www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ঝুমবৃষ্টি

কবিদের প্রতি আমার একটা ক্ষোভ দানা বেঁধেছিলো সেই কুট্টি থাকতে।তখনও বুঝিনি ছন্দ,ধ্বনি,অনুপ্রাস,মাত্রা।মিষ্টি কবিতা ভাবালুতায় ভরে থাকত মন।তবে কবিদের প্রতি ক্ষোভ ছিলো মারাত্মক রকমের।সেই কুট্টি বয়সে বৃষ্টি নিয়ে যারা কবিতা লিখেছে তাঁদের কবিতা পড়তাম উৎসাহ নিয়ে।ঠিক তখন থেকেই ঝুমবৃষ্টি কথাটা মনে গেঁথে গেছে।বড়বেলায় এসে যখন নিজে কিছু লিখতে শুরু করলাম তখন বড্ড লজ্জ্বা লাগত।যাঁদের প্রতি এত ক্ষোভ তাঁদের মত হওয়ার চেষ্টা করছি কেনো?উত্তরটা পেয়েছি অনেক পরে যখন বুঝতে পারলাম কুট্টিবেলার ক্ষোভটা ঠিক ক্ষোভ ছিল না।কৈশোরে আমার একজন কবিকে ভাল লাগত।ছয় ক্লাসে থাকতে যাঁর সাথে আমার পরিচয় ঘটে।আমার স্কুলের বাংলা শিক্ষক মহর আলি স্যার।কবি মহর আলি।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাঁর রচিত কবিতা আবৃত্তি করতে হত।প্রথমবারেই আবৃত্তিতে একটা পুরষ্কার পেয়ে গেলাম।ভালো লাগাটা সেখান থেকেই শুরু।এই একজন মাত্র কবিকে দেখেই যে আমার ক্ষোভ দূর হয়েছিল সেটি দিবালোকের ন্যায় সত্য।তবে তিনি ঝুমবৃষ্টি নিয়ে কোন কবিতা লিখেছেন কি না আমার জানা নেই।এইযে বর্ষার ঝুমবৃষ্টিতে কত শত বেদনারা যে লুকিয়ে থাকে তার ইয়াত্তা নেই।মাঝে মাঝে বেদনার রং হয় স্বচ্ছ বৃষ্টির জলের মত।ছেলেবেলাতে এই ঝুমবৃষ্টিতে পিচ্ছিল আঙিনাতে খুঁজে পেতাম শৈশবের নির্মল আনন্দ।এ ওকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া,ফুটবল নিয়ে মাঠে নেমে পড়া,খেলা শেষে কাজীর পুকুরে ঝাপ মারা,তারপর চোখ লাল করে বাড়ি ফেরা।এ সব তো আমার গ্রামেরই স্মৃতি,ভুলি কেমনে!
অথচ শহুরে ঝুমবৃষ্টিতে আমার শৈশব খুঁজে পাই না, এখানে নিছক বেদনারা আঁকিবুকি করে আমার যৌবন নিয়ে।সেই যে মহেশপুরের মাইল ছয়েক দূরের ইদ্রাকপুর গ্রামের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসাটা সম্ভব নয় জেনেও কি বোকামিটাই না করছি।মাত্র কয়েকদিন আগেও আমার শৈশব দানা বাঁধত ঝুমবৃষ্টিতে,চৌত্রের তাপদাহে।

ঝুমবৃষ্টি // কামরুজ্জামান সাদ
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৫১২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৯/০৭/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast