www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মুছে যাওয়া দিনগুলি

পুরনো ঢাকার লক্ষ্মীবাজার,
সুভাষ বোস এভিন্যুর ঠিক শেষ মাথার
দশ নম্বর বাড়ীটি ছিল তরুলতার দাদার;
তার দাদার নব্বই বছর জীবনে
প্রতিটি মুহূর্ত কাঁটিয়ে দিয়েছেন
দু'শত বছরের এই পুরনো বাড়ীতে।
দেয়ালের গায়ে শ্যাওলা জমে থাকা
বাড়ীর প্রতিটি ইটের কনার সাথে দাদুর ছিলো
ভীষণ সখ্যতা ও ভালোবাসা!

তরুলতাদের বাড়ীর ঠিক পিছনে ছিলো
ইংরেজ পাদ্রীদের বাড়ী, গির্জা, হোস্টেল
এব্ং তার ভালোবাসার সেন্ট জেভিয়াস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল।
ইংরেজী মাধ্যমের এই স্কুলেই তরুর হাতেখড়ি।

সেবারের দেশে খুব আকাল পড়েছিল
পেটের তাগিদে তার বাবা বিনয় চলে গেছেন কলকাতা
তরুরা সবাই এই পুরনো বাড়ীতে;
তাদের ছিল ছোটখাট ছাপা খানার ব্যবসা
এখানে নাকিবড় বড় কবি-সাহিত্যিকদের আসর বসতো প্রতিদিন,
তবে কারা আসতো জানা হয়নি তার,
ছাপা খানার সম্পত্তি বলতে পুরনো ধাচের ব্লক লেটারের ছাপা মেশিন,
প্রুফ দেখার জন্য একজন জায়গীর মাস্টার
সাথে কালিমাখা কিছু কাপড়।
এই মাস্টার মশাই তরুকে পড়াতেন।

সামনে তরুর ফাইনাল পরীক্ষা,
তৃতীয় শ্রেণীর কি-বা এতো পড়া?
একদিন তরু লক্ষ্য করল;
সবার মুখ কেমন যেন ফ্যাকাশে!
তার দাদু নারায়ণ রায়ের মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ,
মা, বাবার সাথে ফিস ফিস করে কথা বলছে,
বাড়ীর গেটের বাইরে অচেনা লোকের আনাগোনা!
তখন ভয় কি সে বুঝতো না,
তবে বুঝতে বাকী রইলো না
কিছু একটা হতে চলেছে;
এভাবে রাতে ঘুমিয়ে পড়ল।

সকালে ঘুম ভেঙ্গে দেখে
তরুলতা কলকাতা মাসির বাড়ী!

তরুলতার আর দেখা হয়নি,
সুভাষ বোস এভিন্যুর দশ নম্বর বাড়ীটি!
বিষয়শ্রেণী: কবিতা
ব্লগটি ৯৫৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২২/১০/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • আরজু নাসরিন পনি ২২/১০/২০১৩
    স্মৃতিমাখা বেদনা ভরা লেখা ।
    এভাবেই ছোটবেলার ঘটনাগুলো, জায়গাগুলো কেবলই স্মৃতি হয়ে থাকে ।
    শুভেচ্ছা রইল , কবি ।।
  • suman ২২/১০/২০১৩
    আমার প্রিয় বিষয় নিয়ে লেখা... touchy ...এমন লেখা মানুষকে sensitize করে...
  • খুবই অসাধারণ লেখনীতে একটি বেদনা বিধুর কবিতা উপহার দিলেন।সত্যিই বরই করুন কিছু ছেড়ে চলে যাওয়ার।
  • মোকসেদুল ইসলাম ২২/১০/২০১৩
    মুগ্ধ হয়ে গেলাম
  • দেবার্পণ ঘোষ ২২/১০/২০১৩
    মন ছুঁয়ে যাওয়া .............
 
Quantcast