www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

চলার পথে

চলার পথের কিছু কথা, কিছু অভিজ্ঞতা, যুক্তি-তর্ক-বিশ্লেষন, কিছু উপদেশ, কিছু বানী, কিছু শিক্ষা ইত্যাদি নিয়ে একটা লেখালেখির ইচ্ছা দীর্ঘ্যদিন থেকেই মনের মধ্যে উঁকিঝুকি দিচ্ছিল বটে ; গুছিয়ে সুন্দর ভাবে কতটা বলতে পারব এ নিয়ে সংশয় থেকেই এতদিন পিছোল । আজকে সাহস করে লিখতে বসেই গেলাম । সব সৃষ্টি অনিন্দ্য হবে এমন কোন কথা নেই, সৃষ্টি সততই সুখের ।

* বন্ধুত্বে একটা নির্দিষ্ট দুরত্ব থাকা প্রয়োজন ।
বন্ধু শব্দটা আমাদের কাছে একটা অন্য মাত্রার । আজকাল অবশ্য বন্ধুর অনেক শ্রেনী বিন্যাস হয়েছে । বাল্য বন্ধু, খেলার ব্ন্ধু , পড়শী বন্ধু, সহপাঠী বন্ধু, কাজের বন্ধু, আত্মীয় বন্ধু ইত্যাদি অনেক ভাবেই বলা যায় । সর্বশেষ সংযোজন বলা যায় "ভার্চুয়াল বন্ধু" । শ্রেনীকে যেভাবেই বিশ্লেষন করা হোক না কেন, বন্ধুত্ব মানে ঘনিষ্টতা এ কথা আমরা সবাই এক বাক্যে স্বীকার করি । সম্পর্কের বেড়াজালে বন্ধুত্বের ভূমিকা অনস্বীকার্য্য । আমাদের জীবন চলার পথে বন্ধু শব্দটিকে এড়িয়ে যাবার জো নেই । আমাদের পাড়ার একেবারে গম্ভীর প্রকৃতির যে ছেলেটা আছে, যাকে অনেকেই দেখতে পারে না, কম কথা বলে, তারও বন্ধু আছে । আমার খুব হিংসা হয় , যখন দেখি সেই ছেলেটিও তার বন্ধু মহলে হাসি-ঠাট্টা করে, আপদে বিপদে এগিয়ে যায়, আবার তার বিপদেও ওরা আসে । আমার সঙ্গে বা আমার পাড়ার কারোর সঙ্গে তার কোন বন্ধুত্ব কেন নেই, সেই প্রশ্নের উত্তর আজও পেলাম না । আবার আমার বন্ধু রঞ্জুর কথা যদি বলি । একেবারে বাল্যবন্ধু কিন্তু না । ক্লাস থ্রী'তে যখন পড়ি, সেই থেকে পড়াশোনা, খেলাধুলা, পাড়া-পড়শী সব যেন আমার এই বন্ধু । আমারতো এখনো ষ্পষ্ট মনে আছে , আমরা প্রায়শঃই ঝগড়া করতাম, ঝগড়া মানে কথা বলা বন্ধ , কিন্তু তাই বলে একসাথে পুকুরে চান করতে যাওয়া, স্কুলে যাওয়া, বিকেলে খেলতে যাওয়া ইত্যাদিতো আর বন্ধ থাকতে পারে না ! তাই ভায়া ব্যবস্থা চালু হত, সামনে যদি তৃতীয় কোন ব্যক্তি থাকত তাহলে তো আর কোন কথা নেই কিন্তু যদি কোন তৃতীয় ব্যক্তি না থাকত তাহলে সে সময়ে আমাদের দুজনের মধ্যে ভায়া হিসেবে নিদেন দিতেন কোন গাছ ; যেমন , "এই আম গাছ, তারে কইয়া দে, আমি ভাত খাইয়া চারটার সময় মাঠে যামু, আমডার দলেই যেন খেলে ", আবার কখনো সখনো সামনে কোন প্রানী থাকলে, "এই টমি (কুকুর), তর্ মালিকরে ক' আমার কাকা শহর থাইক্যা বাড়িত আইছে, আজগা রাইতে যেন আমডা বাড়িতে মাংস দিয়া খায়" । বন্ধুত্বের এই আন্তরিকতা হালে খুব বেশী দেখা না গেলেও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই বন্ধুত্ব এভাবেই দুটি প্রানকে একাত্ম করে, মনের মিল এমন একটা বস্তু, এটাকে কেউ জোড় করে স্থাপন করতে যেমন পারে না আবার কোন কোন সময় এমনিতেই পাশাপাশি চলতে চলতে হয়ে যায় । আমার ছেলে সেদিন তার দুর্ঘটনাগ্রস্থ বন্ধুকে হাসপাতালে দেখে এসে কথায় কথায় বলছিল, ফেইসবুকের কোন এক বন্ধু নাকি রোগীর পাশে চব্বিশ ঘন্টার সহযোগী রয়েছে ।
এভাবেই এই স্পর্শকাতর সম্পর্ক টা নিয়ে প্রতিদিন, প্রতি ঘন্টায়, প্রতি মিনিটে ঘটে চলছে কত রকম ঘটনা । আমরা আমাদের নিজস্ব জীবনের গন্ডির বাইড়ে কতটা খবর রাখি ! কিন্তু এসব নিয়ে যদি কখনো একান্তে ভাবতে বসি, অথবা এই লেখাটা পড়তে পড়তে অনেকেরই এই রকম ছোট খাটো স্মৃতি মনের কোনে ভেসে উঠবে । তবে ভাবার সময়টাই যে আজকাল আমাদের কাছে খুব একটা নেই, একটু সময় পেলেই মোবাইলে গেইম বা নিউজ আপডেট নিয়ে অনেক বেশী ব্যস্ত হয়ে পরি । তবুও ভাবতে হবে, কেননা এই ভাবনাটা আমাদের চলার পথে অনেক অনেক বেশী জরুরী । আর ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব ! বিশ্লেষনের জায়গাটা অনেক বড় । তবুও দুঃসাহস করে যখন একবার লেখা শুরু করেছি, লিখতে হবে , না হলে যে অসম্পুর্ণ থেকে যাবে ।
শুরুতেই যে বলেছি "বন্ধুত্বে একটা নির্দিষ্ট দুরত্ব থাকা প্রয়োজন ।" এই দুরত্ব কেন প্রয়োজন ! এ নিয়ে ভাবনার ফসল তুলে দিতে আরেকবার আসার ইচ্ছে রইল আপনাদের দরবারে ।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৪৭৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/০৫/২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast