www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

পোড়ো বাড়ির রহস্য - পর্ব - ১৪

পর্ব - ১৪

................... .সবাই তো বেইমান। স্বার্থপর।"

কিছুক্ষণ আবার একটানা গাঢ় অন্ধকারময় হ্যারিকেনের অস্পষ্ট জ্যোতির দিকে তাকিয়ে হাফ ছাড়া কন্ঠে খুব দ্রুত বললেন, " ব্যাস। তুই শেষ ব্যক্তি। এবার আমি নিজে মরেও শান্তি পাবো।"

কথাগুলো শুনে মনে হলো, এটা প্রতিশোধের পালা চলছে।

হ্যারিকেনের পাশে, টেবিলের উপর ছুরিটা রাখা ছিল। ছুরিটাকে হাতে ধরে খুনি টেবিল ছেড়ে উঠলেন। এক পা এক পা করে এগিয়ে যেতে লাগলেন। ঐ অজ্ঞান ব্যক্তিটির পিছনে দাঁড়িয়ে তার গলার কাছে ছুরিটা ধরে বলতে বললেন বিদায় বন্ধু, ঠিক এমন সময় আমি উনার উপরে লাইটের আলো ফেলে বললাম," ব্যাস। মৃত্যুর খেলা অনেক হয়েছে। তৎক্ষণাৎ ইনস্পেক্টর কৌশিক সিকদার গিয়ে খুনির হাত থেকে ছুরিটা কেড়ে নিলেন। আমি টর্চের আলো খুনির মুখের দিকে ফেলতেই, সারা শরীর দিয়ে একটা শীতল রক্ত বয়ে গেল। মুখ থেকে অস্পষ্ট ভাবেই বেরিয়ে পড়লো একটাই শব্দ, "জ্যাঠামশায়"। জ্যাঠামশায় রেগে গিয়ে বললেন, " কে তোর জ্যাঠামশায় ! আমি তোর জ্যাঠামশায় নই।" আমি জ্যাঠামশায়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, "জ্যাঠামশায় তুমি ঠিক আছো তো !" জ্যাঠামশায় রাগান্বিত স্বরে বললেন, " সবাই বেইমান, স্বার্থপর। " আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম, " এমন বলছো কেন জ্যাঠামশায় ?" জ্যাঠামশায় এবার বললেন, " শোন তাহলে। আমি শশীভূষণ সরকারের বড়ো ছেলে। মামার বাড়িতে থাকতাম। একদিন হঠাৎ শুনি আমার বাবা আর কাকা খুন হয়েছেন। পরের দিন যখন বাড়িতে আসলাম। ততক্ষণে মা সহ বাড়ির আর সবাই আত্মহত্যা করেছেন। আমি এখানে এসে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। কিভাবে এসব হল তাও জানতে পারিনি। তখন শুধু একটা ডাইরি নিয়ে চলে গিয়েছিলাম যেটা আমার মা নিয়মিত লিখতেন। আর বাড়ি সম্পর্কিত কিছু কাগজপত্র। এর প্রায় বছর খানেক পর একদিন কলকাতায় তোর ঠাকুরদাদার সাথে দেখা হয়। উনি আমাকে অল্প চিনতেন। যেহেতু আমি এদেশে আসার পর মামার বাড়িতেই থাকতাম সেজন্য এই গ্রামে বেশি কেউ আমাকে চিনত না। তবে যাই হোক, তোর ঠাকুরদাদা আমাকে অনেক বুঝিয়ে তোদের বাড়িতে আমাকে থাকতে দেয়। আর সে সময় আমার মামারা আর সেখানে থাকতেও অসহ্য বোধ করতেন। সেজন্য আমিও আশাটাকে সমর্থন করেছিলাম। একটা স্বত্ব ছিল, আমি এ বাড়ির ছেলে হিসেবে থাকবো। তখনও তোর বাবা জন্মগ্রহণ করে নি। তারপর তোর বাবা হলেন। তারও কিছুদিন পর, আমার থেকে তোর দাদু এই বাড়িটা নিজের নামে করে নেয়। তারপর মারা যাওয়ার আগে সবটুকু তোর বাবার করে যায়।"

জ্যাঠামশায় থামলেন। এতক্ষণে অজ্ঞান ব্যক্তিটির জ্ঞান ফিরে এসেছে। আর সেটার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে পটল আর পেঁচা।
এতক্ষণ খেয়াল করিনি। এবার করলাম, সেই অজ্ঞান ব্যক্তিটি আর কেউ নয়, পরিতোষ জ্যেঠু। এবার আমি এক জায়গায় আর স্থির থাকতে পারলাম না। অবাকের সাথে আশ্চর্যও কম হয়নি। জ্যাঠামশায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম, " তুমি পরিতোষ জ্যেঠু'কে খুন করতে চাইছিলে কেন ?"

চলছে .........
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৭২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/০১/২০২২

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সুন্দর চেতনা।
 
Quantcast