www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ওরাও মানুষ

হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বলে কোনও স্বীকৃতি নেই। প্রকৃতিগতভাবে মানুষ নারী ও পুরুষ এ দুই শ্রেণিতে বিভক্ত। তবে হরমনজনিত ত্রুটির কারণে কাউকে কাউকে উভয়লিঙ্গ অর্থাৎ না-পুরুষ বা না-নারীর মতো দেখায়। এরা কেউ নারী অথবা পুরুষ। কারুর চেহারা-সুরত, আচরণ ও কণ্ঠস্বরে পুরুষ বা নারীর লক্ষণ দেখা যায়। এটা শারীরিক ত্রুটি। চিকিৎসা করালে সেরে যেতে পারে। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের বদৌলতে এই ধরনের নারী পুরুষে অথবা পুরুষ নারীতে রূপান্তরিত হতে পারেন। তবে এ চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল।
উল্লেখ্য, হিজড়া বা তৃতীয়লিঙ্গের মানুষ বলে কোনও কমিউনিটি সৃষ্টি উদ্দেশ্যমূলক। এরা নিজেরা যেমন ভিক্ষা করেন, অন্যরাও এদের দিয়ে ভিক্ষা করান। এটা সামাজিক অপরাধ। এদের অনেকে দল পাকিয়ে চাঁদাবাজি করেন। বাসাবাড়িতেও এরা প্রায়শ চড়াও হন। শিশু অপহরণের মতো অপরাধেও এদের কেউ কেউ জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
কারুর ঘরে এমন শিশুসন্তান জন্মালে অবহেলা বা ঘৃণা করা অন্যায়। অন্য স্বাভাবিক শিশুর মতোই এদেরও প্রতিপালন করতে হবে। আদর-যত্ন নিতে হবে। এরা লেখাপড়া শিখে নিজেরা যেমন প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন, তেমনই সমাজেও অনেক বড় অবদান রাখতে পারেন। এমন দৃষ্টান্ত অনেক রয়েছে সমাজে। এরা কেউ বিজ্ঞানী, সমাজসেবক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, ভালো চিকিৎসকও হতে পারেন। যোগ্যতা অর্জন করে সরকারি চাকরি করতেও এদের অসুবিধে নেই। কেন তাঁরা অন্যের গলগ্রহ হয়ে থাকবেন? জন্মগত ত্রুটি বা শারীরিক সমস্যা ঘৃণা বা উপেক্ষার বিষয় হতে পারে না।
কথিত হিজড়ারা সংঘবদ্ধ হয়ে চাঁদাবাজি করতে পারলে সামাজসেবামূলক কর্মকা- চালাতে বাধা কোথায়? এরা পাড়া-মহল্লায়, যানবাহনে চাঁদাবাজিসহ অসংলগ্ন আচরণ বা নোংরামো করেন কেন? আসলে এদের শারীরিক গঠনগত কিছু সমস্যা থাকলেও এরা এ সমাজেরই মানুষ। এদের প্রতি আমাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রের যেমন দায়-দায়িত্ব আছে; তেমনই এদেরও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। সমাজ ও রাষ্ট্র এদের প্রতি প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালন করে না বলেই এরা বিপথে ধাবিত হতে বাধ্য হয়।
এরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে ঘর ছেড়ে না পালিয়ে পরিবারের সঙ্গে থেকে উপযুক্ত চিকিৎসাসহ পড়ালেখা শিখে আত্মপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা অবশ্যই করতে পারেন। পরিবার, মা-বাবা, সমাজ ও রাষ্ট্রকেও এদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে সবরকম সহায়তা দিতে হবে। আমাদের সবার স্নেহ-ভালোবাসা ও কর্তব্যপরায়ণতার ছোঁয়ায় ছন্নছাড়া ও উচ্ছন্নে যাওয়া হিজড়া বলে চিহ্নিত মানুষদের সবাই না হোক, অনেকে সমাজ ও দেশের এসেটে রূপান্তরিত হতে পারেন। শুধু আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আর মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। আসুন, আমরা হিজড়াদের সম্পর্কে হীনম্মন্য না হয়ে ঔদার্যপূর্ণ ও সহমর্মিতার হাত বাড়াই।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ১১৬৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৫/০৫/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast