www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

শক্তি

এদেশের এক সময়ের একটি জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর গাওয়া জনপ্রিয় একটি গানের কলি ছিলো, ‘শুনেন ভাই সবাই, ঐক্যের মতো বড়ো কিছু নাই’। আসলে বামধারার এই শিল্পী গোষ্ঠীর গাওয়া গানের এই পংক্তি দুটো শুধু এদেশ নয় গোটা বিশ্বের জন্যেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবাহী। আসলে মহাগ্রন্থ আল কোরআনও বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধভাবে ‘আল্ল¬াহর রজ্জু’ অর্থাৎ আদর্শকে আঁকড়ে থাকার কথা বলেছে। জোর দিয়েছে ঐক্যের উপর। আমাদের দেশে এক সময় সময় সমবায় আন্দোলন বেশ আলোড়ন তুলেছিলো, কিন্তু প্রতিকুল পরিস্থিতির কারণে আমরা সেই চমৎকার ধারণাকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ট্রেড ইউনিয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন ও আন্দোলনের নাম।
কিন্তু ট্রেড ইউনিয়নের নামে অতীতে এতো অনিয়ম হয়েছে যে, এক পর্যায়ে সরকার এদেশে ট্রেড ইউনিয়ন নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হয়। অবশ্য পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। যা-ই হোক, ইদানিং আমাদের দেশে বিভিন্ন পেশাজীবীদের ট্রেড ইউনিয়নের ধাঁচে নিজস্ব সংস্থা, সমিতি বা সংগঠন গঠন করতে দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে রেষ্টুরেন্ট শ্রমিক থেকে শুরু করে বিমানের পাইলট কিংবা সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবীদেরও নিজস্ব সংগঠন বা এসোসিয়েশণ রয়েছে। এটা অত্যন্ত আশার কথা। কারণ সংগঠন মানেই কিছু সংখ্যক সমমনা ও সমউদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারী মানুষের ঐক্য। বর্তমানে সারাদেশে বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণীর শত শত সংগঠন বা সংস্থা রয়েছে। এগুলোর কিছু নিবন্ধনকৃত আবার অনেকগুলোই নিবন্ধিত নয়।
আমাদের বিশ্বাস এসব কটি সংগঠনই সংশ্লি¬ষ্ট পেশাজীবীদের স্বার্থরক্ষা ও কল্যাণের লক্ষ্যে কমবেশী কাজ করছে। প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সংগঠনের লক্ষ্য অর্জনে। সচেতন মহল মনে করেন, দেশে এই বিপুল সংখ্যক পেশাজীবী সংগঠন যদি বর্তমান রাজনৈতিক ঢামাঢোল ও জটিলতা থেকে দুরে থেকে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তর মানসিকতা পরিহার করে সংগঠনের পেশাজীবী সদস্যদের কল্যাণে কাজ করে, তবে এদেশে সামগ্রিকভাবে একটি সচেতন ও শক্তিশালী কর্মজীবী ও পেশাজীবী শ্রেণী গড়ে উঠবে। তাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি বাংলাদেশকে পরিচালিত করবে সমৃদ্ধি ও উন্নতির পথে। সর্বোপরি, একটি পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্বাভাবিকভাবেই সংগঠনের সদস্য ও তাদের নিয়োগকারী মালিক বা কর্তৃপক্ষের মাঝে লিয়াজোঁ রক্ষার কাজ করে থাকেন।
কর্তৃপক্ষের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি, বিরোধী মীমাংসা এবং দরকষাকষির মাধ্যমে পেশাজীবী কর্মী বা শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করে থাকেন। এতে কর্মক্ষেত্রে শান্তি শৃংখলা প্রতিষ্ঠিত হয়। মালিক শ্রমিক উভয় পক্ষই হয় লাভবান। আমাদের প্রত্যাশা, বর্তমানে দেশব্যাপী যে সহস্রাধিক পেশাজীবী সংগঠন রয়েছে সেগুলো পেশাজীবীদের স্বার্থ রক্ষার মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক কল্যাণে অধিকতর মনোযোগী হবে। আর এভাবে তাদের আদর্শিক সুশৃংখল আচরণ ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা গোটা দেশকে একটি অদৃশ্য ঐক্যের সুতোয় গেঁথে ফেলবেÑএগিয়ে নেবে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৮৮৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১২/০১/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast