www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪২৬

ঐতিহ্য কথার অর্থ গৌরবময় অতীত। কিন্তু সেই অতীত কি সুদূর অতীত নাকি অদূর অতীত? ঐতিহ্য হওয়ার জন্য সুদূর অতীত হতে হবে এই কথা সমর্থন করিনা। অদূর অতীতের গৌরবময় ঘটনা থেকেও ঐতিহ্য জন্মাতে পারে। যেমন ১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারির পূর্বে প্রভাতফেরী বলে কিছু ছিল না বাঙালি ঐতিহ্যে। বর্ষবরণ বা বাংলা নববর্ষ উদযাপন - এটা অনেককাল আগে থেকেই উদযাপিত হয়ে আসছে। কিন্তু 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' সে তুলনায় অতি পুরনো না হলেও গত কয়েক দশক ধরে বাঙালিরা উদযাপন করে আসছে। অতএব, মঙ্গল শোভাযাত্রাও বাঙালির ঐতিহ্য। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী একে ঐতিহ্য বা বর্ষবরণ ঐতিহ্যের অংশ বলে মানতে নারাজ। ১৯৮০’র দশকে স্বৈরাচারী শাসনের বিরূদ্ধে সাধারণ মানুষের ঐক্য এবং একইসঙ্গে শান্তির বিজয় ও অপশক্তির অবসান কামনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রবর্তন হয়। এই শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সর্বজনীন উৎসব মুখর মিলন মেলায় পরিণত হয়। শোভাযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ বিশালাকৃতির পাপেট, ভাস্কর্য, মুখোশ ইত্যাদি।
ষোড়শ শতকে মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে বর্তমানের যে বাংলা বর্ষপঞ্জি তৈরি হয় তা ফসল রোপণ এবং কর আদায় সহজ করার উদ্দেশ্যেই করা হয়। হালখাতা, পিঠা-পুলি বানানোর মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয়। সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন।
এই তারিখ পদ্ধতিটি বিশেষ কোন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য গ্রহণ করা হয়নি, এটি হয়েছিল রাজ্যের সকল জনগোষ্ঠীর জন্য। কিন্তু বর্তমানে এই বর্ষবরণকে অনেক রকম ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যার দ্বারা সংকীর্ণতায় আবদ্ধ করতে চায়। সম্প্রীতির সহবস্থানকে নষ্ট করতে চায়। মঙ্গল শোভাযাত্রায় সকলের অংশগ্রহণ থেকে অনুমান করা যায় সকল বর্ণ, ধর্ম, মতের মানুষ শান্তিপূর্ণ সহবস্থান চায়। এই অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধ জাগ্রত হোক সকল বাঙালির অন্তরে। শুভ নববর্ষ।১৪২৬।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৪৮৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৪/০৪/২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast