www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

পোড়ো বাড়ির রহস্য - পর্ব - ১

পর্ব - ১

কয়েকজন ছেলে যখন এক জায়গায় থাকবে তখন বাজি ফেলে কথা হবে না, এটা কখনও হয় নাকি!

সে'বারও বাজি ধরেছিলাম। জিতেছিলাম কিনা এখন বলব না। তবে শর্ত ছিল একটাই আমি হেরে গেলে বাকি'দের ফুল প্লেট বিরিয়ানি খাওয়াতে হবে। আর আমি জিতে গেলে আমি যা খেতে চাই, ওরা তাই খাওয়াবে। এক্কেবারে পেট পূরণ।

তখন আমার বয়স আন্দাজ ২০ হবে হয়ত। কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বর্ষের ছাত্র। তবে আমার বন্ধু বলতে আমার ছেলেবেলার বন্ধুদের কথায় বলছি। সেজন্য ওদের নেক নামগুলোই তোমাদের সঙ্গে বলব। আমরা তিন বন্ধু যথা আমি, পটল আর পেঁচা। আমাদের প্রতিদিনের কাজ সন্ধ্যার আগে ঘুরতে যাওয়া। তারপর ফেরার সময় কোনো মাঠের ধারে বসে কিছুক্ষণ গল্প করা।

সাধারণ গল্প করলে তর্কের কোনো প্রশ্ন থাকে না। কিন্তু গল্পের বিষয়বস্তু ভূত কেন্দ্রিক তখন তো তর্ক একটা হবেই।

আচ্ছা, বলুন তো তর্ক কখন হয় !

বাদ দিন। আমি বলছি, যখন আপনার মতামতের সঙ্গে আমার মতামত মিলবে না। তার উপরে আবার আপনি আপনার যুক্তিটাকে খাড়া করতে চাইবেন আর আমি চাইব আমার যুক্তি খাড়া করতে।

সে'বারও বেমালুম তর্কে জড়িয়ে পড়লাম। আমি ভূতে বিশ্বাস করি না, কিন্তু পটল আর পেঁচা ভূতে অদ্ভুতভাবে বিশ্বাস করে। আমি কথায় কথায় জিজ্ঞাসা করলাম কেন ওরা ভূতে বিশ্বাস করে। কিন্তু ওরা যে গল্প আমায় শোনালো তাকে বিন্দুমাত্র আমার মনে হয়নি যে ভূত'কে বিশ্বাস করি।

থাক সে গল্প তোমাদের বলে লাভ নেই কারণ আমার মনে হয় কিছু অলৌকিক ঘটনাকে পরপর সাজিয়ে দিলেই তো দিব্বি সেটাকে ভৌতিক বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। পটল আর পেঁচা হয়ত সেটাই করেছে।

যাই হোক যখন বিশ্বাস করলাম না তখন তো প্রমাণ দেওয়ার একটা কারণ থেকেই যায়। তাই প্রমাণ দিতে হবে। আমি বা ওরা প্রত্যেকেই নিজেস্ব জয়ী হওয়াটাকে মান্যতা দিতে বাজি ধরা হল।

অবশেষে ওরা দাবি করলো, আমাদের পাশের গ্রামেই একটা পোড়ো বাড়ি আছে। আচ্ছা,পোড়ো বাড়িতে কেন যেতে বললো, সেটা বলি। ওই পোড়ো বাড়ির একদিকে শ্মশান আর অন্যদিকে কবর। পেছনে জঙ্গল আর সামনে একটা বহু পুরানো পুকুর। আগামী অমাবস্যা'তে ওখানে যেতে হবে। এবং সারারাত থাকতে হবে। আমি যথারীতি রাজি হয়ে গেলাম।

তিন দিন পরেই ছিল অমাবস্যা। আমি সন্ধ্যার সময় ওদের সাথে দেখা করলাম। ওরা বললো ওরা আমাকে শ্মশানের কিছুটা আগে পর্যন্ত দিয়ে আসবে আর ভোরবেলায় ওরা নিতে আসবে। সঙ্গে একটা ক্যামেরা দিল সারারাত ধরে অন করে রাখতে হবে। যাতে আমি ওখানে গিয়েছি কিনা প্রমাণ করার জন্য। আর সঙ্গে একটা টর্চ লাইট।

আমি ওদের ছেড়ে একা একাই পোড়ো বাড়িটাই পৌঁচ্ছালাম। একটা নির্দিষ্ট জায়গায় ক্যামেরা অন করে রাখলাম।

বাড়িটা বেশ পুরানো। দোতলা বাড়ি। ওখানে একটা পরিবার বাস করত। অনেক দিন আগের ঘটনা তখন এখানে কবর বা শ্মশান কিছুই ছিল না। শুনেছি বেশ হাসি খুশি ছিলেন তারা। কিন্তু হঠাৎ বাড়ির সবাই আত্মহত্যা করেন। না কোনো কারণ কেউ কখনও জানতে পারেনি। শুধুমাত্র তাদের একটা ছেলে যে শহরে থাকত সে পরে এখানে আসে, স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে গিয়ে মারা যাই। কিন্তু সবার আত্মহত্যার কারণটা আজও সবার আজানা। তারপর থেকেই এখানে একদিকে কবর আর অন্যদিকে শ্মশান হয়ে গেছে। আর এই বাড়িটার নাম হয়েছে পোড়ো বাড়ি।

আমি এখানে আসার পর টর্চ জ্বালিয়ে চারিদিকে দেখে নিলাম। তারপর ভাবলাম, এসেছি যখন কিছু স্মৃতি রেখে যাওয়া উচিত। তাই আগে উপরের তলায় গেলাম। উপরে তিনটি ঘর।

চলছে .....
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৯৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০২/০১/২০২২

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • একনিষ্ঠ অনুগত ০৩/০১/২০২২
    রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি, আমি রহস্য খাবো।
  • ফয়জুল মহী ০২/০১/২০২২
    দারুণ
  • সুন্দর
 
Quantcast