www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বোঝেনা সে বোঝেনা

-তাহলে এই কথা রইলো কি বলিস প্রিতম ?বাবা-মাকে তা হলে বৃদ্ধআশ্রমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যাক?
-দাদা আমি আর কি বলবো তুমি যা ভালো মনে করো ।আমি ভাই আর এর পিছনে আর নেই রাত্রে একটু যে মনের মত করে ঘুমাবো তাও পারি না।সারারাত বাবার কাঁশি আর কাঁশি ।আর মায়ের হাঁপানির শব্দে সারা ঘর যেন কেঁপে উঠে ।তাড়াতাড়ি করে একটা ব্যবস্থা করো দাদা –  
-রতন কিরে তুই কিছু বলছিস না যে ?
-দাদা আমি গতকাল বাবা কে বললাম আমাকে কিছু টাকা দেওয়ার জন্য আমার কথার উপর শিঘ্রই না বলে দিলো ? আমি অবাক হয়ে গেলাম মা ও তাঁর সাথে না করে দিলো- বলে কিনা শিউলীর বিয়ের জন্য  বাবার টাকা গুলো রেখেছেন আমাদের কোন দাবি নেই ।এটা কি কোন কথা হলো তুমি বলো?
-ঐশী তুমি কিছু বলছো না যে ?  
-আমি কি বলবো তোমরা তিন ভাই মিলে তো সঠিক সিন্ধাত নিয়েছ-আমি বাপু রোজ রোজ তাঁদের সেবা টেবা করতে পারবো না বাবা তাড়াতাড়ি এই আপদ গুলো কে বিদায় করো – ঐশীর কথা শেষ না হতেই  মানে তিন ভাইয়ের এক বোন শিউলী এসে বলে উঠলো-  
-একি বলছো বৌদি বাবা-মা এই বাড়ির আপদ –দাদা তুমি কিছু বলছো না যে তোমার সামনে বৌদি বাবা মা কে অপমান করছেন অথচ চুপ হয়ে আছো? শিউলীর কথা শেষ হতে না হতেই দাদা সুমন বলে উঠলো-
-শিউলি আমরা ঠিক করেছি বাবা মাকে বৃদ্ধাআশ্রমে পাঠিয়ে দিবো ।ওনাদের বয়স হয়েছে ।যে ক’টা দিনে বাঁচেন অন্তত সুখ শান্তিতে বাঁচুক –সেখানে তাঁদের সেবা শুশ্রসা করা দরাকার।অসুবিদে হবে না তাঁদের জন্য মাসিক হারে একটা  এমাউন্ট দিয়ে  দিবো ওখানে তাঁরা অনেক ভালো থাকবেন ।আর তাছাড়া তোর বৌদি ও চাচ্ছেন  তাঁদের কে বৃদ্ধাআশ্রমে পাঠিয়ে দিতে তাই আমরা সবায় মিলে সিন্দান্ত নিয়েছি,কালই তাঁদের পাঠানোর ব্যবস্থা করবো ।    
-দাদা একি বলছো তুমি!তুমি পরিবারের বড় ছেলে তোমার উপর এই সংসারের বড় দায়িত্ব পরে আছে ।এই সংসার টা  সুন্দর ভাবে চালানোর ,সবার ভালো মন্দ দেখা-শুনা করার, অথচ তুমি এটা কি করতে যাচ্ছ একবার ভেবে দেখেছ!! তুমি বৌদির কথায় তাকে খুশি করতে বাবা মাকে তুমি বৃদ্ধাআশ্রমে পাঠাতে চাচ্ছ ? ছিঃদাদা ছিঃ- শিউলীর কথা শেষ হতে না হতেই সুমন উগ্র মেজাজে এসে শিউলির গালে দুটি চড় বসিয়ে দিলেন –আর হুঙ্কার ছেড়ে বলে উঠলো –
-এই তোর কাছ থেকে কি আমাকে উপদেশ শুনতে হবে – বড়দের মুখে মুখে কথা!!সুমনের কথার ফাঁকে সুমনের স্ত্রী ঐশী বলে উঠলো –
-মারো মারো আরো কটা দাও –আজাইরা খেয়ে খেয়ে গলা কেমন বেড়েছে দেখো। এই সুমন শুনো তুমি আজি এই আপদ গুলো বিদায় করো ,আমার আর এক মুহূর্ত সহ্য হচ্ছে না ।    
সবার এমন হৈ হুল্লোড়ের শব্দ শুনে বাবা রমণ বাবু হাতে লাঠি ভার দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ছোট স্বরে বলে উঠলেন –
- এই তোরা কি করছিস ? ঝগড়া করছিস কেনো ?আমি অসুখী মানুষ একটু ঘুমাতে পারছি না তোদের মা ও বসে বসে কাঁদছে । বাবা কে আসতে দেখে শিউলী দৌঁড়ে গিয়ে কেঁদে কেঁদে বলে উঠলো –  
-বাবা তোমাদের নাকি দাদা বৃদ্ধাআশ্রমে পাঠিয়ে দিবেন – তোমরা নাকি এই বাড়ির আপদ । দাদারা সবায়  মিলে এই সিন্ধান্ত নিয়েছেন ।কালই তোমাদের পাঠিয়ে দিবেন – বলেই শিউলী হু হুহু কান্না করতে লাগলো – রমণ বাবু শিউলীর মুখে বৃদ্ধাআশ্রমে কথা শুনে আঁতকে উঠলেন –দুই চোখ বেয়ে ঝর ঝর অশ্রু বাইতে লাগলো ।এবং অবাক হয়ে সুমনের দিকে চেয়ে রইলেন তা দেখে সুমন এগিয়ে এসে বললো –  
-বাবা তুমি কোন চিন্তা করো না আমি গত কাল কথা বলে এসেছি –খুব সুন্দর পরিবেশ –মাকে নিয়ে তুমি খুব সুন্দর পরিবেশে থাকতে পারবে।তোমাদের মত আরো অনেকেই আছেন সেখানে।কোন চিন্তা করো না আমরা প্রতি মাসে তোমাদের জন্য টাকা পাঠিয়ে দিবো।
ছেলে সুমনের কথাগুলো আড়াল থেকে শুনে মা কমলা রানী ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কেঁদে উঠলেন – তার মাথার উপর যেন আকাশ ঘুরছে –পায়ের মাটি সরে যাচ্ছে – আর কান্নার স্রোত বয়ে যাচ্ছে তাঁর দুই চোখে। শিউলী দৌঁড়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করলো –

 
                                                        আরো হাঁটবে ..
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৫০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ৩০/১০/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • রূপক বিধৌত সাধু ০২/১১/২০১৪
    ছেলে আমার মস্ত মানুষ
    মস্ত অফিসার,
    মস্ত ফ্ল্যাটে যায়না দেখা
    এপার ওপার।
    নানান রকম জিনিস আর
    আর আসবাব দামী দামী,
    তার মাঝে একমাত্র
    কম দামী ছিলাম আমি ।
    মর্মস্পর্শী বিষয়বস্তু । চালিয়ে যান ।
  • রইসউদ্দিন গায়েন ০২/১১/২০১৪
    গল্পটি বেশ,হৃদয়গ্রাহী। তবে গল্প অসম্পূর্ণ থাকলে ভাল লাগে না। আপনার বিষয়-নির্বাচন খুবই প্রাসঙ্গিক। আপনার অসম্পূর্ণ গল্প প'ড়ে এটুকুই মন্তব্য করবো:- বেশির ভাগ বাড়ির বৌ-গুলো ভাল হয় না। আর ছেলেরা এইসব বৌগুলোর গোলামী করে,স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। এর ফলস্বরূপ বৃদ্ধ বাবা-মাকে সহ্য করতে হয় অনাকাঙ্খিত, অসহনীয় জ্বালা-যন্ত্রণা।...ধন্যবাদ,আপনার লেখা উপস্থাপন করার জন্য!
  • একশো বছর বাচতে চাই এখন আমার স্বাদ
    ২৫ বছর পরে হবে খোকার উনষাট।

    একটু ফিল্মি বাট গল্প হৃদয় বিদারক।
  • অনিরুদ্ধ বুলবুল ৩১/১০/২০১৪
    সিকূয়্যন্স যা ই হোক একটা ভাল বিষয় নিয়ে লেখা শুরু হয়েছে। লেখককে অভিনন্দন জানাই। চালিয়ে যান; পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
    • শিমুল শুভ্র ৩১/১০/২০১৪
      অনেক ভালোবাসা রইলো , ভালো থাকুন প্রিয় কবিবন্ধু । অনেক ভালোবাসা রইলো । ভালো থাকুন ।
  • আফিয়া খাতুন মলি ৩১/১০/২০১৪
    ঐশীকে বেশি খারাপ দেখানো হয়ে গেল না?বেিশ সিনেমাটিক।
  • একনিষ্ঠ অনুগত ৩১/১০/২০১৪
    এটাই কি প্রথম পর্ব? বেশ ভালো হচ্ছে... তবে নাটকীয়তা খুব বেশী মাত্রায় হয়ে গেছে সুমনের চড়টার ক্ষেত্রে। চড় পর্যন্ত যেতে আর একটু সময়ের দরকার ছিল হয়ত...

    আগামী পর্বের অপেক্ষায়...
    • শিমুল শুভ্র ৩১/১০/২০১৪
      হা এটাই প্রথম পর্ব । সুমনের ব্যাপার টা মাথায় রাখবো । অনেক ভালোবাসা রইলো , ভালো থাকুন । বেশ ভালো লাগলো আপনার দারুণ মতবিনিময় ।
  • রেনেসাঁ সাহা ৩০/১০/২০১৪
    আপাতত তো মনে হচ্ছে এর থেকে সিনেমাটিই ভালো লেগেছিল। ;-) । তবে চলছে যখন চলুক। পরে মন্তব্য করা যাবে।
  • ৩০/১০/২০১৪
    অনেক সুন্দর লেখা ।
    বাকিটুকুর অপেক্ষায় রইলাম ।
 
Quantcast