www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বড়দিন আত্মত্যাগের দিন

আজ খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় 'বড়দিন।' পবিত্র বাইবেলে বর্ণিত, আজ থেকে দু'হাজার বছর পূর্বে যেরুশালেমের বেথলেহেম নগরের একটি গোসালায় মানব জাতির ত্রানকর্তা যীশুখ্রীষ্ট কুমারী মারীয়ার গর্ভে জন্ম গ্রহন করেন।

তিনি মানব বেশে জন্ম নিলেও খ্রীষ্ট ধর্মানুসারে তিনি ঈশ্বরের পুত্র। তিনি ছিলেন রাজাধীরাজ। তার জন্মের মাধ্যমে তিনি প্রমান করলেন, একজন মহান রাজা হয়ে তিনি গরিব বেশে শীতের রাতে ছোট একটি গোসালায় জন্ম নিয়েছে। যীশু খ্রীষ্ট সাধারণ মানুষের মতোই বেড়ে উঠেছেন নাজারেথের যোসেফ ও মেরীর ঘরে। যোসেফ ছিলেন সাধারণ সুঁতোর মিস্ত্রি।

যীশু একজন সাধারণ বালকের মতই মা এব্ং বাবাকে নানা কাজে সাহায্য সহযোগীতা করেছেন। যীশু খ্রীষ্ট তার বাণি প্রচারের কাজ শুরু করেন তেত্রিশ বছর বয়েস থেকে। এই সময় তিনি তার শিষ্যদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুড়ে বেড়িয়েছেন। মানুষকে ধর্মীয় শিক্ষা দিয়েছেন। এব্ং মানুষকে মন্দ পথ থেকে সড়ে আসার অনুরোধ করেছেন। এই সময় অনেকে যীশুর পথ অনুস্মরণ করে পাপের পথ ত্যাগ করেছেন। কেউ কেউ যীশুকে পাগল ভন্ড অখ্যায়িত করে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা পর্যন্ত করেছেন। যীশু শুধু ধার্মিকদের মাঝে বাণী প্রচার করেননি, তিনি পাপিদের সাথে মিশেছেন, তাদের সাথে আহার করেছে, তাদের বাড়িতে থেকেছেন। যীশুখ্রীষ্ট অনেক অলৌকিক কাজ করেছে। তিনি বহু রোগীকে সুস্থ করেছেন, মৃতকে জীবন দান করেছেন, অন্ধকে দেখার শক্তি দিয়েছেন, খোড়াকে দিয়েছে চলার শক্তি। যারা তাকে বিশ্বাস করেছে তারাই পরিত্রাণ পেয়েছে।

যীশু একজন ইহুদী হয়েও, ইহুদী জাতির কাছে তিনি হয়েছে নিগৃহিত, নির্যাতিত। পদে পদে তাকে চরম অপ্মানের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এমনকি, ভন্ড ধর্ম যাজকেরা তাকে মন্দির থেকে বের করেও দিয়েছিল। তার পরও তিনি মানিব জাতির জন্য নিজেকে উত্সর্গ করেছেন। এক সময় ফরিশিরা যীশুকে নানা ধরনের নির্যাতন করে সব চেয়ে অপমানজনক ক্রশে টাঙ্গিয়ে হত্যা করেছে। যীশুর মৃত্যুর পর তিন পরে তিনি পূনরুত্থান করেন।

যীশু আজ নেই, আছে তার বাণী, আছে তার পথচলার নির্দেশিকা। তার পরেও আজ জাতিতে জাতিতে বিভেদ, কলহ, মারামারি, কাটাকাটি লেগে আছে। সারা বিশ্বে আজ অশান্তির দামামা বেজে চলেছে। রয়েছে ক্ষুধা-দারিদ্র, রয়েছে হতাশার বেড়াজাল। আমরা প্রতিনিয়ত ধর্মের বাণী নিয়ে ধ্যান করি,ধর্মানুসারে চলার চেষ্টা করি। তার পরও কোথায় যেন আমাদের একটা ধর্মানুসারে নয়মিত আমাদের গ্রাস করে চলেছে। আমরা যেন সবাই সময়ের উল্টোপথে ছুটে চলেছি। না পাওয়ার বেদনা আমাদের কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। আমাদের যা আছে তাই নিয়ে সন্তোষ্ট হচ্ছি না। তাই আরও পাওয়ার আকাংখা লোভের দাড়িপাল্লায় যোগ হয়ে, অন্যের ভাগে ভাগ বসাতে অন্যায় কাজে উত্সাহিত করছে। যার কারণে দেখা দিচ্ছে মারামারি, হত্যা, বিভেদ, রেষারেষি। আমরা আসলে কোথায় চ্লেছি? আমাদের দেশের ভীতরে তাকালে কেমন মনে হয়? জাতি আজ দুই ভাগে বিভক্ত। রাজনৈতিক অস্থিরতা, মারামারি। প্রতিদিন হিংসার আগনে ঝলসে যাচ্ছে নিরীহ মানুষ। দেখা দিচ্ছে ধর্মীয় উন্মাদনা। যার কারনে স্ংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে। ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা ও ভাংচুর করা হচ্ছে।

বড়দিন হচ্ছে সেই দিন, যেই দিনে নিজের দিকে, সমাজের দিকে, দেশের দিকে, আপন ভাইদের দিকে তাকানোর দিন। বড়দিন একাত্ব হওয়ার দিন। অপরকে ক্ষমা দেওয়া ও ক্ষমা চাওয়ার দিন। দেশের আজকের এই হানাহানির দিনে, আমাদের করার কিছু নেই। কিন্তু আমরা একটি কাজ করতে পারি দেশের শান্তির জন্য আমরা উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করতে পারি। মানুষকে ভালবেসে পাশে দাঁড়াতে পারি। আমাদের পাশের অভূক্ত মানুষটিকে একবেলার খাবার দিতে পারি। বড়দিন খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের হলেও, বড়দিনের আনন্দ সবার জন্য।

আসুন জাতিতে জাতিতে বিভেদ নয়, আমরা একে অপরকে ভালবাসি। শান্তি সম্ভব। সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাই। বড়দিনের আনন্দ সবার সবার ঘরে বিরাজ করুক। এই কামনা করি।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৭৫৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৫/১২/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • দীপঙ্কর বেরা ২৭/১২/২০১৩
    শুভ বড়দিন ।
  • প্রবাসী পাঠক ২৬/১২/২০১৩
    শুভ বড়দিন।
  • এফ সাকি ২৫/১২/২০১৩
    ভাই আপনার লেখা দেখে খুব কষ্ট পেলাম।এ কেমন লেখা।সহজ বানান ও ভুল।এটা আপনার থেকে আশা করিনি।তাড়াহুড়ো করে কোনমত পোষ্ট করাই কি লেখকের মানায়।কেউ নিজের ছেলেকে পঙ্গু করে জন্ম দিতে চায়?আশা করি মনে কষ্ট পেলেও ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
 
Quantcast