www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

একজন বিখ্যাত ব্যক্তির কাহিনি

বন্ধুরা! আজ তোমাদেরকে একটি কাহিনি শোনাব,শিক্ষণীয় বিষয়ে ভরপুর প্রসিদ্ধ একটি কাহিনি;মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বর্ণনা করেছেন কাহিনিটি যেন আমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি সেখান থেকে । ইসলামের ইতিহাসেও খুব যত্নের সহিত সংরক্ষিত আছে কাহিনিটি । কার কাহিনি সেটি জানতে ইচ্ছে করছে তো খুব ?
বলছি,সেটি হল হযরত লুকমান (আঃ)-এর কাহিনি । তিনি ছিলেন নবী হযরত আইয়ুব (আঃ)-ভাগিনা । তিনি কত বছর বয়স পেয়েছিলেন জানো? একহাজার বছর! হ্যাঁ,সে-জন্য-ই তো তিনি হযরত আইয়ুব (আঃ)-অনেক পরের নবী হযরত দাউদ (আঃ)-এর যুগেও ছিলেন ।
তাঁর জীবনে অনেক আশ্চর্যজনক কাহিনি সংঘটিত হয়েছিল,যেগুলি তাঁর বিচক্ষণতা এবং প্রত্যুত্‍পন্নমতিত্বের পরিচয় বহন করে । সেখান থেকে আজ শুধু একটিই বলব,বাকিগুলো পরে সময় হলে বলব,কেমন ? কথা না বাড়িয়ে বলেই ফেলি কাহিনিটি--একদিন তাঁর মালিক তাঁকে বললেন,এই ছাগলটি জবাই করে তার সবচেয়ে ভাল দুইটি গোশতের টুকরো বের করে আনো । তখন তিনি ছাগলটি জবাই করে জিহ্বা আর হৃত্‍পিণ্ড বের করে মালিকের সামনে রাখলেন । মালিক সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বললেন,মাশাআল্লাহ । তারপর আরেকটি ছাগল দিয়ে বললেন,এটিকে জবাই করে তার সবচেয়ে খারাপ দুইটি গোশতের টুকরো আনো । তখন তিনি সেই একই কাজ করলেন! মালিক খুব অবাক হলেন,বললেন-- প্রথমে সবচেয়ে ভালো দুইটি গোশত বের করতে বললে এ দুটিকে বের করলে, আবার খারাপ দুটির কথা বললেও একই জিনিস আনলে..? কেন ? তিনি বললেন,হে আমার মালিক ! জিহ্বা এবং হৃত্‍পিণ্ড হলো এমন দুটি বস্তু,যেগুলো ঠিক থাকলে তাদের চেয়ে ভাল অন্য কিছু হয় না । আর যদি সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়,তখন তাদের চেয়ে খারাপ আর কোন বস্তু থাকে না । দেখো,কী চমত্‍কার কথা !
হযরত লুকমান (আঃ) ছিলেন একজন কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাস । তার ঠোঁটদুটি খুব মোটা ছিল,নাক এবং পা ছিল চেপটা; মোটকথা, অসম্ভব বিশ্রি একজন মানুষ ছিলেন তিনি । কিন্তু তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন , তাঁর অন্তরটি খুব নরম ছিল । সে-জন্য-ই তো সবসময় তাঁর কাছে মানুষের ভিড় জমতো । একদিন তিনি লোকদের সাথে বসে তাদেরকে নসিহত করছিলেন,তখন একজন লোক এসে বলল,আপনি কি ঐ ব্যক্তি নয় যে আমার সাথে মাঠে ছাগল চরাত ? তখন তিনি বললেন,হ্যাঁ আমি-ই সেই ব্যক্তি । তখন লোকটি বলল,তো আপনি এত সম্মানিত কীভাবে হলেন ? তিনি উত্তর দিলেন, আমি অপ্রয়োজনীয় কথা বলি না, যৌনতাকে আমি নিয়ন্ত্রণ করি এবং আমি সবসময় সত্য কথা বলি । যদি তুমি এই গুণগুলো অর্জন করতে পারো,তখন তুমিও আমার স্থানে আসতে পারবে ।
তাঁর অরোও অনেক গুনাবলী আছে: তিনি সবসময় চিন্তামগ্ন থাকতেন,অলস সময় কাটাতেন না এবং দিনের বেলায় কখনোও ঘুমাতেন না । হযরত দাউদ (আঃ) নবী হওয়ার পূর্বে তিনি বনি ইসরাইলের বিচারপতি ছিলেন,তাদের মাঝে তিনি ফতোয়া দিতেন ।
কোন ব্যক্তি বিশ্রি হলেও তার মধ্যে যদি গুণ থাকে,তা হলে সেও সেরা মানুষ হতে পারে । অথাত্‍,মানুষের আসল সৌন্দর্য বর্ণে নয়,গুণাবলীতেই মানুষের সৌন্দর্য এবং শ্রেষ্ঠত্ব । হযরত সাঈদ ইবনে মুছাইয়্যিব (রহঃ)-এর কাছে একবার এক নিগ্রো ব্যক্তি কিছু মাসআলা জিজ্ঞেস করতে এল,তাকে তিনি বললেন,কালো হওয়ার জন্য দুঃখ করো না,কেননা শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের মধ্যে সুদানেরও তিন জন রয়েছেন--হযরত বেলাল (রাঃ),হযরত ওমর (রাঃ)-এর গোলাম মাহজা এবং হযরত লুকমান হাকিম (আঃ)
বন্ধুরা ! আমরা যে ইবাদাত করি, এগুলো সব আমাদের আকিদা-বিশ্বাসের ওপর নির্ভরশীল;যদি আকিদা ঠিক হয়,তখন আমাদের আমলও ঠিক হবে;আর যদি তা ঠিক না হয়,তখন আমাদের আমলও ঠিক হবে না । অর্থাত্‍,আল্লাহর নিকট আমাদের ইবাদাতসমূহ কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হলো আকিদা-বিশ্বাস ঠিক হওয়া । তাই তিনি নিজ পুত্রকে নসিহত করতেন যে,আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করো না,কেননা শিরক খুব বড় একটি অপরাধ ।
তিনি তাঁর পুত্রকে আরো অনেক নসিহত করেছিলেন,সেখান থেকে কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হল--
১ । হে বত্‍স ! আল্লাহর ইবাদাত করো । ২ । যখন মৃত ব্যক্তিকে জানাযা পড়ানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়,তখন তুমি মৃত ব্যক্তির পিছনে থেকো,কখনে সামনে যেও না ।৩ । মোরগকে কখনো গালি দিও না,কারণ সে তোমাকে নামাযের জন্য জাগ্রত করে যখন তুমি ঘুমিয়ে থাকো । ৪ । মূর্খের সাথে কখনো বন্ধুত্ব করতে যেও না । ৫ । সবসময় আল্লাহকে ভয় করো । ৬ । এমন আসর কখনো মিস করো না,যেখানে আল্লাহর যিকির হয় । এধরণের আরো অনেক নসিহত রয়েছে,সময় হলে আরেকদিন বলব । ঠিক আছে তো ?
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৪৩৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৫/০১/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

 
Quantcast