www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

কেন এমন হলো

হঠাৎ করেই কতটা পাল্টে যেতে পারে মানুষ?
আমি জানি এর উত্তর কোনদিন জানতে পারবোনা। অমিমাংসিত রহস্যের মত এটাও থেকে যাবে চিরকাল। আমি জানি যখন হারিয়ে গেছে বাতাসের বুক থেকে হিমকনার শেষতম আমন্ত্রন, আমার হৃদয়ে বেঁজেছিল তোমার পদধ্বনি। মধ্যরাত্রে কোন এক স্বপ্ন যেন সফলতার ডানায় ভর দিয়ে পাখা মেলে উড়তে চেয়েছিল। কিন্তু স্বপ্ন শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেল জীবনের একটা পথ। যেটাকে আমি ভালবেসেছিলাম পরম মমতায়।

সত্যটা ছিল এটাই যে সেদিন আমার চোখের তাঁরা আঁকতে চেয়েছিল কোন এক অজানা ছবি এই ঠোঁট বলতে চেয়েছিল কোন না বলা বলা কবিতা। এক মুহুরতের জন্য ভাবিনি বিধাতা তোমার বিধিলিপিতে যে গদ্য রচনা করেছে সেখানে তো ছন্দের কোন স্থান নেই। ভাবিনি এই স্বপ্ন চিরদিন স্বপ্নই থেকে যাবে।

যেভাবে বসন্ত দিনে একরাশ উচ্ছল উৎসবে মেতে ওঠে পলাশ-সেভাবে আমিও হারিয়ে গিয়েছিলাম। বসন্তের বিকালটা যেন ফুরাতেই চাইনা, কিন্তু  সেদিন অতিদ্রুত ফুরায়ে গেল বিকালটা। টুপ করে ডুবে গেল সূর্যটা ওই সাগরের জলে। সেসাথে তুমিও চিরতরে।
খুব বেশিদিন নয়, যেদিন জ্যোৎস্না দেখলাম দুজনে নাম অজানা দেশের। অজও চাঁদ উঠেছে আকাশ ছোয়া গাছের মাথার উপর। নিঃশব্দে রাতের আকাশ থেকে খসে পড়ছে তাঁরা। আমি বুঝতে পারলাম এই ভালবাসা আর আমার জীবনে নতুন কোন স্বপ্নের জন্ম দেবেনা। তখন নিজেরই অজান্তে ছোট্ট একটা দীর্ঘ্যশ্বাস ঝরে পড়লো বুকের খাঁচা থেকে।

আমি তোমাকে অন্তর থেকে ভালবাসতাম। কিন্তু হঠৎ তোমার মনে ছুটে এলো সন্দেহের কালো মেঘ।
যে সম্পর্ক একবার ভেঙ্গে যায় তাকে আর জোড়া লাগানো যায় না? তাই না?
আমি জানি এ জীবনে তোমার সাথে আমার আর দেখা হবেনা কোন দিন। কেননা আমি যে তোমার নীল চোঁখের তারায় খুঁজে পেয়েছিলাম অনেকদিন আগে মরে যাওয়া একটি কৃষ্ণ নক্ষত্রকে।
আজ যখন রাত্রি হলো-আর একটু শীতল হলো বাতাস, মনে হল আমার কি লাভ এভাবে ব্যাথাজীর্ন জীবন যাপন করে। পৃথিবীর কোথাও তো আমার নাম সোনার অক্ষরে লেখা হবেনা। সেই নিদারুন সত্যতা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম।

কিন্তু জানতাম না, তোমার মনের মধ্যে এতটুকু ভালবাসার শিহরন জাগবেনা। বলতে পারো তুমি? কতদিন পর হঠৎ দেখা হলে আরো বেশি গাঢ় হবে ঘৃনা?
আমি আজো জানিনা কেন এসেছিলে এক বৈশাখী বাতাসের মতো, আর চলে গেলে চৈতি রাতের ঝরা ফুলের স্বপ্ন হয়ে? আমিতো বেশ একাই ছিলাম এই বিরাট সমুদ্রের কারাগারে বন্দী হয়ে। কেন বয়ে আনলে এক মুঠো টাটকা বাতাস? এরতো কোন প্রয়োজন ছিলনা আমার জীবনে।

আজ শেষ হয়ে আসা রাতে যখন ধ্রুবুতারার বিদায় নেওয়ার সময় হলো তুমিও বিদায় নিলে। পরমুহুর্তে ভাবনার চিঁকন রুমালখানা ছিড়ে খাঁন খাঁন হয়ে গেল। সহসা একরাশ তিক্ততা এসে বসন্ত শেষের রাঙ্গা পলাশ হয়ে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছিল আমায়। কেন জানি মনের আকাশে সোঁ সোঁ হাওয়ার শব্দে ছুটে আসছে পাগলা ঝড়। আবার কখনও মেঘহীন বাতাসে হেসে উঠছে চাঁদের জ্যোৎস্না। ধীরে ধীরে সেসব স্মৃতীর রং ফিকে হয়ে আসছে। আর কোন অতীত এখন শরৎ মেঘের মত উড়ে বেড়াবে না মনের আকাশে। মন থেকে উধাও হয়ে যাবে অনুরাগের সমস্থ কবিতা।

কিন্তু
কিছু কাল পরে আবার যখন কুয়াশার আচ্ছাদনে ভরে যাবে শহরের বাতাস, একটি একটি করে নিভতে থাকবে প্রদীপ শিখা গুলি। তখন অকারনে আমি তাকিয়ে থাকবো রাতের আকাশের দিকে। ধোঁয়ায় ভরা এই শহরের রাত আকাশ যখন পারদ কাচের মত মলিন হয়ে যাবে, তখন সেই বিষবাষ্প সরিয়ে যদি সেখানে কখন ভেসে ওঠে তোমার মুখ- তাহলে প্রশ্ন কোরব সত্যি করে বলোতো এমন ভাবে আমার বেঁচে থাকার প্রতিটি প্রহরকে রক্তাক্ত করে বিনিময়ে কি পেলে তুমি? সীমাহিন শুন্যতা ছাড়া?

আজ আমি ক্লান্ত পথিক। আমার সামনে একটা অন্ধকার অমানিশার অন্তহীন সারণী, পিছনে বিপদ আর রোমাঞ্চের উপত্ত্যকা। ডানে অতলস্পর্শী মৃত্যুর হাতছানি, বামে পাহাড় অনন্ত রহস্যের মাখামাখি।
যেভাবে হু হু করে বাড়ছে জল তাতে মহাপ্রলয় ঘনিয়ে আসতে যে আর বেশি দেরি নেই সেটে স্পষ্টো বোঝা যাচ্ছে। বোতাম খোলাই ছিল তাই গায়ে লাগছে বেশরম বৃর্ষির ছাট। ঐ বোধ হয় ভেঙ্গে গেল বাদিকের অনন্ত রহস্য ঘেরা পাহাড়। উন্মুক্ত জলরাশি নিষ্ফল আক্রশে ছুটে আসছে আমায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে বলে।

যদি এমনই হয়- তাহলে তোমায় শনাব শেষের কবিতা নয়, কবিতার শেষ কথা।
আর এসব হবে এক অভিশপ্ত ভালবাসার শেষ স্মৃতি।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৩১৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১২/০৫/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast