www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

পরিচয়হীন

বেরিয়ে এলাম, বেশ্যা হলাম
কুল করলাম ক্ষয়
এখন কি না ভাতার শালা
ধমকে কথা কয় !


কথা গুলো চিবিয়ে চিবিয়ে যখন মুক্তা আমায় বলছিল , আমি হা করে তাকিয়ে ছিলাম !

ভার্সিটিতে একই হলে থাকার সুবাদে জানতাম ওর প্রেমের কথা ।
মাস্টার্স-এর পরীক্ষা যখন শেষের দিকে ওকে আটকানোর জন্যে বাড়ি থেকে টাকা দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়, যেনো পরীক্ষার পর ও বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হয় ।
বাড়ির মানুষজন কানাডা প্রবাসী ছেলে ঠিক করে রেখেছে বিয়ে দিতে ।

মুক্তার মাথায় তখন বিয়ে নিয়ে কোন পরিকল্পনা নেই । ওদের প্রেমেও এমন কোন জটিলতা ছিল না যে, সেই সময় বিয়ে করাটা জরুরী ছিল ।
কিন্তু পরিবার থেকে বড় বোনকেও একই কায়দায় বিয়ে দেওয়ায় মরিয়া হয়ে উঠে মুক্তা !

জীবনে যাকে বিশ্বাস করে হাতটা ধরেছিল, সেই সুমিতকে অনুরোধ করেছিল একটা সাবলেট বাসা খুঁজে দিতে...

নারীবাদী সুমিত নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাস করলেও মুক্তাকে নিজের ঘরে আটকাতে চেয়েছিল ।

মায়ের অমতে বাবার সাথে বিয়ের পরিকল্পনা করে সুমিত মুক্তাকে জানায়। মুক্তা তখন কোনভাবেই বিয়ে করবে না...

কিন্তু একান্ত ভরসার মানুষ সুমিত যখন জানায় এই সময় বিয়ে না করলে আগামী একবছরের মধ্যে আর বিয়ে করতে পারবে না, তখন মুক্তা নিরুপায় হয়ে বিয়ে করে সুমিতকে।

খান্ডারনি শাশুড়ির অত্যাচারে দাঁতে দাঁত চেপে মুক্তা সুমিতের সাথে জীবন পার করতে থাকে।

শাশুড়ি ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে, মুক্তা একটা 'বেশ্যা', আর তাই সে (মুক্তা) তার ছেলেকে কব্জা করেছে ।

শাশুড়ির এহেন কথাবার্তায় মুক্তা নিজেকে ইদানিং তাই ভাবতে শুরু করেছে !

মুক্তার কথা হচ্ছে সে তার স্বামী সুমিতের সাথে আছে একজন রক্ষিতা হিসেবে, স্ত্রী হিসেবে নয় । যে এখন আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগা একজন মানুষ । স্বাধীনভাবে শাশুড়ির উল্লেখ করা সেই পেশায় জড়িতদের তবুও আলাদা পরিচয় আছে, মুক্তার তাও নেই ।
আর যেই সুমিতকে ভরসা করতে বাধ্য হয়েছিল, সেই সুমিত প্রতিনিয়ত অফিস থেকে বাসায় ফিরে মুক্তার নামে শাশুড়ির কান পড়া শুনতে শুনতে এখন মুক্তাকেও যথেষ্ট পরিমাণেই চাপের মধ্যে রাখতে শুরু করেছে...

মাঝে মাঝে জানালার গ্রীল ধরে মুক্তা ভাবে...
বিয়েটাকে খুব জরুরী মনে না করেও কেন সে বিয়েতে রাজি হয়েছিল !?

---
গল্প
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯১২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৪/১০/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • শুধু একটাই প্রশ্ন কেন এমন হয়.............?
  • suman ২৫/১০/২০১৩
    নারীর মনোবেদনা আর অস্তিত্ব স্ংকট নিখঁতভাবে তুলে এনেছেন লেখক ...মানুষ তার প্রতিকূল পরিবেশে স্বাধীনতা হারিয়ে নিদারুন যন্ত্রনার সাথে সন্ধি করতে বাধ্য হয় ...কিন্তু তা কতোদিন সম্ভব ...সেখানে তো আত্মার মৃত্যু অনিবার্য ...
    • আরজু নাসরিন পনি ২৫/১০/২০১৩
      নারীর আত্নার মৃত্যু কখন হয়ে যায় সে বোধ করি নিজেও বুঝতে পারে না, যখন বুঝতে পারে...ততক্ষণে অনেক বেশিই দেরী হয়ে যায় ।

      অসাধারণ মন্তব্য ।।
  • জহির রহমান ২৪/১০/২০১৩
    আসলে গল্পটি পড়ে কি বলা উচিত বুঝতে পারছিনা। সত্যিই আমাদের সমাজে এমন ঘটে।

    একটি ভালো গল্পের জন্য ধন্যবাদ।
    • আরজু নাসরিন পনি ২৫/১০/২০১৩
      পাঠে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই, জহির ।
      হ্যাঁ, এসব কষ্টগুলো নিরবেই রয়ে যায়...অপ্রকাশিতই থেকে যায় ।

      শুভকামনা সবসময়ের জন্যে ।।
  • কি বাস্তবতাই না তুলে এনেছেন গল্পে।আমাদের চোখের আড়ালে ঘটে যাওয়া কিছু বাস্তব চিত্র।যা অনেকেরই অজানা।খুবই ব্যথিত হই, যখন সমাজে ভালবাসার নামে তার সাথে এমন অনাচার হয়।ধন্যবাদ ভালো একটি গল্পের জন্য।
    • আরজু নাসরিন পনি ২৫/১০/২০১৩
      প্রিয় সাখাওয়াৎ, আপনার মন্তব্যগুলো সবসময়ই দারুণ অনুপ্রাণিত করে আমায় ।
      পাঠে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই ।।
  • খুব ভালো লেগেছে
    • আরজু নাসরিন পনি ২৫/১০/২০১৩
      পাঠে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই, নয়ন ।
      আমার কলেজ জীবনের এক বন্ধু ছিল নয়ন...খুব ভালো ছিল বন্ধুটি ।
      সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছে ।
 
Quantcast