www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ভালোবাসা আসে প্রাণ থেকে তার জন্য কিছু চাইনা

ভালোবাসা আসে প্রাণ থেকে, তার জন্য কিছু চাইনা।
♦♣♣



কয়েকদিন আগে জামালপুর গিয়েছিলাম। ইচ্ছা ছিলো থাকবো।আমার আবার বন্ধুদের বাসায় থাকার অভাব নাই। কারন একটা থিউরি আছে, সেটা হল নিজের ছেলেকে সব বাবা মা বলে ওই ছেলে টা এতো ভালো। তুই কেন তার মতো হয়ে পারলিনা?আমিও আসলে সব বন্ধুদের বাড়িতে তার বাবা মার নিকট ওই থিউরির ফলাফল টাই পেয়ে থাকি।আমাকে তারা অনেকেই আইডল হিসেবে দেখে। বলতে গেলে নিজের সন্তান থেকে আমাকে বেশি যত্ন নেয়। যদি যাই কোনদিন কোন বাড়িতে। বিশেষ করে আমার আন্টিরা খুব বাবা বাবা ছাড়া কথাই বলেনা। কথা হল আমিও একটু সবার এই ভালোবাসার প্রতি দুর্বল।সবার এই বাবা ডাক আমার অন্তরে হাজার মায়ের জন্ম দেয়। তবে থাকা হল না।
আসার সময় এমন সময়ে রেল স্টেশনে গিয়েছি, দেখি ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে। আমি লেভেল ক্রসিং এ অটো রিকশা হতে নেমে গেলাম। আর দৌর দিলাম ট্রেনের দিকে। তারপর টিকেট কাটবো তার সময় কোথায়?তাও আবার লোকাল ট্রেন। নামটাও জানিনা। একজন বললো এটা ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস না কি একটা। যাই হোক উঠলাম শেষের বগিতে । কারন আমি পিছন হতেই দৌরাতে দৌরাতে গিয়ে সেই শেষের বগিটাতে কোন রকম ঠাই পেয়েছি। অবশেষে বগিতে উঠলাম। তবে চিন্তা হচ্ছিলো আমি টিকেট ক্রয় করিনি। এটার জন্য জরিমানা হলে সমস্যা।তার উপর বসার জায়গা মাত্র নাই। থাক দাড়িয়ে আছি। আর ফোনে ১জিবি নেট ছিলো, বোনাস অফার হিসেবে পেয়েছিলাম। সেটা আসল কথা নয়। কথা হল পিছনের ছিট থেকে কেউ আমাকে ডাকলো। ভাবলাম হয়তো অন্য কাউকে ডাকছে।
আবার এই ভাই দাড়ায়া আছেন? আসেন আমাদের সাথে সিট ভাগাভাগি করে বসবোনে।আমি এখন বুঝলাম আমাকেই ডেকেছে। আমি গেলাম।একজন বড় ভাই। আমার চাইতে কিছু বড় হবে হয়তোবা।তার স্ত্রী আর ছোট ফুটফুটে কণ্যা। আমাকে জিজ্ঞাসু ভাবেই বললো, কোথায় যাবেন? আমি বলালাম ময়মনসিংহ। আপনার বাড়ি কি ময়মনসিংহ তেই? আমার বাড়িও। আমি থাকি শহরেই, মার্কেটে আমি ব্যবসা করি। আমি বললাম জি। আমিও ময়মনসিংহ থাকি। আমার বাড়িও ময়মনসিংহ।সে তখন বললো আমরা এক এলাকার মানুষ, না হয় একটু কষ্ট হলে হবে। তাই বলে বসার জায়গাটা ভাগ করে যাবোনা। বসুন একসাথে বসে যাই।আমি মনে মনে ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিলাম। আর ধন্যবাদ দিলাম ওই ময়মনসিংহের আমার এলাকার ভাইকে। বুঝলাম আসলেই আমার এলাকাতে অনেক ভালো মানুষ আছে।আর তারা অনেক সহজেই মানুষকে ভাই ভাবতে পারে। তার ছোট মেয়ে আলতো আলতো কথা বলতে শিখছে।চললেট কে সে চককেট বলে।আর বাদাম কে নাকে বাজিয়ে কিছু একটা বলতে চায়। যাই হোক কি সুন্দর নিস্পাপ সে। বাদাম ওয়ালা আসলো, য়ার বায়না সে বাদাম খাবে।তার মা বললো না মা ট্রেনে এসব খায়না। বাবা বলে না থাকে কিছু হবেনা। খেতে চাইছে যখন।একটু পর আইসক্রিম ওয়ালা আসলো, মেয়ের বায়না, আইসকিলিম খাবো, আইসকিলিম। আচ্ছা বলে ওই ভাই আইসক্রিম ওয়ালাকে ডাকলো। ভাবি একটু নাক বাকা করে বলছে, কি করছো, বাবু চাইলো তাই এই সব কিছু খাওয়াতে হবে? আর এই আইসক্রিম ১০টাকা? আরে লাগবেনা। তিনিও তার স্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে একটু মুসকি হেসে বললো, আমার একটাই মাত্র আম্মা জান সে চাইছে। টাকা বেশি তো কি হইছে।কিনে দেই? মনে হয় অনুমতি চাইলো। বুঝলাম এই কথা শুনার পর তার (স্ত্রীর) মুখটা একেবারে উজ্জল হয়ে উঠলো। হয়তো তার কাছে অনুমতি নেয় এই জন্য সে খুশি। বা তার কথার সে ভালো মূল্যায়ন পায়, তার স্বামীর কাছে। এই জন্য তার মন খুশি। বা সে এই ভেবে খুশি তার স্বামী তার কণ্যাকে কত মূল্যায়ন করে আদর করে। স্নেহ করে। তার মুখের দিকে তাকানোর মতো ছিলো।
আসলে ভালোবাসা হয়তো এই মধুর সম্পর্ককেই বলে। দুটি মনের বিশ্বাস , ভালোবাসা মর্যাদা।
সব মিলিয়ে যখন মনে প্রশান্তি আসে। তার জন্য হাসতে ইচ্ছা করে, বাচতে ইচ্ছা করে। একসাথে বাচতে ইচ্ছা করে। একটু পর আসলো আচার ওয়ালা। পিচ্ছি বাবুটি তাও খাবে। এখন ভাই বলছে। আম্মু গাড়িতে আচার খায়না। ভুতে ধরবে। বুঝলাম ভাই কুসংস্কার বিশ্বাস করে।মামুনি এখন কিনে নেই বাসায় যাইয়া খাইবা হুম?আরো আইসক্রিম কিনে দিবো। বাবু বলে চানাচুল। হ চানাচুর ও। তুমি আর তোমার আম্মা খাইবা হুম? এই বলে সে কিছু চানাচুর প্যাকেট কিনে নিলো আর আচার ওয়ালার থেকে আচার। আমি দেখলাম তার স্ত্রী তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। আসলে মানুষের এই খুশি,সুখ দেখলে আমার খুব ভালো লাগে উপভোগ করি। মানুষ তার ভালোবাসা কত ভাবে প্রকাশ করে। তাদের মন কত কিছু পেয়ে খুশি হয়। না পেয়েও খুশি হয়। ভালোবাসা থাকে মনে। আর তা পেতে মন লাগে, টাকা পয়সা নয়।লাগে মনের প্রাণের এক অটুট বন্ধন।আসল কথা হল আপনি ঠিক তখনি শান্তিতে থাকতে পারবেন, যখন আপনার লাইফ পার্টনার কে (স্ত্রী, স্বামী) শান্তিতে থাকতে দিবেন। আপনি তখনি ভালোবাসা, সম্মান পাবেন, যখন আপনার লাইফ পার্টনার (স্বামী, /স্ত্রী) কে আপনি নিজে ভালোবাসা দিবেন, সম্মান জানাবেন, তার আবেগ তার অনুভূতি গুলোকে মূল্যায়ন করবেন। তার চাওয়া তার কি পাওয়া আছে আপনার কাছে তা খেয়াল রাখবেন। সবচাইতে বড় কথা তাকে স্বাধীনতা দিবেন চলার, বলার।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৫৮৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০২/১০/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast