www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাসে হয়রানি বাড়ছেই


কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবাসীদের হয়রানির ঘটনা নতুন নয়। তবে দিন যত যাচ্ছে এ হয়রানির ঘটনা যেন ততোই বেড়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা মনে করছেন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি না থাকায় এমনটা হচ্ছে।

সম্প্রতি কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে কথা হয় বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত কাতারপ্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে। তারা জানান, এখানকার বংলাদেশ দূতাবাসে এলে কেমন অসহায় অবস্থা হয় তা নিজ চোখে না দেখলে উপলব্ধি করতে পারবে না কেউই।

ভুক্তভোগীরা বলেন, যাদের ঘাম ঝরানো রেমিটেন্স সঙ্কটময় অবস্থায়ও দেশের রাজস্ব ধরে রেখেছে এবং যাদের অর্থে চলে বাংলাদেশ মিশনগুলো, তারা কতটুকু সেবা পেয়ে থাকে এই দূতাবাস বা মিশনগুলো থেকে, তার তদারকি করছে না কেউই। কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বারবার,

তবে এ নিয়ে মাথা ঘামায়নি কেউই। বাংলাদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী বা কোনো মন্ত্রী কাতার সফর করলেও খতিয়ে দেখছেন না তারাও। তাদের পাশে একটি চেয়ারে বসার সুযোগ পাওয়ার আশায় সব অভিযোগ ভুলে যান আমাদের স্থানীয় রাজনীতিক ও বাংলাদেশ কমিউনিটির কথিত নেতারা।

দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার শর্তে প্রধানমন্ত্রী বা অন্য মন্ত্রীদের পাশে প্রবাসী নেতাদের চেয়ারের বসার সুযোগ পাইয়ে দেন। কেননা চেয়ার বণ্টন করার বিশেষ ক্ষমতা একমাত্র দূতাবাসের বড়কর্তার হাতে। তাই কোনো অভিযোগ উপর মহলে যাওয়ার কোন প্রকার সুযোগ নেই।

আগে (শ্রম) সচিব একজন থাকলেও সেবার মান বাড়ানোর জন্য বর্তমানে দু’জন (শ্রম) সচিব নিয়োগ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারপরও কমেছে সেবার মান, বেড়েছে নির্মমতা। কাতার সরকার ভিনদেশিদের মত বাংলাদেশিদের উল্লেখযোগ্য হারে সুযোগ সুবিধা দিলেও সেবা দিতে নারাজ কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, এক প্রবাসী তার পরিবার কাতারে আনতে কাবিননামা সত্যায়িত করতে দূতাবাসে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অসহায়ের মতো দূতাবাসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কোনো সমস্যা কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার ২০০১ সালে একবার এসেছিল। এই যে সেই পেপার। দূতাবাস তখন এই পেপার সত্যায়িত করেছে। এখন আবার ফ্যামিলি ভিসার জন্য কাগজপত্র প্রস্তুত তৈরি করতে হবে। শুধু দূতাবাস সত্যায়িত করলে ভিসাটা পেয়ে যাবো। কিন্তু দূতাবাস তা করতে নারাজ।

তিনি বলেন, আমি বিগত সালের পেপার দেখিয়েছি, এই দেখেন আপনাদের সিল, স্ট্যাম্প, সাইন, তারিখ সব আছে। কিন্তু নবনিযুক্ত প্রথম সচিব সাইফুল আজিম বলেছেন, আগে যিনি সত্যায়িত করেছেন তিনিই ভুল করেছেন, আমি ভুল করতে পারব না।

কে যে ভুল করেছেন, আর কে সঠিক করছেন, এটাই প্রশ্ন কাতারপ্রবাসী ভুক্তভোগীদের।

দূতাবাসের সামনে একইদিন দেখা মেলে এক প্রবাসীর, যিনি পাসপোর্ট হারিয়ে হয়রান হচ্ছেন।

তিনি বলেন, দু’মাস আগে আমার পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে। ৫ দিনের মধ্যে আমার কফিল (স্পন্সর) তার পেপারসও পুলিশ পেপারস রেডি করে দিয়েছে। তারপর থেকে প্রায়ই আসতে হচ্ছে দূতাবাসে। সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর আমার সিরিয়াল এলে বিভিন্ন অজুহাত দিচ্ছে দূতাবাস থেকে। কবে নাগাদ আমার পাসপোর্ট পাব তাও সঠিকভাবে বলতে পারছে না দূতাবাসের কেউ।

তিনি আরো বলেন, আর ১৫ দিনের মধ্যে যদি পাসপোর্ট না পাই, আমাকে দেশে চলে যেতে হবে।

অপর এক প্রবাসী বলেন,  আমাদের কষ্ট কেউ কখনও বোঝে না। বোঝার চেষ্টাও করে না। বাংলাদেশের এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে কোনো জায়গায়ই আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই।

এ নিয়ে জানতে চাইলে দূতাবাসের কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

নবনিযুক্ত প্রথম সচিব বলেন, ‘দূতাবাসে জনবল কম থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছি না। তবুও আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সেবা দিতে চেষ্টা করছি।’

এমআরপি পাসপোর্টের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা অভিযোগ। একটি নতুন মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট পেতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ৬/৭ মাস অপেক্ষা করতে হয়। এমনি করেই আরো নানাভাবে একে একে হয়রানির শিকার হয় কাতার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

এমতাবস্থায় হয়রানির শিকার কাতারপ্রবাসী বাংলাদেশিরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
বিষয়শ্রেণী: সংবাদ
ব্লগটি ৮৪৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৭/০২/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • আবু সাহেদ সরকার ১১/০৬/২০১৪
    বেশ লাগলো লেখাটি পড়ে। তবে আমি লেখার সাথে ছবি এ্যাড করতে পারছি না। কিভাবে ছবি এ্যাড করতে পারি যদি নিয়মটা বলেন তাহলে কৃতজ্ঞ থাকবো।
  • অমর কাব্য ২৭/০৫/২০১৪
    যার যার স্বার্থ নিয়ে সেসে ব্যস্ত।
 
Quantcast