থাকার আর্তনাদ।
আমার ভেতরে দুটি সত্তা সারাক্ষণ লড়াই করে। একটি বাঁচতে চায়, অন্যটি হাল ছেড়ে দিতে চায়। কে কাকে জয় করবে, তা বোঝা বড়ই কঠিন। এভাবেই হারিয়ে যায় কত ফুলের মতো জীবন, কত সম্ভাবনা। আমি চাই না এমনভাবে হারিয়ে যেতে। আমি লিখি, কারণ লেখা আমাকে হারিয়ে যেতে দেয় না; লেখা আমাকে ফিরিয়ে আনে জীবনের কেন্দ্রে।
ধীরে ধীরে আমি বুঝেছি, এই পৃথিবীতে কারো জন্য থাকা চরম বোকামি। মানুষ কেবল নিজের প্রয়োজনেই অন্যের পাশে থাকে। যাদের আমরা আপন ভাবি, তারা আসলে প্রয়োজনে আপন, অপ্রয়োজনে পর। আমি এই বাস্তবতা মেনে নিয়েছি। তাই এখন আমি বেঁচে থাকি নিজের জন্য, আবার সবার জন্যও, কিন্তু নির্দিষ্ট কারো জন্য নয়।
ভালোবাসা, মায়া, আসক্তি সবই ক্ষণস্থায়ী। কেউ স্থায়ী নয়, কিছু স্থায়ী নয়। তবুও মানুষ ভালোবাসে, কারণ ভালোবাসা মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম প্রেরণা। কিন্তু আমি ভালোবাসার থেকেও বড় কিছু খুঁজেছি শান্তি। সেই শান্তি কোনো মানুষের কাছে নেই, আছে কেবল সৃষ্টিকর্তার নিকটে। তাই আমি লিখি, যাতে শব্দের ভেতর দিয়ে আমি তাঁর কাছাকাছি যেতে পারি, তাঁর সৃষ্টি ও রহস্যকে ছুঁতে পারি।
আমার মনে হয়, একটি মানুষ তখনই প্রকৃত অর্থে তৃপ্তি পায়, যখন সে দুনিয়ার ভোগ-বিলাসের মোহ ত্যাগ করে নিজের আত্মাকে সৃষ্টিকর্তার হাতে সমর্পণ করতে পারে। পাশে বসে মিথ্যা সান্ত্বনা দেবার মতো মানুষের বড় অভাব। তাই আমি লিখি, নিজের মনকে সান্ত্বনা দিতে, নিজের আত্মাকে বোঝাতে।
লেখা আমার কাছে কোনো শখ নয়। এটি এক প্রকার আত্মরক্ষা। আমি লিখি, যেন নিজের অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি, যেন শব্দের মধ্য দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে পারি। আমার কলম যখন চলে, মনে হয় আমি আর মৃত্যুর মাঝে নয়। বরং জীবনেরই দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
সৃষ্টিকর্তার নিকট আমার প্রার্থনা, যেদিন আমি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে তাঁর কাছে সমর্পণ করতে পারব, তার আগে যেন আমার মৃত্যু না হয়। আমি চাই, আমার কলম থেকে শান্তির কিছু শব্দ যেন মানুষের হৃদয়ে পৌঁছায়। যেন কেউ আমার লেখায় নিজের ক্লান্ত প্রাণের জন্য একটু আশ্রয় খুঁজে পায়। ভোগ-বিলাস নয়, আমি আমার জীবনকে আলোর পথে পরিচালিত করতে চাই।
সৃষ্টিকর্তা সহায় হউন। আমিন।
#nurnobifulkuri
Date: 20.10.2024
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মৃত্যু যেন আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। প্রতিটি নিঃশ্বাসে তার ছায়া টের পাই। মৃত্যু অবধারিত, এই সত্য জানি; তবুও মানুষ বেঁচে থাকতে চায়। আমিও চাই। তবুও আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। ভয় পাই অপমৃত্যুকে। এই এক ভয়, যা প্রতিনিয়ত বুকের ভেতর দাউ দাউ করে জ্বলে। ভয়টাকে দূরে ঠেলে সাহস জোগানোর মতো কেউ নেই পাশে। পৃথিবীর কোথাও এতটুকু আশ্রয় বা শান্তনা খুঁজে পাইনি। তাই আমি লিখি নিজেকে সাহস দেওয়ার জন্য, শব্দের মধ্যে আশ্রয় খোঁজার জন্য।
আমার হৃদয়ে জমে আছে সহস্র বিরহবেদনা। না-পাওয়ার ক্ষতগুলো দিনে দিনে গাঢ় হচ্ছে, তবুও আমি সেগুলোকে বুকের ভেতর আগুনের মতো ধরে রেখেছি। কারণ এই বেদনাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখে, লিখতে শেখায়। বাস্তব জীবনের যত অসঙ্গতি, অন্যায় আর হতাশা, সবই আমার লেখার উপাদান হয়ে ওঠে। রাতের নির্জনতায় যখন ঘুম চোখের পাতা ছুঁয়ে না, তখন নিস্তব্ধতাই হয়ে ওঠে আমার সঙ্গী। সেই নির্জনতার ভেতরে আমি শব্দে শব্দে গড়ে তুলি আমার বেঁচে থাকার আর্তনাদ।
আমার ভেতরে দুটি সত্তা সারাক্ষণ লড়াই করে। একটি বাঁচতে চায়, অন্যটি হাল ছেড়ে দিতে চায়। কে কাকে জয় করবে, তা বোঝা বড়ই কঠিন। এভাবেই হারিয়ে যায় কত ফুলের মতো জীবন, কত সম্ভাবনা। আমি চাই না এমনভাবে হারিয়ে যেতে। আমি লিখি, কারণ লেখা আমাকে হারিয়ে যেতে দেয় না; লেখা আমাকে ফিরিয়ে আনে জীবনের কেন্দ্রে।
ধীরে ধীরে আমি বুঝেছি, এই পৃথিবীতে কারো জন্য থাকা চরম বোকামি। মানুষ কেবল নিজের প্রয়োজনেই অন্যের পাশে থাকে। যাদের আমরা আপন ভাবি, তারা আসলে প্রয়োজনে আপন, অপ্রয়োজনে পর। আমি এই বাস্তবতা মেনে নিয়েছি। তাই এখন আমি বেঁচে থাকি নিজের জন্য, আবার সবার জন্যও, কিন্তু নির্দিষ্ট কারো জন্য নয়।
ভালোবাসা, মায়া, আসক্তি সবই ক্ষণস্থায়ী। কেউ স্থায়ী নয়, কিছু স্থায়ী নয়। তবুও মানুষ ভালোবাসে, কারণ ভালোবাসা মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম প্রেরণা। কিন্তু আমি ভালোবাসার থেকেও বড় কিছু খুঁজেছি শান্তি। সেই শান্তি কোনো মানুষের কাছে নেই, আছে কেবল সৃষ্টিকর্তার নিকটে। তাই আমি লিখি, যাতে শব্দের ভেতর দিয়ে আমি তাঁর কাছাকাছি যেতে পারি, তাঁর সৃষ্টি ও রহস্যকে ছুঁতে পারি।
আমার মনে হয়, একটি মানুষ তখনই প্রকৃত অর্থে তৃপ্তি পায়, যখন সে দুনিয়ার ভোগ-বিলাসের মোহ ত্যাগ করে নিজের আত্মাকে সৃষ্টিকর্তার হাতে সমর্পণ করতে পারে। পাশে বসে মিথ্যা সান্ত্বনা দেবার মতো মানুষের বড় অভাব। তাই আমি লিখি, নিজের মনকে সান্ত্বনা দিতে, নিজের আত্মাকে বোঝাতে।
লেখা আমার কাছে কোনো শখ নয়। এটি এক প্রকার আত্মরক্ষা। আমি লিখি, যেন নিজের অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি, যেন শব্দের মধ্য দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে পারি। আমার কলম যখন চলে, মনে হয় আমি আর মৃত্যুর মাঝে নয়। বরং জীবনেরই দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
সৃষ্টিকর্তার নিকট আমার প্রার্থনা, যেদিন আমি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে তাঁর কাছে সমর্পণ করতে পারব, তার আগে যেন আমার মৃত্যু না হয়। আমি চাই, আমার কলম থেকে শান্তির কিছু শব্দ যেন মানুষের হৃদয়ে পৌঁছায়। যেন কেউ আমার লেখায় নিজের ক্লান্ত প্রাণের জন্য একটু আশ্রয় খুঁজে পায়। ভোগ-বিলাস নয়, আমি আমার জীবনকে আলোর পথে পরিচালিত করতে চাই।
সৃষ্টিকর্তা সহায় হউন। আমিন।
#nurnobifulkuri
Date: 20.10.2024
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ফয়জুল মহী ২১/১০/২০২৫অনন্য অনুভূতির প্রকাশ