www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

শতাংশ জীবন-৫ (আলোর ঘর)

. বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে 'চর বাউশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে' হেঁটেই পৌঁছলাম। খুবই পরিচিত জায়গা। এ স্কুলের মাঠেই অনেক সময় গোল্লাছুট খেলেছি। বড়দের সাথে ফুটবল খেলতে গিয়ে ''দুধ-ভাত প্লেয়ার'' হয়েছি। এর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ছেলে-মেয়ের কথার গুঞ্জন শুনেছি। মাঝে মাঝে হাসির লহরী আছড়ে পড়তো সাগরের বেলাভূমির ঢেউয়ের মতো।

বুকের উপর শ্লেট আর বই দু'হাতে চেপে ধরে, শঙ্কা জড়িত অরুষ্ট চিত্তে স্কুলের সীমানায় পৌঁছলাম। দাঁড়িয়ে রইলাম বারান্দায়। কোন কপাট ঠেলে ঢুকবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। হেড মাষ্টার স্যার এগিয়ে এলেন। আমার চড়ুই পাখির মতো নরম কাঁধে মমতা মাখা হাত রেখে একটু ঝুঁকে নাম ও পরিচিতি নিশ্চিত হয়ে, সর্বশেষ কোণার কপাট ঠেলে আমাকে ঢুকিয়ে দিলেন, এক আনন্দময় স্বর্গরাজ্যে। এখানে সবাই প্রায় সম বয়সী। তাদের সাথে ভাব করাও যায়; আবার ঝগড়া করাও যায়।

ঢং ঢং ঘন্টা বেজে উঠলো। সব ছেলে-মেয়েরা ক্লাস রুম থেকে দ্রুত এবং দৌড়ে বের হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, ক্লাস রুমে আগুন লেগেছে, তার থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য অথবা বাইরে কোন মজার ঘটনা দেখার জন্য। একটি উচু বেদীর উপর একটি বাঁশ খাড়া করে পোঁতা। হেড স্যার দাঁড়িয়ে আছেন, একটি পতাকা হাতে। ছেলে মেয়েরা প্রশিক্ষিত সৈনিকদের মতো পর পর দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন লম্বা সারি করে। আমি দাঁড়িয়েছিলেম সবার শেষে। বিলাত আলী স্যার আমার হাত ধরে নিয়ে এলো সকলের আগে।

পতাকা উপরে উঠছে ধীরে ধীরে । আমরা দাঁড়িয়ে আছি পতাকাকে সামনে রেখে। দুইজন ছেলে এবং দুইজন মেয়ে পতাকাকে পিছনে রেখে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে হৃদয় আন্দোলিত করা জাতীয় সংগীতকে সুর করে গেয়ে যাচ্ছে। আমরাও তার সাথে ঠোঁট মিলাচ্ছি। এক সময় শেষ হলো জাতীয় সংগীত গাওয়া।

অতঃপর, এক একেকটি সারি অজগর সাপের মতো এঁকে-বেকে চলে গেলো নির্দিষ্ট ক্লাস রুমে। কিছুক্ষণ পর লতিফ স্যার হাজিরা খাতা, চক ও ডাস্টার নিয়ে আমাদের ক্লাসে ঢুকলেন। তিনি আমাদের স্কুলের হেড মাষ্টার সাহেব।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৫০০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৬/১২/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast