www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বাজে ট

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল গত ১৩ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছেন। বাজেট পেশকালে অর্থমন্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশিষ্ট বাজেটের অধিকাংশ পড়ে শোনান এবং বাকি অংশ পঠিত বলে গণ্য করার অনুরোধ করেন। ঘোষণা অনুযায়ী এই বাজেটে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৫,২৩,১৯০ কোটি টাকা এবং আয় ধরা হয়েছে ৩,৭৭,৮১০ কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ ১,৪৫,৩৮০ কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত কর ধরা হয়েছে ৩,২৫,৬০০ কোটি টাকা (৬২.২%)। এর মধ্যে মূল্য সংযোজন কর ৩৭.৮%, আমদানি শুল্ক ১১.২%, আয়কর ৩৫.০%, সম্পূরক শুল্ক ১৪.৮% ও অন্যান্য ১.২%। এছাড়াও রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বহিভর্‚ত কর ২.৮%, কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৭.৫%, আভ্যন্তরীণ ঋণ ১৪.৮%, বৈদেশিক ঋণ ১২.২% এবং বৈদেশিক অনুদান ০.৮%। এই হিসাবে ব্যাংক ও ব্যাংক বহিভর্‚ত ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় যথাক্রমে ৪৭,৩৬৪ কোটি ও ৩০,০০০ কোটি টাকা (মোট দেশীয় ঋণ ৭৭,৩৬৪ কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ ৬৩,৮৪৮ কোটি টাকা অর্থাৎ সর্বমোট ঋণ ১,৪১,২১২ কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরে এডিপি তথা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাবদ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২,০২,৭২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজেট অনুযায়ী ৫,২৩,১৯০ কোটি টাকার বিশাল এই বাজেটে উন্নয়ন বহিভর্‚ত খাতে ব্যয় হবে ৩,২০,৪৬৯ কোটি টাকা যা মোট ব্যয় বরাদ্দের ৬১% এর বেশি। বাকি ৩৯ শতাংশ থাকবে উন্নয়ন ব্যয়ের জন্য। উন্নয়ন বহিভর্‚ত ব্যয়ের সিংহভাগই যাবে বেতন ভাতা, পেনশন সুবিধা এবং মেরামত ও সংরক্ষণ খাতে।

সামগ্রিক বিবেচনায় অর্থমন্ত্রীর এই বাজেটটি চলতি বাজেটের তুলনায় ১৮ শতাংশ বড় এবং অনেক বেশি উচ্চাভিলাসী বলে মনে হয়। এতে ৪ লাখ নতুন লোককে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনার প্রস্তাব রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আবার বেসরকারি খাতে সাধারণ মানুষের জন্য পেনশন কর্মসূচি চালুরও প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে গত অর্থ বছরের ন্যায় এর জন্য কোনও রূপরেখা নেই। বাজেটটি ঋণনির্ভর; আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণ বাবদ সরকার ১,৪১,২১২ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার প্রস্তাব করেছেন এবং বিগত বছরসমূহে নেয়া ঋণের সুদ বাবদ ৫৭,০৭০ কোটি টাকা পরিশোধের প্রস্তাব করেছেন। বলা বাহুল্য, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী বিগত বছরসমূহে সরকার সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছেন গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজ এন্ড ট্রেজারী থেকে। এ বাবদ ২১ মে পর্যন্ত সরকারের কাছে ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৯৯,৩২৮ কোটি টাকা (বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ৭১,৮৭৬ কোটি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৭,৪৫২ কোটি টাকা। এর ফলাফল হচ্ছে ভয়াবহ। বেসরকারি খাতে ব্যাংকসমূহের অনাদায়ী ঋণ ৫ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে, আবার খেলাপী ঋণের পরিমাণও ১,১০,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। খেলাপী ঋণ অবলোপন এবং সরকার স্বয়ং খেলাপী হওয়ায় ঋণ খেলাপকারীরা উৎসাহ পাচ্ছে; অর্থের সমাগম কম হওয়ায় বেসরকারি বিনিয়োগ স্থবির হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় ১,৪১,২১২ কোটি টাকা ঋণ করে ১,৪৫,৩৮০ কোটি টাকা ঘাটতি রেখে ৫,২৩,১৯০ কোটি টাকার মেগা বাজেট ঘোষণাকে অনেকেই জনগণের প্রতি সরকারের একটি তামাশা বলে মনে করেন। বাজেটটি ঋণ নির্ভর জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব ও গণবিরোধী এবং অতীতের বাজেটসমূহের মত বাস্তবায়নের অযোগ্য। অনির্বাচিত সরকারের জবাবদিহিতা না থাকায় জনগণের উপর তারা তা চাপিয়ে দিয়েছে বলে অনেক বিশ্লেষক মত প্রকাশ করেছেন। এটি মধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলবে। করের ভারে ন্যুব্জমান সাধারণ মানুষের উপর নতুন কর ও ভ্যাটের চাপ অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে। ২০১৮-১৯ সালের ন্যায় ২০১৯-২০ সালের বাজেটেও জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় বর্ধিত বরাদ্দ নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, জননিরাপত্তা মানে পুলিশি মারপিট ও হয়রানি। দেখা যাচ্ছে, এই খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৫.৩ শতাংশ যা কৃষি খাতে বরাদ্দের কাছাকাছি (৫.৪%)। তবে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ সরকারের কাছে ১৭ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির চেয়ে পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে জনমতকে সরকারি দলমুখী করার গুরুত্ব অনেক বেশি। বিচার বহিভর্‚ত হত্যাকান্ড, গুম, মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও নিরপরাধ মানুষের উপর নির্যাতন, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান প্রভৃতির জন্য যখন নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে দিন দিন অভিযোগের পাল্লা ভারী হচ্ছে, তখন তাদের জন্য বাড়তি সম্পদের সংস্থানের প্রস্তাব সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনে সরকারি দল কর্তৃক তাদের ব্যবহার ভোট কারচুপিতে সরকারি দলকে তাদের সহায়তা, নির্বাচন পরবর্তীকালে অবৈধভাবে তাদের পুরস্কৃতকরণ ও তাদের জন্য থানায় থানায় পার্টির আয়োজন বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কিত ঘটনা। এ অবস্থায় এই খাতের বরাদ্দ হ্রাস করে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা দরকার। একইভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বাড়তি সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার কাজে আমলাদের ব্যবহারের একটি কৌশল বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি অথবা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জয়েন্ট সেক্রেটারীদের নিচের কর্মকর্তাদের আগে গাড়ি ছিল না। এখন তাদের গাড়ি দেয়া হচ্ছে। সিনিয়র সচিবের পদ সৃষ্টি করে কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। পদ যা আছে তার বহুগুণ বেশি পদে পদোন্নতি দিয়ে কর্মকর্তাদের তুষ্ট করা হচ্ছে। সচিবরা এখন বাড়িতে প্রহরী রাখুন বা না রাখুন তার জন্য ভাতা পান। গাড়ি-বাড়ির লোন পান, আকাশচুম্বি মূল্যে মোবাইল ক্রয় ও মোবাইল বিল পরিশোধের সুযোগও সরকারি পয়সায় দেয়া হচ্ছে। কল্পনাতীত পে-স্কেল, নানা নামে ঈদ বহিভর্‚ত উৎসব বোনাসতো আছেই। বেসরকারি খাতের সাথে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ভাতার ব্যবধান এখন যে অবস্থায় পৌঁছেছে তার নজির বিরল। এই বৈষম্যের সৃষ্টি ইচ্ছাকৃত। এই বৈষম্যের মাধ্যমে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার একটি এলিট আমলা শ্রেণী সৃষ্টি করে জনগণের প্রভু বানিয়ে শাসন-শোষণ পাকাপোক্ত করাই সরকারের উদ্দেশ্য বলে মনে হয়।

বাজেটের আরেকটি দিক প্রণিধানযোগ্য। এতে বিত্তবানদের প্রতি পক্ষপাত এবং মধ্যবিত্তদের উপেক্ষা করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতের নৈরাজ্যকে নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে উৎসাহিত করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য পরিষ্কার। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে অভিনব পদ্ধতিতে অর্থ চুরি থেকে শুরু করে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকসমূহের অর্থ কেলেঙ্কারী, ভুয়া নামে ঋণ লগ্নি, ঋণ খেলাপী ও অর্থ পাচারের সাথে যারা জড়িত তাদের প্রায় সকলেই সরকারি দল ও সরকারের সাথে জড়িত। সরকার বৈধ ও অবৈধভাবে সরকারি লোকদের অর্থ দিয়ে বিত্তবান করে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়াতে চান যাতে করে রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করা যায়। ব্যাংকিং খাতের নৈরাজ্যকে নিয়ন্ত্রণ করা মানে সরকারি দলের লোকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এটা করে সরকার নিজের পায়ে নিজে কুঠারাঘাত করতে পারেন না। এদিকে খেলাপী ও অনাদায়ী ঋণ ফেরৎ না আসায় ব্যাংকগুলো তহবিল সংকটে পড়েছে। এর উপর ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার তহবিল সংগ্রহ করায় তাদের সংকট আরো বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় বিনিয়োগের যোগান নিয়ে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শেয়ারবাজর বহুমুখী সংকটে পড়েছে। এই সংকট থেকে তাদের উদ্ধারের কোনও পন্থা বাজেটে বলা হয়নি, দিকদর্শনও দেয়া হয়নি। দেশে শিল্পখাত যেমন সংকটে তেমনি সামগ্রিকভাবে কৃষিখাতও বিপর্যয়ের মুখে। বাজেটে কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের কার্যকর কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বাজেটে ৭ লাখ কোটি কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে তা অর্থনীতিকে ধ্বংস করার সুযোগ সৃষ্টি করবে। এতে অপরাধীরা অপরাধ কর্মে আরো উৎসাহিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বাজেট-উত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন যে, দেশে সমৃদ্ধি এসেছে। এখন দারিদ্র্য নাই বললেই চলে। মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য কমেছে। তার এই কথাটি বাস্তব অবস্থার পরিপন্থী। পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাম্প্রতিক খানা জরিপ অনুযায়ী ২০১০ সালের তুলনায় সাম্প্রতিক বছরসমূহে পারিবারিক পর্যায়ে ব্যক্তির আয় কমেছে ২০ শতাংশ এবং ভোগের জন্য ব্যয় কমেছে ১০ শতাংশ। দেশের শ্রম শক্তির যে ৮৫ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত সে খাতে মজুরি কমেছে ৭.৫%। আবার দেশে জনপ্রতি ক্যালরি গ্রহণের হার ২০০৫ সালের তুলনায় ২০১০ সালে ৫ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে আরো ৯শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০১৯ সালেও তথৈবচ। মানুষের আয় যদি বৃদ্ধি পায় ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা হ্রাস পায় কিভাবে?

এই বিশাল বাজেটের অর্থ সংস্থানের লক্ষ্যে কর বৃদ্ধির জন্য নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে সাধারণ মানুষ চাপে পড়বে। এতে মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান ও চিকিৎসা নিয়ে পাঁচটি মৌলিক চাহিদার তিনটির উপরই বিরূপ প্রভাব পড়বে। অনুৎপাদনশীল খাতে খরচের আধিক্য, করমুক্ত আয়ের সীমা না বাড়ানো, টেলিফোনে কথা বলার উপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি, পোশাকে ভ্যাট বৃদ্ধি, সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় উৎসে কর বৃদ্ধি, খাদ্যপণ্যের ওপর করারোপ প্রভৃতি সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপণœ করে তুলবে। এতে উচ্চ ও নিম্ন আয়ের মানুষকে কিছু সুবিধা দেয়া হয়েছে যা অর্থনীতির সাম্য নীতির পরিপন্থী। বাজেটে পরোক্ষ করের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আদায়যোগ্য মোট ৩ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকাই ভ্যাট থেকে আসবে। ফলে এই প্রত্যক্ষ করের চাপ সাধারণ মানুষকেই ভোগ করতে হবে। ল্যাপটব, গুঁড়োদুধ তথা শিশু খাদ্য, আইসক্রিম, ভোজ্যতেল, চিনি, নির্মাণ সামগ্রী, ফ্ল্যাট ক্রয়, সিএনজি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকসার টায়ার-টিউব, এলপি গ্যাস, চশমা, সানগ্লাস, স্যাম্পু, কন্ডিশনার, টুথপেস্ট, স্যানিটারী ওয়্যার, টেবিল ওয়্যার, কাগজ, টিস্যু পেপার প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর নতুন করারোপ করা হয়েছে। এই বাজেটকে উচ্চবিত্তের লালন, মধ্যবিত্তের দমন এবং নিম্নবিত্তকে সুড়সুড়ি দেয়ার বাজেট বলে বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন। এর লক্ষ্যমাত্রা সুউচ্চ ও চমৎকার তবে ভিত্তি হচ্ছে অনেকটাই তাসের ঘর। এই বাজেট সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৪৩০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২১/০৬/২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast