জীবন এক টুকরা ফসলি জমিন
প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডী পার না হওয়া মজিদ মিয়া ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে দেখে এদিক-ওদিক । বুকে চাপা কষ্ট আর চোখ সমুদ্র হতে জল নামতে চায় অঝোরে। সত্তর জন কর্মীর সাথে মজিদ মিয়াও একজন।বিদেশে এসে খুশি লাগলেও কিন্তু খুশির চেয়ে অজানা কষ্ট আর ভয় যেনো মজিদ মিয়াকে আড়ষ্ঠ করে রেখেছে। কোম্পানির অফিস হলরুমে গিয়েই ক্লান্ত ও জীর্ণশীর্ণ মজিদ মিয়া ফিল্টার হতে পানি নিয়ে ডগডগ করে গলায়
ঢালে যেনো বহুকাল তৃষ্ণার্ত সে। মজিদ মিয়া
দেশ হতে কোনো কাজ শিখে না আসায় যেমন হতাশ তেমন আরবী ভাষা না জানায় কিছুই বলতেও বূঝতে পারছে না।
মিশরীয় ফ্যোরম্যানের ঝাঁঝালো কণ্ঠের আরবীয় বকাবকি যেনো নিত্য দিনের সঙ্গী । এত বদমেজাজী এত চিৎকার করে কথা বলা মানুষ মজিদ মিয়া আগে কখনো দেখে নাই। ভাষা না জানার কারণে সব কথা নিরবে সয়ে যেতে হয়। মজিদ মিয়া এখন বুঝে একটা কাজ এবং ভাষা জানা কতটা জরুরী বিদেশে।
এইভাবে দিনের উপর দিন ভর করে ঘুরতে থাকে বছরের চাকা। মাসে একটা করে চিঠি আসা যাওয়া করে মজিদ মিয়ার। ভালোবাসা আর চাহিদায় ভরপুর থাকে চিঠির খাম। কখনো কখনো চিঠি পড়তে পড়তে মা বাপের করুণ চেহারা চিঠির পাতায় ভেসে উঠে। অবশ্যই আজকাল মজিদ মিয়া ভালোই রোজগার করে , বেতন পাওয়ার সাথে সাথেই সব দিনারই ড্রাফ করে বাপের নামে। মায়ের চিঠিতে লেখা থাকে ভালো করে খাওয়া-দাওয়া করিও বাবা। তোমার ভাই বোন লেখা পড়া করে খরচ লাগে এইদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়তি একটু বেশী করে টাকা দিতে চেষ্টা করিও। এবং লোক মারফত একটা সাইকো ফাইভ ঘড়ি পাঠাতে চেষ্টা করিও বাপ লিখে চিঠিতে।
এইতো কিছু দিন হলো আসলাম মনে হয় চোখের পলকে সাত বছর প্রবাস জীবন কেটে যায়। বোন বিয়ে দিতে হবে। ভাই আর পড়বে না বিদেশ আসতে চায়। কিন্তু ঘরটা যে জীর্ণশীর্ণ বোনের ভালো জায়গায় বিয়ে হবে না এই ঘরে। এই ভাঙ্গা ঘরে হয়তো বাপ মরে যাবে একদিন, ভাইয়া আগে ঘরটা বিল্ডিং করা দরকার ভাইটা বলে। আর এভাবে একটার পর একটা সমস্যা মজিদ মিয়া কাঁধে তুলে নিয়ে প্রবাস জীবনের দিন অতিক্রম করে। একসময় মন হয় দেশে যেতে এবং নিজের জন্যও কিছু করা দরকার । নয়/দশ বছর এক নাগাড়ে প্রবাসে মজিদ মিয়া হাঁফিয়ে উঠে।
গল্পঃ প্রবাস
৬/৮/২৫
ঢালে যেনো বহুকাল তৃষ্ণার্ত সে। মজিদ মিয়া
দেশ হতে কোনো কাজ শিখে না আসায় যেমন হতাশ তেমন আরবী ভাষা না জানায় কিছুই বলতেও বূঝতে পারছে না।
মিশরীয় ফ্যোরম্যানের ঝাঁঝালো কণ্ঠের আরবীয় বকাবকি যেনো নিত্য দিনের সঙ্গী । এত বদমেজাজী এত চিৎকার করে কথা বলা মানুষ মজিদ মিয়া আগে কখনো দেখে নাই। ভাষা না জানার কারণে সব কথা নিরবে সয়ে যেতে হয়। মজিদ মিয়া এখন বুঝে একটা কাজ এবং ভাষা জানা কতটা জরুরী বিদেশে।
এইভাবে দিনের উপর দিন ভর করে ঘুরতে থাকে বছরের চাকা। মাসে একটা করে চিঠি আসা যাওয়া করে মজিদ মিয়ার। ভালোবাসা আর চাহিদায় ভরপুর থাকে চিঠির খাম। কখনো কখনো চিঠি পড়তে পড়তে মা বাপের করুণ চেহারা চিঠির পাতায় ভেসে উঠে। অবশ্যই আজকাল মজিদ মিয়া ভালোই রোজগার করে , বেতন পাওয়ার সাথে সাথেই সব দিনারই ড্রাফ করে বাপের নামে। মায়ের চিঠিতে লেখা থাকে ভালো করে খাওয়া-দাওয়া করিও বাবা। তোমার ভাই বোন লেখা পড়া করে খরচ লাগে এইদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়তি একটু বেশী করে টাকা দিতে চেষ্টা করিও। এবং লোক মারফত একটা সাইকো ফাইভ ঘড়ি পাঠাতে চেষ্টা করিও বাপ লিখে চিঠিতে।
এইতো কিছু দিন হলো আসলাম মনে হয় চোখের পলকে সাত বছর প্রবাস জীবন কেটে যায়। বোন বিয়ে দিতে হবে। ভাই আর পড়বে না বিদেশ আসতে চায়। কিন্তু ঘরটা যে জীর্ণশীর্ণ বোনের ভালো জায়গায় বিয়ে হবে না এই ঘরে। এই ভাঙ্গা ঘরে হয়তো বাপ মরে যাবে একদিন, ভাইয়া আগে ঘরটা বিল্ডিং করা দরকার ভাইটা বলে। আর এভাবে একটার পর একটা সমস্যা মজিদ মিয়া কাঁধে তুলে নিয়ে প্রবাস জীবনের দিন অতিক্রম করে। একসময় মন হয় দেশে যেতে এবং নিজের জন্যও কিছু করা দরকার । নয়/দশ বছর এক নাগাড়ে প্রবাসে মজিদ মিয়া হাঁফিয়ে উঠে।
গল্পঃ প্রবাস
৬/৮/২৫
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।