www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

কালো গোলাপ- উপন্যাস পর্ব -১

প্রতিটা মানুষের জীবনে আশা থাকে ভালোবাসা থাকে। কারো কানায় কানায় পূর্ণ হয় জীবন, কারো ভেঙ্গে খান খান হয় মন। চলার পথা পরিচয় হয় কত মানুষের সাথে, এদের মধ্যে কেউ জীবনে দাগ কেটে যায়, কেউ শুরুতেই হারিয়ে যায়। কিছু স্মৃতি বিস্মৃতি হয়, কিছু স্মৃতি অম্লান হয়ে রয়। কিন্তু রুপম ও সাগরিকার কি হবে? ওরা কি বিস্মৃতি হবে নাকি দুঃখ-সুখের স্মৃতির বোঝা বয়ে নিয়ে বেড়াবে আমৃত্যু?”।
বেশ কিছু দিন থেকে সাগরীকা ভীষণ অসুস্থ, বলা যায় জীবন আর মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে সে। বিষন্ন মনে অপলক চেয়ে আছে সন্ধ্যার আবির রাঙা আকাশের দিকে। সুখ সন্ধ্যা তারা্টি সন্ধ্যা হবার বহু আগেই পশ্চিমাকাশে উকি দিয়েছে। তারাতিকে মনে হচ্ছে শত দুঃখ লুকিয়ে সবার চিত্ত-বিনদনে মত্ত সে। সাগরিকার চোখে মুখে ব্যথার করুন ছাপ । চোখের নিজে জমাট বেঁধেছে কালি, হাসতে বড় কষ্ট হয় আজকাল তবু আজ সন্ধ্যা তারার পানে তাকিয়ে খুব হাসতে ইচ্ছে করছিল, তাই অনেক কষ্ট স্মুতলি হাসে সে।সাগরিকার এই অসুস্থতা কোন রোগের কারণে নয়। তার পারিপার্শিক জীবন তাকে দিনে দিনে মৃত্যুর ঠেলে দিয়েছে।
অজগ্রামে জন্ম সাগরিকার। ছোট বেলায় মায়ের পাশে বসে যখন বউ পুতুল খেলতো সুতো দিয়ে স্ট্যাথোস্কোপ আর পাটকাঠি দিয়ে থার্মমিটার বানিয়ে পুতুলের জ্বর পরিক্ষা করতো মা বলতো
- আমার নাজ সোনা বড় হয়ে মস্ত বড় ডাক্তার হবে। গাঁয়ের মানুষের দুঃখ তখন শেষ হবে।
নাজনিনের চোখে মুখে জ্বলে উঠতো এক প্রদীপ্ত আলোক শিখা। ছোট ছোট শব্দে নাজনিন বলতো
- সত্যি বলছ মা। সত্যি আমি বড় হয়ে ডাক্তার হবো?
সাগরিকার নাক চেপে ধরে হেসে উঠে মা বলতো
- সত্যি বলছি পাগলী।
আমার যখন পুতুলে পুতুলে ঝগড়া হতো তখন যে উকিলের মত দুই পক্ষের জাছে জিরা করে করে ঝগ্রা মিটাত। তখন মা বলছেন আমার নাজ সোনা মস্ত বড় উকিল হবে। মায়ের কথায় সাগরিকা মনে মনে স্বপ্ন আঁকতো চোখের পাতায়। ডাক্তার উকিল না হোক সে। সে যেন মানুষের মত মানুষ হয়ে মানুষের সেবা করতে পারে । ভালো একটা চাকরি করে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে। কিন্তু মানুষের সব আশা কি আর পূরণ হয়? হয় না, সাগরিকারও হয়নি। সাগরিকা ওর আসল নাম নয়, বাবা-মা নাম রেখেছিল নাজনিন।গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নাজনিনের । বাবা ছিলেন সামান্য প্রাইমারি স্কুল মাস্টার। অনেকগুলো ভাই-বোন। টানাপড়েনের সংসার। আমাদের সমাজে মধ্যবিত্তের জীবন সব থেকে কঠিণ জীবন। উচ্চবিত্তেরা গরীবের রক্ত শুষে খেয়ে বড়লোক হতে পারে। নিন্মবিত্তেরা চাইলে যে কোন কাজ করতে পারে। যত মরতি মরণ তা হলো মধ্যবিত্তের। এরা না পারে কইতে না পারে সইতে।নাজনিন যখন প্রাইমারী পেরিয়ে হাইস্কুলে পা রাখে তখন ওর চোখে এক নতুন স্বপ্নের উচ্ছলা । কচি ধানের ক্ষেতে বাতাস যেমন ঢেউ খেলে যায় তেমনি ঢেউ খেলে স্বপ্নেরা ওর চোখে মুখে। দেখতে দেখতে পা রেখেছে ক্লাস এইটে। আর মাত্র তিন বছর পর মেট্রিক পরিক্ষা দিবে। আই এ পাশ করবে তারপর ডাক্তারি পড়বে। একদিন মস্তবড় ডাক্তার হয়ে এই গ্রামের মাটিতে পা রাখবে। সে যখন গ্রামে আসবে তখন গ্রামের মানুষ বলবে ওই যে আমাদের নাজ ডাক্তার গ্রামে এসেছে। গ্রামের আর কেউ এখন অসুস্থ থাকবেন না সবাইকে নাজনিন সবাইকে সুস্থ করে তুলবে। গ্রামের মানুষের সেবা করবে প্রাণ খুলে। গ্রামের আর কাউকে বিনা চিকিৎসায় মরতে হবে না।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৬৮১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৮/১০/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • nice
  • পারভেজ এ রহমান ১০/১০/২০১৭
    ভাল লাগলো
  • আরিফুল ইসলাম ০৮/১০/২০১৭
    অনবদ্য
  • খুব ভাল লিখেছেন।চলতে থাকুক।
  • পড়তে থাকি।
  • আজাদ আলী ০৮/১০/২০১৭
    "Kalo Golap
    • হ্যাঁ
      • আজাদ আলী ০৮/১০/২০১৭
        Khub valo laglo
 
Quantcast