www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অর্কর গোয়েন্দাগিরি (২্য় পর্ব)

বাজার করে এসে কোনরকমে টিফিনটা করে অর্কর বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলাম। ওদের বাড়ি গিয়ে দেখি, অর্ক বাড়িতে নেই, কোথাও কোন কাজে বেড়িয়েছে। কাকিমা আমাকে বসার ঘরে বসতে বলে চলে গেলেন রান্নাঘরে কাজ করতে। আমি আর কি করব, একবার অর্ককে ফোন করব কি না ভাবতে ভাবতেই, দেখি জ্যেঠু এসে হাজির, এসেই বললেন, কি ব্যাপার মানিকচাঁদ, বন্ধু কোথায়? আমি ঠোঁট উল্টে জানালাম যে,আমায় কিছু বলে যায় নি। তারপর নিজেই বলে উঠলাম, জ্যেঠু আজকের খবরটা পড়েছ? জ্যেঠু পেপারটা নিয়েই বসেছিলেন, আমার প্রশ্ন শুনে, চশমার ফাঁক দিয়ে দেখে বললেন, কোন খবরটা, কালকের রিয়েল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনার ম্যাচের খবর?

আমি একগাল হেসে বলে উঠলাম- না, ওই যে, মিঃ পিটার ডি’সুজার ব্যাঙ্ক থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা খোওয়া যাবার খবরটা। আমি খুব উৎফুল্ল হয়েছিলাম ভেবে, যে যাক এবারে জ্যেঠু নিশ্চয়ই কিছু বলবেন, কিন্তু জ্যেঠু সেসবের মধ্যে দিয়ে না গিয়ে, মুখটা বিকৃত করে বলে উঠলেন, না, আর ওসব খবরে ঠিক ইন্টারেস্ট পাই না। চাকরী জীবনে এরকম কতই না দেখলাম!! আমি বুঝলাম, জ্যেঠুর আজকে মনে হয় মুডটা ঠিক ভালো না... তাই হয়ত, না’হলে এইসব খবরে স্বভাবগুণে জ্যেঠুর উৎসাহ আমার থেকেও বেশী। আর ঘাঁটালাম না আমি, চুপ করে শনিবারের পত্রিকাটা দেখে যেতে লাগলাম। দশমিনিটের মধ্যেই অর্ক হাজির... এসেই আমাকে বলল, বাব্বা, রসিয়ে পেপার পড়া হচ্ছে? কখন এলি তুই? বলেই, জ্যেঠুর পাশে সোফাতে ধপাস করে বসে পড়ল।

সাথে সাথে, জ্যেঠু, অর্কর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে নীচু গলায় বলল, অর্ক, তোমার বন্ধু, মানিকচাঁদ, আজকাল আবার অপরাধের খবরও ভালো করে পড়ছে, পিটার ডিসুজার খবরটাও পড়ে এসেছেন বাবু। আমার খুব রাগ হল, বুঝলাম, আমাকে তখন এমনি এমনি ওরকম করে বলেছিলেন, আসলে তিনি এবং অর্ক সবই জানেন। শুধু শুধু আমাকে বোকা বানানোর কৌশল নিয়েছেন সকাল সকাল। আমি মুখটা গম্ভীর করে বসে রইলাম।

কিছুক্ষণ পরে জ্যেঠু উঠে এগিয়ে এসে আমার গালটা টিপে দিয়ে বললেন – মানিকচাঁদ, কি, চেষ্টা করবে নাকি? পারবে মিঃ ডিসুজার কেসটা সল্ভ করতে তোমরা দুজনে? যদি চাও তো চেষ্টা করে দেখতে পারো, পারবে চ্যালেঞ্জটা নিতে?

আমি তো অবাক, বলে কি জ্যেঠু, একেবারে গোয়েন্দাগিরি? তাও আমার দ্বারা? আমি বললাম- না জ্যেঠু, ওসব আমার দ্বারা হবে না, আমার এত ধৈর্য্যই নেই, কোনকিছুতেই সময় নেই এত ভাববার। শুধু শুধু সুস্থ শরীরকে ব্যস্ত করার কোন মানে হয় না।

আমার কথা শুনে, জ্যেঠু বলে উঠলেন, ও’দিকে তোমার বন্ধু তো একপায়ে রাজী, সকাল থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। আমি চেঁচিয়ে বললাম, মানে ? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না ... কিসের প্রস্তুতি?

এবারে হাসতে হাসতে অর্ক বলে উঠল, আরে আস্তে বন্ধু, আস্তে! জ্যেঠু গতকাল রাত্রেই খবর পেয়েছিলেন এই ব্যাপারটা, প্রিতমদার কাছ থেকে। প্রিতমদা বলেছিল যে আজকে পেপারে বেরোবে খবরটা।

আমি বিস্ময়ে বলে উঠলাম, ওহ!, প্রিতমদা, মানে জ্যেঠুর সেই আইপিএস বন্ধু মিঃ সরকারের ছেলে না? উনি তো এখন আমাদের এলাকার অফিসার ইন চার্জ, তাই না?

জ্যেঠু উত্তরে একটু হেসে আমার কথার সমর্থন জানাল, আর অর্ক বলে চলেছিল, আসলে সকালে একটু প্রিতমদার কাছেই গিয়েছিলাম, ব্যাপারটা সম্পর্কে আরো ভালোভাবে খোঁজখবর নিতে। প্রিতমদার যদিও এই কাজে কোন হাত নেই, তবুও প্রিতমদার এক বন্ধু আছেন, লালবাজারের সাইবার ক্রাইম শাখার স্পেশাল অফিসার, তার সাথে দেখা করতে বললেন। কিন্তু সবকিছুই তোর উপরে নির্ভর করছে রে।

আবার বিস্ময় আমার গলায়, কেন? আমার উপরে নির্ভর করবে কেন? আমি কি করলাম আবার ?

জ্যেঠু মুখ টিপে হেসে বললেন, সবকিছুই বাবা মানিকচাঁদ, তোর উপরেই নির্ভর করছে, কারণ প্রথমতঃ তুই ছাড়া আবার আমাদের অর্কবাবু কানা, আর দ্বিতীয়ত, অর্কর মা গ্রীন সিগন্যাল দিয়েছে শুধু যদি তুইও ওর সাথে থাকিস একসাথে, বুঝতেই তো পারছিস, মায়ের মন, একা ছাড়তে ভরসা পায় না, আমি আবার অত টো টো করতে পারব না, তবে ঘরে বসে তোদেরকে সাহায্য করব, অবশ্য প্রিতম ও ওর বন্ধুরাও আছে। তাই যদি চাস তো লেগে পড়তে পারিস। কোন সাহায্য লাগলে আমি সাধ্যমত সাহায্য করতে চেষ্টা করব। অনেকদিন ধরেই ওর ইচ্ছা সত্যিকারের গোয়েন্দাগিরি করার, তাই কাল রাত্রে আমিই খবরটা শুনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলাম। এবার দেখ তোরা নিতে পারিস কিনা?

আমি বেশ উত্তেজনা অনুভব করছিলাম মনে মনে, কিন্তু বাড়ির কথা মনে পড়াতে মুখটা কালো করে বললাম, কিন্তু আমার বাড়ি? আমার অফিস ? কি করে ম্যানেজ করব সব?

অর্ক, মাথা নেড়ে বলে উঠল, ওসব চিন্তা ছাড়! ও জ্যেঠু সব সামলে নেবে। তুই আগে বল, তুই রাজী কি না? খালি অফিসটাকে ম্যানেজ করতে হবে। তুই যদি রাজী হস তবে আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আছে, আজ আর কাল, তোর ছুটি, সোমবার তোর প্রোগ্রাম ম্যানেজারকে ফোন করে, আপাততঃ দু-তিনদিনের মেডিক্যাল লিভ নিয়ে নে, তারপর দেখা যাবে। এই বলে, আমার দিকে ফিরে ছোট্ট করে চোখ টিপল ও।  

আমি ভেবে দেখলাম, উপায়টা মন্দ বলে নি ও! হেসে ফেললাম। মুখে বললাম- আমি রাজী তাহলে। তারপরে জ্যেঠুর দিকে তাকিয়ে বললাম, তবে বাড়ির লোকেদের কিন্তু তোমাকে ম্যানেজ করতে হবে। জ্যেঠু মাথা নেড়ে সমর্থন করলেন। আমি বললাম – তাহলে, কি করে শুরু করব? কোথা থেকে তদন্ত শুরু করব ? কি ভাবে শুরু করব? ওফফ ! ভাবতেই পারছি না, আমরা গোয়েন্দাগিরি করব...

জ্যেঠু হাত উঁচু করে আমাকে থামতে বলে, বললেন, শোন, কাজ শুরু করার আগে তোমাদেরকে দুটো কথা বলতে চাই, প্রথম কথা, এই ধরণের হাবিজাবি উত্তেজনা মন থেকে ঝেড়ে ফেল, এইসব ভাবলে কখনই ভালো গোয়েন্দা হয়ে উঠতে পারবে না, উত্তেজনার বশে ভুল করবে, আর সেই ভুল কাল হতে পারে!। একদম সাধারণ ভাবে আর পাঁচটা সাধারণ কাজের মত এটাকেও ভাবতে শুরু কর, দেখবে উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে যাবে। আর দ্বিতীয় কথা হল, ভাবলাম আর গোয়েন্দা হয়ে গেলাম তা কিন্তু নয়, প্রতিটা স্পেশালাইজড জবের মত গোয়েন্দা হতে গেলেও কিছু শর্ত বা যোগ্যতা থাকা দরকার। সেগুলো হল, মৌলিক চিন্তাভাবনার ক্ষমতা, দূরদৃষ্টি, চুলচেরা বিচার করার ক্ষমতা, কোন সমস্যার যুক্তিসঙ্গত সমাধান খুঁজে বের করা, আর সবচেয়ে যেটা জরুরী, তা হল, নিজের স্মৃতিশক্তি, চোখে দেখার ও কানের শোনার ক্ষমতাকে ক্রমাগত বাড়িয়ে যাওয়া, অর্থাৎ, অবজারভেশন পাওয়ার খুব গুরুত্ত্বপূর্ণ এইসব ক্ষেত্রে।

আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ব্রাহ্মী শাক খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে বলে শুনেছি, কিন্তু চোখের দেখার ও কানে শোনার ক্ষমতা আবার বাড়াব কি করে?

অর্ক হেসে বলল, আরে বোকা, এর মানে হল, নিজের চোখ-কানকে আরো সজাগ করে রাখা, অর্থাৎ আর পাঁচটা সাধারণ লোকের চোখের দেখার ও কানে শোনার ক্ষমতার থেকে একজন গোয়েন্দার অনেক বেশী থাকা উচিত। অর্থাৎ, সেই অর্জুনের পাখির চোখ দেখার গল্পের মতন। অন্য অনেকে গাছের, ফুল, ফল, পাখি দেখেছিলেন, কিন্তু পাখির চোখটা কিন্তু অর্জুনই একমাত্র দেখতে পেয়েছিলেন। তাই, আর পাঁচ-সাতটা সাধারন মানুষ যা দেখবে, বা বলবে, তার থেকেই আমাদের ওই পাখির চোখ বার করতে হবে বুঝলি?

আমি ঘাড় নাড়িয়ে বললাম, হ্যাঁ এইবারে ঠিক বুঝেছি। কথাটা কথাটা সাথে সাথে জ্যেঠু ক্যাচ করে বলে উঠলেন, - কি বুঝেছিস ? আমি অ্যাঁ বলে শব্দ মুখ দিয়ে বার করে ওনার দিকে তাকাতেই, উনি আবার বললেন, কি বুঝেছিস তোরা? প্রমাণ দে।

আমি আর অর্ক সমস্বরে বলে উঠলাম, মানে? শুনে জ্যেঠু বললেন, মানে আর কিছুই নয়, তোরা দুজনেই দুজনের দিকে তাকিয়ে তোদের গোয়েন্দার চোখ দিয়ে দেখে বল, একে অপরের সম্বন্ধে নতুন কিছু, এমন কিছু যা অন্যরা দেখে বুঝবে না...।

আমি তো থতমত খেয়ে গেলাম, ভালো করে অর্কের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, কিছুই বুঝতে পারলাম না,  আগেও যাই দেখেছি, তাই আবার দেখলাম, খালি ওর চুলটা একটু উস্কো-খুস্কো হয়ে আছে, কি আর করব, সেটাই বললাম, অর্ককে দেখে বোজাহ যাচ্ছে যে, ও বাইরে থেকে ঘুরে এসেছে, যার ফলে ওর চুল উস্কো-খুস্কো হয়ে গেছে...

জ্যেঠু, বিজ্ঞের মতন অর্ককে দেখে, আমার দিকে তাকিয়ে বললেন – আর কিছু? আমি মাথা নেড়ে বললাম, না আমি কিছু আর বুঝতে পারছি না।

এবারে তোর পালা, অর্কর দিকে তাকিয়ে বললেন জ্যেঠু। অর্ক আমাকে আপাদ-মস্তক একবার ভালো করে দেখে বলল, আমাদের মৈনাক বাবু আজকে সকালে বাজারে গিয়েছিলেন মনে হয়, মাছও কিনেছেন বেশ বোঝা যাচ্ছে।

আমিতো অবাক, বলে কি ও? জানল কি করে? প্রশ্ন করার আগেই, জ্যেঠু বলে উঠলেন সাবাশ, এবারে বলে ফেল কি করে বুঝলে ?

অর্ক আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল, ও’যে বাজারে গিয়েছিল, তার মোক্ষম প্রমাণ ওর পা বহন করছে, ওর প্যাণ্টের নীচে এখনও পেঁয়াজের খোসা লেগে আছে, আর তাই শুধু নয়, ও যে মাছের বাজারে গিয়েছিল, কারণ ঐ দেখো, মাছের আঁশের দুটো টুকরো এখনও চকচক করছে। হ্যাঁ তবে মাছ কিনেছে কিনা তাতে অবশ্যাম্ভাবী ভাবে বলা যাবে না, তবে আমার অনুমান যখন মাছের বাজারে গিয়েছে, নিশ্চয়ই কিনেছে। আরো একটা জিনিশ, প্রমাণ করছে ওর মাছের বাজারে যাওয়ার কথা, সেটা হল ওর প্যাণ্টের নীচের দিকটায় একটু ভেজা ভেজা ভাব আছে, যা মাছের বাজারে মাটিতে পড়ে থাকা জলে ভিজে গিয়েছিল, আর সাথে এটাও বোঝাচ্ছে যে, মানিকচাঁদ বাজার করেই ডাইরেক্ট এখানে আসেননি, কিছুক্ষন পরে এসেছেন বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে, কারণ ওনার চুল কিন্তু উস্কো-খুস্কো নয়। আর ডাইরেক্ট এখানে আসলে প্যান্টট ভেজা থাকত, ভেজা ভেজা ভাবটা থাকত না।

“ব্রাভো” – জ্যেঠুর কথায় সম্বিৎ ফিরল, এতক্ষন যেন ঘোরের মধ্যে ছিলাম, আমি হাততালি দিয়ে বলে উঠলাম, বাহ!  অসাধারণ। তবে কি মাছ কিনেছি, তা বলতে পারবি ?

অর্ক হেসে বলে উঠল, আন্দাজ করতে পারি, তুই কি মাছ কিনেছিস... আমি বললাম, বল দেখি! হহাসতে হাসতে অর্ক বলে উঠল, জ্যেঠু, জানো তো, আমার মনে হয় মৈনাক কাৎলা মাছ কিনেছে। আমি চোখ বড় বড় করে বলে উঠলাম, এটা কি করে বুঝলি? পুরো আন্দাজে মারলি না? জবাবে অর্ক বলল, আগে বল ঠিক কি না? আমি ঘাড় নাড়তেই, অর্ক বলে উঠল আসলে দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে বুঝতে পারলাম, বা বলা ভালো গেইস করলাম। জ্যেঠু এতক্ষণ ধরে কথা শুনছিলেন, এবারে বললেন, ক্ল্যারিফাই কর দেখি...অর্ক মিচকি হেসে বলল, আমাদের মৈনাক আসলে কাৎলা মাছ খেতে ভালোবাসে, যা আমি কাকিমার কাছ থেকে আগেই শুনেছিলাম, তাই যখন ও নিজে বাজারে গেছে, তাই ভাবলাম ও নিশ্চয়ই নিজের ভালোবাসার মাছই কিনে আনবে, যদি না কাকিমার স্পেশাল অর্ডার থাকে, তারপর তোর প্যান্টের নীচের আঁশগুলো দেখে মনে হল ওগুলো কাৎলা মাছেরই আঁশ, কারণ এত বড় বড় আঁশ আর কোন মাছের হবে, যখন ছুরি দিয়ে মাছওয়ালা মাছের আঁশ ছাড়াচ্ছিল, তখনই হয়ত ওই টুকরো গুলো মৈনাকের প্যাণ্টের ভাঁজে আটকে গিয়েছিল। তাই দুই আর দুই চার মিলিয়েই বললাম।

জ্যেঠু বলল, দারুণ, তোর অ্যানালিটিকাল পাওয়ারের তারিফ করতে হবে, তবে মৈনাক, তোকে কিন্তু আরো ভালোভাবে নজর করতে হবে, যাতে আরো বেশী কিছু না বলা কথা বুঝতে পারিস। যাক গে, ছাড়, এবার বল তোরা আমার চ্যালেঞ্জ নিবি কিনা ?

আমি আর অর্ক সমস্বরে, বলে উঠলাম, ইয়েস! উই উইল ডু ইট। জ্যেঠু হাসতে হাসতে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই, অর্ক আমাকে বলে উঠল, তবে আর কি, এইদুটো দিন তো তোর ছুটি, চল আজকেই একটু ঘুরে আসি। আমি বললাম- কোথায় ? জবাবে অর্ক চোখটা নাচিয়ে বলে উঠল মিঃ পিটার ডি’সুজার বাড়ি। প্রিতমদার সাথে কথা হয়ে গেছে, একবার লালবাজারেও যেতে হবে, এই কেসের অফিসারের সাথে দেখা করতে। প্রিতমদাও সাহায্য করবে বলেছে বাইরে থেকে। তবে হ্যাঁ, আমাদের তদন্ত নিজেদের মত করে করতে হবে, পুলিশের তদন্তে কোনরকম ইন্টারফেয়ার করতে পারব না আমরা। কথা বলতে বলতেই কাকিমা, লুচি আর বেগুনভাজার প্লেট দিয়ে গেল, কোনরকম ওজর আপত্তি না শুনে, তবুও আমি অনেককষ্টে কাকিমাকে বুঝিয়ে চারটের জায়গায় দুটো লুচি খেলাম, কারণ জলখাবার খেয়েই এসেছি আমি। অর্ক তাড়াতাড়ি খেয়ে ভিতরে গেল পার্স আনার জন্য, আর আমি কোনরকমে লুচিদুটো খেতে খেতে ভাবছিলাম, কি অসাধারণ ভাবে অর্ক, আমাকে দেখে সবকটা কথা একেবারে ঠিকঠাক ভাবে বলে দিল।

কিছুক্ষণ পরেই ও ফিরে এসে আবার আমায় তাড়া লাগাল, কি’রে হল তোর? চল আগে লালবাজারে যাব, তারপরে সোজা মিঃ পিটার ডি’সুজার বাড়ি। আমিও প্লেট রেখে তাড়াতাড়ি উঠে বললাম, চল, আমি রেডি। আমরা দুজনে বেরিয়ে পড়লাম লালবাজারের উদ্দেশ্যে। আমার বুকটা ঢিপ ঢিপ করছে, ঠিক পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোবার দিনকে মনে যেমন একটা আশঙ্কার চোরাস্রোত বয়ে যেত, এখনও ঠিক তাই হচ্ছে। কি হবে কে জানে? ওখানকার অফিসাররা আমাদের পাত্তা দেবেন তো ? আর মিঃ পিটার ডি'সুজাই বা আমাদের মত অচেনা অজানা দুটো ছেলেকে ওনার বাড়িতে ঢুকতে দেবেন কেন ? যদি না ঢুকতে দেয় তখন কি হবে? আমরা তো বলে ফেললাম যে কাজটা করতে পারব, কিন্তু যতটা ভেবে এগুচ্ছি, ততটা আদৌ বাস্তবে কার্যকরী হবে তো ? কে জানে ...




( ক্রমশঃ )
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১২৪৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১০/০৩/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • গোগ্রাসে পড়ে ফেললাম ! পরবর্তী অংশ পড়ার প্রতীক্ষায় থাকলাম ।
  • মোঃ ফিরোজ হোসেন ১২/০৩/২০১৬
    বেশ লাগল
  • দেবজ্যোতিকাজল ১১/০৩/২০১৬
    সুন্দর
  • আজিজ আহমেদ ১০/০৩/২০১৬
    ভালই আগাচ্ছে শান্তনু গল্প টা।
    চলতে থাক। আমরা পড়তে থাকি।
  • আগে একাধিক বার লিখেছি , শান্তনুর গল্প জমানোর একটা সহজাত ক্ষমতা আছে।তাছাড়া ডিটেলের কাজ খুব ভালো। লেখার কায়দায় একটা ভিসুয়াল ফুটে ওঠে আর পড়াটা আরও ইন্টারেস্টিং হচ্ছে। তবে ধারাবাহিক গল্পের অলিখিত নিয়ম , গল্পের শেষে একটা টেনশন তৈরি করতে হবে।
    • ধন্যবাদ দেবব্রত বাবু। খুব ভালো অনুপ্রেরণাদায়ক মন্তব্য।
      শেষটা আরো একটু অ্যাড করলাম, একটু টেনশন তৈরির জন্য। এবারে দেখে বলতে পারেন ।
  • নির্ঝর ১০/০৩/২০১৬
    সহমত
 
Quantcast