www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

হিলা বিয়ে

(বড় হুজুর অর্থ্যাৎ মাওলানা মোঃ আব্দুল কুতুব সাহেব বিল ডাকাতিয়া জামে মসজিদের ইমাম। এলাকার লোক তাকে বড় হুজুর বলে চেনে জানে। গ্রামের মেঠো পথ ধরে তিনি যাচ্ছিলেন এমন সময়।)

আকরাম ঃ সালাই মালাই কুম-হুজুর সাহেব
বড় হুজুর ঃ ওয়ালাইকুম আস সালাম । ক্যামন আছো আকরাম ।
আকরাম ঃ জি হুজুর-আপনাগে দোয়াই ভালই আছি ।
বড় হুজুর ঃ আলহাম দুলিল্লা-শুকরিয়া এর আকরাম-শুকরিয়া এর-আল্লার কাছে শুকরিয়া আদায়
এর-তো এই অবেলা বেল কোয়ানে যাচ্ছ।
আকরাম ঃ সে কতা আর কয়েন না হুজুর-ক্যাইলকেরে ম্যাইয়ে ডার পরিক্ষে-তই দাগ কাটি কলম
আনতি হাটে যাচ্ছি।
বড় হুজুর ঃ কি কইলে ? তুমার ম্যাইয়ে স্কুলে যায় ।
আকরাম ঃ হ্য হুজুর ।
বড় হুজুর ঃ তোউবা- তোউবা- তোউবা- ম্যাইয়ে মানষির অতো লেহা পড়া শিহে কি এইরবে-তার
চায়ি তুমার ম্যাইয়ে ডারে-ঘরে বসাইয়া কাইদা আমপাড়া পড়া শিহাউগে-এতি এইরি তুমারও ভাল-তুমার ম্যাইয়ের ও ভাল।
আকরাম ঃ কায়দা আমপাড়া-ওডা তো ওর মার কাছেই শিহে নেছে।
বড় হুজুর ঃ তাই নাহি তো বেশ ভাল কতা-তা তুমার ম্যায়েডা এহন কোন ক্ল্যাসে পড়ে।
আকরাম ঃ ৮ ক্ল্যাস পাস দিয়ে-এবার ৯ ক্ল্যাসে ।
বড় হুজুর ঃ তাহলি তো তুমার ম্যয়েডা বেশ শ্যাকনা অয়ছে-কই শোন মিয়া-তুমি তো ঠিক মত
নামাজ কালাম পড়বানা-ম্যায়েডা স্কুলে প্যাঠায়ে আর পাপের কাম এইরো না-ভাল দেহে
একটা বিয়ে সাদি দিয়ে দেওগে-ঘর সংসার করুকগে-আর স্বামীর সেবা যত্ন করুকগে-
ম্যাইয়ে মানষির-স্বামীর পায়ের নিচে বেহেস্ত ।
আকরাম ঃ তই হুজুর এককান কতা।
বড় হুজুর ঃ কি কইবা কয়ে ফ্যালও ।
আকরাম ঃ টিবি রেডিওতে তো রোজ রোজ কচ্ছে-ম্যাইয়ে মানষির একটু বেশি বেশি লিহা পড়া
এরা দরকার-কয় যে জাতি যত শিক্ষিত-সে জাতি ততো উন্নত-তুমি এককান শিক্ষিত মা
দাও-আমি তুমাকে এককান শিক্ষিত জাতি উপহার দেব। আর ও কত কি !
বড় হুজুর ঃ শোন আকরাম-শোন-তুমি মল্লি তো তুমার কবরে তুমিই যাবা-নাহি অন্য কেউ যাবে?
আকরাম ঃ না না-তা যাবি ক্যান ।
বড় হুজুর ঃ তা হলি আর কতা ক্যান-আমি যা কই তুমি তাই এরওগে ।

( এই বলে বড় হুজুর আবার সামনের দিকে হাঁটতে লাগলো । কিছু দুর যেতেই আবেদের সাথে দেখা )

বড় হুজুর ঃ আবেদ নাহি-এই দিহে কোয়ানে যাচ্ছো ?
আবেদ ঃ (হাতের বোতল মুখের সামনে ধরে) এই তো ত্যাল আনতে যাচ্চি ।
বড় হুজুর ঃ তো আবেদ-তুমার সাথে আমার কিছু কতা ছেল ।
আবেদ ঃ কয়ে ফ্যালান ।
বড় হুজুর ঃ তুমার বৌডারে দেহি-বিয়ানে এই দিকে রোজ রোজ কোয়ানে যায়।
আবেদ ঃ হ্য হুজুর-অভাবের সংসার-জুত পালা সব বড় অয়ছে-তিন তিন খেন ছুয়াল ম্যাইয়ে-
আর আমরা দুই জন-মোট পাঁচ জন খানি আওয়ালা- আমি আর একা পাইরে
উঠতিছিনে-তাই বৌডা মাছ কোম্পানীতে কাজ নিচ্ছে।
বড় হুজুর ঃ তোউবা-তোউবা-বৌডারে শ্যাষ ম্যাষ কামে লাগায়ে দিলে-হক মাওলা হক-পাপে
পাপে দুনিয়াটা ভইরে গেল।
আবেদ ঃ কি কতি চাচ্ছেন-ভাল এইরি একটু বুঝাইয়ি কন দেহি-আমি আবার অতো ট্যাট ব্যাট
বুঝিনে ।
বড় হুজুর ঃ মুখ দেছে যিনি-আহার ও দেবেন তিনি-এত না সবুর হও ক্যান।
আবেদ ঃ কি এরবো ?
বড় হুজুর ঃ ম্যাইনে, মাইয়ে মানুষ-ঘর সংসারের কাম এরবে-রান্নাবাড়া এরবে-ছুয়াল ম্যাইয়ে মানুষ
এরবে- আর স্বামীর খেদমত এরবে-তোরে আল্লা বানাইছে সেই জন্ন্যি-তোর আবার
চাকরী বাকরি এরার দরকারডা কি? শোন ভাইডি-মাছ কোম্পানী জগৎটা ভালোনা-তুমার
বৌডা দেখতি শুনতি মাশাল্লা খুব সুন্দর-তাই কই একটা কিছু ঘটার আগে বৌডারে
সামলাউ-তা না হলি শ্যাষ মেষ দেহু তুমার মুহি ---।
(কথাটা বলেই বড় হুজুর সামনের দিকে অগ্রসর হলেন। দুপা গিয়ে আবার পিছনে ফিরে। )
বড় হুজুর ঃ শোন আবেদ-ম্যাইয়ে মানষির পা একাবার ঘরের বাইরি গেলি-তা দশ পা হইয়ে যায়-
তাই কই-তারতারি বৌডারে ঘরে ফেরাও-তা না হলি সমাজে তুমার মুখ পোড়বে-এই
কালে শান্তি পাইবানা পরকালে ও শান্তি পাইবানা-পাপে পাপে পুইড়ে মরবা।
(এই বলে হুজুর চলে গেল। আবেদ হাঁটতে হাঁটতে )
আবেদ ঃ হ্য হুজুরে তো ঠিকি কলো। (স্বগত)

দৃশ্য ঃ ২/দুই
ডিউটি শেষে মাছ কোম্পানীর সকল মহিলা শ্রমিক একত্রে একত্রিত হয়ে, ঠিক মিটিং এর পূর্ব অবস্থা ।

রিনা ঃ চুপ এরো- শোন তুমরা- যে জন্ন্যি তুমাগে ডাহিছি-তা হল-আমাগে আদরী বু তুমাগে
কিছু কতা কবে।
মিলি ঃ এই তোরা চুপ এর-চুপ এর দেহি-আদরী বু কি কয় ?
আদরী ঃ তা হলি শোন-তুমাগে আমি যার জন্ন্যি ডাহিছি-তা হলো আমরা এই কেম্পানীর
মহিলা শ্রমিক-এই কোম্পানীতে যত শ্রমিক আছে-তার মধ্যি আমরা প্রায় অদ্দেক-১জন
পুরুষ শ্রমিক মাসে যা বেতন পায়-আমরা মহিলা শ্রমিক পাই তার অর্ধেক-আমরা যে কাম
এরি-ওরাও সে কাম এরে- আমাগে শ্রম ঘামে চলে এই মাছ কোম্পানী এক জাইগায় দৈত্ব নীতি ।
রাশু ঃ হ্য হ্য আদরী বু-তুমি ঠিহি কইছো।
রুপা ঃ তালি আমাগে কি এরতি হবে ।
আদরী ঃ আন্দোলন এরতি হবে।
লিপি ঃ ম্যাইয়ে মানষির আবার আন্দোলন।
জরিনা ঃ হ্য হ্য-ম্যাইয়ে মানষির আবার কিসির আন্দোলন-কিসির সংগ্রাম ।
আদরী ঃ দ্যাখ জরিনা বু-আমরা ম্যাইয়ে মানুষ-ম্যাইয়ে মানুষ বলে কি আমরা মানুষ না-
তুমাগে জন্ন্যি-আজ সমাজের এই অবস্থা-নারীরা আজ সব সময় বঞ্চনার শিকার-
নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার-শোষন পেশনের শিকার-তাই বলিকি বু এভাবে আমাগে
আর মুখ বুইজে থাকলি চইলবেনা-আমাগে শক্ত পায়ে দাঁড়াতি হবে-আন্দোলন সংগ্রাম
এরতি হবে-তা না হলে পুুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থায়-আমাগে এভাবে শোষন
পেশনের শিকার হতি হবে।
(সবাই এক বাক্যে হ্য হ্য ঠিকি কয়ছো জরিনা বু আমাগে এর জন্ন্যি আন্দোলন এরতি হবে সংগ্রাম এরতি হবে।)

রিনা ঃ তালি শোন- প্রথমে আমাগে দাবি দাওয়ার কতা-আমাগে জি. এম সাহেবের কাছে কতি
হবে-দেহি ওনি কি এরে-তা না হলে আমরা সাবাই মিলে-মালিক পক্ষের কাছে যাবো-
প্রয়োজনে আন্দোলনে যাবো কি বল তুমরা ?
(সবাই হ্য হ্য ঠিহি আছে)
রিনা ঃ তা হলি-ঐ কতাই থাইকলো-তুমরা এহন যার যার বাড়ী যাও ।

দৃশ্য ঃ ৩/তিন
(গ্রাম্য মোড়ল কাদের মুন্সি আরডালি/সাগরেদ নিয়ে বসে বিভিন্ন আলাপ চারিতাই মগ্ন)

হাবু ঃ দেহেন মোড়ল সাব দেহেন-ডাবু কোথায় কোন আকাম এইরে-হাঁপাতি হাঁপাতি
আসতিছে।
(হাবু তোতলা, কথা বলে)
ডাবু ঃ দেখ হাবু-তুই খবরদার আবল তাবল কতা কবিনা-আমি কি তোর মত ?
হাবু ঃ আমার মত ম্যাইনে- তুই কি কতি চাচ্ছিস ।
ডাবু ঃ ক্যান-তুই রুপালীর সাথে ইটুস ফিটুস করিসনে ।
হাবু ঃ ক্যান-তুইতো সেদিন মিয়া বাড়ির পুহুর পাড়ে ঝোপের ভিতর বইসে ছিলি-ওগে বাড়ির
বিটি মানষির শরিল দেহ্যার জন্নি-মনে নাই।
কাদের মুন্সি ঃ এই তুরা চুপ এরবি- এবার ক দেহি ডাবু-তুই কোয়ানে গিইলি-আর কোয়ানে কোন
আকাম এইরে আলি ।
ডাবু ঃ আমি না মোড়ল সাব আমি না-ঐ উত্তর পাড়ার আবেদ আছেনা আবেদ।
কাদের মুন্সি ঃ উত্তর পাড়ার আবেদ ম্যাইনে-কোন আবেদ ?
হাবু ঃ আরে চেনলেন না ঐ ল্যাইঠেল আবেদ-এহন নোকের বাড়ী কামলা খাইটে খায়।
কাদের মুন্সি ঃ ও হো ঐ ল্যাইঠেল আবেদ-সে তো এক সময়--।
ডাবু ঃ হ্য মোড়ল সাব-হ্য ।
কাদের মুন্সি ঃ এবার ক দেহি-ওর কি অয়ছে।
ডাবু ঃ আর কইেন না মোড়ল সাব-ঘটনাই রটনাই সব এক হয়ে গেছে।
কাদের মুন্স ঃ তার ম্যাইনে ।
ডাবু ঃ ঐ আবেদ-ওর বউডারে তালাক দেছে ।
কাদের মুন্সি ঃ (হো হো হো করে হেঁসে) তা তো বেশ ভাল কতা-কি কস হাবু?
হাবু ঃ হ্য এ তো বেশ ভাল কতা।
ডাবু ঃ ভাল না মোড়ল সাব-ভাল না ।
কাদের মুন্সি ঃ ক্যান কি অয়ছে ?
ডাবু ঃ ঐ তালাক দেওয়া বউডা নিয়ে-ও এহুন দিব্বি ঘর সংসার এরতিছে ।
কাদের মুন্সি ঃ ( এ কথা শুনেই মোড়ল সাহেব চেয়ার থেকে ঝাঁপ দিয়ে উঠে) কি কলি-ছিঃ ছিঃ ছিঃ
তালাক দেওয়া বউডা নিয়ে ও এহনো ঘর এরতিছে ।
(বড় হুজুরের আগমন )
বড় হুজুর ঃ আস সালামু ওয়ালাইকুম ।
কাদের মুন্সি ঃ ওয়ালাইকুম আস সালাম ।
বড় হুজুর ঃ কি ব্যাপার মোড়ল সাব-এত উত্তেজিত ক্যান-কি অয়ছে।
কাদের মুন্সি ঃ আরে সে কতা আর কয়েন না-উত্তর পাড়ার আবেদ নাহি ওর বউডারে তালাক দেছে-
আবার সেই বউডা নিয়ে এহনো নাহি ঘর ও এরতিছে ।
বড় হুজুর ঃ আসতাগ ফেরুল্লা-আসতাগ ফেরুল্লা-তালাক দেওয়া বউডা নিয়ে আবেদ-ঘর এরতিছে-
এ তো স্বয়ং শরীঅত বিরোধী না যাযেজ কাম- তা আবার আমাগে এই বিল ডাহাতিয়াই।
কাদের মুন্সি ঃ না হুজুর না-আমি কাদের মুন্সি বাইচে থাকতি-এরহম কোন পাপের কাম আমাগের বিল
ডাহাতিয়াই হতি দেব নানে।

দৃশ্য ঃ ৪/চার
(গ্রামের মোড়ে পাকুর গাছের নিচে আবেদ আলীর বউ তালাক দেওয়া নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে শালিস বসেছে)

কুদ্দুস ঃ এই তুমরা চুপ এরো-আবেদ আমরা যা শুনছি তা কি সত্যি ?
আবেদ ঃ না ম্যাইনে ।
কুদ্দুস ঃ না ম্যাইনে-না ম্যাইনে-এইরো না-সোজা সুজি কয়ে ফেলাউ।
আবেদ ঃ সে দিন রাগটা একটু চরমে উইঠে গিইলো-তাই রাহের মাথায় কি এরতি কি এইরি
ফ্যালায়ছি ।
কুদ্দুস ঃ রাহের মাথায় হোক-আর ঠান্ডা মাথায় হোক-তুমি যে তুমার বউকে তালাক দেছো একতা
তো সত্যি ?
আবেদ ঃ হ্য ।
কুদ্দুস ঃ দেহেন মোড়ল সাব-দেহেন-আবেদ তো নিজি মুহে সব শিকার কল্লো- এবার নেন যা
এরার তাই এরেন।
কাদের মুন্সি ঃ (উপস্তিত সকলের উদ্দেশ্যে) তুমরা তো সব শুনলে-মাষ্টের সাব ।
মাষ্টার ঃ বলেন মোড়ল সাব ।
কাদের মুন্সি ঃ সবি তো শুনলেন-আবেদ নিজি মুহে শিকার কল্লো সে বউডারে তালাক দিছে ।
মাষ্টার ঃ জ্যে মোড়ল সাব-সবি তো শুনলাম এহন দেহেন কি এরবেন।
কাদের মুন্সি ঃ বড় হুজুর এ বিষয়ে আপনি কিছু বলেন ।
বড় হুজুর ঃ তালাক অর্থ পরিত্যাগ এরা কিংবা বন্ধন ছিন্ন এরা।
যদি কেউ তিন তালাকের মাধ্যমে বন্ধন ছিন্ন এরে অথবা রাহের বশবর্তী হয়ে কিংবা স্ত্রীকে
শাসন এরার লাইগে কোন স্বামী যদি তার স্ত্রীকে একসঙ্গে তিন তালাকই দিয়ে দেয়
তাহলে সাথে সাথে স্ত্রীর সাথে তার সর্ম্পক ছিন্ন হয়ে যাবে। তিন তালাক দেওয়ার পরও
যদি তারা স্বামী স্ত্রী হিসাবে বসবাস এরতি থাহে তা সুস্পনরূপে জ্বেনার অবস্থা,
নিঃসন্দেহে হারাম।
অতিথী-১ ঃ হ্য হুজুর আমি নিজি কানে শুইনেছি ও ওর বউডারে তিন তালাক দেছে।
বড় হুজুর ঃ ফায়েন তাল্লাকাহা ফালা তাহেল্লু লাহু মেমবায়াদু
(অর্থ স্বামী যদি স্ত্রীকে তৃতীয় তালাকও
দিয়ে দেয়, তাহলে অতঃপর সেই স্তীর তার জন্য হারাম হয়ে গেল)
এ ক্ষেত্রে যদি কেউ তার স্ত্রীকে নিয়ে আবার পূনরায় জীবন যাপন এরতি চাই তবে
শরীয়তে একটাই মাত্র বিধান আছে তা হলো হিলা বিয়ে-হিলা অর্থ হালাল ।
হাত্তা তান কিহা ঝাওজান গাইরুহু ফাইন আল্লাকাহা ফালাজুতাহা আলইহিমা
আইয়াতারা জাআইন জান্না আইয়ু ফিমা হুদু দাল্লাহি
(অর্থাৎ সেই স্ত্রীলোকটি অপর একজন কে বিয়ে এরবে।
এরার পর সে দ্বিতীয় স্বামী যদি তাকে তালাক দেয় তারপরে যদি তারা পুনর্মিলিত হতে
চায় এবং আল্লাহর বিধান কায়েম রাখতে পারবে বলে মনে এরে, তাহলে তাদের দু-
জনের পুনরায় বিবাহিত হতে কোন দোষ নাই)
তো শোন আবেদ-তুমি যে কাম এরিছো-তা সম্পূর্ন শরিঅত বিরধী ইসলাম পরিপস্থি
কাম- এর জন্ন্যি ধর্মীয় বিধান মোতে তুমার শাস্তি হওয়া উচিৎ ১০১ দোররা-কারণ
তালাক দেওয়া বউ নিয়ে দিব্বি ঘর সংসার এরতিছো-কিনু্ত আমরা তা এরবোনা-
তুমি তো এক সময় মোড়ল সাবের খাস লাইডেল ছিলে-এহন না হয় লাডি মাডি
খেলনা বাদ দিছো-মাইনষের বাড়ী কামলা খাইটে খাও-ঘরে তিন তিন খেন জুত পালা-
তাদের মুহের দিহে চায়ে-তুমাকে ক্ষমা এইরে দিলাম-কিন্তু এহন তুমাকে এই শালিসে
উপস্থিত সগ্গলের কাছে জোড় হাত এইরে ক্ষমা চাতি হবে।
(আবেদ কাঁদো কাঁদো কন্ঠে উপস্থিত সকলের কাছে হাত জোড় করে )

আবেদ ঃ উপস্তিত ভাই বোনেরা-আমাকে ক্ষমা এইরি দেন-আমি যে ভুল এইরিছি-তা আর জীবনে
এরবো না।
(উপস্থিত সবাই হ্য হ্য মাপ এইরে দিলাম আমাগে মোড়ল সাব যেহানে নিজি মাপ এইরে দেছে তাহলি আমাগের আর আপত্তি কিসে।)

কাদের মুন্সি ঃ শোন আবেদ- হুজুর সাব তো সবি কলো এহন তুমি কি এরতি চাচ্ছো ।
আবেদ ঃ মোড়ল সাব-আমি তো ভুল এরেই ফ্যালাছি-এহুন দেহেন-যিডা ভাল হয় সিডা এরেন।
আমি ওরে ছাড়া বাঁচবো না মোড়ল সাব- বাঁচবো না-ছুয়াল ম্যাইয়ে নিয়ে গাংগে ভাইসে যাবো।
কাদের মুন্সি ঃ তালি শোন যদি তুমার আদরীকে নিয়ে ঘর সংসার এরত্তি চাও-তাহলি আদরীকে
এহন অন্য কারো সাথে বি দিতি হবে- তার পর সে বাদ দিলি-তুমি তারে বিয়ে এইরে
ঘরে নিতি পারবা। কি কন হুজুর সাব ।
বড় হুজুর ঃ জ্যে মোড়ল সাব-জ্যে- আদরী কে এহন অন্য কারো সাথে হিলা বিয়ে দিতি হবে-তারপর
সে তালাক দিলে-তুমি আদরীকে বিয়ে এইরে ঘরে নিতি পারবা ।
মাষ্টার ঃ চিন্তা এইরো না আবেদ-ভাবতিছো যার সাথে আদরী বিয়ে এরবে সে যদি তালাক না
দেই-আরে আমাগে মোড়ল সাব আছেনা ব্যবস্থা একটা হবে।
কুদ্দুস ঃ হ্য হ্য মোড়ল সাব আছে না।
কাদের মুন্সি ঃ সবি তো শুনলে আবেদ-এহন দেহ তুমি কি এরবা ।
আবেদ ঃ দেহেন-যিডা ভাল হয় সিডা এরেন।
কাদের মুন্সি ঃ এহানে কেউ কি আছে-আদরীকে বিয়ে এরবে-কিন্তু এককান কতা-বিয়ে এরলি শুধু
হবে না-আবেদের আদরীকে আবেদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে।
(উপস্থিত সবাই মাথা নিচু করে বসে রইলো কেউ কোন কথা কইলো না)
কাদের মুন্সি ঃ কি মিয়ারা-তুমাগের ভিতর কেউ নেই-যে আদরীকে বিয়ে এরবে।
(ডাবু মোড়ল সাহেবের কানের কাছে গিয়ে )

ডাবু ঃ কেউ তো কোন কতা কইনা মোড়ল সাব-কি আর এরবেন-আপনি বিয়ে এইরে ফেলান-
মালডা কিন্তু এক্কাবাড়ে খাসা ।
কাদের মুন্সি ঃ (গালে একটি চর দিয়ে ) চুপ এর বেয়াদব-ম্যাইনষে শুনে ফেলবে না-শোন তুমরা কেউ
যহন কতা কতিছো না-তহন কি আর এরবো-কেউ যদি বিয়ে না এরে তাহলি আমকে
এরতি হবেনে-কি কস ডাবু।
বড়ু হুজুর ঃ আলহাম দুল্লিলাহ-কলাম না-আমাগের মোড়ল সাবের মত এরম মহান মানুষ আর
আমাগে বিল ডাহাতিয়াই এক্কান নাই-কি বলো তুমরা ।
কাদের মুন্সি ঃ আবেদ-এব্যাপারে তুমার কিছু বলার আছে
আবেদ ঃ না ।
কাদের মুন্সি ঃ বড় হুজুর-তাহলি একটা ব্যাবস্থা এইরে ফেলান ।
আদরী ঃ না এ বিচার আমি মানি না
( এ কথা বলেই আদরী শালিস ছেড়ে চলে গেল সবাই হুল্লা দিয়ে উঠলো। )

কাদের মুন্সি ঃ সবাই বস চুপ এরো আবেদ-তুমি তুমার বউডারে বোঝাউ-ম্যাইয়ে মানুষ তো-ঐরম
একটু আডু এরেই-তুমি বাড়ি যাও-আজকের মত শালিস স্থগিত এরলাম-পরে পূনরাই এ
শালিস বসবে।

দৃশ্য ঃ ৫/পাঁচ
(আদরী শালিস ছেড়ে ঘরে বসে বসে কাঁদছে)

আবেদ ঃ এভাবে কেঁনদে আর কি হবে-ভুলতো একটা হয়েই গেছে-তার তো একটা সমাধা এইরতি
হবে।
আদরী ঃ তাই বলে এভাবে ।
আবেদ ঃ এ ছাড়া আর উপায় কি ?
আদরী ঃ না না-এভাবে হতে পারেনা-একটা মন-একটা জীবন-একটা দেহ-তা শুধু তুমার-এর
প্রতি কারো কোন অধীকার নেই-আর কাউকে কোন অধীকার দিতেও পারবো না ।
আবেদ ঃ সেত আমি জানি-আদরী জানি-কেন্তুক মানুষ সমাজ বদ্ধ জীব-সমাজ ছাড়া সে বসবাস
এরতি পারে না-আর সমাজে বসবাস এরতি হলি-সমাজের রীতি নীতি আইন কানুন
ম্যাইনে চলতে হয়। ম্যাইনে চলতে হয় ধর্মীয় বিধান।
আদরী ঃ মানিনে -মানিনে এই সমাজের আইন- মানিনে এই ধর্মীয় বিধান-মানুষের প্রয়োজনেই
সৃষ্টি অয়ছে সমাজ-আর সমাজের আইন-মানুষের প্রয়োজনেই সৃষ্টি অয়ছে ধর্ম-ধর্মীয়
বিধান-যে বিধান- যে আইন-মানুষের কোন কল্যাণই বয়ে আনতি পারেনা-সে রকম
আইন-সে রকম বিধান-আমি মানিনে।
দৃশ্য ঃ ৬/ছয়
(কাদের মুন্সি শহর থেকে নুতন ফার্নিচার সহ বেশ কিছু বাজার সদায় করে বাড়ি ফিরলেন।)

কাদের মুন্সি ঃ হেবা-ডেবা-কুদ্দুস-কইরে তুরা-কই গেলি ।
( হাবু ডাবু, কুদ্দুস তিন জন তিন দিক দিয়ে ছুটে এল)

কুদ্দুস ঃ জ্যে মোড়ল সাব বলেন ।
ডাবু ঃ কি হইছে মোড়ল সাব ?
(কাদের মুন্সি ডাবুর গালে একটা চর বসিয়ে)

কাদের মুন্সি ঃ ক্যান কি অয়ছে-দেহা যাচ্ছে না-এই মাল ছামানা গুলো ভিতরে নিয়ে যা-আর শোন-
মদ্দির ঘরটা একটু ভাল এইরে গুছিয়ে রাহিস ।
কুদ্দুস ঃ জ্যে মোড়ল সাব।
কাদের মুন্সি ঃ হেবা-তুই এহনও দাঁড়িয়ে রইলি যে।
(কাদের মুন্সির হাতে থাকা ব্যাগটা তার হাতে ধরিয়ে দিল)

কাদের মুন্সি ঃ এই নে যা-ডেবা তুই কোয়ানে যাচ্ছিস-এই দিহে আই ।
(কাদের মুন্সি শাট সুট হয়ে দাঁড়িয়ে)

কাদের মুন্সি ঃ এবার দেখ দি- আমাকে ক্যামবা লাগতিছে ।
ডাবু ঃ মা সাল্লা খুব সুন্দরমোড়ল সাব-খুব সুন্দর-আদরীর সাথে আপনাকে যা মানাবেনে ।
(কাদের মুন্সি ডাবুর গালে একটা চর বসিয়ে দিল)

কাদের মুন্সি ঃ এই-আদরীর সাথে আমাকে মানাবেনে- কি না মানাবেনে- তাহি তোর কাছে জিঞ্চাসা
এরলাম-এইদিহে আয়- আমার গা ডা একটু শুইকে দেখ দি-কিছু বুঝতি পারিস কিনা ।
ডাবু ঃ উহু-সব গন্ধ গন্ধ হয়ে গেছে।
কাদের মুন্সি ঃ এই বিআদব-গন্ধ গন্ধ ম্যাইনে?
ডাবু ঃ না ম্যাইনে-সব বাসনা বাসনা হয়ে গেছে।
কাদের মুন্সি ঃ আমার গা ডা আবার ঘামলি-মাছের আইসটে আইসটে গন্ধ এরে- প্রথম রাতেই যদি আদরী------।

দৃশ্য ঃ ৭/সাত
(করিম, শাহিন দুজন ডাকাতিয়া গ্রামের যুবক। গ্রামের পথ দিয়ে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে)

করিম ঃ ক দেহি শাহিন-এ কোন দেশি বিচার হলো ।
শাহিন ঃ তুই কোন বিচারের কতা কচ্ছিস ?
করিম ঃ আরে আবেদ কাহার- আবেদ কাহা না হয় ভুল এইরি-রাহের মাথায় কাহিরে তালাক এর
কতা কইছে-তাই বলে কি কাহি তালাক হয়ে গেছে।
শাহিন ঃ রাহের মাথায় যদি-কেউহ কারো বউরে তালাক দেয়-সে তালাক তো হয় না।
করিম ঃ আরে আমি ও তো তাই জানি- কেন্তুক শালিসে মুন্সি কাহা-বড় হুজুর কলো-যদি কেউ
কোন ভাবে কারো বউকে তালাক দেয়-তাহলে সেই বউ নিয়ে ঘর এরতি হলি। বউডারে
অন্য কারো সাথে হিলা বিয়ে দিতি হবে। এর পর যদি সে তালাক দেই- তবে সে আবার
পূনরাই বিয়ে এইরে-ঘর সংসার এরতি পাইরবে।
শাহিন ঃ হ্য-সেই জন্ন্যি তো মুন্সি কাহা-আদরী কাহিরে বিয়ে এরার লাইগে-গোঁপে ত্যাল দিয়ে
বইসে ছেল।
করিম ঃ কেন্তক তাতো আর হলো না-আবেদ কাহা -আদরী কাহি-এ বিচার মাইনে নিলো না।
কাহার যদিও ইচ্ছা ছেলো-কেন্তক কাহি বিষ খাইয়ে মইরে যাবে-কিন্তু অন্য কারো সাথে
আর বিয়ে এইরবে না।
শাহিন ঃ আরে সেই জন্ন্যি তো কাইলকেরে শালিসে-ওগারে এই গ্রাম থেকে এক ঘরে কল্লো ।
করিম ঃ হ্য মুন্সি কাহা- বড় হুজুর মাষ্টের মশাই-ব্যাপারি কাহা মিলেই তো এই কাম এরলো-
আবেদ কাহা এহন কারো বাড়ি যাতি পাইরবেনা-আসতি পাইরবেনা-ওগে
বাড়ির কেউ মললি জানাযা পযর্ন্ত কেউ এরতি যাবেনা-এই গ্রামের হাট বাজার দোকান
পাটে ওগে যাওয়া নিষেধ-মসজিদে যাইয়ে যে নামাজ ফড়বি তাও যাওয়া যাবে না।
শাহিন ঃ এ কোন কতা হলো।
করিম ঃ ওগে জন্ন্যি তো আমাগে গ্রামের এই অবস্থা-সেই জন্ন্যি বলি-সরকারের এই দিকে একটু
নজর দেওয়া দরকার- গ্রাম বিচার ব্যবস্থা-গ্রাম্ম শালিসে সরকারের একটা নীতি মালা
থাহা দরকার- যাতে এইরি ঐরহম ফক্কর ফতুয়াবাজ বড় হুজুর-শইতান মোড়লের হাত
থেহি গ্রামের সাধারন মানুষ রেহায় পায় ।
শাহিন ঃ হ্য তুই ঠিহি কইছিস-গ্রাম্ম শালিসি ব্যবস্থায় সরকারের একটা বিশেষ নীতি মালা করা
দরকার।

দৃশ্য ঃ ৮/আট
(আদরী সকালে কলসি কাকে জল আনতে নদির ঘাটে যাচ্ছে)
অতিথী-২ ঃ এই দ্যাখ দ্যাখ আদরী আসতিছে

(যার উদ্দেশ্যে বল, সে আদরীর মুখের দিকে তাকিয়ে ফেকনা করে মুখ ফেরালো)
অতিথী-৩ ঃ ছিঃ ছিঃ ছিঃ ছিঃ-এরহম বেহ্যাইয়া বিটি মানুষ বাবার জন্মে চোহে দেহিনি-যে সুয়ামী
তোরে তালাক দেল-আবার সেই সুয়ামীর ঘরে-ছিঃ ছিঃ ছিঃ ।
অতিথী -৪ ঃ আরে-ঐরহম বিটি মানষির মুখ দেহাও পাপ
(আদরী কোন কথা না বলে ঘাট থেকে জল নিয়ে পথের ধারে দড়িঁ দিয়ে খুটো মেরে বাঁধা ছাগলটা হাতে করে সোজা বাড়ি চলে গেলেন।)
(ঐ দিকে আবেদ পৈথানে বসে হুকা টানছে)
আদরী ঃ কি ব্যাপার-তুমি কামে যাও নাই ।
আবেদ ঃ হ গেইলাম-ব্যাপারি কল আমাকে নাহি আর কামে নেবে না ।
আদরী ঃ ম্যাইনে ?
আবেদ ঃ (একটু রাগাম্বীত হয়ে) ম্যাইনে-ম্যাইনে আবার কি-আমাকে আর কামে নেবেনা-
আমরা এহন পইচে গিছি-আমাগে গা দি এহন গন্ধ বেরই-লোহে আমাগে দেখলি ছিঃ ছিঃ
এরে ।
আদরী ঃ ক্যান-বিল ডাহাতিয়া ছাড়া আল্লার দুনিয়াই আর কোন জাইগা নাই-ঘরে একফুটা চাল
নাই-তিন দিন ধইরে উনুনে আগুন জ্বলে না-ছুয়াল ম্যাইয়ে নিয়ে কি না খাইয়ে মইরে
যাবে।
আবেদ ঃ হ্য হ্য মরগে-আমি কি এরবো ।
আদরী ঃ কি এরবা ম্যাইনে-তুমি পুষসি মানুষ না-ক্যান ব্যাপারি ছাড়া আর কি কোথাও কাম নাই।
আবেদ ঃ হ্য হ্য-লোহে আমার জন্ন্যি কাম নিয়ে বইসে আছেনা ।
(আবেদ রাগে ঘারের গামছা ঝাড়তে ঝাড়তে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেল )

আদরী ঃ উুহু হু যে গ্রামে ব্যাপারি নাই সেই গ্রামের মানুষ না খাইয়ে থাহে হে না খাইয়ে থাহে।
(আদরী রাগে রাগে হাতে থাকা ঝাটাটা ফেলে দিয়ে ঘরে চলে গেল)

দৃশ্য ঃ ৯/নয়
(আবেদের দুই মেয়ে হাঁসি আর খুশি কাঁদতে কাঁদতে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছে।)

আবেদা ঃ কিরে হাঁসি -কিরে খুশি কাঁদছিস ক্যান স্কুল থন মারা মারি এইরে আইছিস ।
হাঁসি ঃ না ।
আদরী ঃ তই
খুশি ঃ মাষ্টের মশাই স্কুল থন বাইর এইরি দেলো-কলো আমাগে নাহি স্কুলে যাওয়া নিষেধ-
আরো কলো-যাগে বাপ মা সমাজ মানে না-আইন মানে না-ধর্ম মানে না- তাগে ছুয়াল
ম্যাইয়ে লিহা পড়া শিহা কিয়ের দরকার।
আদরী ঃ তার পর ।
খুশি ঃ তার পর-কলো তোগে বাপ মা জ্বেনাকারী ।
আদরী ঃ হ্য হ্য-আমরা জ্বেনাকারী-আমরা আইন মানিনে- সমাজ মানিনে-ধর্ম মানিনে-আমাগে
ছুয়াল ম্যাইয়ে লিহা পড়া শিখবে ক্যা ।
(তাই বলে হাঁসির হাত থেকে বই গুলো কেড়ে নিল। বই গুলো কেড়ে নিতেই হাঁসি মাটিতে বসে পা ঝাপটানোর সাথে সাথে চিতকার করে কাঁদতে লাগলো)
হাঁসি ঃ আমি স্কুলে যাবো ।

দৃশ্য ঃ ১০/দশ
(রুপালী মা সম্ভাবা ঘরের পৈথানে বসে বুমি করছে। ওদিকে তার মা তার পরিনতি দেখে কাঁদছে।)

রুপালীর মা ঃ ও আল্লাই-আল্লাই এ আমার কি হলোরে-এহন আমি কি এরবোয়ানে-শয়তান ডেবা
আমার ম্যাইয়েডারে ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে কি সর্বনাশ এরলোরে-(রুপালীর উদ্দেশ্যে) ঐ
মাগীডারে কত এইরি কলাম ওর সাথে তুই মিলামেশা এরিশনে-আমার কতা
শুইনলো না। এহন আমি সমাজে মুখ দেহাবো কি এইরি-শয়তান ডেবাডারে কলাম যা
হবার অয়ছে এহন আমার রুপালীরে বিয়ে এইরি ফেলা-কেন্তক ও এহনআর আমার
ম্যাইয়েডারে বিয়ে এরবেনা।-এহন আমি কি এরবো রে কোথায় যাবো রে ।

(রুপালী পৈথানে পিরি পেতে চুপ করে চিন্তা মগ্ন অবস্থায় বসে আছে।)

দৃশ্য ১১/এগারো
(আবেদ রাগান্নিত হয়ে পথ ধরে হেঁটে চলেছে মিজান পেছন দিক থেকে । )
মিজান ঃ ও --- কাহা ।
(আবেদ মিজানের ডাক শুনে পেছন ফিরে দাঁড়ালো । দোঁড়পায়ে হেঁটে মিজান অনেকটা হাঁপিয়ে উঠেছে হাঁপাতে হাঁপাতে)
মিজান ঃ ওরাম এইরে আইটে কোয়ানে যাচ্ছো ।
আবেদ ঃ এই-তোর এ সব শুইনে কোন কাম নেই-আমার মাথাডা এহন গরম আছে-সোজা সোজা
ক দেহিনি-কি কতি চাচ্ছিস ?
মিজান ঃ কাহা-ঐ দক্ষীন পড়ার হারেস ।
আবেদ ঃ ক্যান-হারেসের আবার কি হলো ?
মিজান ঃ হারেসের না কাহা-হারেসের না-ওর ম্যাইয়ে রুপালী-ওর সাথে যে মুন্সির পা চাটা চামচা
ডাবুর ইস্টুকিটি ফিষ্টুকিনি ছেল সে কতা তো গ্রামের হগ্গল মাইনষে জানে ।
আবেদ ঃ হ্য জানে-তাই কি অয়ছে।
মিজান ঃ ইটুশ ফিটুশ এরতি যাইয়ে-রুপালী এহন মা হতি যাচ্ছে ।
আবেদ ঃ তাই নাহি ?
মিজান ঃ হ্য-এহন ঐতা নিয়েই তো মুন্সি কাহার বাড়ি সহাল থন সালিশ বইছে-সালিশে ডাবু
মাথায় কুরআন নিয়ে পুরা পুরি সব অস্বীকার কল্লো ।
আবেদ ঃ তার পর ।
মিজান ঃ তার পর আবার কি-সব দোষ এহন রুপালীর-বিচারে রায় হলো সূর্য্য ডুবার আগে ওরে
১০১ টি দোররা মারা হবে-এবং ঔর মাথার চুল কাইটে নেড়া এরে গ্রাম থেয়ে বাইর এইরি
দেওয়া হবে।
(মিজানের মুখে রুপালীর বিচারের কথা শুনে আবেদের মাথায় গেল খুন চরে।)
মিজান ঃ ও কাহা-তুমি কোয়ানে যাচ্ছো
( আবেদ কোন কথা না বলে সোজা বাড়ির দিক রওনা দিলো। মিজান আবেদের পিছু নিলো।)
আবেদ ঃ আদরী ঔই আদরী
আদরী ঃ কি হলো-ইরাম এইরে চেচাচ্ছো ক্যান-কি অয়ছে।
আবেদ ঃ এই ঘর থন আমার সেই লাডিডা বাইর এরতো ।
আদরী ঃ ক্যান কি অয়ছে, বাপ জান মইরে যাওয়ার পর থন তুমি লাডি মাডি খেলা বাদ দেছো
লাডির গায়ে হাতই দাওনা কিন্তু আইজ ।
আবেদ ঃ তোরে এত কথা কতি পাইরবো নানে-আগে আমার লাডিডা বাইর এর ।
(আবেদ লাঠিডা নিয়ে মোড়লের বাড়ির দিকে রওনা দিলো পেছনে পেছনে আদরী, মিজান পরে শাহিন ও করিম যোগ দিলো)
আদরী ঃ ওগো তুমি কোয়ানে যাচ্ছো।
শাহিন ঃ কাহা আইজ খেপেছে ।
করিম ঃ হ্য কি যে এরবিনি।
আবেদ ঃ শালা মোড়ল, ভন্ড হুজর তোগে বিচার আইজ আমি ছুটোয়ে দেবো। (স্বগত)

আবেদ, আদরী ও রুপালীর মত আর কোন মানুষ যেন শয়তান বেশই মোড়ল ও ভন্ড ফতুয়াবাজ বড় হুজুরের খপ্পরে না পড়ে। বিচারের নামে আর যেন কোন মানুষ প্রহসনের শিকার না হয়। তাই আমরা আছি আপনাদের পাশে মহিলা আইন জীবি সমীতি, ব্লাষ্ট, সি এস এফ, এবং মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা। আপনাদের সব রকম আইনী সহায়তা প্রদানে আমরা সর্বদা প্রস্তুত। আমরা আশা করি খুব শীঘ্রই গ্রাম্য শালিস ব্যবস্থাই সরকার একটা নীতি মালা নির্ধারন করিবেন।


*** সমাপ্ত***
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯১৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৯/০১/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • প্রবাসী পাঠক ০৯/০১/২০১৪
    সামাজিক কুসংস্কারগুলো এখনও অনেক শক্তভাবে আঁচড়ে ধরে আছে। কুসংস্কার ছিন্ন করে একদিন আমাদের সমাজ এগিয়ে যাবে সাফল্যের পথে। আর এই জন্য শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।

    অনেক ভাল লিখেছেন ।
    • মীর মামুন হোসেন ১১/০১/২০১৪
      জেনে খুশি হলাম লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে
      ধন্যবাদ গঠন মূলক মন্তব্য করার জন্য
      ভাল থাকবেন সব সময়।
 
Quantcast