www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বাঘ বিড়ালের দ্বন্ধ

বনের রাজা বাঘ একদিন রাতে বন ছেড়ে বের হল।বনের পাশের লোকালয়ে মানুষের
জীবন যাপন দেখার জন্য।মানুষ যেমন বাঘকে দেখে ভয় পায়।বাঘও তেমনি মানুষকে
দেখে ভয় পায়।বাঘ গ্রামের অলি গলিতে গুটি গুটি পায়ে হাটছে কখনো কখনো দাড়িয়ে
সারি সারি ঘর গুলো পর্যবেক্ষন করছে।গোয়াল ঘরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গরু গুলোর
হাম্বা হাম্বা ডাক শুনে উকি ঝুকি মারছে।হঠাৎ বাতাসে তার নাকে একটা সুমধুর সুগন্ধ
এসে লাগলো।বাঘ মোহিত হয়ে গেল।কোন দিক থেকে সুগন্ধটা আসছে তা জানার জন্য
দাঁড়িয়ে দিক ঠিক করে নিল,তারপর গুটি গুটি পায়ে এগোতে থাকলো।একটা কুড়ে ঘরের
সামনে এসে বাঘ থেমে গেল।এবার সুগন্ধটা আরও ভারি হয়ে নাকে লাগলো।
বাঘ বেড়ার ফাক দিয়ে উকি মেরে দেখলো,এক বুড়ি উনুনে হাড়ি বসিয়ে আগুনে তা
দিচ্ছে আর মাঝে মাঝে ঢাকনা তুলে চামিচ দিয়ে নাড়া চাড়া দিচ্ছে।আর সেটা থেকেই
সুগন্ধটা বেরিয়ে আসছে।বাঘ রাজ্য,প্রজা সব ভুলে গেল।তার একটাই চিন্তা এটা কি
জিনিস তা জানতে হবে।সে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখতে লাগলো।তো হয়েছে কি পাশের ঘরের
জেলে বউ প্রকৃতির ডাকে বের হয়েছে পায়খানায় যাওয়ার জন্য।বের হয়েই দেখে তার
থেকে কিছুটা দুরে কালো মত ইয়া বড় এক জন্ত দাড়িয়ে।ওরে বাবারে থেয়ে ফেললরে
বলেই দৌড়ে গিয়ে ঘরে ডুকে দরজা বন্ধ করে হাউ-মাউ করে চিৎকার করতে
শুরু করলো।তার এমন চিৎকারে গ্রাম বাসী লাঠি দা নিয়ে ছুটে এল।বাঘ দেখলো
মহাবিপদ।দে ছুট বলে সে পালিয়ে বনে চলে গেল।বনে গিয়ে বাঘের খাওয়া নাই,
দাওয়া নাই,দিন রাত শুধু একটায় চিন্তা।একদিন বাঘের মাথায় একটা বুদ্ধি এল।
আকারে বড় বলে সে গ্রামে যেতে পারবে না ঠিকই,কিন্তু তার মাসি বিড়াল তো
আকারে ছোট।তাছাড়া সে শান্ত স্বভাবের,লোকালয়ে গেলে মানুষ তাকে তেড়ে আসবেনা।
যেই ভাবা সেই কাজ।বাঘ বিড়ালকে ডেকে বলল মাসি তোমাকে গ্রামে যেতে হবে।
কি সেই সুগন্ধময় খাবার,কি দিয়েই বা সেই রান্না হয় তা তোমাকে জেনে আসতে হবে।
তারপর সব ভালভাবে বুঝিয়ে দিয়ে,বুড়ির সেই কুড়ে ঘরে পৌছার পথ দেখিয়ে দিল।
বিড়াল বাঘের বরননা অনুযায়ী বুড়ির কুড়ে এসে পৌছলো।তারপর,ভাজা মাছটি উল্টে
খেতে জানেনা এমন ভাল মানুষটির মতো বুড়ির কুড়ে ঘরের একপাশে ঘাপটি মেরে
পড়ে রইলো।অনেক দিন কেটে গেল বিড়াল আর গ্রামে ফিরে আসেনা।বাঘ ভাবলো
মাসি হয়তো বিপদে পড়েছে,খোজ নেওয়া দরকার হাজার হলেও মাসিতো।তাছাড়া
সুগন্ধের রহস্য জানার মোহ!তাই বিপদ জেনেও রাতে বুড়ির কুড়ের ঘরের উদ্দেশ্যে
রওনা দিল।
এদিকে হয়েছে কি,বুড়ি আসলে পায়েস রান্না করে।পায়েস রান্না করার আগে পায়েসের জন্য
উনুনে দুধ বসিয়ে রাখে।একদিন বিড়াল দেখে উনুনে পাতিল বসানো আশে পাশে কেউ নেই।
সে ভাবল দেখি পাতিলে কি রাখা আছে।কাছে গিয়ে দেখে পাতিলে দুধআর দুধের উপর ঘন সর পড়ে আছে।বিড়াল রোভ সামলাতে পারলো না।সে দুধের সর
খেয়ে পেট পুরে তার জায়গায় এসে ঘুমিয়ে পড়লো।এভাবে প্রায়ই সে দুধের সর খায়।সে ভাবলো
দৌড়াদৌড়ি করে খাবার যোগাড় করার চেয়ে এটাইতো ভাল।সে বাঘের ভয়,বনে যাবার চিন্তা বাদ
দিল।
বাঘ বুড়ির কুড়ে ঘরে এসে দেখলো,ঘরের বাইরে ভাঙ্গা বাশের মাচার উপর বিড়াল আরামে
ঘুমাচ্ছে।বাঘ গড় গড় করতে করতে বিড়ালকে ধমকে বলল,মাসি বনে যাওনি কেন?বিড়াল
ধড়মড় করে উঠে এক লাফে ঘরের চালে উঠে বলল,আমি আর বনে যাব না।এখানে বেশ
আছি।বাঘ বলল বেশ,এখানে তোমাকে কিছুই করতে পারবো না,তবে মনে রেখ শুধু তোমাকে
নয়,তোমার পায়খানারও যদি দেখা পাই সেদিন বাপের নাম ভুলিয়ে দিব।সেই থেকে বিড়াল
পায়খানা করে মাটি দিয়ে ঢেকে রাখে।আর তখন থেকে বাঘ বিড়াল দ্বন্ধের সূচনা।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১১১১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১২/০৬/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • মোঃ মুলুক আহমেদ ১৯/১১/২০১৫
    Maybe
  • জহরলাল মজুমদার ০২/০৭/২০১৫
    বেশ বেশ হা হা হো হো
  • ভাল লাগল।
  • জে এস সাব্বির ১৪/০৬/২০১৫
    অছাম অইছে । সাপ-বেজী , বিড়াল-কুকুর এদের দ্বন্দ নিয়ে দারুণ কিছু তৈরী করবেন আশা করি ।
  • খালিদ ১৩/০৬/২০১৫
    valo lalo
  • খালিদ ১৩/০৬/২০১৫
    ha ha ha
  • T s J ১২/০৬/২০১৫
    Nice story
 
Quantcast