www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

হৃদয়ের রক্তক্ষরণ-মা

প্রায় ৩০০ কিলোমিটার জার্নি করে বড় আপার বাসায় যখন গেলাম ফর্সা কপালে চিতি পড়া বড় আপার হাস্যোজ্জ্বল মুখটা দেখে মনটা ভরে গেল । বুকের ভেতর দুরু দুরু করছিল মাকে দেখবো কেমন, কে জানে !

ঘরে ঢুকতেই দেখলাম আম্মা খাটের উপর বসে আছে । আমাকে দেখে হুঁ হুঁ করে কেঁদে ফেললেন । বেশ অনেক দিন পর মাতা-কন্যার সাক্ষাৎ । আমি এসব পরিস্থিতিতে চমৎকার সামলে উঠতে পারি । অথচ এই আমিই রাত জেগে, স্বামীর বুকে মুখ লুকিয়ে মায়ের জন্যে কেঁদে কতো রাত পার করে দিয়েছি !

সেই মায়ের সামনে হাসতে হাসতেই বললাম, "কি হলো ? আররে, ধুর ! কাদেঁন ক্যান ?!" বলতে বলতে সঙ্গে নেয়া মিষ্টি, আম আর লিচুগুলি আম্মার সামনে বাড়িয়ে দিলাম । আম্মা লিচু বেশ পছন্দ করেন । আর জ্বরের মধ্যে অফ সিজনে পেয়ারা !

সে আরেক মজার ব্যাপার ! জ্বরের মধ্যে আম্মা অফ সিজনের ফল খেতে চান । আর সে জন্যে আমাদের মধ্যে লিচুর জন্যে খোঁজ, দ্যা সার্চ পড়ে যায় !

সেবার জ্বরের মধ্যে আম্মার শরীফা ফল খেতে ইচ্ছে হলো ! আরতো পাওয়া যায় না সেই ফল ! অনেক খোঁজাখুঁজির পর পাওয়া গেল শরীফা ফল ।
এতোদিন পরেও ঘটনা মনে হলে কেমন নস্টালজিক হয়ে যাই !

আম্মার ধারণা আমার হৃদয়রটা পাথরের, কারণ কোনদিন আম্মার সামনে নিজের দূর্বল চিত্তের অনুভুতিগুলো প্রকাশ করা হয় নি । কিন্তু আম্মাকে প্রতিনিয়ত কতোটা মিস করি তা কখনোই বলা হয় না আম্মাকে ।
আম্মা, কেমন করে বলি... প্রতি মুহুর্তে আপনার জন্যে আমার হৃদয়ের রক্তক্ষরণের কথা ?!

কখনোই বলা হবে না ! কখনোই বলা হবে না !

-----------
গল্প লেখার চেষ্টা
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৬১৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/১০/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • খুব ভাল লাগল আরজু ভাই
  • সহিদুল হক ২০/১০/২০১৩
    ছোট্ট অথচ সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে গল্পটাতে।
    আমরা অনেক কিছুই অন্তরে অনুভব করি কিন্তু মুখে প্রকাশ করা হয়ে ওঠেনা কখনই। এটা মানব-জীবনের একটা ট্র্যাজিডি!
    • আরজু নাসরিন পনি ২১/১০/২০১৩
      প্রকাশ করতে না পারাটা একটা ট্র্যাজেডি বটে...তবে বলতে না পারার কারণে কিন্তু ভেতরে যে অস্থিরতা সেটাই ভালোবাসা কে আরো বাড়িয়ে দেয়...ছড়িয়ে দেয় ।
      পাঠে অনেক কৃতজ্ঞতা রইল ।।
  • আহমাদ সাজিদ ২০/১০/২০১৩
    অতি সত্যকথা। চেষ্টা চালিয়ে যান।
  • প্রবাসী পাঠক ২০/১০/২০১৩
    আম্মা , কেমন করে বলি... প্রতি মুহূর্তে আপনার জন্য আমার হৃদয়ের রক্তক্ষরণের কথা?!
    সত্যিই কখনই বলা হয়না। তবুও প্রতিটি মা নিশ্চয় বুঝতে পারে সন্তানের মনের কথা।
    • আরজু নাসরিন পনি ২০/১০/২০১৩
      হয়তো পারে...জানি না ।

      আমি কখনো প্রকাশ করতে পারি না মাকে নিয়ে আমার অস্থিরতার কথা ।।

      অনেক ধন্যবাদ প্রবাসী ... ।।
  • চমৎকার! অসাধারণ হয়েছে।খুবই সুন্দর একটি ভাবনা।যা প্রতি টি মানুষকে নষ্টালজিক করে।কেননা সব সন্তান ই তার প্রিয় মাকে ভালবাসে।কিন্তু খুব কম সন্তান ই তা প্রকাশ করে।আমরা সহজে কেউ বলিনা যে মা আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি।কিন্তু হৃদয়ে প্রতিনিয়ত মায়ের তরে যে রক্তক্ষরণ হয়, তা একমাত্র ঐ সন্তান ই জানে।আসলেই খুব হৃদয় ছুঁইয়ে গেল আপনার গল্পে।ধন্যবাদ খুবই সুন্দর লেখার জন্য।
    • আরজু নাসরিন পনি ২০/১০/২০১৩
      সব সন্তানই ভালোবাসে...তবুও মাও অতৃপ্ত থাকে...সন্তানও অতৃপ্ত থাকে...চলতে থাকে ভালোবাসার অদৃশ্য প্রতিযোগিতা...কেউই হারতে চায় না... ভালোবাসা যে শেষ হবার নয় ।
      অনেক ধন্যবাদ জানাই সাখাওয়াৎ...আপনার মন্তব‌্যটিও অনন্য ।।
 
Quantcast