www.tarunyo.com

খাশির কল্লা

ঘুম থেকে উঠে দেখি বেলা বারোটা বাজে আর ত্রিশ মিনিট পরেই জুম্মার আজান। মা রান্না করতেছে ব্রাশ করতে করতে মা'কে বললাম, কী তরকারি রান্না করতেছেন? মা একটু গম্ভীরমুখে জোরে বললেন খাশির কল্লা(মাথার অংশ)। মনে মনে ভাবলাম আহ আজ জম্পেস খাওয়া দাওয়া হবে।
আমি কথা না বাড়িয়ে গোসলে গেলাম, গোসল সেরে পাঞ্জাবি পরে নামাজের জন্য প্রস্তুত কিন্তু নামাজে গেলাম না ঘরেই শুয়ে থাকলাম।
নামাজের জন্য বের হলাম একটা পনেরো মিনিটে। বের হয়েই মনে হলো খাশির কাল্লার কথা। মনে মনে ছোট ভাইটাকে গালি দিলাম ওর আক্কেল জ্ঞান বলতে কিচ্ছু নাই কিভাবে এত দাম দিয়ে কল্লা নিয়ে আসে সিনার মাংস আনতে পারলো না!ছেলেটা বোকাই থেকে গেল আজীবন।
ভাবতে ভাবতে মসজিদে গেলাম ততক্ষনে খুৎবা শুরু। নামাজ শেষ হতেই মুয়াজ্জিন সাহেব দাঁড়িয়ে বললেন, বাকি নামাজের শেষে তবারুক নিয়ে যাবেন। আমি আবার ভাবনায় পরে গেলাম তবাররুক নিয়ে যাবো না কি বাসায় গিয়ে কল্লা দিয়ে ভাত খাব। মাথা উঁচু করে দেখার চেষ্টা করলাম তুবাররুকে কি আছে আজ, ইমামের বাম পাশের সানসেটের ওপর রাখা আছে দুটি পোটলা সম্ভবত জিলাপি হবে। মুয়াজ্জিন সাহেব চতুর একজন লোক আগে পিছনের দিকে পোটলা রাখতো ছেলেপেলে বাকি নামাজের আগেই ভাগাভাগি করে নেয় বলে আজ ওপরে রেখেছে। এত দোটানা আর ভালো লাগে না আজ জিলাপি থাক, বাসার দিকে চললাম।
রাস্তায় এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে দেখা এই আমার একমাত্র বন্ধু যার চল্লিশায় বিরিয়ানিতে মাংস কম হলে আমি চিল্লাচিল্লি করেলেও সে কিছু মনে করবে না।
ওকে বললাম, চল একসাথে খাব।
ও বললো, 'কি রান্না হইছে?' একটা ক্ষুধার্ত হাসি দিয়ে বললাম 'খাশি।' দুজনে হাঁটা শুরু করলাম বাসার দিকে আর আমি আবার ভাবনায় পড়ে গেলাম, খুব বেশি হলে চার জন মানুষের জন্য আধা কেজি কাল্লা আনতে পারে। বন্ধুকে নিয়ে গেলে তো ভাগে কম পাব! যাক এ আর কি ও তো আমার ভালো বন্ধু।
বাসায় ঢুকেই মা'কে বললাম, 'ভাত দেন ফাহিমও আসছে।'
খেতে বসেছি মা ভাত নিয়ে আসলো তারপর ডাল, পাটশাক ভাজি, আলুভর্তা, শুটকিভর্তা,ডিম ভাজি। আমার মা'ও না একদম কিচ্ছু বুঝে না মাংস আছে ডিম ভাজার দরকার কি শুধু শুধু।
ফ্রেন্ড কে বললাম, শুরু কর কল্লাটা মনেহয় ভুনা হতে আরেকটু বাকি আছে।
প্রায় পাঁচ মিনিট হয়ে গেল মা ভুনা করা খাশির কল্লা আনছে না।রাগের স্বরে বললাম কই মা মাংস দেন খাওয়া তো শেষ হয়ে যাচ্ছে।
মা'ও রাগের স্বরে জোর গলায় বললো, 'আজ তোর ভাইকে কতবার বললাম, যে তরকারি কিচ্ছু নাই বাজার যা কিছু নিয়ে আয় শুনলো না তো শুনলোই না, যা ছিলো রানছি।
এই কথা শুনার পর আমি আর ফাহিম দু'জনে-দু'জনের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম,
আমি একটু নিচু গলায় বললাম, 'দোস্ত শুটকি ভর্তাটা কিন্তু জোস হইছে।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ২৫১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০২/১১/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

 
Quantcast