www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অনিশ্চিত ভ্রমণ

অনিশ্চিত ভ্রমণের দিকে ছুটে চলার নামই কি জীবন? প্রতিটি মানুষের কাছে তার জীবন হলো এক একটি সত্যিকারের ইতিহাস। যে ইতিহাসের স্রষ্টা মানুষ নিজে। ইতিহাসের ঐ পৃষ্ঠায় সে স্ব ইচ্ছায় আপন মনে রংধনুর সাত রং দিয়ে স্ব জীবন সাজাতে পারে। জীবন যুদ্ধে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন শুধু একটু ধৈর্য্য ও কঠোর পরিশ্রম।

এ সংগ্রাম বেঁচে থাকার জন্য,
এ সংগ্রাম দুমুঠো ভাতের জন্য,
এ সংগ্রাম মাথা উঁচু করে বাঁচার জন্য,
এ সংগ্রাম শুধু স্বাধিকার কেঁড়ে নেওয়ার জন্য,
এ সংগ্রাম অন্যের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য,
এ সংগ্রাম সত্যের নিশান উড়ানোর নিমিত্তে।
-
জীবন কখনো কখনো মনে হয়, একটি সমাধান প্রত্যাশী অংকের মত। হয়তো সে অংক কারো কাছে সহজ কারো কাছে দীর্ঘ জটিল। স্ব স্ব চিন্তাভাবনায় মানুষ এর সমাধান পেতে চাই। কখনো কখনো অংক কষতে গিয়ে মানুষ ভুল করে বসে। যার ফলস্বরূপ কেউ কেউ হতাশারর সাগরে ভাসতে থাকে। হতাশার সাগরে ভাসতে ভাসতে মানুষ দিশেহারা হয়ে পরে, তখন হয়তো সে নিজেকে জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিক ভেবে হতাশার সাগর থেকে ফিরে আসতে পারে না। হতাশাগ্রস্ত মানুষটি হয়তো তখন এটা ভাবে না, জীবন মানে তো বার বার আশাহত হয়েও আশায় বুক বেঁধে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া।
-
জীবনযুদ্ধে দুটি পক্ষ বিদ্যমান। একটি পক্ষ বেঁচে থাকতে চায় হাজারো প্রতিকূলতা শর্তেও, আর একটি পক্ষ জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিক ভেবে স্ব জীবন বিসর্জন দেয় অতি আবেগে!
-
যারা বাঁচতে চায়, তারা স্রোতের বিপরীতের নাবিক হয়েও বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায় অহরহ। ফাঁসির কাষ্ঠে দন্ডমাণ ব্যক্তিটিও বাঁচতে চায়, ন্যায়ের এজলাসে অবিচার পাওয়া ব্যক্তিটি আজ যে জেল নামক বদ্ধ কুঠুরিতে বন্ধী সে ও বাইরের আবহাওয়ায় বাঁচতে চায় মুক্ত পাখির ন্যায়, ফুটপাতে রেলস্টেশনে ওভার ব্রিজের পাশ দিয়ে বেড়ে উঠা পথশিশুটি; যে আজ কুকুরের সাথে যুদ্ধ করে ছিনিয়ে আনে দিনশেষে একমুঠো অন্ন,
সেও বাঁচতে চায় ঐ একমুঠো ভাতের নেশায়।
-
দ্বিতীয় পক্ষের মানুষগুলো আজ প্রতিনিয়ত আত্মঘাতী হয়ে উঠছে ফলসরূপ আত্মহত্যা নামক বিস্ফোরণে স্ব জীবনটা উৎসর্গ করছে । প্রতিটি আত্মঘাতী মানব স্বত্তার আত্মঘাতী বিস্ফোরণের পিছনে থাকে, সুক্ষ্ম কোন এক অধ্যায়! পরিবারের অশান্তি, অপ্রাপ্তি ব্যক্তিজীবনে ব্যর্থতা, ঘৃণা আত্মঘাতী হয়ে উঠার প্রধান অন্তরায়! আত্মঘাতী হয়ে উঠা মানুষগুলোর চাঁপা কষ্ট লুকিয়ে রাখে অন্তরে, যাহা কখনো সে প্রকাশ করতেই চায় না। কষ্টের সাগরে ভাসতে ভাসতে হয়তো কোন এক সময় সে মাঝ দরিয়ায় আটকে পড়া নাবিকের মত চিৎকার করতে থাকে। হয়তো কাউকে পাশে না পেয়ে তখন সে নিজেকে একা, শুধু একা ভাবতে শুরু করে। তবুও সে তার শির উঁচু করে বাচঁতে চায়। হয়তো কোন এক সময় সেনিজেকে জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিক ভাবতে শুরু করে। সে হয়তো ভাবে, পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট, ঘৃণিত মানুটি সে। তখন তার কাছে বাঁচা মরা একই কথা। আত্মঘাতী মানুষটি বিস্ফোরণের আগেই সে সমাজকে বৃদ্ধা আঙুলি দেখিয়ে, সে নিজের উপরলেগে থাকা কালিটুকু মোচন করতে সবার চক্ষু দৃষ্টির বাইরে চলে যায়, না ফেরারদেশে।
-
যে মেয়েটি পশুত্বের স্বীকার হয়ে ধর্ষিত হয় সেও চায় স্ব সতীত্বটুকু আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। স্ব সতীত্বটুকু যখন হারায় হয়তো তখন সমাজ ধর্ষিতার ট্যাগ দিয়ে দেয়। তখন হয়তো এ অপমান, তার প্রতি অবিচারে সেও আত্মঘাতী হয়ে উঠে। অবশেষে নির্লজ্জ ঘূণে ধরা সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের জীবনটায় যেন উৎসর্গ করে দেয়।
-
প্রচলিত ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে আজকে যেই মেয়েটি ভালোবাসার লেনাদেনার খাটে অশুদ্ধ ভালোবাসায় ডুবে অতি আবেগে স্ব সতীত্ব বিলিয়ে দিয়ে যে আজ সুখের অমৃত পান করে। এক সময় তারই গর্ভে অতি আবেগী ভালোবাসায় আসে নবজাতক। হয়তো তখর তার বিবেকে কড়া নাড়ে তখন। আবেগী ভালোবাসার অবৈধ ফসলকে নিঃশেষ করতে হয়ে উঠে মরিয়া। এই সমাজে এই অবৈধ ফসলকে কোন ভাবে স্বীকৃতি দিবে না, নিষ্পাপ শিশুটি যে আজ মাতৃগর্ভে দিনে দিনে বড় হয়ে আসছে সে পাবে না তার পিতৃ পরিচয়, হয়তো তখন তাকে জারজ বলে থুথু ছিটাবে যে আজও মাতৃগর্ভে। সে রত্নগর্ভা হয়তো কখনো চাইবে না তারই ঔরসজাত সন্তানকে জারজ বলুক, তখন সে এ নিষ্পাপ শিশুটিকে "Abortion" করে দুনিয়াতে না আনার ব্যবস্হা করে। সত্যি প্রতিটি "এবোরশন" মানে একটি হৃদস্পন্দনকে নিস্তব্দ করে দেওয়া, নিষ্পাপ শিশুটির ঐ মায়াভরা দুচোখকে এ পৃথিবীর আলো বাতাসে স্পর্শ থেকে বঞ্চিত করা। তবুও সে বাঁচতে চাই, দেখতে চাই পৃথিবী...
-
যে ছেলেটি পরিবারের জন্য কিছু করতে চেয়েও কিছুই করতে পারে নাা, ফলশ্রতিতে পায় শুধু লাঞ্ছনা। প্রতি পদক্ষেপে যে ঘৃণিত হয়। তখন সেও পৃথিবী নামক বৃত্তের বাহিরে চলে যায়। ধুঁকে ধুঁকে বাঁচে থাকার চেয়ে আত্মহত্যাকে শ্রেয় মনে করে।
-
জীবন নামক অনিশ্চিত ভ্রমণে ঘোর অমানিশা নেমে আসবে স্বাভাবিক। মনে রাখবেন ঘোর অমানিশা কেটে আলো পথের দেখা পাবেন নিশ্চয়। স্ব পশুত্বকে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজের ভিতর থাকা গুপ্ত আমিকে জানুন, জীবনকে ভালোবাসুন।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৯৭২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৫/০৪/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সমির প্রামাণিক ০২/০৯/২০১৭
    জীবনের সঠিক মানে জানালেন। জানলাম ভালবাসার আর এক নাম জীবন। জীবন একটাই। তাই জিবঙ্কে ভালোবেসে - হাজারো প্রতিকুলতার মধ্যেও ভালোবেসে বাঁচবো। আর এটার আর এক নাম জীবন। শুভেচ্ছা রইলো।
    • বিদ্রোহী শিহাব ০৩/০৯/২০১৭
      মৃত্যু ঘন্টা বাজলে
      চলে যেতে হবে অন্ধকার কবরে
      তবুও- যতদিন আছি বেঁচে
      ততদিন লড়াই করে যেতে হবে
      জীবনের তাগিদে
      সুখকূপে ডুবে থাকার নিমিত্তে
      • সমির প্রামাণিক ০৩/০৯/২০১৭
        খুব সুন্দর।
        শুধু আর একটু বলতে চাই কবি-
        বাঁচা একবার- মরণটাও আসবেই- তাই, একটা জীবনেই- বেঁচে থাকতে চাই- আরও হাজারটা জীবন......
  • মধু মঙ্গল সিনহা ১৫/০৪/২০১৭
    ভাবনায় অবিভুত হলাম।
 
Quantcast