www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অনিয়ম

রিমার বাবা প্রতাব চৌধুরী ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই জেগে উঠে হাটাঁ হাটি শুরু করেছেন।শীতের সময় এতো ভোরে তিনি জেগে উঠেন না,তবে এ কদিন খুব ভোরেই জেগে উঠছেন।মনে হচ্ছে এ কটা দিন সময় খুব তারাতারি পেরিয়ে যাচ্ছে,মনে হচ্ছে এই সময়টা খুব মায়া জরানো সময়।আর এ সময়টাকে প্রতাব চৌধুরী নষ্ট করতে চাচ্ছেন না।প্রতিদিনের মতো দীর পায়ে হেটেঁ রিমার রুমের দিকে গেলেন,দরজা খুলে রিমার দিকে কিছুক্কন তাকিয়ে রইলেন,আজ রিমাকে অন্যরকম লাগছে।আসলে প্রতাব চৌধুরীর কাছে রিমাকে প্রতিদিনই অন্যরকম লাগে,মনে হয় পৃথিবীর সর্বোচ্চ সৌন্দর্যতা তার মাজে দেয়া হয়েছে।আর ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় যেন সে সৌন্দর্যতা আরো কয়েক গুণ বেরে যায়।প্রতাব চৌধুরী রিমার ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বাড়ির ভেতর পথের মাজে হাটতেঁ লাগলেন।প্রতাব চৌধুরীর বাড়ি বিশাল আকারের,পুরোনো আমলের রাজা-মহারাজাদের মতো।পুরো বাড়ি বিভিন্ন ফুল গাছ দ্বারা ভরা।বাড়িটা একটু অন্যরকম,একটু ছোট্র আকারের দুতলা একটি ঘর,উপর তলায় যাওয়ার জন্য পাশে দিয়েই লোহার একটি সিড়ি।তারপর বেশ বড় আকারের দুতলা একটি ঘর।এটাই মূল বাড়ি।তার পাশে হালকা বাগানের মতো,সে বাগানের ঠিক মাজামাজি আরেকটি দুতলা ঘর।সে ঘরেও উপর তলায় উঠার জন্য বাইরে দিয়ে একটি লোহার সিড়ি রয়েছে।আর এই প্রত্যেক আলাদা ঘরে একটি হতে অন্যটিতে যাওয়ার জন্য আছে ছোট ছোট পাকা রাস্তা।যার দুই ধার ফুল গাছ দ্বারা বেষ্টিত।এমন ছোট রাস্তা এ বাড়িতে রয়েছে আরো অনেক।
প্রতাব চৌধুরী হাটঁতে হাটঁতে বাগানের ভেতরের ঘরের দিকে এগিয়ে যান।লোহার সিড়ি ধরে উপরে উঠে ঘরে ডুকে পরেন।ঘরে ডুকতেই অঙ্কন মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো ''বাবা এসেছো,বসো।'' বলেই সে আগোছালো বিছানাটা একটু টেনে দিলো।তারপর অঙ্কন চা বানাতে লাগলো। এই আলাদা একটি ঘরে অঙ্কনের চা পানির জন্য ছোট্র একটি চুলা তিনটে কাপ গ্লাস আর জগের ব্যবস্থা রয়েছে।চা বানিয়ে অঙ্কন প্রতাব চৌধুরীর হাতের দিকে এগিয়ে দিলো।অঙ্কন চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলে উঠলো ''রিমা উঠেছে?''
-নাহ।এখনো ভোর পাচঁটা বাজে।
অঙ্কণ কিছুটা বিব্রত হয়ে বললো ''এখনো মাএ পাচঁটা বাজে!''
-হুম।আর তোমার শরীর কেমন আছে?
এইতো বেশ ভালো।
প্রতাব চৌধুরী একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললেন ''রাতে ঘুমিয়েছ?''
অঙ্কণ চুপ করে রইলো।পুরোটা শহর নিস্তব্দ,বেশি দূর দেখা যায় না।শীতের সকাল চারদিকে ঘন কুয়াসা,সবচুপ হয়ে আছে।অঙ্কন জানালার দিকে তাকিয়ে রইলো দূরে কিছুই দেখা যাচ্ছে না।বাগানের মাজে ল্যাম্পষ্টের উপর বসে আছে দুটি কাক।অঙ্কন কাক দুটির দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে রইলো। একসময় এই ল্যামপোষ্টে হরেক রকম পাখির আনাগনা লেগেই ছিলো।তারপর হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলো।
প্রতাব চৌধুরী চায়ের কাপটি হাত থেকে রেখে উঠে দারাঁলেন।অঙ্কন একটু কেপেঁ উঠলো।প্রতাব চৌধুরী অঙ্কনের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন ''আশা রাখি আগামিতে ঘুমিয়ে যাবে।'' প্রতাব চৌধুরী ঘর থেকে বের হলেন।অঙ্কন কিছু একটা ভেবে জানালা দিয়ে উকিঁ মেরে নিচে প্রতাব চৌধুরীকে বলে উঠলো ''এই কদিন জেগে রইনা বাবা,তারপর হয়তো আর জেগে উঠা হবে নাহ।''
প্রতাব চৌধুরী অঙ্কনের দিকে মূখ উচু করে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলেন।তারপর মূখ ঘুরিয়ে হাটঁতে হাটতেঁ চলে গেলেন।

সকাল নয়টা ঠিক বাজতে চললো।রিমা ঘুম থেকে উঠে নিজের ঘরে বসে ছিলো,ঘুমের ঘোরটা এখনো ঠিক কেটে উঠেনি।তার ঘরে পুরো বিছানায় এলোপাতারি ভাবে ঘুমিয়ে আছে সমবয়সি এক খালা আর দুই খালাতো বোন।এদের রিমার সমবয়সি বললে হয়তো ভুল হবে,বরং এরা অঙ্কন এর বয়সের ও দু এক বছরের বড়।যদিও অঙ্কণ একসময় বন্ধুর মতোই চলাফেরা করত এদের সাথে।তবে রিমার সঙ্গি বলা যেতে পারে।রিমার মা মারা যাওয়ার পর রিমার একাকিত্ব দূর করার জন্য তারা ঘনিষ্ট হয়েছিলো,মাজে মাজে মতের অমিল হলেও তারা এখনো ঘনিষ্ট।যদিও রিমাকে বাইরে থেকে দেখে মনে হয়না সে একা।তবে কি রিমার তার মায়ের কথা মনে পরে না?হয়তো পরে,হয়তো পরেনা।কিছু লোক ধরেই নিয়েছেন তার মায়ের কথা তার মনে পরে না।কদিন আগে তো দূর সম্পর্কের এক ফুফু বেরাতে এসে তাকে উল্লাসিত হয়ে হাসতে দেখে পেচকথাায় বলেই ফেললেন ''তোর কি মায়ের কথা মনে পরে!অবশ্য না পরারই কথা,সেই কতো ছোট ছিলি তুই।''বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস নিলেন।যেটা অনেকটা কুমিরের কান্নার মতো।
রিমা কিছু না বলে চুপকরে রইলো,এসব কথা তাকে মাজে মাজেই শুনতে হয়।যদিও সে এসবের কোনো জবাবই দেয়না।নিজ সাধ্যমতো এরিয়ে চলে না হয় চুপ করে যায়।তার মনে হয় পৃথিবী অনেকটা অন্ধকার,না হলে অন্ধকার পৃথিবীর কিছু মানুষ।অথবা অন্ধকারের কালো পর্দা লেপ্টে গিয়েছে কিছু সময়ের সাথে।যে সময়ে মানুষ মানুষকে বুঝতেই পারেনা অথচ হাজারো দোষ,উপদেশ করে ব্যাক্ত,কে জানে হয়তো সেই সময়ে মানুষ মানুষকে বুঝতেই চায়না।
রিমা জানালার পাশে গিয়ে উঠে দারালোঁ।জানালা দিয়ে দেখা যায় দূরে গাছপালা,কুয়াসাটাও ঠিক কেটেঁ উঠেনি।মাজে মাজে বয়ে যায় হার কাপানো হিমেল হাওয়া।রিমা একটা চাদর গায়ে দিয়ে,আবারও জানালায় গিয়ে দারাঁলো।কিছু এক অদ্ভত মায়া তাকে জানালায় নিয়ে দার করাচ্ছে বার বার।আবার কিছু একটা খুব শুক্ক ভাবে দাগ কেটে যাচ্ছে তার মনের ভেতর,কিন্তু কি!কেন! এর কিছুই আচঁ করতে পারছেনা রিমা।অথচ এমনটা হওয়ার কথা নয়,বরং এই সময়টা তার খুশি থাকার কথা।যেমন প্রতিটি মেয়ে খুশি থাকে বিয়ের আগে।পুরো বাড়ির সবাই আনন্দে আছে।সব আত্বীয়রা এসে বাড়ি ভর্তি মানুষ আর আনন্দে টইটুম্বুর।অথচ যার কারণে এত আয়োজন সেই আনন্দ করছে না।কেন জানি তার মনে পেয়ে যাওয়ার সুখ থেকে ছেরে যাওয়ার কষ্টই বেশি গভির ভাবে আঘাত করে যাচ্ছে।কিন্তু কেন?সব মেয়েকেই তো বাপের বাড়ি ছেরে যেতে হয় নতুন ঘরে,তবে সেখানে কষ্ট কিসের!
হঠাৎ করে বড় খালা এসে পেছন থেকে বলে উঠলেন,''আরে মহারানী ঘুম থেকে উঠে গেছেন যে!''
বড় খালার চেহারা আর তার মায়ের চেহারা একদম একই।উনারা ছিলেন জমজ বোন।রিমার ও কি অদ্ভত লাগে তার বড় খালাকে।দেখলে মনে হয়ে ঠিক যেন ''মা'' দাঁরিয়ে আছে তার সামনে।খালা কথা বললেই এক ঝটকায় মন ভালো হয়ে যায় তার।ঠিক তেমনি আজও বড় খালাকে দেখে রিমার মন ভালো হয়ে গেলো।পেছনে গুরে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো,''জ্বী খালা এই মাত্র উঠলাম''।
-আচ্ছা এখন আমার দিকে তাকিয়ে এভাবে না হেসে মুখ ধুয়ে নাস্তা করে নাও।
-সবাই কি উঠে গেছে খালা?
-তোমার ঘরের তিন পাজি ছারা সবাই উঠে গেছে।
''আহ মা ঘুমাতে দাও চেচিঁও না।''পাশের বিছানা থেকে বলে উঠলো খালাতো বোন তানিয়া।
খালা কিছু বললেন না,চলে যাচ্ছিলেন।ঠিক তখনি রিমা খালাকে জিগ্গেস করে,''কই যাচ্চ খালা।''
-রান্না ঘরে,কাজ আছে।তুই তারাতারি মুখ ধুয়ে নাস্তা খেতে আয়।
-আসছি।বিকেলে গল্প করার জন্য এসো কিন্তু।খালা একটা হাসি দিয়ে চলে গেলেন।খালার এই হাসিটাই তার কাছে দারুণ লাগে।মনে হয় সে যদি সারা জীবন খালার কাছে থেকে যেতে পারত।তার মনে হয় এমন একজন ব্যাক্তি থাকার প্রয়োজন,যে ব্যাক্তি হয়তো তার নেই।তবে তার বাবা অনেকটাই একাকিত্ব ভুলিয়ে দিয়েছেন।তার মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে অসাধারণ হচ্ছে তার বাবা।যে মনের মাজে হাজারো কষ্ট লুকিয়ে রেখেও মা-বাবা উভয়ের দ্বায়িত্ব পালন করে যান।

প্রতাব চৌধুরী চেয়ারের মাজে চোখ বুঝে সুয়ে আছেন।পুরো বাড়িতে একটা হালকা রকমের হৈচৈ লেগে রয়েছে।কিছুক্কন পরে পরে এক এক করে দল বেধেঁ গারি এসে থামছে বাড়ির গেইটে।সে সব গারি থেকে বেরিয়ে আসছে নানান আত্বিরা। সিলেটের বিয়ের নিয়মটাই এমন।কাছের সব মানুষ বিয়ের কদিন আগেই আসতে হয়।আর ঠিক তখনি বিয়ে বাড়িটা দারুণ হয়ে উঠে।
রিমা আস্তে করে প্রতাব চৌধুরির ঘরের দরজা খুলে,ভেতরে ঢুকে চুপচাপ বিছানায় বসে থাকে।প্রতাপ চৌধুরী চোখ খুলে পেছনে তাকান।রিমা তখনো কিছু না বলেই চুপচাপ বসে আছে।তখন প্রতাব চৌধুরী বলে উঠেন,''খাওয়া দাওয়া হয়েছে?''
রিমা হালকা মাথা ঝাকিয়ে উওর দিলো,''হ্যাঁ বাবা হয়েছে।''
-সব আত্বিয়রা চলে এসেছে?
-নাহ।এখনো সবাই আসেনি।একথা বলে রিমা একটু চুপ করে রইলো।তারপর আবার বলে উঠলো,''আচ্ছা বাবা আমি চলে গেলে তোমার একা একা লাগবে না?''
প্রতাব চৌধুরী নিজেকে সামলে নিয়ে একটু করে হেসে বলে উঠলেন,''যদি লাগে তবে তর বাড়িতে চলে যাব।''
রিমা একটা মুচকি হাসি দিলো।তারপর চলে গেল।প্রতাব চৌধুরী একটি চাদর গায়ে জরিয়ে বেলকুনি তে দারিঁয়ে রইলেন।কত সুন্দর লাগছে আজ বাড়িটাকে।বাইরে সবাই কত আনন্দ করছে।আনন্দ করারই কথা,অনেক দিন পর এক হয়েছে সবাই।প্রতাব চৌধুরীর কাছে এক মুহুর্তের জন্য মনে হলো বিয়ে বাড়িতে বিয়ের আনন্দ বলতে কিছুই নেই।যা আছে তা হলো অনেক দিন পর সবাই এক হওয়ার আনন্দ।না হলে ছেরে যাওয়ায় কেউ আনন্দ করে না।একথাটা ভাবতেই প্রতাব চৌধুরীর গাঁ কেপে উঠলো।তবে কি রিমা চলে গেলে সে একা হয়ে যাবে?হয়তো হয়ে যাবে।তখন এ বাড়িতে উরনচন্ডি হয়ে কেউ ঘুরে ভেরাবে না।কাউকে বকা দিতে হবে না।কেউ যখন তখন ঘরে ঢুকে বসে থাকবে না।

রিমা ঘরে এসে ঢুকতেই অবাক!অঙ্কন তার ঘরে এসে বসে আছে।ঠিক বসে নেই,একটি বই নিয়ে পরছে।রিমা ঘরে এসে ঢুকতেই অঙ্কন রিমার দিকে তাকিয়ে একটু হাসলো।তারপর রিমা ঠাঠ্রার ছলে বললো,''আজ সূর্য কোন দিকে উঠেছে?তুমার দেখা পাওয়া গেল!''
অন্যদিন হলে অঙ্কন চুপচাপ করে চলে যেত।সে খুব একটা কথা বলেনা।আর এ বিষয়ে তার বাড়ির কারো কোনো আপত্তি নেই যা আছে আফসোস।অঙ্কনের সে আফসোসটাও নেই।আছে এক বুক কষ্ট।সে কষ্টে অঙ্কন ধীরে ধীরে পাথর হয়ে গিয়েছে।কিন্তু আজ কেন জানি রিমার সাথে কথা বলতে তার ভীষন ইচ্ছে করছিলো।মনে হচ্ছিলো অনেক গল্প করতে।
অঙ্কন কিছুক্কন রিমার দিকে চুপ করে তাকিয়ে রইলো তারপর আবার একটু হেসে বললো,''তারপর!শেষমেষ জামাইর বাড়ি চলে যাচ্চস''
রিমা চুপ করে নিজেকে সামলে নিলো,তারপর আবার হেসে বললো,''হুম।কেনো তোর একা একা লাগবে?''
-তোর কি মনে হয়,লাগা কি উচিত?
-অবশ্যই না।জগৎে একা হওয়ার যে কঠীন অনুভতি সেটা তোর নেই,তুই সেটা কাটিয়ে উঠে গেছিস।
অঙ্কন ঠোটের কোনে হাসি ফুটিয়ে বললো,''তবে তাই আমার একা লাগবে না।''
রিমা অঙ্কনের চোখে চোখ রেখে এএকটু উচ্ছ স্বরে বলে উঠলো,''তুই কি জানস ভাইয়া তুই আসলে মরে গেছস,এই যে আমি এখন যার সাথে কথা বলছি এটা শুধু মাএ একটা শরীর,যার মাজে কোনো অনুভুতি নেই।''
-একদম মিথ্যে বলিস নি।সত্য কথা,হয়তো আমি মরে গেছি।''এ কথা বলেই অঙ্কন কিছুক্কন চুপ করে রইলো।তারপর আবার আস্তে করে রিমাকে জিগ্গেস করলো,''আচ্ছা তুই কি থেকে যেতে পারবি সারাজীবন এ বাড়িতে।বিয়েটা বাদ দিয়ে দেয়?''
রিমা পুরো বেবাচেকা খেয়ে গেল,আশ্চর্যবোধক ভাবে বললো,''সব মেয়েকে বিয়ে করে চলে যেতে হয়।''
-কেন চলে যেতে হয়?তুই থেকে যা।
-এটা নিয়ম তাই চলে যেতে হয়।আর আমাকেও যেতে হবে।
-আসলে কেউ থেকে যায় না।থেকে যায় শুধু মায়া।এই যে তুই চলে যাবি তোকে আটকানো যাবে না,অথচ এতদিন পর্যন্ত এই বাড়িই তোর সবচেয়ে বেশি ভালোবাসার জায়গা ছিলো।কিন্তু নিয়মের কারনে তোকে নতুন জায়গায় যেতে হবে।সেখানে আকরো অনেক ভালোবাসা পাবি।তাহলে বলতো তোর ভালোবাসা কি কমে যাবে?''
রিমা গম্ভির হয়ে বললো,'' না।''
-তাহলে তো আমাদের কাছে চলে আসতে ইচ্ছে হবে!অথবা সে বাড়িতে মন বসবেনা?
রিমা অবাক হয়ে তাকেয়ে রইলো,কিছু বলার খুজেঁ না পেয়ে বলে উঠলো,''না''
-কি না?
-জানিনা।
-হুম।আসলে এটাই ভালোবাসা,নতুন জায়গায় গিয়ে তোর একা একা লাগবে,যদিও কিছুদিন পর ঠিক হয়ে যাবে।তবে তাতে ভালোবাসা কমে যাবে না।আমরা কেউই চিরদিন থেকে যাই না,থেকে যায় মায়া।আর শুধু মাএ এই মায়া নিয়ে বেচেঁ থাকা যায়,আমি ঠিক এমন করেই বেচেঁ থাকি।এই যে তুই চলে যাবি আমার এক্টুও কষ্ট হবে না।কারন যাকে ভালোবাসি সে পাশে থাকাটা জরুরি নয়।অথবা সে ভালোবাসতে হবে সেটাও জরুরি নয়।জরুরি হচ্ছে ভালোবাসার গভিরতা।সেটা শক্ত হলে ভালোবাসার মানুষকে সবসময় অনুভব করা যায়।
রিমা অট্রো হাসি দিয়ে বললো,''হুম বুঝছি।''
-কিছুই বুঝছ নাই,বুঝলে একা হয়ে যাওয়ার ভয় রাখিস না।আর তুই চলে যাওয়ার পর কজন একা হবে তার হিসাব গুনিস না।
-হুম।আচ্ছা ছরি কঠিন সত্য কথা তোকে বলে ফেললাম।বলেই রিমা জোরে জোরে হাসতে লাগলো।
অঙ্কন রিমার হাসি দেখে অনেকটা সস্তিবোধ করলো।তার মনে হলো এবার হয়তো রিমার একা অনুভতিটা হবে না।যদিও অঙ্কন নিজেই যেন ভীষণ অজানা কষ্টে পুরে যাচ্ছে।তার মনে হচ্ছে এতোক্ষন যা বলেছে সব মিথ্যা রিমা চলে গেলে সে নিসঙ্গবোধ করবে।

অঙ্কন তার ঘরে বিছানায় সুয়ে বই পরছে।বাইরে কিছু কুয়াসাও জমেছে,মনে হচ্ছে যেন কুয়াসাদের মিটিং বসেছে।বাইরে অনেক গুলো ছোট বাচ্চারা দৌরাদৌরি করছে,আত্বীয় হলেও এরা অঙ্কনের অচেনা।অঙ্কন একা থাকতে পছন্দ করে,জীবনের একটা সময় একাকিত্ব এসে দারিঁয়েছিলো অঙ্কনের দরজায়,সে একাকিত্ব অঙ্কন কে একা থাকতে সিখিয়ে দিয়েছে।অঙ্কন সে একাকিত্বকে আপন করে নিয়েছে।
অঙ্কন হঠাৎ খুব অবাক হয়ে জানালার দিকে তাকালো,তার জানালা দিয়ে এসে ছোট্র ছোট্র চুরুই পাখি ঘুরছে।একটি পাখি জানালা দিয়ে ঢুকে অঙ্কনের টেবিলে রাখা বইয়ের উপর বসেছে,আবার উরে চলে যাচ্ছে।অঙ্কন গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে রইলো,হঠাৎ অঙ্কনের চোখ বন্ধ হয়ে গেল।
মাগরিবের আজান দিচ্ছে,অঙ্কনের ঘুম ভাঙ্গলো,কিন্তু একটু অদ্ভুত ভাবে।ঘুম থেকে উঠে বসতে বসতে অঙ্কন একটি বাচ্চার কন্নার আওয়াজ পাচ্ছিলো।অঙ্কন জানালা বন্ধ করে ঘরের বাতি জালায়।সাথে করে বারান্দার বাতিটাও জ্বালিয়ে দেয়।বারান্দায় বাতি জ্বলতেই কান্নার আওয়াজ থেমে যায়।অঙ্কন সিড়ি বেয়ে নিচে গিয়ে দেখে একটি বাচ্চা মেয়ে নিচের ঘরের দরজার সামনে বসে আছে।আর তার গালে বেয়ে পরছে পানি।অঙ্কন কে দেখে ছোট ছোট হাত বের করে চোখের জল মুছছে।কাপরের ভাজ হতে যেন হাত দুটি বের হতে চাচ্ছে না।দেখে বুঝাই যাচ্ছে বাচ্চাটা প্রচুর ভয় আর শীতে জরজরিত।অঙ্কন বাচ্চার দিকে তাকিয়ে একটু করে হাসলো।তারপর জিগ্গেস করলো,''তোমার নাম কি?''
বাচ্চাটা অঙ্কনের দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে রইলো।অঙ্কন আবারও একটু করে হেসে বললো,''ভয় পেয়েছ?''
বাচ্চাটি মাথা ঝাকিয়ে হা বোধক উওর দিলো।অঙ্কন বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিলো,তারপর সিড়ি বেয়ে তার ঘরে গেল।।বাচ্চাটিকে তার বিছানায় বসিয়ে সে একটা চাদর বাচ্চাটির দিকে এগিয়ে দিলো।বাচ্চাটি চাদর জরিয়ে ছোট্র করে একটা হাসি দিলো।অঙ্কন জিগ্গেস করলো,''তোমার নাম কি?''
-লিমা।অনেকটা আস্তে করেই বললো।
-চা খাবে?
বাচ্চাটি মাথা ঝাকাতে ঝাকাতে বললো,''না''
-বিস্কুট খাবে?
-হুম।
অঙ্কন নিজের জন্য একটা চা বানিয়ে,বিস্কিটের বক্সটা লিমার দিকে এগিয়ে দিলো।লিমা বিস্কুট নিয়ে খেতে খেতে বললো,''আমি মায়ের কাছে যাব।''
-আচ্ছা।তোমার বাবার নাম কি?
-জামিল।
অঙ্কন ঠিক চিনতে পারলো না,তার মনে হয় না এ নামের কোনো আত্বিয় তার আছে বলে।অঙ্কন কপাল বাকাঁ করে আবার জিগ্গেস করলো,''তোমার মায়ের নাম কি?''
-মারিয়া।
অঙ্কন চুপ করে রইলো।মনে হলো এক মিনিটের জন্য তার পায়ের নিচ হতে মাটি সরে গিয়েছে,মনের মাজে উল্লাসিত হচ্ছে হাহাকার।অ ঙ্কন নিজেকে সামলে নিয়ে,লিনার দিকে কিছুক্কন তাকিয়ে রইলো।তারপর লিনা কে কোলে নিয়ে বড় ঘরের দিকে যাচ্ছিল,বড় ঘরের দিকে যেতে তার একদম ইচ্ছে হচ্ছিলো না।কিছুদূর যেতেই দেখলো ওদিকে কয়েকটি মেয়ে বসে আছে।কুয়াসায় ঠিক করে দেখা যাচ্ছিলো না।তবে অঙ্কন বুঝতে পারলো সেখানে তার খালাতো বোন তানিয়া রয়েছে।অঙ্কন দারিয়েঁ গেল।মেয়েগুলো থেকে কয়েকজন তাকে দেখতে পেয়ে আড়চোখে তাকিয়ে চেনার চেষ্টা করছিলো।অঙ্কন জোরে করে তানিয়া কে ডেকে উঠে।তানিয়া প্রথমে দূর থেকে না চিনলেও,একটু এগোতেই চিনতে পারলো।সস্তির নিশ্বাস নিয়ে একটু হসে বললো,''ওহ অঙ্কন!''
-হুম।আচ্ছা এই বাচ্ছাটাকে নিয়ে যা,কার বাচ্ছা হারিয়ে গিয়ে কান্না করছিলো।
তানিয়া চাপা হাসি দিতে দিতে বললো,''সত্যি কি তুই জানস না এটি কার মেয়ে?''
-নাহ।
তানিয়া উৎসাহের সাথে লিনার মায়ের নাম বলতে যাবে এ সময় অঙ্কন তাকে থামিয়ে দিয়ে বললো,''আমি জানতে চাইনা।''
অঙ্কন একটি সিগারেট ধরিয়ে নিজের ঘরের দিকে ফিরে গেলো।তার মনে হচ্ছে সে কি আসলেই চিনে না মারিয়া নামটিকে!নাকি ভীষণ কাছে থেকে চিনে।এই মারিয়া কি সে,যাকে দেখে প্রথম ভালোবাসার অনুভুত হয়ে ছিল অঙ্কনের বুকে।অঙ্কন কিছু ভাবতে পারছে না,তার মাথা ভনভন করছে।অঙ্কন একটু তারাহুরো করে তার ঘরে গিয়ে চেয়ার টেনে বসে পরলো।মনে হচ্ছে মাথার ব্যাথাটা বেরে গেছে।অঙ্কন আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলোনা,তার চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসছে।সামনের সবকিছু ঝাপসা লাগছে।তারপর অঙ্কন জ্ঞান হারালো।

অঙ্কনের মাথায় ব্রেইন টিউমার।ডাক্তার তার বেচেঁ থাকার আশা ছেরে দিয়েছেন চার বছর আগেই।অঙ্কনকে যখন ডাক্তারখানা থেকে নিয়ে আসা হয়েছিলো তখন মারিয়া তিন ঘন্টা ধরে অঙ্কনকে জরিয়ে কাদঁছিলো।অঙ্কন তাকে সান্তনা দিতে বলেছিলো,''আরে আমি মরছিনাতো ডাক্তার বলেছে এখনো অনেক দিন আছি।''
মারিয়ার কান্না থামাতে সেদিন আরো অনেক সত্য-মিথ্যার বাক্য জুরতে হয়েছিল অঙ্কনকে।সেদিন হতে মারিয়া একটু সময় পেলেই চলে আসতো অঙ্কনের কাছে।সম্পর্কে মামাতো বোন হওয়ায় তার জন্য অঙ্কনের কাছে থাকাটা হয়ে উঠেছিলো আরো সহজ।সে অঙ্কনের সব বাজে স্বভাব বদলে দিতে যেন নিজেই হয়েছিল উন্মাদ।একবার শীতে অঙ্কন কে ধমক দিয়ে বললো,''চাদর ময়লা হলে ধুয়ে দিতে হয়,উল্টে গায়ে দিচ্ছ কেনো?''
অঙ্কন কিছু না বলে হালকা হেসে চায়ে চুমুক দিলো।
হঠাৎ করে মারিয়ার আসা বন্ধ হয়ে গেল।অঙ্কন মনে মনে ভীষন অপেক্ষায় থাকত,তবে বাইরে থেকে তাকে দেখে কেউ তা টের পেত না।টানা চারদিন মারিয়ার সাথে কোনো যোগাযোগ ছিলোনা অঙ্কনের।চারদিন পর মারিয়া এসেই খুব জোরে তাকে জরিয়ে ধরে।অঙ্কন জরিয়ে ধরার কারন জানে।সে জানে মারিয়া তাকে জরিয়ে ধরে কেনো কাদছেঁ।মারিয়ার বিয়ে ঠিক হয়েছে।কথাটি দুদিন আগেই রিমা তাকে বলেছে।তাও অঙ্কন সব না জানার মতো করে মারিয়া জিজ্ঞেস করলো,''কি হয়েছে?''
মারিয়া কাদতেঁ কাদতে বললো,''বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন!''
অঙ্কন কিছুক্কন চুপ করে রইলো।হয়তো নিজেকে সময় দিয়ে শক্ত করে নিচ্ছিলো।তারপর বললো,''তোমাকে বিয়েটা করে নেয়া উচিত।''
মারিয়া তখনো কেদেইঁ যাচ্ছিলো।অঙ্কন কিছুক্কন থেমে আবারো বললো,''আমার কাছে সময়ই নেই,যে কোনো সময় আমি মরে যেতে পারি।আমি চাইনা আমি মরে যাওয়ার পর তুমি একা হয়ে যাও।''
মারিয়া অঙ্কন কে শক্ত করে ধরে ছিলো।সন্ধে অব্দি মারিয়া অঙ্কনকে জরিয়ে ধরে বসে ছিলো।অঙ্কন ও চুপ হয়ে ছিলো,কেউ কোনো কথা বলছিলো না।অথচ এই নিরবতায় ছিলো দুটি মানুষের হাহাকার ভরা চিৎকার।মারিয়া চলে যাওয়ার সময় অঙ্কনের দিকে তাকিয়ে বলেছিলো,''তোমাকে ছেরে যাওয়ার শর্ত,আমাকে ভুলে যেও।''
অঙ্কন চুপ করে রইলো,তার ঠোট কাপছিল,হয়তো কিছু বলতে চাইছিলো। কিন্তু কিছুই বলেনি,সেদিন অঙ্কনের ভীষন কান্না পায় কিন্তু তার চোখে জল আসেনি।
সেদিনের পর দু বছর হয়ে গেছে,অঙ্কনের কিছু হয়নি।তবে এই কদিন ধরেই হঠাৎ করে অঙ্কনের মাথায় প্রচুর ব্যাথা করে,ব্যথা এতই তীব্র যে প্রতিবার ব্যথা উঠলেই অঙ্কন জ্ঞান হারায়।

দরজায় ঠুক ঠুক আওয়াজে অঙ্কনের ঘুম ভাঙ্গে।নিজেকে আবিস্কার করে চেয়ারের মাজে।উঠে দারিয়েঁ দরজা খুলেই,অঙ্কন শক্ত হয়ে পাথরের মতো দারিয়েঁ থাকে।তার ঘরে মারিয়া এসেছে।অঙ্কন কি বলবে খুজে পাচ্ছে না।মারিয়াও চুপ করে অঙ্কনের দিকে তাকিয়ে রইলো।অঙ্কন নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে বললো,''ভেতরে আসো।''
মারিয়া ভেতরে ঢুকে বিছানায় বসলো।অঙ্কন মুখ ধুয়ে এসে চা বানাচ্ছে।মারিয়ার সাথে কি কথা বলবে খুজে পাচ্ছেনা,মারিয়াও যেন কথা খুজে পাচ্ছে না।তারপর হঠাৎ করে মারিয়া বলে উঠলো,''কি অদ্ভুত তাই না?''
অঙ্কন কিছু না বুঝে মারিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,''কি?''
-এই যে,এই জায়গাটায় বসে দুটি মানুষের এতো গল্প হতো!গল্প করতে করতে সন্ধা নামত,কিন্তু তাদের গল্প যেন অপুর্ণই রয়ে যেত।অথচ আজ এক জন অন্য জনের সাথে কি কথা বলবো সেটাই খুজেঁ পাচ্ছি না!''
অঙ্কন একটু হেসে মারিয়ার দিকে চা এগিয়ে দিলো।তারপর গায়ে চাদর জরিয়ে মারিয়ার সামনে এসে বসলো।
মারিয়া হেসে বললো,''ময়লা চাদর উল্টো করে পরার অভ্যাস যায়নি তবে!''
-নাহ।তোমার স্বামি কি করে?
-সরকারি ব্যাংকের ম্যানেজার।
-হুম।লিমা কোথায়?
মারিয়া একটু অবাক হয়ে বললো,''লিমা কে চেনো?''
-হুম।কাল হারিয়ে গিয়ে আমার ঘরের নিচে বসে কান্না করছিলো।তখন কথা হয়ে ছিলো।
-ওহ।তুমি কেমন আছো?
-এই তো বেচেঁ আছি।
-মরছো না তাহলে?
-মরতে চেয়েছিলাম,মৃত্যু কেনো জানি এখনো আসেনি।
মারিয়া চুপ করে রইলো।মারিয়ার চোখ থেকে জল বেরিয়ে দু গাল বেয়ে পরছে।অঙ্কন মারিয়ার দিকে চুপ করে তাকেয়ে রইলো।তারই ইচ্ছে হচ্ছিলো মারিয়াকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে,তার চোখের জল মুছে দিতে।
মারিয়া বললো,''আমি চাই তুমি মরে যাও,আমি চাইনি এমন করে আমাদের দেখা হোক,যে দেখাতে একে অন্যর উপর কোনো অধিকার থাকে না।ভুলে যাওয়াটা ছিল উওম।হয়তো ভুলে গেলে অচেনা হয়ে এড়িয়ে চলা যেত।কিন্তু আসলে ভুলে যাও বললেই ভুলে যাওয়া যায় না,যে কথাটি আমরা বুঝতে পারিনি দু বছর আগে।তাই আমি চাই তুমি মরে যাও।''
একথা বলেই মারিয়া উঠে চলে গেলো।
অঙ্কন চুপচাপ বসে রইলো,মনে হয় তার মাথার ব্যাথাটা বেরে যাচ্ছে।কিন্তু অঙ্কন জ্ঞান হারাতে চায় না।আজ রিমার বিয়ে তাকে রিমার বিদায়ের সময় রিমার পাশে যেতে হবে,সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়ে জ্ঞান হারালো অঙ্কন।

রাত আটটা বাজে।মনের মাজে কেমন অস্তিরতা নিয়ে বিয়ে শেষ হলো রিমার।গেইটে গাড়ি দারিয়ে আছে,কিছুক্কনের মধ্যোই এই চেনা সব কিছু ছেরে চলে যেতে হবে তাকে।এত আত্বিয়দের ভীরের মাজেও তার চোখ দিয়ে সে অঙ্কন কে খুজেঁ বেরাচ্ছে ।তার খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো অঙ্কনের ঘরে গিয়ে অঙ্কনকে বলতে,''চলে যাচ্ছিরে,পুরো বাড়িটা তোর,এখন আর কেউ তোকে জ্বালাবেনা।''
প্রতাব চৌধুরী এগিয়ে এসে রিমা কে জরিয়ে ধরলেন।তার চোখ বেয়ে গরিয়ে পরছিলো জল।বাবাকে জরিয়ে ধরে অনেকটা কান্না জুরে দিয়েছিলো রিমাও।আস্তে আস্তে রিমাকে গারিতে তোলা হচ্ছিলো।শেষ বারের মতো পুরো বাড়িটা দেখে নিলো রিমা,তারপর আবারো তাকালো অঙ্কনের ঘরের দিকে।
অঙ্কনের জ্ঞান ফিরেছে মাএ।পুরো গায়ে ব্যাথা,সে যেন নরতেও পারছে না।তবু তারাহুরো করে ঘরের জানালা খুলে দিলো।রিমাকে পুরোপুররি দেখা যাচ্ছে না তবে একটু করে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তাকে লাল শারিতে ভীষন সুন্দর লাগছে।তার পর আর কিছু বুঝা যাচ্ছে না।মনে হচ্ছে গাড়িতে উঠে গেছে,তারপর গাড়ি ছেরে দিয়েছে।অঙ্কন কিছু বুঝতে পারছে না,প্রচন্ড রকমের মাথা ব্যাথা করছে তার।কিছুক্কনের মধ্যোই আবারো জ্ঞান হারালো অঙ্কন।
দুইতালায় দারিয়েঁ এক পলকেই রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছেন প্রতাব চৌধুরী।যতক্ষন পর্যন্ত বরের গাড়ি দেখা যাচ্ছিলো,প্রতাব চৌধুরী বেজা চোখে তাকিয়ে রইলেন।কেমন যেন কঠিন যন্তর্না দায়ক শূন্য অনুভুত হচ্ছিলো প্রতাব চৌধুরীর।যে অনুভুতি গুলো হয়তো প্রকাশ করা যায় না।

(সমাপ্ত)
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৩২০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২২/১০/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast