আদিবাসী -৫
রুদ্র আর নিশি মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে, যেন পাথরের নিচে দেবে যাচ্ছে সময়ের সব গোপন কথা।
মাটির ফাটলটা আস্তে আস্তে প্রশমিত হতে থাকল। নিশি হাঁটু গেড়ে বসে কাঁপা হাতে মূর্তির পায়ের নিচে খোঁজ করতে লাগল। রুদ্রও তার পাশে বসে পাথরের খাঁজে হাত ঢুকিয়ে দিল। হঠাৎ রুদ্রের আঙুলে ধাতব কিছু ঠেকল।
একটা ছোটো, মরিচা ধরা লোহার বাক্স।
নিশি চাপা গলায় বলল,
— “এই… এই বাক্সটার ভেতরেই আছে অভিজিৎ সেনের জবানবন্দি?”
রুদ্র বাক্সটা খুলল। ভেতরে অল্প কিছু পুস্তিকা, ছেঁড়া কাগজ আর একটা রক্তমাখা নোটপ্যাড। নোটপ্যাডের প্রথম পাতায় হাতের লেখা—
"If I die, let the truth live. — Major Abhijit Sen"
নিশি মুখে হাত চেপে ধরল।
— “রুদ্র... এটা তো সত্যিই ওর লেখা...”
কিন্তু বাক্সের নিচের দিকে একটা ছোটো লাল সীল মোহরযুক্ত খাম ছিল। রুদ্র সেটা বের করে খুলল। ভেতরে একটা রিপোর্ট—“Operation High Nest: Internal Objection Report”
অভিজিৎ সেন নিজের হাতে লিখেছিলেন,
"আমি এই মিশনে অংশ নিতে পারি না। আমি একজন সৈনিক, খুনি নই। এই পাহাড়ে যাদের আমরা উচ্ছেদ করছি, তারা এই ভূমির প্রকৃত অধিকারী। এই বর্বরতা ইতিহাস একদিন মনে রাখবে। আমার এই প্রতিবাদের কারণে যদি আমাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়, তবে তাই হোক।"
সাথে কিছু ছবি—পাহাড়িদের পোড়া ঘর, আহত শিশু, সেনা ট্রাক, আর একটি অস্থায়ী টর্চার ক্যাম্পের ভিতরের চিত্র।
নিশির চোখে জল এসে গেল।
— “ও সত্যিই একা লড়েছিল... একটা গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে। আর এখন আমরা তার কণ্ঠস্বর।”
স্টালিন, রক্তিম, রিক্তা, ইজোমোও এসে পড়েছে তখন। সবাই বাকরুদ্ধ। মেঘ গর্জে উঠছে দূরে। ঠিক তখনই থান ম্রো হাজির হল।
— “তোমরা সেটা খুঁজে পেয়েছো?”
তার কণ্ঠে বিস্ময় নয়, স্বস্তি।
রুদ্র বাক্সটা তার সামনে রাখল।
— “এটাই কি সেই ইতিহাস, যেটা তোমরা লুকিয়ে রেখেছিলে?”
থান ম্রো গভীরভাবে বলল,
— “আমরা লুকিয়ে রাখিনি... আমরা শুধুই অপেক্ষা করছিলাম এমন কাউকে, যে সাহস নিয়ে সত্য উন্মোচন করবে। এই ফাইল যদি জনসমক্ষে আসে, পাহাড়ের ইতিহাস বদলে যাবে। কিন্তু বিপদও আসবে।”
নিশি বলল,
— “আমরা সত্যি গোপন রাখবো না। অভিজিৎ সেনের আত্মা শুধু মুক্তি চায় না, বিচার চায়।”
রুদ্র ধীরে ধীরে বলল,
— “আর সেই বিচার আমরা আনবো। এই ফাইল যাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে। সংবাদমাধ্যমে। ওর মৃত্যু বৃথা যায়নি, সেটা আমরা প্রমাণ করবো।”
পেছনে তখন পাহাড়ি বাশিঁর করুণ সুর বেজে উঠল। যেন দীর্ঘদিনের এক অব্যক্ত হাহাকার অবশেষে ভাষা পেল।
আর তখনই রক্তিম ফিসফিসিয়ে বলল,
— “এই পাহাড়ে আমরা শুধু ঘুরতে আসিনি। আমরা ইতিহাস লিখে ফেলেছি।”
চলবে,,,,,,
মাটির ফাটলটা আস্তে আস্তে প্রশমিত হতে থাকল। নিশি হাঁটু গেড়ে বসে কাঁপা হাতে মূর্তির পায়ের নিচে খোঁজ করতে লাগল। রুদ্রও তার পাশে বসে পাথরের খাঁজে হাত ঢুকিয়ে দিল। হঠাৎ রুদ্রের আঙুলে ধাতব কিছু ঠেকল।
একটা ছোটো, মরিচা ধরা লোহার বাক্স।
নিশি চাপা গলায় বলল,
— “এই… এই বাক্সটার ভেতরেই আছে অভিজিৎ সেনের জবানবন্দি?”
রুদ্র বাক্সটা খুলল। ভেতরে অল্প কিছু পুস্তিকা, ছেঁড়া কাগজ আর একটা রক্তমাখা নোটপ্যাড। নোটপ্যাডের প্রথম পাতায় হাতের লেখা—
"If I die, let the truth live. — Major Abhijit Sen"
নিশি মুখে হাত চেপে ধরল।
— “রুদ্র... এটা তো সত্যিই ওর লেখা...”
কিন্তু বাক্সের নিচের দিকে একটা ছোটো লাল সীল মোহরযুক্ত খাম ছিল। রুদ্র সেটা বের করে খুলল। ভেতরে একটা রিপোর্ট—“Operation High Nest: Internal Objection Report”
অভিজিৎ সেন নিজের হাতে লিখেছিলেন,
"আমি এই মিশনে অংশ নিতে পারি না। আমি একজন সৈনিক, খুনি নই। এই পাহাড়ে যাদের আমরা উচ্ছেদ করছি, তারা এই ভূমির প্রকৃত অধিকারী। এই বর্বরতা ইতিহাস একদিন মনে রাখবে। আমার এই প্রতিবাদের কারণে যদি আমাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়, তবে তাই হোক।"
সাথে কিছু ছবি—পাহাড়িদের পোড়া ঘর, আহত শিশু, সেনা ট্রাক, আর একটি অস্থায়ী টর্চার ক্যাম্পের ভিতরের চিত্র।
নিশির চোখে জল এসে গেল।
— “ও সত্যিই একা লড়েছিল... একটা গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে। আর এখন আমরা তার কণ্ঠস্বর।”
স্টালিন, রক্তিম, রিক্তা, ইজোমোও এসে পড়েছে তখন। সবাই বাকরুদ্ধ। মেঘ গর্জে উঠছে দূরে। ঠিক তখনই থান ম্রো হাজির হল।
— “তোমরা সেটা খুঁজে পেয়েছো?”
তার কণ্ঠে বিস্ময় নয়, স্বস্তি।
রুদ্র বাক্সটা তার সামনে রাখল।
— “এটাই কি সেই ইতিহাস, যেটা তোমরা লুকিয়ে রেখেছিলে?”
থান ম্রো গভীরভাবে বলল,
— “আমরা লুকিয়ে রাখিনি... আমরা শুধুই অপেক্ষা করছিলাম এমন কাউকে, যে সাহস নিয়ে সত্য উন্মোচন করবে। এই ফাইল যদি জনসমক্ষে আসে, পাহাড়ের ইতিহাস বদলে যাবে। কিন্তু বিপদও আসবে।”
নিশি বলল,
— “আমরা সত্যি গোপন রাখবো না। অভিজিৎ সেনের আত্মা শুধু মুক্তি চায় না, বিচার চায়।”
রুদ্র ধীরে ধীরে বলল,
— “আর সেই বিচার আমরা আনবো। এই ফাইল যাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে। সংবাদমাধ্যমে। ওর মৃত্যু বৃথা যায়নি, সেটা আমরা প্রমাণ করবো।”
পেছনে তখন পাহাড়ি বাশিঁর করুণ সুর বেজে উঠল। যেন দীর্ঘদিনের এক অব্যক্ত হাহাকার অবশেষে ভাষা পেল।
আর তখনই রক্তিম ফিসফিসিয়ে বলল,
— “এই পাহাড়ে আমরা শুধু ঘুরতে আসিনি। আমরা ইতিহাস লিখে ফেলেছি।”
চলবে,,,,,,
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
জে এস এম অনিক ২৩/০৬/২০২৫সুন্দর
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২২/০৬/২০২৫অনন্যা
-
ফয়জুল মহী ১৯/০৬/২০২৫অনন্য সৃজন কবি!