www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

এভাবেই কাছে আশা( জীবনের গল্প) পর্ব-১১

এক সময় বাইক এসে থামে বাসার সামনে।
বাবুঃ ব্যাস ব্যাস ব্যাস আংকেল এখানে থামান বাসায় এসে গেছি।
নিশানঃএটাই বুঝি তোমাদের বাসা।
বাবুঃ জ্বি আংকেল।
লিজা বাইক থেকে নেমে ধীর পায়ে এগিয়ে যায় ঘরের দিকে।বাবুকে নামিয়ে দেয় নিশান।বাবু এক দৌঁড়ে ঘরের দরজা। তালা খুলে পেছনে তাকায় লিজা।নিশান বাইরে দাঁড়িয়ে বাবুকে ডাকছে বাবু প্যাকেটা নিয়ে যাও বাপী। বাবু ঘরে ঢোকে।লিজা ফিরে আসে
লিজাঃ কি হলো এখানে দাঁড়িয়ে কেন?
প্যাকেটা পাড়িয়ে দিয়ে বলে বাবুর জন্য।
লিজাঃ তো।
নিশানঃ নিয়ে যান।
লিজাঃ ভিতরে ঢোকেন।
নিশানঃ আজ ভিতরে ঢুকতে চাচ্ছিলাম না।
লিজাঃ কেন?
নিশানঃ এমনি।
লিজাঃ ভিতরে আসেন।
নিশানঃ আজ থাক অন্য কোনো একদিন আসব।
লিজাঃ ভিতরে ঢুকুন।
নিশানঃ বললাম না আজ থাক।
লিজাঃ ওকে দাঁড়ান, আসছি।
ঘরে ঢোকে লিজা কিছুক্ষম পর ফিরে আসে।ওকে চলে জান।
নিশাবঃ বাবুর প্যাকেটা।
লিজাঃ এটা রাখেন।
নিশানঃ কি ওটা।
লিজাঃ এই খাবারগুলোর দাম সহ আপনার পাওনা বিশ টাকা।
নিশান অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন করে
নিশানঃ মানে!
লিজাঃ মানে কিছু না।আমি গরিব তাই বলে কারো দান গ্রহন করিনা।
নিশানঃ দান! একি বলছ আপনি?
লিজাঃ নয় তো কি।আমি এতো করে বাসায় ঢুতে বলছি অথচ আপনি দাম দেখিয়েই যাচ্ছে। গরিব মানুষ বসতে দেওয়ার জায়গা নেই এটা সত্য তাই বলে গেট থেকে ফিরে যাবেন?না হয় ঘাড় গুজে একটু কষ্ট করে ঢুকলেনই। একটু কষ্ট করে কিছুক্ষণ মাবুরে বসলেন না হয়। কিন্তু না কিছুতেই ভিতরে ঢুবেন না।
নিশালঃ বাব্বা এতো রাগ,ঠিকাছে চলেন।
লিজাঃ না আসতে হবে না। কারো করুনা আমার ভালো লাগে না।
নিশানঃ লিজা!
নিশানঃ করুনা?
লিজার কথায় নিশান কষ্ট পেলো কিনা বুঝলাম না।
নিশানঃ সরে দাঁড়াও লিজা ভিতরে যাব।
লিজাঃ না সরবো না।টাকাটা রাখেন এবং চলে জান।আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখীত।পারলে ক্ষমা করবেন।
নিশান বাসার ভিতর ঢুতে না চাওয়ায় লিজার মন ভীষন খারাপ হয়ে যায়। হেসে উঠে বলে
নিশানঃ বাব্বা এতো দেখছি শ্রাবণের মেঘ জমেছে।কেউ যে ইয়ারকি বোঝে না তাতো জানতাম না।
লিজাঃ দেখু কোনটা ইয়ারকি আর কোনটা ফাজলামো সেটা আমি ভালো করে বুঝি।
বাবু ঘরে বসে চিৎকার করে ডাকতে থাকে মামণী ও মামণী আসছ না কেন? আমার ড্রেস খুলে দেবে না।
লিজাঃ আসি বাবা
লিজাঃ আপনি বিদায় নিলে আমি যেতে পারি ছেলেটার ড্রেস খুলতে হবে।তাছাড়া গোসল করিয়ে খাবার ও দিতে হবে ক্ষুধা লেগে গেছে হয় তো।
নিশানঃ গেট খোলো।গাড়ি ভিতরে ঢোকাব।
লিজাঃ না।আপনি চলে জান প্লিজ।
পকেট গেট দিয়ে ভিতরে ঢুলে জোর করে লিজার হাত থেকে চাবি নিয়ে গেট খোলে নিশান।গাড়ি গেটের ভিতরে ঢুকিয়ে নিজার আগে নিশান ঘরে ঢোকে।নিশানেকে দেখে মনে হচ্ছে এবাড়ি ওর বহুদিনের চেনা। লিজা তখনো দাঁড়িয়ে গেটের কাছে ভিতরে ঢুকে
নিশানঃ সেকি বাবু এখনো ড্রেস চেঞ্জ করোনি।
বাবুঃ না আমার ড্রেস মামণী খুলে দেয় সব সময়। এসো আজ আমি খুলে দেব।
বাবুঃ না থাক আমি খুলছি।আপনি মেহমান।মেহমান কে দিয়ে কিছু করাতে হয় না।
নিশানঃ তাই, কে বলেছে তোমাকে এ কথা?
বাবুঃ কে আমার আমার মামণী।
নিশানঃ তাই বুঝি কিন্তু আমি তো মেহমান না আমি তো তোমার আংকেল বাবা। এসো আমি খুলে দিচ্ছি।
বাবুর ড্রেস খুলে এগিয়ে যায় গেটের কাছে।
নিশান কি হলো ওখানে দাঁড়িয়ে থাকবে। পানি পেপাশা পেয়েছে এক গ্লাস পানি দেওয়া যাবে কি।ভিতরে ঢোকে লিজা।একটা চেয়ার এগিয়ে দিয়ে পানি আনতে ভিতরে যায় কিছুক্ষণ বাদে ট্রেতে করে মিষ্টি ফল আর ফিরনি নিয়ে হাজির হয়।টি টেবিলে ট্রে রেখে বলে নিন।
লিশানঃ চাইলাম পানি।নিয়ে এলেন এতো কিছু।কেন নিজেকে ছোট করে দেখো লিজা।
ফিরনির পিরিচ এগিয়ে দিতে দিতে বলে।
লিজাঃ নিজেকে ছোট করে দেখি?
নিশানঃ নয় তো কি।বার বার কেন বললে তুমি খুব গরিব।কেন আমার কাছে একটা চরম সত্য লুকিয়েছ? সত্যি কথা বলতে তুমি আজও আমাকে বিশ্বাস করতে পারো নি।আর তাই আমি তোমার বাসায় ঢুকতে চাইনি।
লিজাঃ কি লুকালাম আবার।
নিশানঃ তোমার বর কোথায়?
চুপ থাকে লিজা।জানি কোনো উত্তর তুমি দিতে পারবে না।আর দিতে গেলে এখন তোমাকে মিথ্যা কথা আগে সাজাতে হবে তাই উত্তর দিতেও দেরি হচ্ছে।
বাবুর মুখে নিশান যখন ওর বাবার কথা শুনেছে তখন যেন লিজার প্রতি নিশান অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। মনে মনে ভাবতে থাকে বাবুর বাবা হয়ে যাবে সে।কিন্তু লিজা রাজি হবে তো!ফিরনির পিরিচে নাড়াচাড়া করতে থাকে নিশান।
লিজাঃ কি হলো মুখে দেন।আপনার না পানি পেপাশা লেগেছে?
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮২০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৯/১২/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • নির্ঝর ১০/১২/২০১৫
    সুন্দর
 
Quantcast