www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

তবুও তিনি এসেছিলেন বাঙালির ছাতা হয়ে

তবুও তিনি এসেছিলেন বাঙালির ছাতা হয়ে
সাইয়িদ রফিকুল হক

সেদিন সন্ধ্যা থেকেই আকাশের বুকে জমেছে কান্না,
আকাশজুড়ে মেঘের আনাগোনা শুধু চারিদিকে,
যেকোনো সময় শুরু হতে পারে কালবৈশাখী!
তবুও তিনি আসবেন
তবুও তাঁকে আসতে হবে
তবুও তাঁকে আসতে হয়।
বাংলায় তখন শকুনদের কী এক ভয়াবহ উৎপাত!
সারাদেশে ছড়িয়েছিটিয়ে রাজত্ব করছে আলবদরেরা।

রাতের আঁধারে রষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে এক স্বৈরাচার,
দেশটা হয়েছিল রক্তপিপাসু জল্লাদের হাতে বন্দি!
সেদিন দেশ মনে হয় সোনার বাংলাকে
মনে হচ্ছিলো দেশটা আস্ত এক কসাইখানা!
খুনিরা আসর জমিয়েছিল মনের ফুর্তিতে
চারিদিকে খুনিদের বিশালবড় আড্ডা।
দেশের পিতাকে হত্যা করে তারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে:
তাইতে তাদের মনে এত স্ফূর্তি!
জাতির জনকের খুনিরা বুকফুলিয়ে প্রকাশ্যে চলছে!
চিহ্নিত খুনিরা বিদেশে রাষ্ট্রদূত হয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে।
তিনি স্বদেশে ফিরতে চেয়েছেন বলে
স্বৈরাচার তার পোষা গুন্ডাদের লেলিয়ে দিয়েছে পত্রিকা অফিসে,
তারা যমদূতের মতো যেখানে-সেখানে গিয়ে ভীতি ছড়াচ্ছে,
ভয়ভীতি দেখাচ্ছে মাঠ-চষে বেড়ানো নেতাদের।
বারেবারে দেওয়া হচ্ছে গুম-খুনের হুমকি,
নির্বিচারে তাঁর দলের নেতাকর্মীদের ভরা হচ্ছিলো জেলখানায়!
স্বৈরাচারের গদি রক্ষা করতে সেদিন খুব ব্যস্ত হয়ে উঠেছিল
বাঙালি ইতিহাসের সবচেয়ে নির্মম স্বৈরাচার।
তবুও তাঁর পদধ্বনি শোনা যেতে থাকে,
আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠতে থাকে দেশবিরোধি সেদিনের স্বৈরাচার।

তাঁর ফেরার কথা ছিল আরও আগেই
কিন্তু ভয়াবহ স্বৈরাচারের দাপটে ফিরতে পারেননি এতদিন
এবার তিনি স্বদেশে ফিরবেন
তাঁকে ফিরতেই হবে
তাঁকে এবার আসতেই হবে।
আত্মস্বীকৃত খুনিদের প্রতিনিধি স্বৈরাচারের স্বীকৃতি মেলে না
স্বঘোষিত সামরিকজান্তা তাঁকে দেশে ফিরতে দিবে না
দেশে ফেরার জন্য তাঁকে নানারকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে
হুমকিধমকি দেওয়া হচ্ছিলো কিছুদিন আগে থেকেই।
তবুও তিনি অনড়-অটল।
তিনি এবার দেশে ফিরবেন।
জনগণের বাঁচার অধিকার প্রতিষ্ঠা করবেন,
মানুষের সাথে পিতার মতো গড়ে তুলবেন বন্ধুত্ব।

ঝড়বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে দেশ!
আকাশে বজ্রপাতের হুংকার চলছে সমানতালে
বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে লক্ষ-লক্ষ মানুষ
তারা জাতির জনকের কন্যাকে স্বাগত জানাতে ছুটে গিয়েছে
ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
পুলিশ-বিডিআর-আর্মির ব্যারিকেড শেষমেশ তুলে নিয়েছে স্বৈারাচার
জনতার ভয়ে চরম ভীতসন্ত্রস্ত্র হয়ে উঠেছিল সেদিনের সেই স্বৈরাচার।
সকল বাধা সরায়ে
বাংলার ইতিহাসের নির্মম স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে
প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টিকে তোয়াক্কা না-করে
জনগণের ত্রাণকর্তারূপে ফিরে এলেন বাংলাদেশে।

সেদিনের কালরাত্রির বাধা ঠেলে ফিরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা।
লক্ষা-লক্ষ মানুষের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল সেই স্লোগান:
জয়-বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
সেদিন থেকেই ভেসে যেতে থাকে গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারের মসনদ।
আজ শেখ হাসিনার ফিরে আসার দিন।
তাঁকে কখনো দেশে ফিরতে দিতে চায়নি পৃথিবীর ভয়াবহ এক স্বৈরাচার
তবুও তিনি এসেছিলেন,
মানুষকে ভালোবেসেছিলেন
আর অসহায় জাতির মাথার উপরে চিরদিনের ছাতা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।
আজও তিনি বাঙালির নিরাপদ ছাতা
আজও তিনি বাঙালির ভালোবাসার বিশ্বস্ত নাম
একচল্লিশ বছর ধরে বাঙালির ভাগ্যগড়ার কাজে নিবেদিতপ্রাণ এক কর্মী।

সাইয়িদ রফিকুল হক
১৭/০৫/২০২২
(আজ থেকে ৪১ বছর আগে, ১৭ই মে ১৯৮১ সালে
শেখা হাসিনা সেদিনের প্রবল স্বৈরাচারের সকল বাধা
উপেক্ষা করে ফিরে আসেন বাংলাদেশে। আজকের বাংলাদেশ
তাঁর হাতেই নিরাপদ।)
বিষয়শ্রেণী: কবিতা
ব্লগটি ১৬১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৭/০৫/২০২২

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast