www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

স্মৃতির ধূষর আঙ্গিনা

শ্রাবণ শেষ হয়ে গেছে,কিন্তু রেশ এখনো রয়ে গেছে।রাত-দুপুরে অবশ্য এখনো দেখা মিলে।মাঝে মাঝে সকালটা শুরু হয় অঝর শ্রাবণ ধারায়,দুপুরে আবার গ্রীষ্ম ,বিকেলে শরতের সাদা মেঘ কোথেকে আসে যেনো,সন্ধ্যার মোয়াজ্জিন এর আজানের ধ্বনি আর আরক্তিম গোধূলি ধূষর স্মৃতি গুলিকে রাঙ্গিয়ে তুলে এক স্বকীয় মহিমায় ।

কৈশরে এই সন্ধ্যেটা আসত খুব দ্রুত,আসরের নামাজ শেষ হতে না হতেই সন্ধ্যে হানা দিতো।মন খারাপ হয়ে যেতো,মুয়াজ্জিন কে মাঝে মাঝে অকথ্য গালি দিয়ে নদীর ঘাটে ফিরতাম।সবাই বলাবলি করতাম খেয়ে দেয়ে কাজ নেই শুধু মাগরিবের আজান দ্রুত দেয়।একরাশ অভিমান নিয়ে মসজিদ পানে ছুটতাম।

শৈশবের বিকেলগুলো কেমন জানি দ্রুত চলে যেতো।ঐ সময় ভালো বল করতে পারতাম,মনে হয় না কোনো দিন পরিতৃপ্ত হতে পেরেছি।শুধু মনে হতো ইশ আরেকটা ইনিংস খেলতে পারলেই হতো।সন্ধ্যের পরে মাষ্টার মশাইয়ের কানমলা প্রতিদিনের রুটিনে যুক্ত হয়ে গেছিলো।

যে বার দাখিল অর্থাৎ মেট্রিক পাশ করলাম,আনন্দ কে দেখে ,যাহ গণিত স্যারের সামনে বুক ফুলিয়ে হাটবো ,অনেক পিটাইছে।কত পরিকল্পনা জল্পনা ছিলো।দু'মাস কাটালাম সরকারী অফিসের ডাব চুরি আর নদীর তীরে মাছ ধরে।দুপুরের খাবারের পরে কে আর ঘরে আটকে রাখে সোজা ক্ষেতের মাঝে বাইশ গজের মাটির সমতলে,এক পয়শা দিয়ে টস করতে বাক যুদ্ধ চলত।শাপলা না মানুষ,তিন তিন বার টস করেও মন ভরত না ,যদি ব্যাটিং না পেতাম ।

হঠাৎ একদিন বাসায় এসে শুনি ঢাকার কোন বড় মাদরাসায় আমাকে ভর্তি করাবে,তাই ভালো প্রস্ততি গ্রহনের জন্য ঢাকাতে কাকার বাসায় থাকতে হবে।পরদিন লঞ্চে করে আসছিলাম,সারারাত ঘুম হয়নি শুধু ছাঁদে শুয়ে কান্না করছিলাম।সেই যে ঢাকায় আসা,আর কখনো ফেরা হয়নি সেই ঘাসভরা মাটির পিচে এক পয়সার বাগযুদ্ধে।

গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মাঝে আকাশে সাদা মেঘ ওড়ে,কোন দুরন্ত বালক মায়ের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে অপেক্ষায় তার সতীর্থদের কারণ শৈশবের বিকেল যে দ্রুত শেষ হয়।আর আমি বেলকুনিতে বসে বিকেল দেখি স্মৃতির ধূষর আঙ্গিনায়।।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৭৬০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৮/০৮/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast