www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

সত্য ইতিহাসের দ্বার উন্মোচিত হোক

মুক্তিযুদ্ধ বাঙালী জাতির জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। স্বাধীনতা বাঙালীর অর্জিত সর্বশ্রেষ্ট সম্পদ। কেননা বাঙালী জাতির বহু ত্যাগ তিতিক্ষা, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এই স্বাধীনতা। কিন্তু এই স্বাধীনতা কিভাবে অর্জিত হলো:, কার নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেই ইতিহাসকে বিকৃত করতে আজ সচেষ্ট একদল মানুষ যারা আমাদের দেশকে পরিচালানর গুরু দ্বায়ীত কাঁধে নিযে মেতেছিল ইতিহাস বিকৃতির মহা উৎসবে।

কিছু দিন আগে খুব অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করেছিলাম, প্রাইমারি পাঠ্যপুস্তকগুলোতে আমাদের স্বাধীনতার সত্য ইতিহাসকে কিভাবে মিথ্যার বেরাজালে বন্দী রাখা হয়েছে। সেআলোকে একবার ভেবে দেখুনতো আপনি আপনার সন্তানকে পড়াচ্ছেন ঠিক সেই সময় আপনার সন্তান আপনাকে প্রশ্ন করে বসলো বাবা বাবা স্বাধীনতার ঘোষক কে ? আপনি তখন কি বলবেন । আপনি কি অকপটেই শিকার করে ফেলবেন যে স্বাধীনতার ঘোষক শেখ মজিবুর রহমান। নাকি পাঠ্যপুস্তক অনুসারে বলবেন স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান। ছোট বেলা থেকেই যে শিশু ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে বড় হবে। মিথ্যা দিয়ে যার জীবন শুরু তার কাছে আমরা কি আসা করতে পারি । তবে কি বাঙালী জাতি হয়েও বাংলাদেশে থেকেও জানতে পারবে না ওই শিশুটি বাংলাদেশ স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস। এটা কি কখন হয় যারা ইতিহাস বিকৃতর মত জঘন্য রকম কাজে মরিয়া হয়ে উঠে পরেছিল তাদের মনেকি একটু ও অনুশোচনা পাপবোধ বলে মনে হয়নি। আমি বলি কি এই রকম মিথ্যাচার জঘন্য রকম কাজ বাদ দিন, বাদ দিয়ে সত্যে দ্বার খুলে দিয়ে আসুন এক ব্যাকে সত্য কথাটি উচ্চ স্বরে বলে উঠি হে আমার ভবিষ্যত প্রজন্ম তোমরা শোন তোমাদের এত দিন যা বলেছি এবং বুঝিয়েছি তা সব মিথ্যা স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান নই স্বাধীনতার ঘোষক শেখ মুজিবুর রহমান । দেশে যখন উদ্ভূত চরম রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মুজিব -ইয়াহিয়া বৈঠক সম্পর্কে জনগন একটা সমঝোতা আশা করেছিলো। কিন্তু ২৫শে মার্চ দুপুরের পরই স্পষ্ট হয়ে উঠলো মুজিব ইয়াহিয়ার বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। ওইদিন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ বললেন, আর আলোচনা নয়- এবার সুষ্পষ্ট ঘোষণা চাই। দ্রুত ঘটনার পট পরিবর্তন হলো শেখ মুজিব আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসলেন। এবং সাবাইকে নির্দেশ দিলেন নিরাপদ স্থানে চলে যেতে। ও্ই দিকে প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান সামরিকদের লেলিয়ে দিয়ে চলে গেলেন করাচী। সূর্য্য ডুবে গেল, ততক্ষনে জানা যায়নি খবরটা । যখন জানা গেল তখন রাত পৌনে আটটা বাজে। ততক্ষনাৎ ঢাকা সহ সারা দেশ শশ্বান পুরিতে পরিণত হল। এর দুই ঘন্টা পর ক্যান্টনমেন্ট থেকে জিপ, ট্রাক বোঝাই সৈন্য বেরিয়ে পড়লো । গোলন্দাজ, সাঁজোয়া, পদাতিক বাহিনী থেকে বাছাই করা তিন ঘাতক ব্যাটেলিয়ান। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ অন্যান্য দিনের মতোই দিনমজুর সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটনির ক্লান্ত দেহখানি এলিয়ে দিয়েছিলো বিছানায়, দোকানী তার দোকান বন্ধ করে ঘরে ফিরছে, গৃহবধু সারাদিনের কাজ সেরে বিছানায় শুয়েছে, শিশুরা গভীর ঘুমে নিমগ্ন, ছাত্ররা সবেমাত্র লেখাপড়া শেষ করেছে, চাষী তার নতুন ফসলের স্বপ্নে বিভোর-ঠিক সেই মূহূর্তে ইয়াহিযার লেলিয়ে দেওয়া নরপিশাচরা পাশবিক হত্যাযঞ্চ শুরু করলো বাঙালী জাতির ওপরে নেমে এলো সেই কালো রাত্রি নিষ্ঠুরতা। রাতের অন্ধকারে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আধুনিক মরণাস্ত্র নিয়ে পাকিস্থান সেনাবাহিনী শুরু করলো ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা। আগুনে আগুনে লাল হয়ে গেলো সারা আকাশ। চারদিক আলোকিত করে ছুটলো হানাদারের রং বেরঙের মরণাস্থ্র বোঝাই গাড়ি গুলো । হাজার হাজার নারী পুরুষ শিশুর মর্মভেদী আর্তচীৎকারে ভরে গেল আকাশ বাতাস ঘরে ঘরে উঠলো হাহাকার। এরই মাঝে কোথাও কোথাও গড়ে তোলা হলো প্রতিরোধ দূর্গ বাংলার দামাল ছেলেরা পেতে দিতে লাগলো বুলেটের তরে বুক। রক্তের ছটাই পূর্বদিগন্তে সূর্য্য লাল থেকে আর লাল বর্ণধারন করলো। বাঙ্গালী সৈন্যরাও পালটা আক্রমণ শুরু করে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তুললো। রাস্তায় রাস্তায় জমে উঠলো লাশের স্তুপ। নিরস্থ্র নিরপরাধ জনগণের লাল রক্তে প্লাবিত হলো বাংলার মাটি ২৫শে মার্চ কাল রাত্রি থেকে বাঙ্গালী সৈন্যদের প্রতিরোধ যুদ্ধের মাধ্যমে সসস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা হয়। এই দিনেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্থানী দোষররা গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্থানে নিয়ে যায়। শেখ মুজিবুর রহমান এমনটি হবে সেটা তিনি আগে থেকেই জানতেন। তাই গ্রেফতারের পূর্ব মূহুর্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনা করেন। স্বাধীনতার ঘোষনায় তিনি বলেন এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা আজ হতে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের মানুষ আজ যে যেখানে যে ভাবে আছেন, আপনাদের যার যা কিছু আছে, তা নিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমি আহবান জানাচ্ছি। পাকিস্থানী দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলাধেশের মাটি থেকে উৎখাত করে চুরান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পযর্ন্ত দেশবাসীকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। স্বাধীনতার এই ঘোষনাটি সারা বাংলাদেশে প্রচারের জন্য ২৫শে মার্চ রাতে গ্রেফতারের পূর্বেই ইপি আর ট্রান্সমিটারের সাহায্যে বঙ্গবন্ধু চট্টগ্রামে প্রেরণ করেন। তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রটি আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের দখলে ছিল। এখানে উপস্থিত ছিল একজন প্রভাবশালী নেতা ডাঃ আবু জাফর, চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক এম এ হান্নান সহ আরও অনেক নেতা কর্মী। তাদের তত্ত্বাবধায়নে চলছিল চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রটি। ২৬শে মার্চ দুপুর আড়াইটার সময় চট্টগ্রাম বেতারের কালুরঘাট ট্রান্সমিটিং সেন্টার থেকে সর্বপ্রথম এম এ হান্নান স্বাধীনতার ঘোষনা পত্রটি পাঠ করেন । (সেই ঘোষনাটি ছিল শেখ মুজিবর রহমানের ২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতার হবার পূবের ঘোষনাটির একটি অংশ মাত্র) সেদিন চট্টগ্রাম থেকে প্রচারিত একটি ঘোষণা সারা বাংলার বুকে যে আলোড়ন সৃষ্টি করছিলো আজো তা ভাবলে অবাক হতে হয়। উক্ত ঘোষনা ১৯৭১ সালে ২৬শে মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী পযর্ন্ত প্রায় সাড়ে ৯মাস কার্যকর থাকে বাংলাদেশের সংবিধানে। এই ঘোষনা পত্রের অধীনেই যুদ্ধ করেন মেজর জিয়াউর রহমান। এখানে কথা থেকে যায় আরও ২৭শে মার্চ তারিখে সাড়ে সাত কোটি মানুষকে মুক্তির আসাধ গ্রহনে উজ্জীবিত করতে চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ট্রান্সমিটিং সেন্টার থেকে পূনরাই স্বাথীনতার ঘোষনা দেন মেজর জিয়াউর রহমান। কেন্দ্রটিকে প্রথমে বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র এবং পরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নাম দেওয়া হয় । মেজর জিয়াউর রহমানের বেতার ভাষণ ছিলো এরকম ঃ-
Major Zia, Provisional Commander-in-chief of the Bangladesh Liberation Army, hereby proclaims, on behalf of sheikh Mujibur Rahman, the independence of Bangladesh. I also declare, We have already fomed a sovereign legal Government under Sheikh Mujobur Rahman Which pledges to function as per law and the constiution. The new democratic Government is committed to a policy of non-alignment in international relaipons. It will seek friendship with all nations and strive for international peace. I appeal to all Government to mobilise public opinion in their respective countries against the brutal genocide in Bangladesh. The Government under sheikh mujibur Rahman is Sovereign legal Government of Bangladesh and is entitled to recognition from all democratic nations of the world.”

যার বাংলা ছিল এই রকম (আমি মেজর জিয়া বাংলাদেশের মুক্তি ফৌজের অস্থায়ী প্রধান সেনাপতি আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষনা করছি। আমি আরও ঘোষনা করছি যে বঙ্গবন্ধুর অধিনে সার্বভৌম বৈধ্য সরকার গঠন করেছি )

কিন্তু তখনও যথাযথ সরকার গঠন করা হয়নি। সরকার গঠন হয় ১০ই এপ্রিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ও পাকিস্থানের বিদ্রোহী সৈনিকদের কমান্ডার বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার গঠনের এক অধ্যাদেশ জারি করেন। এই অধ্যাদেশে ২৬ শে মার্চ কে স্বাথীনতা দিবস হিসাবে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের কথা ঘোষনা করেন। সেই থেকে প্রতি বছর এ দিনটিকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্বরন করি। পরিশেষে বিভ্রান্তিকর ইতিহাস বিদদের তরে প্রশ্ন রেখেই এ লেখার ইতি টানবো। মুক্তি যুদ্ধের ঘোষক যদি জিয়া হন তাহলে ২৬শে মার্চ কেন বিজয় দিবস হলো।

যে জাতি অতিতের ইতিহাস জানেনা।
সে জাতি তার অস্তিত রক্ষা করতে পারেনা।

সাধ
আমার ওতো সাধ ছিলো ভাই যুদ্ধ আমি করবো
বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দেশটা স্বাধীন করবো।
জন্ম কেন দেয়নী বিধী সেই সময়ের কালে !
যখন দেশটা বন্দি ছিলো পাক সেনাদের জালে ।
শাসন নামে করতো শোষন আমাদের এই বাংলা
ভাই বোনেদের সইলো না আর এমন নিঠুর জ্বালা
বুকের তাজা রক্ত দিলো প্রানটা দিলো ঠেলে
লাল সবুজের পতকাটা ঔ গগণে দিলো তুলে।

দিন বদলের পালায় ভেসে নতুন দিন এসেছে । পূনরাই জেগেছে বাংলাদেশ ,বাংলাদেশের বিবেক বর্জিত মানুষের বিবেক আজ টান দিয়েছে সময় এসেছে আজ সত্য কথা বলতে সদ্য ইতিহাসের দ্বার উন্মোচিত করতে
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৭২৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৫/০৩/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

 
Quantcast