www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

জীবন এক টুকরা ফসলি জমিন

লালন শাহ আর আব্দুল আলিম শুনা মজিদ মিয়া এখনো সুযোগ পেলে ফোক গান জারি সারি সব শুনে। “খাঁচার ভিতর অচিন পাখি“ ”বাড়ির কাছ আরশী নগর“ কিংবা “মিলন হবে কত দিনে”। টেপ রেকর্ডারের লো ভলিয়মে মন উজাড় করে নীরবে শুনতেই থাকে মজিদ মিয়া। আর কল্পনা করে দেশে গিয়ে মা বাবা ভাই বোন সবাই এক সাথে শিতল পাটিতে বসে দুপুরের ভাত খাবে। মা কাতলা মাছের বড় মাথাটা আমাকে দিবে খেতে ।

নয় বছর রোজগার ভালো করার পরও নিজের পকেটটা শূণ্য শূণ্য মনে হয়। আর এই শূণ্যতা মাঝে মাঝে আকাশ সমান হয়। এটা কিনা ওটা কিনা, এর জন্য ওর জন্য জিনিসপত্র কিনতে কিনতে নিজের জন্য ভুলে যায় মজিদ মিয়া। তবুও কিনে দুইটা শার্ট আর দুইটা প্যান্ট। দেশে যাওয়ার আনন্দে শিহরিত মন প্রাণ । এইতো আর এক মাস,কিন্তু এই এক মাস এত দীর্ঘতম মজিদ মিয়া অধৈর্য হয়ে পড়ে। এখন মমতাজের বুকটা পাট্টা যায় শুনে মনোযোগ দিয়ে।

এক দিন মাযের চিঠি আসে “তোমার বাবার অসুখ টাকা লাগবে”। চিঠি পাওয়ার পরের দিন সকালে মজিদ মিয়া ছুটে ব্যাংকে। একদিকে দেশে যেতে মন উতলা আরেক দিকে বাবার অসুখ জেনে মন অস্থির । কোনো কিছুই এখন ভালো লাগে না। যৎসামান্য টাকা যক্ষের ধনের মত হাতে রেখে ছিলো দেশে গিয়ে হাত খরচ চালাবে মনে করে। আজ সেই টাকাও শেষ কারণ মাসের মাঝখানে ধার কর্জও পাওয়া দুরূহ ।

এই মাসে বেতন ফেলে প্লানের টিকেট কিনতে হবে আর দেরি করা সম্ভব না। কিন্তু আবার চিঠি মায়ের তোর বাপ তোকে বিয়ে দিয়ে বউ দেখতে চায়। অথচ এমন কথা আগে বলে নাই এবং মজিদ মিয়াও কখনো বিয়ে নিয়ে চিন্তা করে নাই । বিয়ে করতে স্বর্ণ গয়না মেহমান অতিথি খাওয়া দাওয়া ওহ! অনেক টাকার দরকার । তাহলে কী মজিদ মিয়া দেশে যাবে না । বিয়ে করবে করবে না। হাসপাতালে বাবাকে দেখতে যাবে না।

গল্পঃ প্রবাস (৪)
১৩/৮/২৫
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৬১৮২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/০৮/২০২৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast