www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

উপস্থিত বুদ্ধি

মাছ ধরাটা রহিম শেখের পেশা নয় নেশা।প্রতিদিন সাংসারিক কাজ শেষে যেই সন্ধা গনিয়ে আসে
ঢিল বর্শী রাখা টিনের বড় কৌটাটা নিয়ে চলে যায় ব্রন্ধপুত্র নদের পাড়ে।আজও তার ব্যাতিক্রম
হয়নি।রহিম শেখ এসেই প্রথমে একটা ছালার বস্তা বিছিয়ে গদির মতো করে নেয়।তার পর কৌটা
থেকে সূতা পেচানো ঢিল বর্শীটা বের করে বর্শীতে মাছের খাবার গেথে নেয়।তারপরে দাড়িয়ে
শরীরের সব শক্তি প্রয়োগ করে বর্শীটাকে ঢিল দিয়ে নদের মাঝখানে ফেলে,এপ্রান্তে বেধে রাখা
সূতার মাথায় কাঠিটা সামনে রেখে একটা বিড়ি ধরায়।
কোনদিন সূতায় টান পড়ে,ক্ষিপ্ত হস্তে সূতা টেনে দেখা যায় বোয়াল,গজার কিংবা শোল মাছ ধরেছে।কোনদিন এমনি বসে থাকতে হয়।মধ্যরাতে,কোন দিন ভোর বেলা খালি হাতে বাড়ি
ফিরে।আজও বর্শী ফেলে বসে আছে হঠাৎ সূতায় প্রচন্ড টান পড়লো। তখন রাত বোধকরি
বারটা বাজে।রহিম শেখ কৌশলের সাথে শক্তি প্রয়োগ করে সূতা টানতে লাগলো।বর্শী যখন
পাড়ের কাছে এল,তখন রহিম শেখের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল।বর্শীতে বড় এক বোয়াল মাছ
ধরে আছে।অনেক কষ্টে টেনে হেচড়ে বোয়াল মাছটা পাড়ে তুলল।তারপর বর্শি থেকে মাছটা
ছাড়িয়ে সূতা গুটাতে লাগলো বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য।হঠাৎ দুইটা ভূত ঝগড়া করতে করতে
তার সামনে এসে দাড়ালো।একজন বলছে ওটা বর্শী আরেক জন বলছে ওটা টর্শী।রহিম শেখের
শরীর কাটা দিয়ে উঠলো।কিন্ত ভয় পেল না।সে বুঝতে পারলো তার সামনে বিপদ।আর বিপদে
হোস হারালে শেষ।আসলে হয়েছে কি,এতক্ষন আড়ালে দাড়িয়ে ভূত দুজন রহিম শেখের বর্শী দিয়ে
মাছ ধরা দেখছিল।হঠাৎ তাদের মধ্যে বর্শী নিয়ে দ্বন্ধ বাজে।কেউ কারও কথা মানতে রাজি নয়।
তাই রহিম শেখের কাছে জানতে এসেছে ওটা বর্শী না টর্শী।
প্রথম ভূত দ্বিতীয় ভূতকে বলল,থাম নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে কাজ নেই।মানব সন্তানটাই বলুক ওটা কি? রহিম শেখ ভেবে দেখলো যদি বর্শী বলে তাহলে দ্বিতীয় ভূতটা গাড় মটকাবে।
আর টর্শী বলেল প্রথম ভূতটা গাড় মটকাবে।তাই সে মহা ভাবনায় পড়ে গেল।হঠাৎ তার মাথায়
একটা বুদ্ধি এল।সে ভূতদের উদ্দেশ্যে বলল,দেখ আমি নিরীহ মানুষ।তোমরা আমার বিচার মানবে তো ! ভূতেরা বলল খুব মানবো, তুই বল।রহিম শেখ বুকে সাহস নিয়ে ধীরে ধীরে বলল
ওটা বর্শীও নয়,টর্শীও নয়। ওটা হল বাঁকা লোহা।এই শুনে এক ভূত আরেক ভূতকে বলল,মিছা
মিছি নিজেরা ঝগড়া করলাম। চল ভাই,মানব সন্তান ঠিকই বলেছে । ওকে আর বিরক্ত করে
লাভ নেই।ভূতেরা শূন্যে মিলিয়ে গেল।রহিম শেখ লম্বা পায়ে বাড়ির দিকে হাটা দিল।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮৪৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/০১/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast