www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ওরা বন্য পশু নয়

‘বাঘে ছুঁলে এক ঘা, পুলিশে ছুঁলে আঠার ঘা’। এটা আসলেই পুলিশের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ। পুলিশ জনগণের বন্ধু। নাগরিকদের জান-মালের নিরাপত্তার জন্যই পুলিশ। দুষ্টু, দুরাচার, দুর্বৃত্তদের পাকড়াও করে আইনের হাতে তুলে দিয়ে জনগণের সবরকম নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই পুলিশসহ বেশ কয়েকটি বাহিনী আমাদের দেশে নিয়োজিত। কিন্তু এরপরও প্রায়শ জনগণের নিরাপত্তা বিঘিœত হচ্ছে। শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের পড়তে হচ্ছে নানারকম বিড়ম্বনায়। জনগণকে হয়রানিতে ফেলে অনৈতিক উপায়ে অর্থ আদায়সহ বহু অভিযোগ রয়েছে কোনও কোনও পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। বলতে দ্বিধা নেই, পুলিশসপ্তাহ চলবার প্রাককালেও ডিআইজি মিজানুর রহমান এক নারীকে অপহরণসহ জোর করে বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ওই অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে ক্লোজ করা হয়। এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। তাই ‘পুলিশে ছুঁলে আঠার ঘা’ এমন বদনাম থেকে বেরিয়ে এসে পুলিশকে তার ভাবমর্যাদা ফিরিয়ে আনবার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশের সবাই অনিয়ম করেন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এমন নন। পুলিশের অধিকাংশই দেশ ও জাতির সেবা করতে গিয়ে জীবন বিসর্জন দেবার মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সাম্প্রতিককালেও জঙ্গিদমনে পুলিশের কয়েক জন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। পুলিশের এ ত্যাগে জাতি হয়েছে গৌরবান্বিত। তাই যারা পুলিশের একচেটিয়া দোষ দেন তাদের ধারণা একপেশে বলা যায়। এখনকার পুলিশ বৃটিশ কিংবা পাকিস্তানি নয়। এরা আমাদেরই ভাই, বন্ধু অথবা সন্তান। জান-মালের নিরাপত্তাবিধানে এদের পিছপা হবার কথা নয়। এ ছাড়া আমাদের পুলিশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতেও সম্মানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। কাজেই কোনও সদস্যের ব্যক্তিগত দোষত্রুটির জন্য পুলিশ সংস্থার সবাইকে দায়ী করা অনুচিত। তবে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্তা দিনদিন কমছে। এর বেশকিছু সদস্য অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য অভিযুক্ত হয়েছেন। আবার কোনও কোনও সদস্য দাপটের সঙ্গে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও বহালতবিয়তে আছেন। হয়তো খুঁটির জোর আছে তাঁদের। সঙ্গত কারণে পাবলিক পুলিশের কাছে যান না। যেতে চানও না। প্রতিকার চাইতে গিয়ে যদি অযথা আঠার ঘায়ের শিকার হন কেউ? এমন আশঙ্কা অনেকেরই। তাই থানা-পুলিশের কাছে পাবলিক যেতে চান না। এর মানে হচ্ছে পুলিশের প্রতি নাগরিকদের অনাস্থা প্রবল।
বিপদ-আপদে পড়লে সহজে থানা-পুলিশের কাছে যেতে চান না মানুষ। কারণ সেখানে গেলে নানা ঝুটঝামেলায় পড়তে হয়। জিডি করতেও অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ গুণতে হয় তাঁদের। চাহিদা অনুসারে অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে উল্টো মামলায় জাড়ানোর অভিযোগও পাওয়া যায় থানা-পুলিশের বিরুদ্ধে অনেক সময়। এটা সেই আঠার ঘায়ের একটা। অথচ পুলিশের বেতন হয় নাগরিকদের করের টাকায়। সরকার ও জনগণের সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমনের জন্যই তো থানা-পুলিশ, আইন-আদালত। অপরাধী তথা দুষ্টুদের ভয় পাবার কথা পুলিশ দেখে। কিন্তু কোনও কোনও পুলিশ সদস্যের সঙ্গে এদেরই রহস্যময় সখ্য দেখা যায় অনেক সময়। আমরা মনে করি, পুলিশের যে বদনাম সাধারণের মনে বদ্ধমূল হয়ে আছে তা পুলিশকেই ঘোচাতে হবে। পুলিশ ছুঁলে অপরাধী বা দুষ্টুদের আঠার ঘা হয় হোক। কিন্তু নিরপরাধ কোনও নাগরিকের একটিও ঘা যাতে না হয়। এ নিশ্চয়তার প্রত্যাশা নাগরিকরা কি করতে পারেন না?
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৭৬৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/০১/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast