প্রতিদান
আনকোরা একটা পরিবার। অসুখটা লেগেই থাকে যেন। খুব কাছের প্রিয়জন দু''চোখের জল। ভরা পূর্ণিমা আর আকাশ চুম্বী স্বপ্নগুলো ইতস্তত ঢেউ খেলে শহুরে বাতাসে। অমন করে বলিস নারে মা, বুকের ভিতরটা খুব নাড়া দিয়ে যায়। তোদের মুখের দিকে তাকিয়ে যেন বেঁচে থাকার স্বপ্ন আঁকি। সায়মন মেয়েটার সাথে এভাবে ইনুনিবিনুনি করে সাগরের কাছ থেকে কিছুটা দীক্ষা নিলো। আর এই জলের ভিতরে যেন মুক্তো খুঁজলো এবং অনেকদূর পাড়ি দেওয়ার পথ এঁকেনিলো।
অভাবী সংসার। সামান্য জলসিঞ্চনে কেটে দেয় সারাটা দিন। গ্রাম থেকে শহরে পাড়ি দেয় বছরখানিক আগে। চার মেয়ে, স্ত্রী আর বৃদ্ধ মা বাবা। লোকে বলে হতভাগা মানুষ, একটা ছেলের আশা করে কতটা মেয়ের জন্ম হয়েছে! অথচ সন্তানদের মানুষ করতে যে সম্পদের প্রয়োজন তা শূন্যতার কৌটায়। "কি খাওয়াবো ভেবে, যে সন্তান নেয় না সে যেন কুফরি করলো"- ইসলামের এমন বানীর দিকে তাকিয়ে নির্ভীক সব সয়ে যায় সায়মন! আর জীবন, সময়, কিছু ভুল তাকে চমকে দেয় বারংবার! জীবনের এ বয়সে এসে অভাবনীয় এক সংকটে পড়ে যায় সে! আজকাল ক্ষুধা, দরিদ্রতা আর সাংসারিক চিন্তা তাকে ঘুমাতে দেয় না কোনভাবে।
মাঝেমাঝে সে বিভোর হয়ে যায়। একসময় কয়েক বিঘা জমি ছিল তাঁর। সেগুলো নদীর কবলে পড়ে ভেঙে গেলে কিছু জমি বর্গা নিয়েছিলেন। এক বছর ধরে চাষাবাদ করে সংসার বেশ চলছিল। ধীরেধীরে কয়েকটা গরু, ছাগল সাথে হাস-মুরগি পালন করে সংসারটা আরো জমে উঠেছিল। আর এর ভিতরে তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন, মেয়েদের মানুষ করার এবং ভবিষ্যতে তাদের জন্য কিছু করার। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর স্বপ্ন হয়ে জেগে উঠলো না। হটাত এক তুফান ও বন্যার কবলে এক নিমেষে সব শেষ হয়ে গেল। গড়তে সময় লেগেছিল খুব, কিন্তু ভাঙতে আর সময় লাগেনি। চুরমার হয়ে গেল বাবার হাতে করে দেওয়া অনেক ইচ্ছের ঘরও! তবুও ভাঙা ঘরটা মোটামুটি ঠিক করে জীবিকা নির্বাহের জন্য পাড়ি দেয় শহরে। পেয়ে যায় স্বল্প বেতনে এক কোম্পানির চাকরী। যা দিয়ে সংসারের চাহিদা মেঠানো অনেক কষ্টের। সেখানে মেয়েদের মানুষ করা যেন কল্পনার শহরে বসেবসে স্বপ্ন দেখা। তবুও বাবারা যেন তাদের দায়িত্ব পূরণ করতে এক পাও পিছে রাখেন না। কোম্পানি ১ম দুমাস যদিও তার বেতন ঠিক সময়ে দিতেন, কিন্তু পরের দিকে ৫ এর জায়গায় ১৫ ও পেরিয়ে যেত, কিন্তু বেতন দেওয়ার খবর থাকতো না। যদি ম্যানেজারের কাছে চাইতো, তাতে উল্টো বকা শোনতে হত তাকে। তবুও সংসারের দিকে চেয়ে, নিজেই যেন অন্যের ধমক সয়ে নিতে শিখেছেন। এটাই কি আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিদান নাকি তাদের আচরণ? যদিও জানা নেই তাঁর, তবুও নিজেকে প্রশ্ন করে যেতেন প্রতিনিয়ত! এদিকে সংসারের বাজার শেষ হয়ে গেলে দোকান থেকেও অনেক টাকা বাকী করে চলেছেন। অথচ ১৫ পেরিয়ে গেল, কিন্তু তার বেতন আজো হাতে এসে পোঁছায়নি। ছোট মেয়ে প্রতিদিন ফোন দেয়, বাবা তুমি কবে আসবে? তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। অথচ এক বুক অভিমান আর এক সাগর আকুতি নিয়ে মুঠোফোন রিসিভ করে সায়মন; অমন করে বলিস না রে মা- এই তো আর কয়টা দিন!!
কষ্টে কতবার বাজিয়ে যায় বেল, জানা নেই কিঞ্চিৎ
বুকভরা ভিসুবিয়াস জমে আছে বেশ,
প্রভু পোড়াও- পুড়ি;
যদিও হয় কর্মের প্রতিদান,
বলার নেই কিছু!
অভাবী সংসার। সামান্য জলসিঞ্চনে কেটে দেয় সারাটা দিন। গ্রাম থেকে শহরে পাড়ি দেয় বছরখানিক আগে। চার মেয়ে, স্ত্রী আর বৃদ্ধ মা বাবা। লোকে বলে হতভাগা মানুষ, একটা ছেলের আশা করে কতটা মেয়ের জন্ম হয়েছে! অথচ সন্তানদের মানুষ করতে যে সম্পদের প্রয়োজন তা শূন্যতার কৌটায়। "কি খাওয়াবো ভেবে, যে সন্তান নেয় না সে যেন কুফরি করলো"- ইসলামের এমন বানীর দিকে তাকিয়ে নির্ভীক সব সয়ে যায় সায়মন! আর জীবন, সময়, কিছু ভুল তাকে চমকে দেয় বারংবার! জীবনের এ বয়সে এসে অভাবনীয় এক সংকটে পড়ে যায় সে! আজকাল ক্ষুধা, দরিদ্রতা আর সাংসারিক চিন্তা তাকে ঘুমাতে দেয় না কোনভাবে।
মাঝেমাঝে সে বিভোর হয়ে যায়। একসময় কয়েক বিঘা জমি ছিল তাঁর। সেগুলো নদীর কবলে পড়ে ভেঙে গেলে কিছু জমি বর্গা নিয়েছিলেন। এক বছর ধরে চাষাবাদ করে সংসার বেশ চলছিল। ধীরেধীরে কয়েকটা গরু, ছাগল সাথে হাস-মুরগি পালন করে সংসারটা আরো জমে উঠেছিল। আর এর ভিতরে তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন, মেয়েদের মানুষ করার এবং ভবিষ্যতে তাদের জন্য কিছু করার। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর স্বপ্ন হয়ে জেগে উঠলো না। হটাত এক তুফান ও বন্যার কবলে এক নিমেষে সব শেষ হয়ে গেল। গড়তে সময় লেগেছিল খুব, কিন্তু ভাঙতে আর সময় লাগেনি। চুরমার হয়ে গেল বাবার হাতে করে দেওয়া অনেক ইচ্ছের ঘরও! তবুও ভাঙা ঘরটা মোটামুটি ঠিক করে জীবিকা নির্বাহের জন্য পাড়ি দেয় শহরে। পেয়ে যায় স্বল্প বেতনে এক কোম্পানির চাকরী। যা দিয়ে সংসারের চাহিদা মেঠানো অনেক কষ্টের। সেখানে মেয়েদের মানুষ করা যেন কল্পনার শহরে বসেবসে স্বপ্ন দেখা। তবুও বাবারা যেন তাদের দায়িত্ব পূরণ করতে এক পাও পিছে রাখেন না। কোম্পানি ১ম দুমাস যদিও তার বেতন ঠিক সময়ে দিতেন, কিন্তু পরের দিকে ৫ এর জায়গায় ১৫ ও পেরিয়ে যেত, কিন্তু বেতন দেওয়ার খবর থাকতো না। যদি ম্যানেজারের কাছে চাইতো, তাতে উল্টো বকা শোনতে হত তাকে। তবুও সংসারের দিকে চেয়ে, নিজেই যেন অন্যের ধমক সয়ে নিতে শিখেছেন। এটাই কি আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিদান নাকি তাদের আচরণ? যদিও জানা নেই তাঁর, তবুও নিজেকে প্রশ্ন করে যেতেন প্রতিনিয়ত! এদিকে সংসারের বাজার শেষ হয়ে গেলে দোকান থেকেও অনেক টাকা বাকী করে চলেছেন। অথচ ১৫ পেরিয়ে গেল, কিন্তু তার বেতন আজো হাতে এসে পোঁছায়নি। ছোট মেয়ে প্রতিদিন ফোন দেয়, বাবা তুমি কবে আসবে? তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। অথচ এক বুক অভিমান আর এক সাগর আকুতি নিয়ে মুঠোফোন রিসিভ করে সায়মন; অমন করে বলিস না রে মা- এই তো আর কয়টা দিন!!
কষ্টে কতবার বাজিয়ে যায় বেল, জানা নেই কিঞ্চিৎ
বুকভরা ভিসুবিয়াস জমে আছে বেশ,
প্রভু পোড়াও- পুড়ি;
যদিও হয় কর্মের প্রতিদান,
বলার নেই কিছু!
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
sudipta chowdhury ২৮/১২/২০১৯Human beings can give return touchable things in life but in love life it is always untouchable return that is only thing to feel from heart.
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ৩০/০৯/২০১৯অপূর্ব সুন্দর ভাবনা।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১৪/০৮/২০১৯পড়েছি।
-
সাইদুর রহমান ১৩/০৮/২০১৯ভালো লাগলো গল্পটি।
-
পি পি আলী আকবর ১২/০৮/২০১৯বেশ