www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রাতের অফিস

দেওয়াল ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই চমকে উঠল সিঞ্জন । সাতটা বেজে চল্লিশ মিনিট । সারাদিন অফিসের কাজের চাপে সময়ের খেয়ালই নেই তার । দু’কাপ কফি ছাড়া দুপুরে আর কিছু খাওয়া হয়ে ওঠেনি । পেটটা এখন বেশ চোঁ চোঁ করছে । ক্ষুধা নিবারণের জন্য এখন কিছু খেতে হবে । বেল বাজাতেই দরজায় নক করে পিয়ন নির্মল তার টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ালো । সিঞ্জন পকেট থেকে একটা একশো টাকার নোট বার করে নির্মলের হাতে দিয়ে কাছের কোন রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু খাবার আনতে বলল । নির্মল আমতা আমতা করে বলল – “স্যার, কাছের রেস্টুরেন্টটা আজ বন্ধ। আর একটা ভালো রেস্টুরেন্ট আছে তবে একটু দূরে । ওখান থেকে খাবার আনতে একটু দেরী হবে”। সিঞ্জন তাকে অনুমতি দিতেই পিয়ন নির্মল সুইংডোর ঠেলে বেরিয়ে গেল ।

            এখন আর কোন কাজ নয় । এখন বিশ্রাম । পিয়ন নির্মল ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই সিঞ্জন তার চেয়ারে গা এলিয়ে দিল । এখন অফিসে আর কেউ নেই । অন্যান্য অফিসার এবং স্টাফ সাড়ে পাঁচটায় চলে গেছে । এমনকি রিজিওনাল ম্যানেজারও কিছুক্ষণ আগে বেরিয়ে গিয়েছে। পার্ক স্ট্রীটে লিঙ্ক ইন্ডিয়া প্রাঃ লিমিটেডের অফিসের সেলস ম্যানেজার সে । নতুন চাকরি । তাই অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য তাকে মনোযোগ সহকারে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে হয় । বিশেষ করে বাজারে তাদের প্রডাক্টের গুণগত মান এবং বিক্রয় সংক্রান্ত ব্যাপারের কাজটি তার উপর বর্তেছে । সব কাজ শেষ করে ফিরতে অনেক দেরি হয়। শেষ পর্যন্ত তার একমাত্র সাথী পিয়ন নির্মল । তাকে গাড়িতে তুলে দিয়ে তবেই তার ছুটি । সিঞ্জন তার টেবিলে রাখা টেলিফোনের নম্বর টিপে ডায়াল করে । জলপাইগুড়ি । যেখানে তার জন্ম, স্কুল-কলেজ আর একটু একটু করে বেড়ে ওঠা । সেখানে তার মা থাকে । মায়ের সাথে সারাদিন কোন কথা হয় না । এসময়েই সিঞ্জন মায়ের খবর নেয় । মায়ের খবর নেওয়া হয়ে গেলে আবার একটু আরাম করে বসে । তার কেরিয়ার নিয়েও সে ভাবতে থাকে । বাঙ্গালোর থেকে এম,বি,এ, করার পর মাত্র এক মাস হল সে এই কোম্পানিতে জয়েন করেছে ।  এখানকার বাসস্থান বলতে গড়িয়াহাটের এক ছিমছাম গেস্টহাউস । যদিও ছেলেবেলায় বাবার সাথে একবার কোলকাতায় সে এসেছিল বাবার এক বন্ধুর বাড়িতে তবুও কোলকাতা তার কাছে নতুন । এখানকার রাস্তাঘাট এখনও ততটা পরিচিত হয়ে ওঠেনি । তার অফিসের তিনজন অফিসার এবং বারোজন স্টাফ । এদের সকলের সঙ্গেই তার সুন্দর আন্ডারস্ট্যান্ডিং। অফিস ছুটি হয়ে গেলে  সকলে চলে গেলেও সে যায় না । আগামী দিনের বেশ কিছুটা কাজ অগ্রিম সমাধা করে তবেই সে অফিস থেকে বেরোয় । আর গেস্টহাউসে তাড়াতাড়ি ফিরে গিয়েই বা সে কি করবে ? এখানে সে তো একেবারে একা । অফিসের কাজের মধ্যে ডুবে থাকাই তার কাছে শ্রেয় বলে মনে হয় ।

    পিয়ন নির্মলের খাবার নিয়ে আসতে দেরী দেখে সিঞ্জন তার টেবিলের বা দিকে রাখা একটা পেনডিং ফাইল সামনে টেনে নিয়ে এসে সেটা খুলে দেখতে লাগল । হঠাৎ সামনের কাঁচের দরজার দিকে চোখ পড়তেই সে দেখল দরজার বাইরে কে যেন দাঁড়িয়ে আছে । ভালভাবে খেয়াল করতেই সে দেখল দীর্ঘদেহী এক বিদেশী সাহেব দাঁড়িয়ে । মাথায় কালো টুপি । সিঞ্জন বেশ ঘাবড়ে গেল । এই সময়ে তো কারও এখানে আসার কথা নয় । ভিজিটিং আওয়ারস সেই পাঁচটায় শেষ হয়ে গেছে । আর তা ছাড়া ভিজিটিং আওয়ারসের পরে কেউ জরুরী কাজে দেখা করতে এলে সিকিওরিটি গার্ড ইন্টারনাল ফোন করে জানিয়ে দেয় । কেউ ভুলবশতঃ ঢুকে পড়েনি তো ? সিঞ্জন তাড়াতাড়ি চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে ঘরের দরজার কাছে যেতেই সাহেব লোকটি দ্রুত করিডর দিয়ে হাঁটতে শুরু করল । সিঞ্জন দরজার বাইরে বেরিয়ে পিছন পিছন গিয়েও তাকে ধরতে পারল না । করিডর পেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে তরতর করে নেমে গেল । সিঞ্জন চিৎকার করে বলতে লাগল – “হু আর ইউ ? হু আর ইউ ? কাম ব্যাক প্লিজ”।   কিন্তু কোন উত্তর নেই । মুহূর্তের মধ্যে সাহেব ভদ্রলোকটি অদৃশ্য । তার কাছে ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত লাগল। রাতও বাড়ছে । এই সময়ে সে ছাড়া তাদের অফিসের ফ্লোরে আর কেউ নেই । এবার তার একটু ভয় করতে লাগল । গা-টা কেমন যেন ছমছম করে উঠল । এই মুহূর্তে সে কি করবে ভেবে পেল না । খাবার এখন মাথায় থাক ।  নির্মল তাড়াতাড়ি পৌঁছলেই বাঁচা যেত । একটু সাহসও পাওয়া যেত । সিঞ্জন লিফটের কাছে সিঁড়ির মুখে দাঁড়িয়ে নীচের দিকে তাকিয়ে ভয়ার্ত কণ্ঠে চিৎকার করতে লাগল – “কে ? কে ? কেউ কি আছো নীচে ?” ইতিমধ্যে নির্মল লিফট থেকে নেমে তার সাহেবের চিৎকার শুনে জিজ্ঞাসা করল – “স্যার কি হয়েছে”? সিঞ্জনের প্রাণে এবার একটু বাতাস পেল । খানিকটা দম নিয়ে সিঞ্জন কড়া ভাবেই বলল – “নির্মল, তুমি বেরিয়ে যাবার সময় মেন গেটে সিকিওরিটি ছিল না ? এত রাতে অফিস বিল্ডিং-এ বাইরের লোক ঢোকে কি কোরে ? কোথা থেকে একটা লোক এসে আমার চেম্বারের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল । খুব লম্বা, ফর্সা ।  মাথায় টুপি । বিদেশী সাহেব বলেই মনে হল । আমি চেম্বার থেকে বেরিয়ে হাঁক পাড়তেই সিঁড়ি দিয়ে একরকম দৌড়েই সে নীচে নেমে গেল । আমি এত ডাকাডাকি করলাম কোন ভ্রূক্ষেপই করল না । জানই তো কত মতলববাজ লোক এই শহরে থাকে । অ-ঘটন ঘটতে কতক্ষণ”? “মাপ করবেন স্যার, আমি বুঝতে পারিনি । আর কখনও এ-রকম ভুল হবে না । সিকিউরিটি গার্ড টিফিন খেতে একটু দূরে গিয়েছিল । আমার গেটে তালা লাগিয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল”। কথাগুলো বলতে বলতে নির্মল তার মাথা চুলকোতে লাগলো । নির্মল খাবার নিয়ে চলে আসাতে সিঞ্জনের ভয়টা এবার কমলো । একটু নরম হয়ে সিঞ্জন বলল – “ঠিক আছে । আমার খাবারটা টেবিলে রাখো । আমি টিফিন করার পর একটা ইম্পরট্যান্ট ফাইল নিয়ে বসব । সেটা স্টাডি করে বেরবো । একটু রাত হলে তোমার কোন অসুবিধা নেই তো ?” নির্মল বলল – “না স্যার, আপনার যাওয়া পর্যন্ত তো আমাকে থাকতে হবে । আর তা ছাড়া এখন ঘরে গিয়েই বা কি করব । পরিবার দেশের বাড়ি নদীয়ার করিমপুরে । এখানে একা থাকি । ঘরে গিয়ে শুধু খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়া । আপনি স্যার খেয়ে নিন । আপনার টিফিন আপনার টেবিলে রেখে আসছি। আমি বাইরে আমার সিটে বসছি । দরকার হলেই ডাকবেন”।

নির্মল সিঞ্জনের টিফিন তার টেবিলে রেখে এল । সিঞ্জন খাবার খেতে খেতে তার সামনে রাখা ফাইলের পাতা ওলটাতে লাগল । কিন্তু এই মুহূর্তে তার মনে হল তার মাথা ঠিক কাজ করছে না । ফাইলের কাগজপত্রের মধ্যে কিছুতেই ঢুকতে পারছে না । নির্মলকে কড়া ভাবে কথা বলার জন্য একটু কষ্টই হল সিঞ্জনের । গেটটা বন্ধ না করে গিয়ে সে না হয় একটু ভুল করে ফেলেছে । তার জন্য তাকে এ-ভাবে বলাটা ঠিক হয়নি । নির্মল এমনিতে খুব ভালো মানুষ । পেটের তাগিদে কত দূর থেকে সে কোলকাতায় এসেছে । এ-রকম ভুল নিশ্চয়ই দ্বিতীয়বার হবে না । সিঞ্জন ফাইলটা বন্ধ করে টেবিলের বা দিকে রেখে দিল । এক গ্লাস জল খেয়ে তার এটাচি কেস নিয়ে উঠে পড়ল।
তারপর নির্মলকে ডেকে অফিস ঘর বন্ধ করে নিচে নেমে এল । ড্রাইভার যতিন পারকিং জোন থেকে গাড়ি নিয়ে এসে রেডি । নির্মলকে কালীঘাটে তার বাসায় নামিয়ে সোজা গড়িয়াহাটের গেস্টহাউস ।

    তারিখটা ছিল ২৮শে ডিসেম্বর । পার্ক স্ট্রীট ক্রিসমাসের আলোকমালায় ঝলমল করছে ।  কোলকাতা শহরে বেশ শীত পড়েছে । পরদিন সিঞ্জনের একটা ইম্পরট্যান্ট মিটিং । মিটিং-এর জন্য কাগজপত্র ফাইল আজই রেডি করতে হবে ।  রাত আটটা বেজে গেল। এখনও বেশ কিছু কাজ বাকী ।  সেক্রেটারি বিকাশ সারা দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে তার কাজে সাহায্য করেছে । আর তাকে আটকানো যায় না । অনেক দূর থেকে সে আসে । মধ্যমগ্রামে তাকে ফিরতে হবে । তাই তাকে ছুটি দিয়ে দিল সিঞ্জন । আজ আবার পিওন নির্মলও নেই । তার মা দেশের বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় সে সেখানে গিয়েছে । শুধু তার জন্য নীচে পারকিং জোনে অপেক্ষা করছে ড্রাইভার যতিন । যাবার সময় সিঞ্জন তার মোবাইলে ফোন করলেই সে চলে এসে অফিস ঘর বন্ধ করে দেবে । নির্মল না থাকায় এই ডিউটিটা এখন তারই । টেবিলের উপর ছড়িয়ে রাখা ফাইলগুলো মনোযোগ সহকারে দেখছিল সিঞ্জন । দেওয়াল ঘড়িতে ঢং ঢং করে দশটা বাজল । হঠাৎ তার চেম্বারের দরজায় জোর আওয়াজ হল । দরজার দিকে তাকাতেই চমকে উঠল সিঞ্জন । কাঁচের দরজা । ভিতর থেকে বাইরের সব কিছু দেখা যায় । সে দেখল দরজার বাইরে দুজন বিদেশী সাহেব মারামারি করছে । তাদের মধ্যে একজনকে সে আগের দিন তার অফিসের দরজার বাইরে দেখেছিল । এই দৃশ্য দেখে সে হতবাক । অফিসের মেন-এন্ট্রান্স বন্ধ । কি করে লোকদুটো এখানে ঢুকল ? তবে কি পাশের ব্লকের পিছনের সিঁড়ি দিয়ে ওরা ঢুকেছে ? কিন্তু এটা তো ঠিক নয় । এত রাতে আউট-সাইডাররা এখানে ঢুকে এ-রকম গণ্ডগোল করবে – এ হতে পারে না । এই অভব্যতা সহ্য করা যায় না । এমনিতেই এত রাত পর্যন্ত অফিসের কাজে পরিশ্রান্ত, তারপর আবার এ-রকম অস্বাভাবিক ঘটনা । মাথাটা প্রচণ্ড গরম হয়ে গেল সিঞ্জনের । তাড়াতাড়ি চেম্বারের দরজা খুলে সে এগিয়ে গেল । সাহেব দুজন নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে করতে করিডরের সামনের ঘরটায় ঢুকে গেল । কিন্তু ঐ ঘরটা তো বন্ধ ছিল ! এই অফিসে জয়েন করার পর থেকেই এতদিন সে তালা-বন্ধ অবস্থায় দেখে এসেছে । অফিসের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করেও ঐ ঘরটার ব্যাপারে পরিস্কার কিছু সে জানতে পারেনি । শুধু জেনেছে অনেক আগে ওটা এক বিদেশী  কোম্পানির অফিস ঘর ছিল । ঐ কোম্পানির কিছু পুরানো আসবাবপত্র এবং কিছু ফাইলপত্র সেখানে আছে । এখন পর্যন্তও তারা সেগুলো নিয়ে যায়নি । তাই ঘরটা বন্ধই আছে ।  সিঞ্জনের মাথায় এখন একটাই প্রশ্ন ঐ বন্ধ ঘরের দরজা খুলল কে ? এই আশ্চর্য ঘটনায় সে অনুভব করল তার সারা শরীরের লোমকূপগুলো খাঁড়া হয়ে উঠেছে । কিন্তু এই মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না । নিজেকে কিছুটা সংযত করে মনে সাহস সঞ্চয় করার চেষ্টা করল । অন্যদিকে অদম্য কৌতুহল । সাহসে ভর করে সে আস্তে আস্তে ঐ দরজার কাছাকাছি গিয়ে বাইরের করিডরে দাঁড়াল ।   বাইরে থেকে বোঝা যাচ্ছে ঘরে কোন লাইট নেই । অন্ধকারের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য-বিনিময় ও হাতাহাতির আওয়াজ তার কানে এল । সিঞ্জন দরজায় দাঁড়িয়ে মুখটা কিছুটা ভেতরে ঢুকিয়ে তাদের দুজনের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলল – “হু আর ইউ”?   অন্ধকার ঘরে হঠাৎ লাল রঙ বিচ্ছুরিত হতে লাগল । দুটো মানুষের চারটে চোখ দিয়ে লাল স্ফুলিঙ্গ বেরোচ্ছে । কিছুটা বেঁটে  সাহেবটি অগ্নিচক্ষুতে তার দিকে তাকিয়ে জোরে বলে উঠল – “সাট আপ ননসেন্স । গেট আউট ফ্রম হেয়ার”।  এবার সিঞ্জন ভয়ানক ভয় পেয়ে গেল । ব্যাপারটাকে সে মামুলি ভেবেছিল । কিন্তু এটা তো তা নয় । এ-রকম লাল চোখ সে জীবনে কোনদিন দেখেনি । তাকে দেখে সাহেব দুটো ভ্রুক্ষেপই করল না । উপরন্তু তাঁরা দুজনে বাদানুবাদ আর মারামারিতে লিপ্ত হতে লাগল । দরজার বাইরে তার কানে এল দীর্ঘদেহী সাহেবটি অন্য সাহেবটিকে বলছে – “পিটার, ইউ আর নট গ্রেটফুল টু মি । আই হ্যাড ইনভেসটেড ওয়ান লাখ টু দ্য বিজনেস অ্যাডিশনালি অ্যান্ড ইউ আর টেলিং দ্যাট আই হ্যাড নট গিভেন এনি মানি । হোআই ইউ আর টেলিং লাই দ্যাট দ্য মানি ইজ ইওরস । ইউ আর আ ফ্রড।”  এবার অন্য সাহেবটির গলা শোনা গেল – “জন, ইউ আর টেলিং লাই । আই উইল কিল ইউ”। এ-রকম পরিস্থিতিতে কেউ ঠিক থাকতে পারেনা । সিঞ্জনও পারল না । ভয়ে ভয়ে আস্তে আস্তে সে ঘরে ঢুকল । ঘরে ঢুকেই সে হতবিহ্বল । পিটার নামের সাহেবটি জন নামের সাহেবটির গলা টিপে ধরেছে । এত জোরে ধরেছে যে জনের চোখ দুটো শরীর ঠেলে বেরিয়ে আসছে। অনেক চেষ্টা করেও তার হাত দুটো দিয়ে পিটারের হাতদুটো ছাড়াতে পারছে না। পা-দুটো বাঁচার তাগিদে ছটফট করছে । তার সামনে এ-রকম ঘটনা ঘটে যেতে দেখে সে আর ঠিক থাকতে পারল না । সিঞ্জন চীৎকার করে উঠল – “হোয়াট আর ইউ ডুইং ? স্টপ...স্টপ...।” জনকে পিটারের কবল থেকে ছাড়াবার চেষ্টা করতে লাগল । কিন্তু বৃথা চেষ্টা । পিটারের গায়ে অসম্ভব জোর। তার সঙ্গে তখন পারবে কে ? পিটার সিঞ্জনকে এত জোরে এক ধাক্কা মারল যে সে ঘরের বাইরে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারাল।  

জ্ঞান যখন ফিরল সিঞ্জন তখন গেস্ট হাউসের বিছানায় শুয়ে। সারা শরীরে অসম্ভব ব্যাথা । তার মাথার কাছে চেয়ারে বসে গেস্ট হাউসের আবাসিক ডাক্তার সমীরণ চৌধুরী । বেডের পাশে দাঁড়িয়ে তার গাড়ির ড্রাইভার যতিন আর গেস্ট হাউসের দুজন কর্মী । সামনে খোলা দরজার পর্দার ফাঁক দিয়ে এক ঝলক শীতের রোদ্দুর ঘরের মেঝের কার্পেটে খেলা করছে । সিঞ্জন চোখ মেলতেই যতিনই প্রথম মুখ খুলল – “স্যার এখন সুস্থ বোধ করছেন ?” সিঞ্জন কিছুটা ঘাড় নেড়ে আস্তে বলল – “হ্যাঁ”। গেস্ট হাউসের এক কর্মী সিঞ্জনের মুখের সামনে জলের গ্লাস তুলে ধরল । সিঞ্জন মাথা খানিকটা উঁচু করে দুঢোক জল খেয়ে নিল । গত রাতে অফিসে ঐ রকম আকস্মিক  আশ্চর্য ঘটনা ঘটবার পর সে অচৈতন্য হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু তারপর কি হয়েছিল এবং সে কিভাবে বেঁচে গেস্ট হাউসে ফিরে এসেছিল তা সে জানে না । একটু সুস্থ হতেই ড্রাইভার যতিন গত রাতের ঘটনা-পরবর্তী কাহিনী শোনালো । ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে এগারোটা । সিঞ্জনের অস্বাভাবিক দেরি হতে দেখে যতিন প্রথমে তার মোবাইলে ফোন করে । বেশ কিছুক্ষণ বেজে চলার পরও মোবাইলে না পেয়ে সে অফিসের ল্যান্ড ফোনে ফোন করে । সেখানেও ক্রমাগতঃ রিং হয়ে যাওয়া স্বত্বেও সিঞ্জনকে  না পাওয়াতে যতিনের সন্দেহ হয় । নিশ্চয়ই তার সাহেবের কিছু হয়েছে ভেবে আর দেরী না করে তাড়াতাড়ি উপরে উঠে যায় সে । কোলাপসিবল গেটের তালা খুলে অফিসের ফ্লোরে ঢুকতেই সে দেখে পাশে কোনের দিকের বন্ধ ঘরটার বাইরে মেঝেতে তার সাহেব অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে । দ্রুত নীচের মেন গেটের দুজন সিকিউরিটি গার্ডকে ডেকে তার চোখে মুখে জল দিয়ে ধরাধরি করে নীচে নামিয়ে আনে । তারপর তাকে গাড়িতে তুলে সোজা গেস্ট হাউস । গেস্ট হাউসের ইনচার্জ ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে তার ঘর খুলে দেবার পর তাকে তার বিছানায় শুইয়ে দেওয়া হয় ।  যতিনের মুখ থেকে তার গেস্ট হাউসে ফিরে আসার ঘটনা শুনে সিঞ্জন যতিনের দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রশংসা না করে পারল না । যতিনের আরও প্রশংসনীয় কর্তব্য পালন করা দেখে সিঞ্জন সত্যিই তার প্রতি ভীষণ ভাবে কৃতজ্ঞ । সে পাশের ঘরের ডাঃ চৌধুরীকে নক করে ডেকে তুলেছে এবং তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করেছে ।  এবার ডঃ চৌধুরী মুখ খুললেন – “আমি আপনাকে ভালো করে পরীক্ষা করে দেখলাম । ভয়ের কিছু নেই । টেক রেস্ট । দুটো ওষুধ লিখে দিচ্ছি । তিন দিন খাবেন ।  আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে । আচ্ছা কয়েকদিন ধরে কি আপনার অফিসে কাজের ধকল যাচ্ছে ?”  সিঞ্জন এই মুহূর্তে ডঃ চৌধুরীর প্রশ্নের কি উত্তর দেবে ? কাল রাতে অফিসে ঘটে যাওয়া ঘটনা এক অবিশ্বাস্য ঘটনা । যার ফলে তার এই হাল । সত্যি ঘটনা বললে তাকে ছেলেমানুষি কিংবা মনের ভুল বলে শুনতে হবে । কিন্তু তাকে পরিপূর্ণ সুস্থ হতে গেলে ডাক্তারকে সঠিক বলতেই হবে । এ-ব্যাপারে তার সঠিক পরামর্শ কাজে লাগবে । তাই ইতস্ততঃ করতে করতে সিঞ্জন বলেই ফেলল গত কাল রাতের ঘটনা । ডঃ চৌধুরী শুনে তো অবাক । এ-রকম অলৌকিক ঘটনা সে আগে শুনেছে বলে তার মনে পড়েনা । ডঃ চৌধুরী গেস্ট হাউসের এক কর্মীকে এক গ্লাস গরম দুধ আনতে বললেন । এরপর ডঃ চৌধুরী সিঞ্জনকে বললেন – “আপনি আর কোন কথা বলবেন না । আপনার প্রচণ্ড মানসিক স্ট্রেস গিয়েছে । গরম দুধ খেয়ে রেস্ট নিন । অফিস সম্পর্কে একদম চিন্তা ভাবনা করবেন না । আপনার অফিসের রিজিওনাল ম্যানেজার মিঃ শ্যামল ভট্টাচার্যকে কাল রাতেই ফোন করেছি । কিছুক্ষণের মধ্যেই উনি এসে পড়বেন । ওনাকে আমি বিস্তারিত বলে দেব”।

যতিন ওষুধ আনতে বেরিয়ে যেতেই গেস্ট হাউসের এক কর্মী এক গ্লাস গরম দুধ নিয়ে এল । ইতিমধ্যে অফিসের রিজিওনাল ম্যানেজার শ্যামল ভট্টাচার্য এসে উপস্থিত । সিঞ্জনের অবস্থা দেখে এবং ডঃ চৌধুরীর কাছে সব শুনে বেশ চিন্তিত হলেন । তারপর ডঃ চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে  বললেন – “ দেখুন ডঃ চৌধুরী বয়সে ওর থেকে আমি অনেক বড় । ওকে আমি আমার ছেলের মতই মনে করি । আমি তো ওকে কতদিন বারণ করেছি একা একা বেশি রাত অবধি অফিসে না থাকতে । এখনকার ছেলে তো ! আমাদের মত বুড়োদের কথা শুনবে কেন”? সিঞ্জন দুধের গ্লাস শেষ করে আস্তে আস্তে বলল – “আজকের ইম্পরট্যান্ট মিটিং-এর জন্য কাগজপত্রগুলো রেডি করে রাখছিলাম । কিন্তু ঐরকম অভাবনীয় দৃশ্যের সাক্ষী হতে হবে সেটা কোনদিন কল্পনাও করিনি”। মিঃ ভট্টাচার্য সিঞ্জনকে থামিয়ে দিয়ে বললেন – “সিঞ্জন তুমি কয়েকদিন রেস্ট নিয়ে অফিসে যাবে । আমি রোজ তোমাকে দেখে যাব ।  অফিসের কাজের ব্যাপারে এখন একদম চিন্তা করবে না । তুমি মাত্র এক মাস এসেছ । আর আমার প্রায় সারাটা জীবনই এই অফিসে কেটে গেল । তোমার চেম্বার এবং আলমারির ডুপ্লিকেট চাবি আমার কাছে আছে । কাগজপত্র বুঝে নিয়ে আজকের মিটিং আমিই ফেস করব । প্রয়োজন হলে বিকাশকে সঙ্গে নিয়ে নেব”। এরপর মিটিং সংক্রান্ত কিছু প্রয়োজনীয় কথাবার্তা সেরে মিঃ ভট্টাচার্য অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন ।

               পুরোপুরি সুস্থ হতে সিঞ্জনের সাত দিন লেগে গেল । অফিসে জয়েন করতে হবে। সেখানে এতদিনের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ পেনডিং হয়ে আছে । কিন্তু সেদিনের সেই রাতের
ঘটনার কথা মনে পড়লেই তার অন্তরাত্মা শুকিয়ে যাবার উপক্রম । তবু তাকে অফিসে যেতে হবে । এবার থেকে সে আর বেশী রাত পর্যন্ত অফিসে থাকবে না । অফিস ছুটি হলে অফিসের সবার সঙ্গেই সে বেরিয়ে যাবে । এটাই তার সিদ্ধান্ত । অফিসের সমস্ত কাজ অফিস পিরিয়ডের মধ্যেই যতটা সম্ভব সে শেষ করবে । অফিসে জয়েন করতেই অফিসের প্রত্যেকে তার কুশল সংবাদ নিল । সিঞ্জন বুঝতে পারল তার অফিস কলিগরা তার জন্য এতদিন কতটা চিন্তিত ছিল । রিজিওনাল ম্যানেজার মিঃ শ্যামল ভট্টাচার্য তাকে করমর্দন করে স্বাগত জানাল । তাঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাল সিঞ্জন । অফিস সংক্রান্ত কিছু কথা বলার পর মিঃ ভট্টাচার্য সিঞ্জনকে সেদিন রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা চিন্তা না করতে পরামর্শ দিলেন। তিনি বললেন – “সিঞ্জন সেদিন তুমি যা দেখেছ সেটা মিথ্যে নয় । এখনও এই বিল্ডিং-এর এই ফ্লোরে ঐ সাহেবের অতৃপ্ত আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে ঐরকম দৃশ্য প্রতিদিন দেখা যায় না । ঐ জন নামের সাহেবটিকে পিটার নামের সাহেবটি যে তারিখে এবং যে সময়ে খুন করেছিল সেই তারিখে এবং সেই সময়েই তোমার দেখা ঐ রকম দৃশ্যের অবতারণা ঘটে । আমি ছাড়া শুধুমাত্র তুমিই এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে রইলে । আমি অনেকদিন ধরে এই অফিসে আছি বলেই আমার ভাগ্যেও একদিন জুটেছিল তোমার মত ঐ রকম নির্দয়-ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকার নিদারুণ কষ্ট । তখন অনেকেই আমার কথা বিশ্বাস করেনি । কিন্তু আমি তোমার কথা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করি । পরে জেনেছিলাম এই ফ্লোরে বহু বছর পূর্বে ব্রিটিশ আমতার “পিটার অ্যান্ড জন অ্যান্ড কোম্পানি”  নামে একটা কোম্পানির অফিস ছিল । এদের গাড়ি সংক্রান্ত বিজনেস ছিল । জন এডওয়ার্ড এবং পিটার অ্যান্ডারসন নামে দুজন ব্রিটিশ সাহেব কোম্পানিটির মালিক ছিল । প্রথমে তাদের দুজনের মধ্যে খুবই সখ্যতা ছিল । জন ছিল খুবই ভালো মানুষ । বন্ধুকে খুব বিশ্বাস করত । কিন্তু পিটার ছিল ভীষণ ধুরন্ধর । বিভিন্ন বাজে নেশাও ছিল তার। তাদের ব্যবসা বেশ ভালই চলছিল। জনের ভালোমানুষির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পিটার ফাঁকি দিয়ে তার অনেক টাকা আত্মসাৎ করে । বেশ কিছুদিন পর জনের মনে সন্দেহের দানা বাঁধতে শুরু করে। তার নিজস্ব প্রচুর অর্থের ইনভেস্টমেন্টের জোরে লেনদেন ভালো থাকা স্বত্বেও ব্যবসা রুগ্ন হয়ে পড়ছিল। একদিন তার কাছে ধরা পড়ল বন্ধুর কীর্তি । ব্যবসার হিসাবে গরমিল করে প্রচুর টাকা পিটার হাতিয়ে নিয়েছে । তখন থেকেই শুরু হল দুজনের মন কষাকষি । তার টাকা ফিরিয়ে দেবার জন্য জন পিটারকে প্রায়ই চাপ দিত । পিটার জনের কথা একদমই কর্ণপাত করত না । এভাবে দুজনের মনোমালিন্য চরম পর্যায়ে পৌছাল । পিটার জনকে সরিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল । এই ডিসেম্বর মাসের ২৮ তারিখে এই ফ্লোরের কোণের ঐ বন্ধ ঘরটায় পিটার জনকে খুন করে পালিয়ে যায় । কিন্তু কথা আছে না ধর্মের কল বাতাসে নড়ে । কিছুদিন পর পিটারেরও অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। অফিসের এই প্রিমিসেসের বহু হাতবদল ঘটে গিয়েছে । কিন্তু ঐ ঘরটা আজ পর্যন্ত কোনদিন খোলা অবস্থায় দেখা যায় নি”।

                     মিঃ ভট্টাচার্যর মুখ থেকে সেদিন রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনার আসল কাহিনী শুনে সিঞ্জন বিস্ময়ে হতবাক । এও কি সম্ভব ? ছোটবেলায় মা ঠাকুমার কাছে অনেক ভুতের গল্প শুনেছে । পরে কিশোর বয়সে বেশ কিছু অলৌকিক কাহিনীর বই পড়েছে । কিন্তু চাকরি করতে এসে শেষ পর্যন্ত ভূতের খপ্পরে পড়তে হবে সেটা সে কোনদিনই ভাবতে পারেনি। একদিক দিয়ে সে খুবই  ভাগ্যবান । সে এ-রকম এক অলৌকিক কাহিনীর সাক্ষী হয়ে রইল ।  এরপর সিঞ্জনকে আর বেশী দিন কলকাতায় থাকতে হয়নি । এক মাসের মধ্যেই ভাল একটা চাকরি যোগাড় করে সে ব্যাঙ্গালোর চলে গেল ।।

***********************
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮৩৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৩/১১/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • হাসান কাবীর ২০/১১/২০১৫
    গল্প ভালো লেগেছে, বেশী ভালো লেগেছে লেখক/পাঠকের কথোপকথন।
  • ভালো লাগল প্রয়াস । আমার পাতায় আমন্ত্রণ জানালাম রহস্য গল্পের জন্য ।
  • গল্পটা বেশ সুন্দর লেখা হয়েছে। সাসপেন্স টা শেষ পর্যন্ত্য রাখতে পেরেছেন। কৌশল দুর্দান্ত্। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
  • প্রথমে স্বাগত জানাই। প্রথম দিকের লেখা বলে একটু চুলচেরা বিচারে যাচ্ছি।
    ১) যে ধরনের প্রাইভেট অফিসের কথা বলা হয়েছে , সেখানে এক মাস আগে এম. বি. এ পাস করা যুবক রিজিওনাল ম্যানেজার হতে পারে না।
    ২) এখন পিওনরা কোথায় কোথায় স্যালুট করে না।
    ৩) অফিসে ল্যাপটপ ইত্যাদিতে কাজ হওয়া উচিত , ফাইল খুলে নয়।
    ৪) পার্ক স্ট্রীটের বিলাস বহুল অফিসে , পুরনো সাহেবী অফিস থাকা সম্ভব নয়।
    ৫) Lakh নয় বিদেশীরা hundred thousand বলে।
    গল্পটা বেশী টানা হয়েছে। একটু জমাতে হোত। ইংরেজী সংলাপ গুলো একটু চলতি হতে হবে।
    • প্রথমেই জানাই মন্তব্য করার জন্য অভিনন্দন । মন্তব্য এভাবেই হওয়া উচিত । শুধু "ভালো হয়েছে" বলে ছেড়ে দেওয়া কাম্য নয় । কারণ সেটাতে লেখকের ভুল-ত্রুটি গুলো শুধরে নেওয়ার জায়গা থাকেনা । এবার আপনার মন্তব্যগুলোর উত্তর দিচ্ছি ঃ
      ১) আপনার মন্তব্য ঠিক । সম্পাদনা করে দিচ্ছি ।
      ২) আপনার মন্তব্য হয়তঃ ঠিক তবে কখনও কখনও কোথাও কোথাও অফিসে পিওনরা তাদের ডান হাত কপালে ঠেকিয়ে তাদের বসকে সন্মান জানায় - এটা দেখা যায় । কি করা যায় দেখছি ।
      ৩) এই মন্তব্যটা আমি মেনে নিতে পারলাম না । কোনটা উচিত সে ব্যাপারে আমি যাইনি, কোনটা হয়েছিল সেই ব্যাপারেই আমি গিয়েছি । অফিসে গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখনও ফাইলের মাধ্যমে হয় । এ-ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা রয়েছে ।
      ৪) কি করে বললেন এ-কথা ? বিশেষ করে গল্পে ?
      ৫) এ-ব্যাপারে আমি বিশেষ কিছু বলব না । আমি চেষ্টা করেছি মাত্র । জমানো এবং ইংরেজি সংলাপগুলো দয়া করে যদি একটু সংক্ষেপে দেখিয়ে দেন উপকৃত হব ।
      সব শেষে আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা ।
      • আমি খুব পড়ি এবং মন দিয়ে পড়ি। খুঁত ধরার জন্য লিখিনি , মনে হয়েছিল, মন্তব্য করার জন্যই না লিখে , গঠন মূলক ভাবে লিখব। লেখকরা সৃষ্টিশীল , তাই সংবেদনশীল ও বটে। এখানে শুধু লেখকের জন্য মতামত দিতে পারলে ভালো ছিল। একটু স্বচ্ছ হয়ে লেখা যেত। সবার পড়ার জন্য খোলা মন্তব্য করলে লেখকের খারাপ লাগলেই পারে।
        ব্যক্তিগত ভাবে আমি , একই অঞ্চলে একটি বহুজাতিক সংস্থায় ভারতীয় ব্যবসার প্রধান । তাই যা লিখেছি , ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লিখেছি। লেখককে আধুনিক পারিপার্শিকের সম্বন্ধে সচেতন থাকতে হবে। গল্পর পরিবেশ যত বাস্তববাদী হবে , গল্প ততই বিশিয়াস যোগ্য আর আকর্ষনীয় হয়ে উঠবে। স্বাধীনতার এত বছর পর একটি অত্যাধুনিক অফিসে গল্পের পরিবেশটি কষ্ট কল্পিত। আপনার পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
 
Quantcast