নারী দিবসে গল্পচ্ছলে কৌতুকরস
প্রারম্ভিকাঃ (স্কীপ করে মূলগল্পে যেতে পারেন। ধৈর্য ধরে পুরোটা পড়বেন প্লিজ )
লঞ্চযোগে কুয়াকাটা-টু-ঢাকা যাচ্ছি। যতক্ষণ মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছে, ততক্ষণ সুযোগ বুঝে ফেসবুকে উঁকি মেরে আসছি, আবার যাচ্ছি । নির্ঘুম মধ্যরাতে হঠাৎ নিউজফিডে (ফুলটাইম পুরুষতান্ত্রিক কিন্তু পার্টটাইম নারীবাদী) এক সম্মানিত ব্যক্তির নারী দিবসের শুভেচ্ছাজ্ঞাপন সংক্রান্ত পোস্ট দেখতে পেলাম । মুহূর্তে কতগুলো কৌতুক মনে পড়ে গেলো । পরক্ষণে বাটন টিপে টিপে নির্ঘুম রাতটা কাজে লাগলাম ।
#মূল_গল্পঃ
মিঃ পরিমল দেশখ্যাত নারী বিষয়ক গবেষক; বলতে পারেন নারীবাদী অনলবর্ষী বক্তা। প্রতি বছর ৮ই মার্চ এলেই নারী স্বাধীনতার সপক্ষে একগাদা সুপারিশমালা নিয়ে তাঁর নারী বিষয়ক গবেষণালব্ধ জ্ঞান বিশেষ আলোচনায় উপস্থাপন করেন।
তাঁর দীর্ঘদিনের গবেষণায় উঠে এসেছে নারী জাগরণের ইতিকথা। উদাহরণ হিসেবে তিনি তাঁর কয়েক মাসের শিশুকন্যার রাত বিরাতে জেগে ওঠাকেও ইতিবাচকভাবে দেখতে ভুলে যান না কখনো । তাঁর গবেষণায় কখনো কখনো নারীর সপক্ষে প্রতিবাদের সুরও জেগে ওঠে ! প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে নারীকে 'পথে নামিয়ে আনার' অভিযোগ তিনি প্রায় প্রতিটা নারী দিবসেই বলে আসছেন।
আজকের অনুষ্ঠানেও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে তিনি একই সুরে অভিযোগ তুলে ধরেন, "প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার কারণেই নারী সমাজ স্কুল-কলেজের সামনের রাস্তায় বসে চাকুরীর বদলে আজ বাদাম খুঁটে খুঁটে আড্ডা দেয় সন্তানকে মানুষ করার জন্য । হায়রে অধঃপতন ! অবশ্য আড্ডাচ্ছলে পুরুষ সমাজের স্বরূপ নিয়ে খুঁটিনাটি আলোচনাও অভিভাবক নারীর ভবিষ্যত জাগরণের ইঙ্গিত বহন করে বলে পরিমল সাহেবের অভিমত ।
এবার নিজ স্ত্রীর সায়ত্তশাসন ও স্ত্রীর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়ে কিছু বলতে যাবেন ঠিক সেই মুহূর্তেই ছিপছিপে পাতলা গড়নের চৌকস উপস্থাপিকার ওপর চোখ আটকে গেলে এক চিলতে রহস্যঘেরা হাসি হাসলেন।
ভদ্রলোকের হাসিটা যে ভিন্ন অর্থবহ তা বুঝতে পেরে উপস্থাপিকা নিচু গলায় বললেন আপনার হাসি দেখলে…
বক্তার কথা আটকে গেলো !
(অতিথিবৃন্দ সবাই তাকিয়ে ছিলেন বলে বক্তা বিব্রত হতে পারেন ভেবে উপস্থাপিকা ইশারা ইঙ্গিতে বোঝালেন যে, তাঁর কথার অর্থটা বক্তার বক্তব্য শেষে বলবেন। এই বলে উপস্থাপিকা একটু দূরে এগিয়ে দাঁড়ালেন )
পেশায় ডাক্তার অবিবাহিতা সুন্দরী উপস্থাপিকার বাকি "না-বলা" কথাটুক শোনার অপেক্ষায় অদ্যকার নারী বিষয়ক বক্তৃতা শেষ করার প্রবল ইচ্ছে হলেও কমপক্ষে বছরজুড়ে জমে থাকা নারীর অধিকার বিষয়ক গবেষণালব্ধ মনের ভাবটা প্রকাশ করার ধৈর্য্য ধারণ করলো ।
আলোচ্য অনলবর্ষী বক্তার যুক্তিনির্ভর (!) বক্তব্যে কর্ণপাত না করে
দর্শক সারিতে উপবিষ্ট দু'জন বয়স্ক পরিচিতা নারী পরস্পর বকবক চালিয়ে যাচ্ছেন।
: কী আপা, আপনার ছেলের নতুন বউ কেমন বুঝতেছেন?
: বুঝলেন আপা, আমি মানুষ পুরনো আমলের হলেও ছেলের বউয়ের ব্যাপারে কিন্তু সম্পূর্ণ আধুনিক।
: কী রকম?
: যেমন ধরুন, নারী স্বাধীনতায় আমি পূর্ণ বিশ্বাসী। আমার ঘরের কথাই ধরুন না… আমার বউমার কাপড় ধোয়া থেকে শুরু করে রান্নাবান্না, ঘর গোছানো, মশলা বাটা কোনো কাজেই আমি নাক গলাই না… তাঁর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হবে দেখে বুয়াটাকেও সেই কবেই বাদ দিয়েছি।
যাইহোক,
বক্তার মূল বক্তব্যে ফিরে আসি ! প্রকাশ্যে নারীবাদী হলেও অন্তরে
পুরুষবাদী চেতনার ধারক ও বাহক মিস্টার পরিমল অনেকক্ষণ ধরে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিতে দিতে এক পর্যায়ে মনের অজান্তে পুরুষের পক্ষে চলে যান।
"সম্মানিত উপস্থিতির মধ্যে পুরুষরা যারা স্ত্রীকে ভয় পান, তারা বাম দিকের লাইনে দাঁড়ান,আর যারা ভয় পান না, তারা ডান দিকের লাইনে দাঁড়ান।"
ডান দিকের লাইনে মাত্র একজন ব্যাক্তি দাঁড়ালো। বক্তা খুশি হয়ে এই বীরপুরুষরে সামনে ডাকলেন ও বললেন "আপনাকে স্বাগতম, আপনার মতো বীরপুরুষই আমাদের পুরুষ জাতির প্রয়োজন। আপনিই একমাত্র পুরুষ যিনি স্ত্রীকে ভয় পান না !"
এই কথা বলতেই বীরপুরুষের চেহারায় ভয় দেখা গেলো। গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন, "জনাব আসলে ব্যাপারটা এমন নয়। আমার স্ত্রী পাশের এলাকার নারী সংঘের প্রেসিডেন্ট। উনি আপনার বক্তৃতা রেকর্ড করতে বলেছেন আর বলেছেন সবাই যেদিকে যায়, তোমাকে যেনো সেদিকে না দেখি, ভীড়ের মধ্যে যাইবে না, সোনা । তাই ভীড় এড়াতে আমি ডানদিকের লাইনে দাঁড়িয়েছি।
আরেকটি কথা কান পেতে শুনুন , আপনার স্ত্রীও আমার স্ত্রীর পাশে বসে আছেন। আপনার বক্তৃতার রেকর্ড উনিও পরবর্তীতে শুনবেন জানিয়েছেন !
এই কথা শুনে বক্তার অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন ভেবেই কথিত বীরপুরুষ জানালেন উনারা আপনার বক্তব্য শুনছেন না এমনকি উপস্থাপিকার সাথে আপনার কানাঘুষা আপনার স্ত্রী দেখেন নি । আমি তো শুধু মাইকে দেয়া বক্তব্য রেকর্ড করেছি, ভিডিও করছি না। দেখুন ওনারা পিছনের এককোণে নিজস্ব গল্পে মেতে আছেন।
এহেন কথায় বক্তা যেনো পুনরায় প্রাণ খুঁজে পেলেন। কিন্তু মুহূর্তেই আলোচনার প্রেক্ষিতে উপস্থাপিকার কথা মনে পড়ে গেলো
সুতরাং
পরবর্তী বক্তার (যার নামে থানায় একাধিক বার স্ত্রী নির্যাতন ও গৃহপরিচারিকার লাঞ্ছনার মামলা চলমান) নারীর স্বাধীনতা/জাগরণ বিষয়ক তেজস্বী বক্তৃতার এক ফাঁকে মিঃ পরিমল আলোচ্য উপস্থাপিকাকে একটু ইঙ্গিত করলেন
মিঃ পরিমলঃ হাই ম্যাম, আপনি কী যেনো বলতে চাচ্ছিলেন আমি হাসলে…..(বুকের বাঁ পাশটা রোমান্টিক টোনে মোচড়ে উঠলো খুব)
উপস্থাপিকাঃ আপনি হাসলে …. না থাক !
বাসায় আসেন একদিন !
মিঃ পরিমলঃ সত্যিইই ? আপনি কি সিঙ্গেল ম্যাডাম ?
উপস্থাপিকাঃ না। তবে আমি একজন ডেন্টিস্ট ।
পরিমল সাহেব বুদ্ধিমান মানুষ; কৌশলগত অপমান বুঝতে পেরে দাঁতে দাঁত চেপে (ডেন্টিস্ট যাতে আবার তাঁর দন্ত চিকিৎসার কথা না বলে ফেলেন সেই লজ্জায়) কিছুই না বোঝার ভান করে বলে ফেলেন,
‘'মেয়েদের কাজ হচ্ছে ঘরে বসে সন্তান প্রসব করা, এসব ডাক্তার-মোক্তার বা এমন জাতীয় অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকা হওয়ারই বা প্রয়োজন কী?’
ডেন্টিস্ট উপস্থাপিকাঃ আপনার মতো সন্তান প্রসব করার চেয়ে অন্য যে কোনো কাজ যেকোনো মেয়ের জন্য গৌরবের, সেটা বোঝাতেই ডাক্তার হয়েছি জনাব ।
আগেই বলেছি পরিমল সাহেব চতুর লোক । তাই আলোচনার বিষয়বস্তু পাল্টাতে নারীর পক্ষে পুনরায় সাফাই গাইতে শুরু করলেন
"জানেন আমার স্ত্রীকে না আজকে সব ধরনের গৃহস্থালির কাজ থেকে মুক্ত রেখেছি !"
উপস্থাপিকাঃ বাহ ! শুনে ভালো লাগলো !
মিঃ পরিমলঃ "তবে আজকের কাজ গতকালকেই করিয়ে নিয়েছি "
উপস্থাপিকাঃ গর্ রর্ রর ..
#ডিসক্লেইমারঃ চরিত্রগুলো কাকতালীয়। তবে কৌতুকগুলো নিছক কৌতুক না বাস্তব, তা পাঠকের বিবেচ্য বিষয়।
তাৎক্ষণিক লেখা প্রযোজ্যক্ষেত্রে ক্ষমার্হ ও সংশোধনযোগ্য। ।
সর্বোপরি,
সকল নারীকে এবারের #নারী দিবসের নিরন্তর শুভেচ্ছা
লঞ্চযোগে কুয়াকাটা-টু-ঢাকা যাচ্ছি। যতক্ষণ মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছে, ততক্ষণ সুযোগ বুঝে ফেসবুকে উঁকি মেরে আসছি, আবার যাচ্ছি । নির্ঘুম মধ্যরাতে হঠাৎ নিউজফিডে (ফুলটাইম পুরুষতান্ত্রিক কিন্তু পার্টটাইম নারীবাদী) এক সম্মানিত ব্যক্তির নারী দিবসের শুভেচ্ছাজ্ঞাপন সংক্রান্ত পোস্ট দেখতে পেলাম । মুহূর্তে কতগুলো কৌতুক মনে পড়ে গেলো । পরক্ষণে বাটন টিপে টিপে নির্ঘুম রাতটা কাজে লাগলাম ।
#মূল_গল্পঃ
মিঃ পরিমল দেশখ্যাত নারী বিষয়ক গবেষক; বলতে পারেন নারীবাদী অনলবর্ষী বক্তা। প্রতি বছর ৮ই মার্চ এলেই নারী স্বাধীনতার সপক্ষে একগাদা সুপারিশমালা নিয়ে তাঁর নারী বিষয়ক গবেষণালব্ধ জ্ঞান বিশেষ আলোচনায় উপস্থাপন করেন।
তাঁর দীর্ঘদিনের গবেষণায় উঠে এসেছে নারী জাগরণের ইতিকথা। উদাহরণ হিসেবে তিনি তাঁর কয়েক মাসের শিশুকন্যার রাত বিরাতে জেগে ওঠাকেও ইতিবাচকভাবে দেখতে ভুলে যান না কখনো । তাঁর গবেষণায় কখনো কখনো নারীর সপক্ষে প্রতিবাদের সুরও জেগে ওঠে ! প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে নারীকে 'পথে নামিয়ে আনার' অভিযোগ তিনি প্রায় প্রতিটা নারী দিবসেই বলে আসছেন।
আজকের অনুষ্ঠানেও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে তিনি একই সুরে অভিযোগ তুলে ধরেন, "প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার কারণেই নারী সমাজ স্কুল-কলেজের সামনের রাস্তায় বসে চাকুরীর বদলে আজ বাদাম খুঁটে খুঁটে আড্ডা দেয় সন্তানকে মানুষ করার জন্য । হায়রে অধঃপতন ! অবশ্য আড্ডাচ্ছলে পুরুষ সমাজের স্বরূপ নিয়ে খুঁটিনাটি আলোচনাও অভিভাবক নারীর ভবিষ্যত জাগরণের ইঙ্গিত বহন করে বলে পরিমল সাহেবের অভিমত ।
এবার নিজ স্ত্রীর সায়ত্তশাসন ও স্ত্রীর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়ে কিছু বলতে যাবেন ঠিক সেই মুহূর্তেই ছিপছিপে পাতলা গড়নের চৌকস উপস্থাপিকার ওপর চোখ আটকে গেলে এক চিলতে রহস্যঘেরা হাসি হাসলেন।
ভদ্রলোকের হাসিটা যে ভিন্ন অর্থবহ তা বুঝতে পেরে উপস্থাপিকা নিচু গলায় বললেন আপনার হাসি দেখলে…
বক্তার কথা আটকে গেলো !
(অতিথিবৃন্দ সবাই তাকিয়ে ছিলেন বলে বক্তা বিব্রত হতে পারেন ভেবে উপস্থাপিকা ইশারা ইঙ্গিতে বোঝালেন যে, তাঁর কথার অর্থটা বক্তার বক্তব্য শেষে বলবেন। এই বলে উপস্থাপিকা একটু দূরে এগিয়ে দাঁড়ালেন )
পেশায় ডাক্তার অবিবাহিতা সুন্দরী উপস্থাপিকার বাকি "না-বলা" কথাটুক শোনার অপেক্ষায় অদ্যকার নারী বিষয়ক বক্তৃতা শেষ করার প্রবল ইচ্ছে হলেও কমপক্ষে বছরজুড়ে জমে থাকা নারীর অধিকার বিষয়ক গবেষণালব্ধ মনের ভাবটা প্রকাশ করার ধৈর্য্য ধারণ করলো ।
আলোচ্য অনলবর্ষী বক্তার যুক্তিনির্ভর (!) বক্তব্যে কর্ণপাত না করে
দর্শক সারিতে উপবিষ্ট দু'জন বয়স্ক পরিচিতা নারী পরস্পর বকবক চালিয়ে যাচ্ছেন।
: কী আপা, আপনার ছেলের নতুন বউ কেমন বুঝতেছেন?
: বুঝলেন আপা, আমি মানুষ পুরনো আমলের হলেও ছেলের বউয়ের ব্যাপারে কিন্তু সম্পূর্ণ আধুনিক।
: কী রকম?
: যেমন ধরুন, নারী স্বাধীনতায় আমি পূর্ণ বিশ্বাসী। আমার ঘরের কথাই ধরুন না… আমার বউমার কাপড় ধোয়া থেকে শুরু করে রান্নাবান্না, ঘর গোছানো, মশলা বাটা কোনো কাজেই আমি নাক গলাই না… তাঁর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হবে দেখে বুয়াটাকেও সেই কবেই বাদ দিয়েছি।
যাইহোক,
বক্তার মূল বক্তব্যে ফিরে আসি ! প্রকাশ্যে নারীবাদী হলেও অন্তরে
পুরুষবাদী চেতনার ধারক ও বাহক মিস্টার পরিমল অনেকক্ষণ ধরে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিতে দিতে এক পর্যায়ে মনের অজান্তে পুরুষের পক্ষে চলে যান।
"সম্মানিত উপস্থিতির মধ্যে পুরুষরা যারা স্ত্রীকে ভয় পান, তারা বাম দিকের লাইনে দাঁড়ান,আর যারা ভয় পান না, তারা ডান দিকের লাইনে দাঁড়ান।"
ডান দিকের লাইনে মাত্র একজন ব্যাক্তি দাঁড়ালো। বক্তা খুশি হয়ে এই বীরপুরুষরে সামনে ডাকলেন ও বললেন "আপনাকে স্বাগতম, আপনার মতো বীরপুরুষই আমাদের পুরুষ জাতির প্রয়োজন। আপনিই একমাত্র পুরুষ যিনি স্ত্রীকে ভয় পান না !"
এই কথা বলতেই বীরপুরুষের চেহারায় ভয় দেখা গেলো। গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন, "জনাব আসলে ব্যাপারটা এমন নয়। আমার স্ত্রী পাশের এলাকার নারী সংঘের প্রেসিডেন্ট। উনি আপনার বক্তৃতা রেকর্ড করতে বলেছেন আর বলেছেন সবাই যেদিকে যায়, তোমাকে যেনো সেদিকে না দেখি, ভীড়ের মধ্যে যাইবে না, সোনা । তাই ভীড় এড়াতে আমি ডানদিকের লাইনে দাঁড়িয়েছি।
আরেকটি কথা কান পেতে শুনুন , আপনার স্ত্রীও আমার স্ত্রীর পাশে বসে আছেন। আপনার বক্তৃতার রেকর্ড উনিও পরবর্তীতে শুনবেন জানিয়েছেন !
এই কথা শুনে বক্তার অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন ভেবেই কথিত বীরপুরুষ জানালেন উনারা আপনার বক্তব্য শুনছেন না এমনকি উপস্থাপিকার সাথে আপনার কানাঘুষা আপনার স্ত্রী দেখেন নি । আমি তো শুধু মাইকে দেয়া বক্তব্য রেকর্ড করেছি, ভিডিও করছি না। দেখুন ওনারা পিছনের এককোণে নিজস্ব গল্পে মেতে আছেন।
এহেন কথায় বক্তা যেনো পুনরায় প্রাণ খুঁজে পেলেন। কিন্তু মুহূর্তেই আলোচনার প্রেক্ষিতে উপস্থাপিকার কথা মনে পড়ে গেলো
সুতরাং
পরবর্তী বক্তার (যার নামে থানায় একাধিক বার স্ত্রী নির্যাতন ও গৃহপরিচারিকার লাঞ্ছনার মামলা চলমান) নারীর স্বাধীনতা/জাগরণ বিষয়ক তেজস্বী বক্তৃতার এক ফাঁকে মিঃ পরিমল আলোচ্য উপস্থাপিকাকে একটু ইঙ্গিত করলেন
মিঃ পরিমলঃ হাই ম্যাম, আপনি কী যেনো বলতে চাচ্ছিলেন আমি হাসলে…..(বুকের বাঁ পাশটা রোমান্টিক টোনে মোচড়ে উঠলো খুব)
উপস্থাপিকাঃ আপনি হাসলে …. না থাক !
বাসায় আসেন একদিন !
মিঃ পরিমলঃ সত্যিইই ? আপনি কি সিঙ্গেল ম্যাডাম ?
উপস্থাপিকাঃ না। তবে আমি একজন ডেন্টিস্ট ।
পরিমল সাহেব বুদ্ধিমান মানুষ; কৌশলগত অপমান বুঝতে পেরে দাঁতে দাঁত চেপে (ডেন্টিস্ট যাতে আবার তাঁর দন্ত চিকিৎসার কথা না বলে ফেলেন সেই লজ্জায়) কিছুই না বোঝার ভান করে বলে ফেলেন,
‘'মেয়েদের কাজ হচ্ছে ঘরে বসে সন্তান প্রসব করা, এসব ডাক্তার-মোক্তার বা এমন জাতীয় অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকা হওয়ারই বা প্রয়োজন কী?’
ডেন্টিস্ট উপস্থাপিকাঃ আপনার মতো সন্তান প্রসব করার চেয়ে অন্য যে কোনো কাজ যেকোনো মেয়ের জন্য গৌরবের, সেটা বোঝাতেই ডাক্তার হয়েছি জনাব ।
আগেই বলেছি পরিমল সাহেব চতুর লোক । তাই আলোচনার বিষয়বস্তু পাল্টাতে নারীর পক্ষে পুনরায় সাফাই গাইতে শুরু করলেন
"জানেন আমার স্ত্রীকে না আজকে সব ধরনের গৃহস্থালির কাজ থেকে মুক্ত রেখেছি !"
উপস্থাপিকাঃ বাহ ! শুনে ভালো লাগলো !
মিঃ পরিমলঃ "তবে আজকের কাজ গতকালকেই করিয়ে নিয়েছি "
উপস্থাপিকাঃ গর্ রর্ রর ..
#ডিসক্লেইমারঃ চরিত্রগুলো কাকতালীয়। তবে কৌতুকগুলো নিছক কৌতুক না বাস্তব, তা পাঠকের বিবেচ্য বিষয়।
তাৎক্ষণিক লেখা প্রযোজ্যক্ষেত্রে ক্ষমার্হ ও সংশোধনযোগ্য। ।
সর্বোপরি,
সকল নারীকে এবারের #নারী দিবসের নিরন্তর শুভেচ্ছা
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কেএম মাসুদ রানা ০৯/০৩/২০২১সম্পাদনার সুযোগ নাই ?