www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

জঙ্গি ও অপরাধীদের ডিজিটাল ডাটাবেজ

সরকারের জঙ্গিবাদ বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে সারাদেশের তিন হাজারেরও বেশি সন্দেহভাজন জঙ্গির বিস্তারিত তথ্য ও ছবিসহ একটি ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে এবং তালিকাটি সারাদেশের সবকটি জেলা ও থানা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সকল বাহিনী/সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। গত বছর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পরপরই মূলত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নামে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় সারাদেশের জঙ্গিদের তথ্য সংগ্রহ করা হয় মাঠ পর্যায়ে তদন্ত পরিচালনার মাধ্যমে। এ জন্য জঙ্গি সংক্রান্ত মামলাগুলো নজরদারি করতে দায়িত্ব দেয়া হয় নির্বাচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের। যাতে তারা সার্বক্ষণিক এসব মামলার অগ্রগতি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। জঙ্গিবাদ এখন আর কোন একক দেশের সমস্যা নয়, এটা মাথায় রেখেই প্রতিবেশী দেশগুলোকে সাথে নিয়ে জঙ্গিবাদ দমনে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর উপর জোর দেয়া হয়েছে। মূলত গুলশানে জঙ্গি হামলার পর তিন হাজারেরও বেশি সন্দেহভাজন জঙ্গির বিস্তারিত তথ্য ও ছবিসহ একটি ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করা ছাড়াও সারাদেশের জেলাগুলোতে গঠন করা হয় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে তারা নিয়মিত পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে অংশ নিচ্ছে। দেশব্যাপী জঙ্গিদের আস্তানা খুঁজে খুঁজে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। গত এক বছরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে তিন শতাধিক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়, অভিযানে মারা যায় ৭০ জঙ্গি। এসব অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশ ও র্যাশবের আটজন সদস্যও মারা গেছে। জঙ্গি দমনের জন্য পুলিশ সদর দফতরে গঠিত ইনটেলিজেন্স উইং ‘ল’ ফুল ইন্টারসেপশান সেল (এলআইসি) নামে নতুন একটি ইউনিটের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। দেশে কেবলমাত্র জঙ্গি নয়, সন্ত্রাসী, অপরাধীদের ছবিসহ ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরির কাজও শুরু করেছে র্যা পিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব)। ইতোমধ্যে আড়াই লক্ষাধিক জঙ্গি, সন্ত্রাসী, অপরাধীর ডাটাবেজ তৈরি করেছে তারা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী অপরাধীদের ছবি, আঙ্গুলের বায়োমেট্রিক ছাপ, চোখের মণির স্ক্যান, পূর্ববর্তী অপরাধের রেকর্ড এবং ফৌজদারি অপরাধে শাস্তির তথ্যের মতো অপরাধীদের ১৫০ ধরনের তথ্য-উপাত্ত রয়েছে এই ডাটাবেজে। এই ডাটাবেজে খুব সহজেই অপরাধীদের বিবরণ পাওয়া যায়, যা দেশে অপরাধ প্রতিরোধ বিশেষ করে জঙ্গি তৎপরতা দমনে সহায়তা করবে। ডাটাবেজের তথ্যের সঙ্গে ব্যক্তির তথ্য মিলিয়ে র্যাতব ইতোমধ্যে ১ হাজার ১শ’ জন ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে, যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে অপরাধ সংঘটিত করেছে। কোন ব্যক্তি অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিনা, তা যাছাই করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজেও র্যামবের প্রবেশাধিকার রয়েছে। এ লক্ষ্যে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাটাবেজে প্রবেশাধিকার পাওয়ার কাজও চলছে। ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারির পর থেকে যারা একদিনের জন্যও কারাগারে ছিল, এমন ৫৮ হাজার বন্দির ২০০ ধরনের তথ্য সম্বলিত একটি কারাবন্দি ডাটাবেজও চালু করেছে র্যািব। ডাটাবেজে অপরাধীদের উভয় হাতের ১০ আঙ্গুলের বায়োমেট্রিক ছাপ ও চোখের মণির স্ক্যান সংরক্ষিত রয়েছে। ডাটাবেজে অপরাধীদের পূর্বের অপরাধের রেকর্ড, অপরাধের ধরণ, শাস্তির বিবরণ, তাদের নাম, ঠিকানা এবং পেশার উল্লেখ রয়েছে। এই ডাটাবেজটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, ডাটাবেজের অধীন যে কোন কারাগারের বন্দির তথ্য মোবাইলে খুদে বার্তার মাধ্যমে র্যামবের মহাপরিচালক ও জেলের মহাপরিদর্শকের কাছে চলে যাবে। এই ডাটাবেজের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ এক ক্লিকেই অপরাধীদের অবস্থা ও ৬৭টি কারাগারের বন্দিদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। ডাটাবেজ সিস্টেমটিকে যথাযথভাবে পরিচালনা করতে সব পদক্ষেপই হাতে নেয়া হয়েছে। পূর্বের ক্রিমিনাল রেকর্ড যাচাইয়ের সুযোগ থাকাতে অপরাধ করে আগামীতে কেউ আর রেহাই পাবে না। সময়োপযোগী এ ধরণের নানা ইতিবাচক পদক্ষেপের মাধ্যমেই এগিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৪৭১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৫/০৭/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast