www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রাগ

রাগ করেই ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়লাম।
এতটাই
রেগে ছিলাম যে বাবার জুতোটা পড়েই
বেরিয়ে
এসেছি। বাইকই যদি কিনে দিতে
পারবেনা,
তাহলে
ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানাবার সখ কেন.?
হঠাৎ মনে হল পায়ে খুব লাগছে। জুতোটা
খুলে
দেখি একটা পিন উঠে আছে। পা দিয়ে একটু
রক্তও
বেরিয়েছে। তাও চলতে থাকলাম। এবার
পাটা ভিজে
ভিজে লাগল। দেখি পুরো রাস্তাটায় জল।
পা তুলে দেখি জুতোর নিচটা পুরো নষ্ট হয়ে
গেছে।
বাসস্ট্যান্ডে এসে শুনলাম একঘন্টা পর বাস।
অগত্যা
বসে রইলাম। হঠাৎ বাবার মানি ব্যাগটার
কথা মনে পড়ল,
যেটা
বেরোবার সময় সঙ্গে নিয়ে এসেছিলাম।
বাবা এটায়
কাউকে হাত দিতে দেয় না। মাকেও না।
এখন দেখি কত সাইড করেছে।
খুলতেই তিনটে কাগজের টুকরো বেরল।
প্রথমটায় লেখা "ল্যাপটপের জন্য চল্লিশ
হাজার
লোন"।
কিন্তু আমার তো ল্যাপটপ আছে,
পুরনো বটে।
দ্বিতীয়টা একটা ডা: প্রেসক্রিপশন। লেখা
"নতুন
জুতো ব্যাবহার করবেন"।
নতুন জুতো। মা যখনই বাবাকে জুতো কেনার
কথা
বলত বাবার
উত্তর ছিল "আরে এটা এখনও ছ'মাস চলবে"।
তাড়াতাড়ি শেষ কাগজটা খুললাম।
"পুরানো
স্কুটার
বদলে নতুন বাইক নিন" লেখা শোরুমের কাগজ।
বাবার স্কুটার!!
বুঝতে পেরেই বাড়ির দিকে এক দৌড়
লাগালাম। এখন
আর জুতোটা পায়ে লাগছে না। বাড়ি
গিয়ে
দেখলাম
বাবা নেই। জানি কোথায়। একদৌড়ে সেই
শোরুমটায়। দেখলাম স্কুটার নিয়ে বাবা
দাঁড়িয়ে। আমি
ছুটে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম।
কাঁদতে কাঁদতে বাবার কাঁধটা ভিজিয়ে
ফেললাম।
বললাম "বাবা আমার বাইক চাইনা। তুমি
তোমার নতুন
জুতো আগে কেন বাবা। আমি ইঞ্জিনিয়ার
হব, তবে
তোমার মতো করে।"
"মা" হল এমন একটা ব্যাঙ্ক, যেখানে আমরা
আমাদের
সব রাগ, অভিমান, কষ্ট জমা রাখতে
পারি।
আর "বাবা" হল এমন একটা ক্রেডিট কার্ড,
যেটা দিয়ে
আমরা পৃথিবীর সমস্ত সুখ কিনতে পারি।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮৯১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/১০/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • শূন্য ২৪/১০/২০১৫
    যতিচিহ্ন সমস্যাটা এড়িয়ে গেলে ভালো লিখেছেন এটা বলাই যাই
  • মৃণ্ময় আলম ২০/১০/২০১৫
    চমৎকার দাদা
  • মোবারক হোসেন ১৮/১০/২০১৫
    ভাল
  • ভালো লাগলো।
 
Quantcast