www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

শেষ বিকেলের পথ

আপনি জানেন? আপনি কি বলছেন? এ বাক্য প্রয়োগে কিছু ত্রুটি আছে, যা আপনার সাথে একেবারেই মানায় না।

কিছু সময় তার দিকে তাকিয়ে থেকে; আমি যা দৃষ্ট হয়েছি তা থেকে লেশমাত্র বুঝবার উপায় নেই যে, সে আমার এই নিতান্তই ভারী বাক্য বিয়োগ কিভাবে নিয়েছেন। কিন্তু প্রতি উত্তর তো দিতেই হয় তবে এনাকে সহজ তর বাক্য বলে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। ইনি সহজে ছেড়ে দেবার মত পাত্রী নন। এর কাছে তো বাক্যের হের ফের হওয়া চলবে না। বলছি কী, বাক্যের প্রাচীরে যাবেন না। তাতে বাক্যের প্রাচুর্যতাই প্রকাশ পাবে। আর অর্থ ভিন্নে অন্য চাওয়াকে প্রাধান্য দেওয়া হবে কিন্তু কী জানেন, একে যদি একটু যত্ন নিয়ে ভাবেন তাহলে এ বাক্য অর্থপূর্ণ ছাড়াও প্রিয় কোন এক বাক্যতে পরিণত হতে লেশমাত্র ত্রুটি রাখবে না। শুধু তাই নয়, এ বাক্যের আড়ালে যে বাক্য, তা কেবলই প্রাণ পাবার আশায় বারবার বিলাপ করে চলছে; আহা কখন তা বিচ্যুতি হয়। ভেবেই দেখুন না?

সে ক্ষীণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাল আর এক গাল হাসি ভরে বলতে লাগলো, বাক্য গঠন বুঝি না, শব্দ! সে তো কেবল অর্থের ভাণ্ডার; যেন ফুরোয় না। আর তারপর কেন যেন এর প্রসন্নে একটা ভয় কাজ করে, এ তো মহা মায়া। এর পদযুগল সীমাহীন পথ পারি দিতে চায়। তাতেও যেন তৃপ্ততা নেই।

হাসালেন আমায়! আসলে এতো বাহ্যিক কোন লাবণ্যতার অনুরাগের বহিঃ প্রকাশ নয়। এতো সেই অনন্তকাল পথ পারি দেবার প্রবল ইচ্ছা আর বেঁচে থাকার অনন্য প্রয়াস। আর তৃপ্ততা কেবল আকাংখাতে পরিব্যাপ্ত।
(কিছুক্ষণ পর)
কিছু মনে করবেন না, একটু হাটতে ইচ্ছে করছে। বলেই আমার দিকে তাকিয়ে রইল যেন তাতেই কোন এক চাওয়া অপেক্ষা করছে। আমি মাথা নেড়ে সায় দিয়ে তার সাথে হাটতে লাগলাম। কারও মুখে কোন কথা নেই, কী যেন এসে সময়কে শব্দহীন করে দিল। বাক্যহীন এই নীরবতা বারবার শব্দগুলো কেই নিবিড় ভাবে কাছে পেতে চাইল। কিন্তু কিছুই পেলাম না।

অবশেষে শব্দ হীনতায় শব্দ প্রাণ পেল। কী অদ্ভুত সে হাসি মুখ আর ভাবুক দৃষ্টি নিক্ষেপ; তার থেকে দৃষ্টি ফেরানো যেন কেবলই দুষ্কর। স্ব-শব্দে বলল, ভয় হয়; পাছে যদি সব মিছে হয়। তখন যদি খুব বেশী দেরি করে ফেলি আর আঁকড়ে ধরে রাখার ইচ্ছে যদি হারিয়ে ফেলি। তখনি বা কি বলবেন?

একেবারেই তা নয় আসল ব্যপারটা হল, শব্দ তার বাঁকানো অর্থ নিয়ে যদি অন্তর আত্মার গভীর উপলব্ধিতে বাসা বাঁধে। তখন কোন বাক্যের সাদ্ধি আছে তাকে নিশ্চয়তা দিবে। তা আমার জানা নেই। তবে এটুকু জানি বাঁকানো ধনুকে সাজানো তীর একবার না একবার লক্ষ্য ভেদ করবেই; তাতে পথ যেমনই হোক। শুধু শুধু বাক্যে মায়ার জাল বুনতে চাই না।

রাগ করছেন যে! বলেই মিষ্টি মিষ্টি হাসতে হাসতে বলল, আপনারা সবাই এক রকম সহজে মানতে চান না যে, কিছু বাক্যের অপেক্ষায় এমন হজারও প্রহর পারি দেয়া যায় বা কিছু বাক্য ওষ্ঠাগত প্রাণ তবুও অপেক্ষা করতে হয়। এটা নিয়ম।

এ খুব অন্যায় নিয়ম আপনাদের। এর প্রাচীর টপ্‌কে একবার দেখুন, তাতে নিরাশ হবার অবকাশ নেই। বাছ বিচার সে তো আপেক্ষিক যা সম্পূর্ণই নিজের মতো করে গড়ে নিতে হয়। আর তা না হলে হারাতে হয়। কারণ সময় বদলে দেয়।

আর পরে স্মৃতি হয়ে ব্যথা দেয় তাই না? বলেই আমার দিকে তাকিয়ে রইল যেন চোখের ভাষা সে বুঝতে চায়। কি অদ্ভুত তাই না?

হু, ওই যে না পাবার আকাংখা অন্তর আত্মায় বাসা বাঁধে আর মানসিক বিকারগ্রস্ত করে দেয়। তারপর কেন জানি স্তব্ধতা নেমে এল। যেন দু'জন দু'জনের শ্বাস ধ্বনি শুনছি। হঠাৎ তার দিকে চোখ যেতেই কেন যেন হৃদ পাশে এক শীতল হাওয়া বয়ে গেল। নীল শাড়ীতে হালকা কারু কাজ, হাতে কিছু কাচের চুরি, চোখে কালো ফ্রেমের চশমা আর মুখে পবিত্র কোন এক হাসি। সব মিলিয়ে পবিত্র আত্মার সে এক অনন্য সৃষ্টি।

এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?

আপনাকে দেখছি। কোথায় যেন একটা কিছুতে অপূর্ণতা রয়েছে।

কি সেটা?

আচ্ছা আপনি কি বেলি ফুল পছন্দ করেন?

হু, কেন বলুনতো?

তাতে আপনি আর আপনার হাসি এবং সুগন্ধীতে পূর্ণতা পেত।

মুচকি হাসি দিয়ে মৃদু সুরে বলল ,পরের বার সঙ্গে করে নিয়ে আসবেন আর পরিয়ে দেবেন। মনে থাকবে তো? আমি হাসি মুখে মাথা নেড়ে স্বায় দিলাম আর তারপর সেই পথে দু'জন হাটতে লাগলাম.........
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৬৫২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১০/০৫/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ফয়জুল মহী ১০/০৫/২০২০
    অপরূপ ভাবনা । সুনিপুণ বস্তুনিষ্ঠ প্রকাশ,,
 
Quantcast