www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

আলুটিলা গুহা ও তারেং

আলুটিলা গুহা ও তারেং
মোঃ রায়হান কাজী

খাগড়াছড়ি সদর থেকে বাসে করে যাত্রাশুরু করি দুপুর দুইটার দিকে। আনুমানিক বিকাল তিনটার মধ্যে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় পৌঁছায়। সেখান থেকে আমাদের মূল যাত্রাপথ শুরু হয়।মাটিরাঙ্গা উপজেলা থেকে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্র সমতল হতে ৩০০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট আলুটিলা বা আরবারী পাহাড় অবস্থিত।পাহাড়ের গিরিখাত আর অপরূপ সৌন্দর্য্যে উপভোগ করতে করতে আলুটিলা পার্কের প্রবেশ পথে এসে পৌঁছায়।বাস থেকে নামতেই এক উপজাতির সাথে দেখা। তাকে গুহা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই জানতে পারলাম স্থানীয়রা একে মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা বলে। প্রবেশ পথে গেইট থেকে জনপ্রতি ৪০ টাকা করো টিকিট সংগ্রহ করে ভিতরে প্রবেশ করি। কিছুটা পথ অতিক্রম করার পর সিঁড়ি দেখতে পেলাম। একজন লোককে গুহার অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামার কথা বল্লো। আমি সেই মোতাবেক প্রায় অনেকগুলো সিঁড়ি অতিক্রম করে অবশেষে গুহার মুখে এসে পৌঁছি। আসার সময় পাহাড়ি বনলতা আর বাহারি গাছের দৃশ্য আমার হৃদয়ে দোলা দেয়। মনে হতে থাকে প্রকৃতির সব সৌন্দর্য বুঝি পাহাড়ে লুকায়িত আছে।

গুহার মুখে কিছু লতাপাতা ঝুলন্ত আবস্থায় দেখতে পেলাম। যার মধ্যে দিয়ে একটা সুরঙ্গ পথ চলে গেছে ভিতরের দিকে। সেখান দিয়ে কিছু ভ্রমণ পিপাসুদের প্রবেশ করতে দেখলাম।আমিও আর দেরি না করে তাদের পিছু ছুটলাম সুরঙ্গের অভিমুখে। গুহাটি দেখতে অনেকটা ভূ-গর্ভস্থ টানেলের মত যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫০ ফুট।এই গুহাটি খুবই অন্ধকার ও শীতল। কোন প্রকার সূর্যের আলো প্রবেশ করে না।সুড়ঙ্গের তলদেশ পিচ্ছিল এবং পাথুরে। এর তলদেশে একটি ঝর্ণা প্রবহমান খানিকটা পথ যাওয়ার পরে গুহার ভিতরে অল্প পানি আছে দেখতে পেলাম। যার কারণে আমার জুতাগুলো খুলতে হয়েছে। খুলার পর পিচ্ছিল পাথরের উপর দিয়ে খালি পায়ে হাঁটতে একটু কষ্ট হচ্ছিল।গুহাটির উচ্চতা মাঝে মাঝে খুব কম হওয়ায় নতজানু হয়ে হেটে যেতে হয়েছে। তারউপর গুহার ভিতরে অন্ধকার সিমসাম পরিবেশ ভূতুড়ে বলে মনে হয়েছে।ফলে গুহার অন্ধকার পথটি পারি দিতে মোবাইলের ফ্লাস লাইটের প্রয়োজন পড়েছিলো। চলার পথে গুহার ভিতরে আমরা কিছু বন্ধু মিলে একসাথে মুখ দিয়ে জোরে জোরে শব্দ করা শুরু করি। উদ্দেশ্য ছিলো ভ্রমনটা উপভোগ্য করে তুলা। এসব দেখে একজন সেই শব্দ রের্কড করা শুরু করে।ফলে আমরা আরো জোরে জোরে শব্দ করি। অবশেষে ১০/১৫ মিনিট পড়ে অপর প্রান্তে পৌঁছি।

তাছাড়া বলতে গেলে আমি আগে কখনো গুহা দেখেনি কিংবা ভিতরে প্রবেশ করিনি। আলুটিলা গুহায় আমার প্রথম সুরঙ্গ পথ দেখা। সাথে সুরঙ্গের একমুখ দিয়ে প্রবেশ করে শেষপ্রান্তে গিয়ে বের হওয়ার পর উন্মাদনা আটকে রাখতে পারিনি।
ফলস্বরূপ বন্ধুদের সাথে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ি।সবকিছু মিলিয়ে ভিতরের পথচলাটা আমার কাছে বেশ রোমাঞ্চকর লেগেছে।

তারপর কিছুপথ সিঁড়ি বেয়ে পায়ে হেঁটে উপরে ওঠতে হয়েছে। উপরে উঠে আসার পরের মূহুর্তগুলোতে তারেং দাঁড়িয়ে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করলাম।প্রকৃতির নৈসর্গিক রূপ দেখে নিজের অপরিতৃপ্ত প্রাণকে কিছুটা হলেও শান্ত করলাম।সুদূরপ্রসারীত পথে নিজেকে অবলীলায় হারালাম সবুজের অবয় অরণ্যের খুব কাছে গিয়ে। অবশেষে গোধূলির আলো গায়ে মেখে পথফেরার প্রয়াস নিয়ে সম্মুখে এগুলাম। আর মনের কোণে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সযত্নে কিছু প্রকৃতির সৌন্দর্য লোকালাম।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ২৯৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৪/১২/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • বেশ
  • জানবক্স খান ১২/০১/২০২২
    ভালো লাগল। আর কিছু লিখুন।
  • ভাল লাগল।
  • আসলে খুব সুন্দর-----
  • ভ্রমণ করা মজার।
  • ফয়জুল মহী ১৪/১২/২০২১
    Good
 
Quantcast