www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গল্প হলেও সত্যি - পাষণ্ড ১

আমাকে কেউ খবর দেয়নি, হ্যাঁ সত্যিই আমি টিভিতে সংবাদ দেখতে দেখতেই হঠাত দেখলাম । কি জঘন্যতম ঘটনা ! আমাদের লোক্যাল প্রত্যেকটি চ্যানেলেই দেখাচ্ছে , তপনের বউ হাউ হাউ করে ক্যামেরার সামনে কাঁদছে, স্বামীর শাস্তি চাইছে । খবরটা দেখেই সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল , ছুটে যাওয়াটাই স্বাভাবিক কিন্তু সব সময়ে সব কিছু স্বাভাবিক হয় না , পারিপার্শিক আরো যত কারনই থাকনা কেন, আমি কিন্তু ছুটে না যাওয়ার পাত্র না । তবে সেদিন এই ঘটনাটা জানার পরে নিজেকে নিজের কাছে এত ছোট মনে হল, যে আমি আমার উপর অভিমান করেই আর যেতে পারলাম না । ছিঃ ! আমি এমন একটা মানুষের সঙ্গে দিনের পর দিন সম্পর্ক স্থাপন করে রেখেছিলাম ! নিজেকে এমন পাষন্ডের অভিভাবক ভেবেছিলাম ! হতেই পারে না ; কিন্তু হয়েছে । নিজেকে নিজে ধিক্কার জানাতে জানাতে এক সময় ইচ্ছে হচ্ছিল এই পাষণ্ডটাকে খুঁজে বেড় করে আমি নিজের হাতে শাস্তি দিই । কিন্তু এতবড় শাস্তি দেবার সাহস, অধিকার কোনটাই নেই বিধায় আস্তে আস্তে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিলাম । তপনের সংসারে যেন আমার আর কোন সংযুক্তি না থাকে সে পথটাই বেছে নিলাম । আমি ছুটে যাইনি, যেতে পারিনি ।
মর্মাহত হয়েছিলাম বলেই নিজেকে দূরে সরিয়েছিলাম কিন্তু সরে থাকতে চাইলেই তো আর সব সময় সরে থাকা যায়না । একদিন বড় মেয়েটাকে কোলে নিয়ে তপনের বউ এসে হাজির আমার বাড়ান্দায় । উসকো খুসকো চুল, চোখের নীচে কালি, বেশ কয়েকদিনের উপাসী হলে যেমন হয় তেমনি দেখতে । কোলের মেয়েটারও নাক দিয়ে সর্দি পরছে, গায়ে কালো নোংড়া একটা জামা। ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে আছে । কিছু বলতে পারছে না, চোখের জল অঝোরে ঝরছে ।
বিয়ের পরে প্রথম দিকে আমি আমার স্ত্রীকে যতটা সহজ সরল ভাবতাম এখন অবশ্য সেই ভাবটা আর নেই, আমার স্ত্রী এখন যথেষ্ট পরিণত এবং জীবন চলার পথে এতটুকু টের পেয়েছি যে, আমার স্ত্রী আমার চাইতে যতটা না বেশী বুদ্ধিমতী তার চাইতে অনেক বেশী সজাগ সচেতন ; এই কারনেই আমি আমার মাতৃ বিয়োগের পর স্ত্রী এর শলা পরামর্শ ব্যাতিত এক কদম এগোই না । আজকেরও এই দৃশ্যে আমি যখন হত চকিত, কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না, আমার স্ত্রী এগিয়ে এসে একেবারে নিষ্ঠা সহকারে তাকে হাতে ধরে ঘরে নিয়ে কাপর চোপড়ের ব্যবস্থা করে চান করিয়ে খাইয়ে দাইয়ে তারপর কথা বলতে বসল । সব মনযোগ দিয়ে শোনে আমাকে ডেকে সামনে বসিয়ে তপনের বউকে সোজা ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে , তোমার দাদা তোমাদেরকে যতটুকু সাহায্য করার করবে, তোমরা যা ভাল মনে করবে তাই করবে , তপনের কি হবে, তোমার কি করা দরকার এ বিষয়ে তোমরা কথা বলতেই পার, তোমার দাদা তোমাদেরকে এত বছর ধরে চেনে জানে- এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই তবে আমার শুধু একটাই কথা আজকের পর থেকে আমার বাড়িতে এ বিষয়ে যেন আর একটিও কথা না হয় এবং তোমরা আমাদের বাড়িতে আরো আস এটা আমার মোটেই পছন্দ না ।

-------চলবে ।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৪২৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/১০/২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • পরবর্তী অংশ পড়তে চাই...
  • সুজিত পাত্র ১০/১১/২০১৯
    বেশ গল্প ।চলুক
  • দীপঙ্কর বেরা ৩০/১০/২০১৯
    বাহ। বেশ।
  • শুরুটা কীভাবে, বুঝতে পারছি না।
  • এইচ আর মুন্না ২৮/১০/২০১৯
    স্যার গল্প কি শেষ?
    খুব ভালো লাগছিলো
  • সুন্দর
 
Quantcast