www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মুক্তির প্রত্যাশা

“তুমি চলে যাও, প্লিজ- আর আমাকে ডিস্টার্ব কোর না-আর কোনদিন আমার কাছে আসবে না-প্লিজ, প্লিজ’’ আমি চিৎকার করে বলতেছিলাম।
‘আমাকে যে আসতেই হবে, তুমি না চাইলেও আসব চাইলেও আসব’ – কাঁপা কাঁপা গলায় আবৃতির স্বরে বলল লোকটি।
কেন? আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয় নাই এখনও? আর কত অনুশোচনা করব?
তা আল্লাই ভাল জানে, আমি জানব কেমনে?
তো তুমি আসো কি জন্য?
গল্প শোনাতে।
তোমার গল্প আমি শুনব না- প্লিজ চলে যাও। এবার সত্যি সত্যি আমার গলা থেকে জোড়ে আওয়াজ বের হয়ে গেল। পাশের বেডে আতিক ঘুমাচ্ছিল। আমার চিৎকার শুনে ঘুম জড়িত কণ্ঠে বিরক্তির প্রকাশ এনে বলল-
এই কি হয়েছে রে তোর –এত জোড়ে জোড়ে চিৎকার করতেছিস কেন? আল্লাহর তিরিশ দিন এইরকম করলে কেমন লাগে, বলতো? বলি- এইসব আলতুফালতু সাইক্রাটিসট না দেখিয়ে একেবারে হেমায়েতপুর গিয়ে ভর্তি হ।
আতিকের কণ্ঠ শুনে ঘুমটা ভেঙে গেল। বারবার দুয়ায়ে ইউনুস পড়তে লাগলাম।
আসলে আমার ইনসমনিয়া আছে, প্রায় রাতেই ঘুম হয় না আমার। শেষ রাতের দিকে চোখ বুজলেই আবার সেই লোকটার যন্ত্রণা। অনেক দিন ধরে আসত না সে, আজ আবার হটাৎ করে এসেছে। সারাগায়ে লাল চাদর জড়ানো লোকটি। পরনে আর কোন পোশাক আছে কিনা বলতে পারব না। চোখের কোটরে রক্তাভ চোখ দুটি দেখলে মনে হয় যেন আগুন জ্বলছে। ভয় পাওয়ার মতই চেহারা। প্রথম প্রথম খুব ভয় পেতাম- দেখতে দেখতে অভ্যাস হয়ে গেছে, এখন তেমন ভয় লাগে না।
সকালে একবার সাইক্রাটিসট ডঃ আসমত কবীরের চেম্বারে গেলাম। ধানমণ্ডিতে তাঁর চেম্বার। বেশ রোগীর ভীড় হয়। আসলে মানুষের হাতে যত টাকা-পয়সা আসছে ততই কিনা মানসিক সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। আগে এত মানসিক রোগী ছিল না। ডাক্তার সাহেব তাঁর চিরচারিত সান্তনার বানী শুনিয়ে আমাকে বিদায় দিলেন। সাথে কি কি যেন ওষুধ প্রেসক্রাইভ করে দিলেন। প্রথম যেদিন এখানে এসেছিলাম বেশ সময় নিয়ে আমার সমস্যা শুনেছিলেন মিঃ কবীর। তিনি আমার সমস্যার কারন যেটা ধরেছিলেন তা হল আমার ভয়ংকর একটা অপরাধের পরিকল্পনা। আমি তাকে খোলাখুলি আমার সব কথা বলেছিলাম যেহেতু তিনি আমার ডাক্তার। ডাক্তার আর উকিলের কাছে নাকি কোন কথা গোপন করতে হয় না। যেহেতু আপনারা আমার ডাক্তারও নন উকিলও নন, আপনাদের কাছে আমার গুপ্ত কথা কেন বলব? আপনাদের মধ্যে যদি কেউ ডিটেক্টিভ থেকে থাকেন দয়া করে আমার পিছু লাগবেন না। কারন পরিকল্পনাটা পরবর্তীতে বাস্তবায়নের মুখ দেখে নি।

ক্লান্তিকর একটা দিন কাটিয়ে বিকালে একটু ঘুমালাম। যদিও দিনের বেলা ঘুমনের অভ্যাস নাই আমার। দিনে ঘুমলে রাত্রে কিছুতেই ঘুম হয় না। চোখের পাতা বুঝে আসলেও জোড় করে টেনে ধরে রাখি।কিন্তু আজ আর পারলাম না, গতরাতের ঐ ঘটনার পর থেকে আর ঘুম হয় নি। ঘুম থেকে উঠার পর শরীরটা কেমন যেন ম্যাজম্যাজ করতে লাগল। আসলে বিকালে ঘুম থেকে উঠার পর কেন জানি মনটা খারাপ হয়ে যায় সবার। শুনেছি বেশিরভাগ আত্মহননকারী আত্মহত্যা করে বিকালে ঘুম থেকে উঠার পর।
জানি আজ রাতে ঘুম হবে না, তাই বুদ্ধি করে একটা ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিলাম। করিডোরে কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করে হাত মুখ ধুয়ে শুয়ে পড়লাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বলতে পারব না।
লোকটি আবার এল। সেই পরিচিত লোকটি। লাল চাদর জড়ানো; রক্তাভ চোখ। আমি বললাম- তুমি আবার এসেছ? চলে যাও।
আজ আমি তোমার কাছ থেকে বিদায় নিতে এসেছি।
সত্যি? আমার চোখ দুটি আনন্দে জ্বলজ্বল করতে লাগল সদ্য জেল থেকে মুক্তি পাওয়া কয়েদির মত।
তবে আমার গল্পটি শুনতে হবে।
শুনলেই মুক্তি পাব?
না, তবে তোমার কাছে আমি আর আসব না।
তবে শোনাও।
লোকটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসল আমার শিয়রে। আর কোন ভূমিকা না করেই বলতে আরম্ভ করল যেন কোন ভিজ্ঞ গল্পকার তাঁর একমাত্র শ্রোতাকে গল্প শোনাচ্ছে।

আমি তখন তোমাদের বয়সী। বয়স বিশ কি বাইশ ঠিক মনে করতে পারছি না। গায়ে-গতরে বেশ জোয়ান ছিলাম। বতরের সময় দেড়-দুইমণ ধানের বোঝা মাথায় করে বাড়িতে আনতাম। আমাদের গ্রামটি খুব সুন্দর না হলেও খারাপ ছিল না। নাম ছিল পুষ্পতলা- সবাই ডাকত পুসতলা। পড়াশোনা করেছি ক্লাস সেভেন পর্যন্ত। আমার পড়াশোনার কোন ইচ্ছাই ছিল না। বাপ-মা জোড় করে স্কুলে পাঠাত। তারপর একদিন সব বই বিক্রি করে বাড়ি থেকে আর কিছু টাকা পয়সা চুরি করে ভাগলাম। মাসখানেক এখানে ওখানে ঘোরাফেরা করে যখন টাকা- পয়সা ফুরিয়ে গেল আবার বাড়ি ফিরে এলাম। বাড়িতে এলে বাবার সেই রাগ কিছুতেই বাড়িতে উঠতে দিবে না। বাবা দুই হাত সামনে নিয়ে মারমুখী ভঙ্গিতে তেঁড়ে তেঁড়ে এসে বলল, “ যা, বাড়ি থেকে বেরই যেখেনে গেছিলি সেখেনে যা, আমার বাড়িতে বদমায়েশের কোন জায়গা নাই” মা আমকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদতে লাগল আর আদরমাখা গলায় বলল, “ পড়াশোনার উপর যহন এত রাগ তয় আর পড়াশোনা করতে অইব না বাবা- তোর বাপের এত জমি জমা , এগুলা খাইব কেডা?”
মায়ের কথা শুনে বেশ খুশি হয়ে গেলাম।পাড়ার দাদীরা হাসিমাখা মুখে বলতে লাগল, “কি নাতি, বিয়া করবি আমাগো কইলিই পারস, এত তালবাহানা করতি অইব ক্যা?”
এরপর থেকে ক্ষেতের কাজকর্ম করতে লাগলাম।
১৩৭৭ সনের একেবারে শেষের দিকে খবর শুনলাম দেশে নাকি যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। পাকিস্তানীরা নির্বিচারে বাঙ্গালিদের খুন করছে। মনে মনে ভয় করতে লাগল কিন্তু দিন স্বাভাবিক ভাবেই চলতে লাগল। সকালে ক্ষেতে যাওয়া, দুপুরে বাজার করা আর বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাস খেলা। রুটিনের কোন বিঘ্ন ঘটল না। মাঝে মাঝে শুনতাম অমক গ্রামের সবাইকে নাকি আর্মিরা লাইন ধরে দাড় করিয়ে গুলি করে মেরেছে। সত্যি কি মিথ্যা বলতে পারব না সব লোকের মুখে মুখে শোনা।

তারিখটা ঠিক মনে করতে পারব না তবে বৈশাখের মাঝামাঝি হবে। প্রচণ্ড গরমে ঘরের ভেতর ঘুমানো মুশকিল, তাই প্রায় রাতেই উঠোনে পাটি পেতে ঘুমাই। ওইদিন ঘুম থেকেও উঠিনি- ফজরের আজানের অনেক দেরি। গেটের বাইরে থেকে রজব চাচা চাপা গলায় ডাকল – ভাইস্তা, ঘুমাইতেছস, গেত খোল কথা আছে।
জোড়ে ডাক দিলে হয়ত সহজে ঘুম ভাঙত না। একবার ডান কাত থেকে বাঁ কাতে ফিরে বলতাম, উঁহু। চাচা আবার ডাকত , এই ব্যাটা, ওঠ। তখন হয়ত ঘুম জড়িত চোখে গেটের ধারে গিয়ে বলতাম, কি চাচা, এত রাইতে?
কিন্তু এমন চাপা উত্তেজনাময় কণ্ঠ শুনে ধরফরিয়ে উঠে পড়লাম প্রায় দৌড়ে গিয়ে গেট খুলে দিলাম। চাচা এমন ভঙ্গিতে বাড়িতে ঢুকল মনে হল ভুত তাঁর পেছনে তাড়া করছে। ঢুকেই ফিসফিস করে বলল, “ গাঁয়ে মনে অয় মিলিটারি ঢুকছে”
তুমি জানল্যা কি কইরা?
আমি তো রোজ তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ব্যার উত্তর পাড়ার জুম্বা ঘরে যাই। আজ যাইয়া কেবলি পুস্কনিতে নামব অজুর জন্যি। সামনে তাকাইয়া দেহি বাজারে অনেকগুলা লাইট ধইর‍্যা কারা জানি হাঁটাহাঁটি করতেছে। ব্যাপার কি দেখার জন্যি সামনে কিছুদূর গেলাম, ভাল কইরা খেয়াল করি দেখি তাগ গায়ে আর্মির ডেরেস। আর বুঝার বাকি রইল না যে মিলিটারি আইছে। এক দৌড়ে তোগো বাড়িতে আইছি।
আমি বললাম – মিলিটারি আইলে তো গুলি আরম্ভ করত, তুমি হয়ত ভুল দেখছ।
চাচা আত্মবিশ্বাসের সাথে মাথাটা একটু নিচু করে বলল- একদম না, আমি ভুল দেহি নাই, ওরা আর্মি না হয়া যাইবার পারেই না। আর ওরা আইছে, দু-চার দিন জিরিয়ে নিব- তারপর ধীরে সুস্থে গুলি করব। এত তাড়াহুড়ার তো কিছু নাই।
তো চাচা, কি করা যায় এখন?
মনে অইতেছে যা ইশকুল ঘরে ক্যাম্প করব। সাবধানে থাকন লাগব, মেয়েছাওয়ালগো কুটুম বাড়িতে পাঠান দরকার। যা শুনি মিলিটারিগো খবর- নাউজুবিল্লাহ!
রজব চাচা চলে গেলে আমি মাকে ডাকলাম- মা, উঠ তো
মা চমকে উঠে বলল- কি, আজান দিছে?
“না” আমি গলার স্বর নিচু করে বললাম- রজব চাচা আইছিল, গ্রামে নাকি মিলিটারি আইছে, স্কুলঘরে ক্যাম্প করব নাকি।
মা অস্থির হয়ে বাবাকে ডাকতে লাগল। ছোট বোন আসমাকে ডেকে তুলে বলল- আল্লা আল্লা কর, আল্লা কি বিপদেই না ফেলাইলা।
খুব ভোরে বাবা ঠিক করল মা আর আসমাকে নানার বাড়ি পাঠিয়ে দিবে। আমাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে বলল। আমি কিছুতেই যেতে রাজী হলাম না। বাবাকে বললাম- তুমি সাথে যাও,ওদের রাইখ্যা আইস আমি বাড়ি দেখাশোনা করি। বাবা আমতা আমতা করে কি যেন বলল তারপর মা আর আসমাকে নানার বাড়িতে রেখে আসতে গেল। মা অনেক কেঁদে কেটেও আমাকে নিয়ে যেতে পারল না শেষে হাল ছেড়ে দিয়ে বলল- সবসমই বাড়ির মদ্ধি থাকবি, ইশকুল ঘরের ধারে কাছেও যেন না যাস- আল্লার দোহাই লাগে। মা শুধু আমাকে একথা বলেই ভরসা পেল না, পাড়ার কালা দাদীরে ডেকে এনে বাড়িতে তুলে, দুহাত ধরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলল- মা, তুমি আমার ব্যাটারে দেইখো, ওকে তো নিয়ে যাইয়া পারলাম না, বাড়ির বাইরে যাইবার দিও না, মিলিটারি চইল্যা গেলেই বাড়ি ফিরা আসব।
দাদী মাকে সান্তনা দিয়ে বলল- যাও মা, আল্লাই ভরসা, আমার মণ কইতেছে কুত্তারা তাড়াতাড়ি মরব।
সকালে কালা দাদীর চিৎকারে ঘুম ভেঙে গেল। জেলেপাড়ার সব হিন্দুদের বাড়িতে রাজাকারেরা আগুন দিয়েছে। মিলিটারিরা নাকি পাড়ায় ঢুকে যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই মেরেছে। আমি দাদীর অনুনয় অগ্রাহ্য করে দৌড়ে জেলেপাড়ার দিকে গেলাম। কাছে গিয়ে আগুন দেখে ভয়ে ফিরে এলাম।
দিন দুয়েক পর আমার বন্ধু রফিক বাড়িতে এল। আমরা একসাথেই পড়াশোনা করেছি। এক গ্রামে বাড়ি হওয়ায় একসাথেই স্কুলে যেতাম। ও অবশ্য পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিল। ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেলাম। মুখভর্তি এলোমেলো দাড়ি, চোখমুখে যেন আগুন ঝরছে, কাঁপতে কাঁপতে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল
দোস্ত, বিদায় দিয়ে দে, আর মনে হয় তোর সাথে দেখা হবে না।
আমি ওর পিঠে হাত রেখে উদ্বিগ্ন স্বরে বললাম- কি হইছে তোর, এমন করতেছিস কেন?
ও আর কান্না ধরে রাখতে পারল না, চোখের পানি দু গাল দিয়ে ঝরিয়ে বলল- আমার সব শেষ হয়ে গেছে, মিলিটারিরা বাবাকে মেরে ফেলে দিছে, বোনটাকে ধরে নিয়ে গেছে রাজাকারেরা। আমি বেঁচে থেকে কি করব? তার চেয়ে -
কথাটা শেষ করতে পারল না।
আমি অনেকটা আতংক আর অবিশ্বাসের সাথে বললাম- তুই মুক্তিযুদ্ধে যাবি?
অনেকক্ষণ অন্যমনস্কভাবে তাকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে বলল, “ শুনেছি পাথারের কাশবনের ভেতর মুক্তিযোদ্ধারা ঘাটি করেছে।
তুই কি যাবি ওইখানে?
হু, এখনি বের হলাম, দোস্ত ভাল থাকিস
আর কথা বাড়াল না রফিক। কথাগুলা আমার কাছে এরকম মনে হল যে, ওর মুখে এমন কথা শুনে আমি অভ্যস্ত। হয়ত বলছে- দোস্ত, তাড়াতাড়ি চল স্কুলে দেরি হয়ে গেল।
আমি বললাম- একটু বস, আমি জামাটা গায়ে দিয়ে আসি, তোকে একটু এগিয়ে দেই।
ওর হাত ধরে বাড়িতে আমার শেষ পদচিহ্ন রেখে বের হয়েছিলাম। মনে হল পেছন থেকে মা ডাকছে- যাসনে বাবা। হটাৎ আকাশে বিদ্যুৎ চমকাল। আমি পরিস্কার দেখতে পেলাম আমার বন্দী জননী মুক্ত হবার জন্য আহাজারি করছে।
এরপর লোকটা চেয়ার ছেড়ে হটাৎ উঠে পড়ল। দরজার কাছে গিয়ে বলল- আমি আসি তাহলে, বিদায়।
আমি বললাম – গল্প তো শেষ হয় নাই, বাকিটুকু বলতে কি আবার আসবে?
দরজায় হাত রেখে বলল- না, বাকি গল্পটার পটভূমি সবার এক, শধু চরিত্র ভিন্ন। আর হ্যাঁ, মুক্তির কথাটা বললে না- আমরা শুধু মাকে মুক্ত করেছি, তোমাদের পারি নি। তোমাদের মুক্তি তোমরাই আনবে।
আমি কথাগুলার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারলাম না। লোকটি চলে গেল। হটাৎ মনে পড়ল- উনার নামটা তো জানা হল না। আমি দৌড়ে গিয়ে জেনে আসতে চাইলাম কিন্তু কিছুতেই দৌড়াতে পারছিলাম না
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮৫৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/১২/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • জি,মাওলা ১৭/১২/২০১৩
    ভাল লাগল
 
Quantcast