www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মহররম

দশ-ই মহররমে ঘটেছে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা। যেমন- ১. মানবজাতির আদি পিতা হযরত আদম (আ.) কে প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্টি, জান্নাতে অবস্থান, পৃথিবীতে প্রেরণ ও তাওবা কবুল সবই দশ-ই মহররম সংঘটিত হয়। ২. হযরত নূহ (আ.) এর নৌকা ৪০ দিন পর জুদি পাহাড়ের পাদদেশে মাটি স্পর্শ করে ঐতিহাসিক দশ-ই মহররমে। ৩. এ দিনেই হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর জন্ম, ‘খলিলুল্লাহ’ উপাধিতে ভূষিত ও নমরুদের অগ্নি থেকে রক্ষা পান। ৪. হযরত ইদ্রিস (আ.) কে বিশেষ মর্যাদায় চতুর্থ আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয় এ দিনে। ৫. দীর্ঘ ৪০ বছর পর হযরত ইউসুফ (আ.) এর সাথে তার পিতা ইয়াকুব (আ.) এর সাক্ষাৎ যেদিন হয় সে দিনটি ছিল এ দিনে। ৬. নবী আইয়ুব (আ.) দীর্ঘ ১৮ বছর কুষ্ঠরোগ ভোগ করার পর আরোগ্য লাভ করেছিলেন এ দিনে। ৭. ইউনূস (আ.) ৪০ দিন মাছের পেটে থাকার পর মুক্তিলাভ করেন এ দিনে। ৮. হযরত সুলায়মান (আ.) সাময়িক রাজত্বহারা হন। আল্লাহ তা’য়ালা তাঁকে আবার রাজত্ব ফিরিয়ে দেন এ দিনে। ৯. আল্লাহ তায়ালা হযরত মুসা (আ.) ও তাঁর অনুসারী বনি ইসরাঈলদেরকে ফেরাউনের অত্যাচার থেকে মুক্ত করে পানির মধ্যে রাস্তা তৈরি করে দিয়ে পার করে দেন এবং ফেরাউনকে তার দলবলসহ সাগরে ডুবিয়ে মারেন এ দিনে। হযরত মুসা (আ.) তুর পাহাড়ে আল্লাহর সাথে কথা বলেছিলেন দশ-ই মহররমে। ১০. এ দিনে হযরত ঈসা (আ.) এর জন্ম হয় এবং ইহুদিরা তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করলে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে ফেরেশতা কর্তৃক সশরীরে আসমানে উঠিয়ে নেন এ দিনেই। ১১. আশুরার দিবসেই মহানবী (সা.)-এর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ত্রুটিবিচ্যুতি ক্ষমা করে দেয়া হয়। ১২. পবিত্র কাবা শরিফে সর্বপ্রথম গিলাফ দ্বারা আবৃত করা হয়েছিল এ দিনে। ১৩. আশুরার দিনেই আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন- আকাশমালা, মর্তজগৎ, পর্বতরাজি, লওহ-কলম ও ফেরেশতাগণ। ১৪. আশুরার দিনে আল্লাহ তায়ালা নিজ আরশে আজিমে অধিষ্ঠিত হন। ১৫. আকাশ থেকে প্রথম বৃষ্টিপাত হয় এ দিনেই। ১৬. কিয়ামত সংঘটিত হবে মহররম মাসের ১০ তারিখ জুমার দিন। ১৭. এ দিনে (নারীরা ছাড়া) স্বপরিবারে শহীদ হন বিশ্ব নবী (সা.)-এর প্রিয় নাতী ইমাম হোসাইন (রা.)।
আশুরার দিনে নির্দিষ্ট কোন আমল নেই, তবে হাদীস শরীফে দশ-ই মহররম রোজা পালনের বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমযানের রোজার পরে আল্লাহর নিকট মহররম মাসের রোজা ফজিলতের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠতম’ (সহি মুসলিম : ১/৩৮৮। মহানবী (সা.) আরো বলেন, ‘আমি আল্লাহর দরবারে আশা রাখি যেন ‘আশুরা’র রোজা আল্লাহর নিকট পূর্ববর্তী বছরের গুনাহের কাফফারাস্বরূপ গণ্য হয়’ (তিরমিযী- ১৩২, ইবনে মাজাহ-১২৪। সহি বুখারী ও মুসলিম শরীফে সালামাহ ইবনে আকওয়া (রা.) হতে বর্ণিত আছে, মহানবী (সা.) বনি আসলাম গোত্রের এক লোককে নির্দেশ দিলেন সে যেন লোকদের মাঝে এ ঘোষণা করে দেয়, যে আজ সকালে খেয়েছে সে যেন দিবসের বাকি অংশ রোজ পালন করে, আর যে ব্যক্তি কিছু খায়নি সে যেন রোজা রাখে। কেননা, আজকের এ দিন আশুরার দিন। আশুরার দিনে যেহেতু ইহুদিরাও রোজা রাখে তাই তাদের সাথে পার্থক্য করার জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখো এবং এর আগে এক দিন অথবা পরে একদিন রোজ রেখে ইহুদিদের বিরুদ্ধাচরণ করো।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৫৭২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/০৯/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast