www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মায়ামার সেনা ও রুহিঙ্গা নারী

নানা কারণেই মিয়ানমার নামক রাষ্ট্রটির ব্যাপারে নানা প্রশ্ন জেগেছে মানুষের মনে। একটি রাষ্ট্র এমন নৃশংস হয় কেমন করে? আর রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ই বা এতটা নিষ্ঠুর হয় কেমন করে? অশিক্ষা, কুশিক্ষা, কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণার কারণে কোনো দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে হয়তো বৈরীভাব পোষণ করতে পারে, কিন্তু এমনভাবে নিপীড়ন-নির্যাতন ও নিশ্চিহ্ন করার তা-ব চালায় কেমন করে? অথচ তাদের ধর্মের প্রাণপুরুষ গৌতম বুদ্ধ তো অহিংসার বাণী প্রচার করে গেছেন। প্রশ্ন জাগে, মিয়ানমারের বৌদ্ধরা মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের উগ্র আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু অবাক ব্যাপার হলো অন্যায়-অবিচার নিয়ন্ত্রণ তো দূরের কথা, বরং তারা যেন পরিকল্পনা করেই মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গ মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতন, হত্যা-ধর্ষণ ও উৎখাতের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। মানব ইতিহাসে এমন জঘন্য অপরাধের উদাহরণ খুবই বিরল। বিশেষ করে রোহিঙ্গা নারীদের সাথে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যদের জঘন্য ও নির্মম আচরণ ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে বহু রোহিঙ্গা নারীকে ‘যৌনদাসী’ হিসেবে জীবন কাটাতে হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে তাদের নিয়ে যাওয়ার পর পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিতা ও ধর্ষিতা এক নারী জানান, মঙ্গদূর হাতিপাড়া গ্রাম থেকে তাকে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সেনা সদস্যরা মিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাকে যেভাবে যৌন নির্যাতন করেছে তা কল্পনাও করতে পারবেন না। অনেক নারী সামাজিক ভীতি ও লজ্জার কারণে ধর্ষণের ব্যাপারটি স্বীকারও করতে চান না। কিছু মানবাধিকার সংগঠন ধর্ষিতা ও নির্যাতিতা নারীদের চিকিৎসা করে থাকে। তবে কত নারীর ওপর ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তা তারা বলতে পারেন না, তা তারা বলতেও চাচ্ছেন না। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মানবাধিকার কর্মী বলেন, ৪০ জন রোহিঙ্গা নারীকে তারা চিকিৎসা দিয়েছেন। পত্র-পত্রিকা ও বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের ঘটনাগুলো বিশ্বের বিবেকবান মানুষের মনে ঘৃণার সৃষ্টি করেছে।
মিয়ানমারের বর্তমান ক্ষমতাসীন নেত্রী অং সান সু চি তো শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। কিন্তু তার দেশের সেনাবাহিনীর সদস্যরা এখন যেভাবে রোহিঙ্গা নারীদের সম্ভ্রম লুণ্ঠন করছে, তাতে কি তার সম্ভ্রমে কোনো আঁচ লাগেনি? পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, মিয়ানমারের সেনা সদস্যরা যে নৃশংসভাবে রোহিঙ্গা নারীদের সম্ভ্রম লুণ্ঠন করছে তার আঁচ সূচির নোবেল পুরস্কারেও লেগেছে। বলা যায়, সুচির নোবেল পুরস্কারের সম্ভ্রমও লুণ্ঠিত হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। বিষয়টি সু চি কিংবা মিয়ানমার সরকার উপলব্ধি করেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ১০৫৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৭/০১/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast