www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গোপলার কথা - ৩৯

রাষ্টের সাংসারিক ভাবনা
--------------------

যেমন ধরুন আপনি সংসারের মালিক। আপনি সংসার চালানোর জন্য প্রথমে দুমুঠো খাওয়া ও পরার ব্যবস্থা করবেন। তারপরে থাকার। তারপরে অন্যান্য।
এখন খাওয়া পরা ও থাকার ব্যবস্থায় নানান ভ্যারাইটি। ফলে এই সবের চাহিদা আকাশচুম্বী। যা আপনি শত চেষ্টা করেও পরিবারের মনের মত বানাতে বা তুলে দিতে পারবেন না কিংবা এটাই সবচেয়ে সুন্দর ভাবতে বা ভাবাতে পারবেন না। প্রতিদিনই আরো ভালো আরো ভালো এসে যাবে। এখন যেমন রোজই মোবাইল বদল হচ্ছে।
তাই সংসার চালানোর জন্য এগুলোর মিনিমাম ব্যবস্থা করলেই হল। অর্থাৎ না হলে নয় বা নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী বন্দোবস্ত করে বাদ বাকী আপনি নিশ্চয় আপনি আপনার পারিবারিক আত্মিক উন্নতির দিকে দৃষ্টিপাত করবেন।
পারিবারিক এই আত্মিক দৃষ্টিপাতের প্রথমে এসে পড়বে ছেলেমেয়ের পড়াশুনা এবং পড়াশুনা সংক্রান্ত ভাবনাচিন্তা। এই বিষয়ে আপনি যতটা সামর্থ্য প্রয়োগ করবেন তার পুরোটাই সুদে আসলে আপনার কাছে ফিরে আসবে। সুদে আসলে মানে জীবনের লক্ষ্যে।
সামর্থ্যের সাথে সাথে আপনার বাদবাকী চিন্তা ভাবনার ফোকাশ যদি এই সংক্রান্ত বিষয়ের উপর থাকে তাহলেই পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে সবচেয়ে বড় আত্মিক উন্নতি লাভ হবে।
কেন না গাড়ি বাড়ি ব্যাংক ব্যালেন্স আসবে যাবে কিন্তু আত্মিক উন্নতি যা সমাজের বুকে আপনাকে ও আপনার পরিবারের সামাজিক জীবন যাত্রা সুন্দর থেকে সুন্দরতম অবস্থানে পৌঁছে দেবে।
এই আত্মিক উন্নতির ভাবনা সংসারের মধ্যে যতটা ভাবিত ঠিক ততটাই রাষ্ট্র ভাবনার মধ্যে ভাবিত হওয়া উচিত। তাহলে সেই দেশ এবং দেশের মানুষ আরো আত্মীক উন্নতি লাভ করবে। দেশও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।
আত্মার সাচ্চা ভাবনাই আত্মিক উন্নতি। যে যত বেশি বিষয় জানবে সে তত বেশি অগ্রবর্তী হবে। এই বিষয় জানা বা জানানোর জন্য পড়াশুনা খুব জরুরী। যে সংসার এই ভাবনায় আবর্তিত প্রসারিত সেই সংসার সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধির শীর্ষচূড়ায় অবস্থিত।
তেমনি রাষ্ট্রকেও এই বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভাবতে হবে। যতটা সম্ভব পড়াশুনা এবং পড়াশুনা সম্পর্কিত ভাবনায় ফোকাস থাকবে ততই সেই সংসার এবং রাষ্ট্র উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যাবে।
যেমন, শরীর খারাপ হলে ডাক্তারের কাছে যেমন যেতে হবে তেমনি ভবিষ্যতে যাতে আর না ডাক্তারের কাছে যেতে হয় সে ব্যাপারেও প্রত্যেককে ভাবতে হবে। এই ভাবনার জন্য শিক্ষা চাই।
যে দু চার টাকা আয় করলেন সেটা কিভাবে খরচ করবেন, সবাইকে খুশি করবেন, কতটা ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখবেন ইত্যাদি ভাবা দরকার। আর তার জন্য শিক্ষা দরকার।
তার মানে মালিক হয়ে আপনার প্রধান কর্তব্য মিনিমাম সংস্থানের পরেই ম্যক্সিমাম শিক্ষা ও শিক্ষাসংক্রান্ত বিষয়ে সমস্ত সামর্থ্য প্রয়োগ করা। আর্থিকের সাথে সাথে ছেলে বা মেয়ে কেমন পড়ছে। কোথায় পড়লে আরো ভাল হবে। বাড়িতে কি কি বই ফলো করছে ইত্যাদি পড়া সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার সংস্থান যেন আবর্তিত হয়। তাহলে সাফল্য আসবেই।
রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রপ্রধানের উচিত অন্য সব কিছু মিনিমাম সংস্থান করে শিক্ষাবিষয়ে ফোকাস করা। শিক্ষার ব্যাপারে যেন কোন ফাঁক না থাকে। সে সরকারী হোক, বেসরকারী হোক, আধা সরকারী হোক বা প্রাইভেট। সমস্ত অবস্থানে শিক্ষা ঠিক মত চলছে কি না সেই ব্যাপারে নজরদারি নিয়ে ভাবা উচিত।
অর্থাৎ ১। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর শিক্ষার প্রধান মেরুদণ্ড হল শিক্ষক। তাই যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক ছাড়া কখনওই নিয়োগ নয়। রাষ্ট্রে প্রচুর বেকার তাই লাখো লাখোর মধ্যে থেকে কাকে আর বাছব তার চেয়ে ডিগ্রী দেখে ঢুকিয়ে দিলে হল। তাতে রাষ্ট্রের ক্ষতি এগিয়ে চলছে। সংসারের ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েকে ওই তো পড়াচ্ছে হল না তো কি করব? এর রকম ভাবলে তেমনই হবে।
২। শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছে কি না? ৩। ক্লাসে বিষয় কিভাবে পড়াচ্ছেন? ৪। যে যার ক্লাসের কোর্স শিক্ষক কতটা শেষ করল এবং পুরোটা শেষ করতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি করা দরকার। শিক্ষার এই প্রধান বিষয় সঠিক সম্পাদিত হলে বাদবাকি কাজ অনেক কম অবস্থানে সম্পাদিত করা যাবে।
শিক্ষা পেলে রোগ জ্বালা কমে যাবে। প্রশাসন যদি ঠিক থাকে তাহলে সঠিক শিক্ষা নিলে যে যার কাজ পাবে। দুর্নীতি কমবে। দুর্নীতির সাথে না জড়িয়ে প্রশাসনের কাজ কমবে।
না হলে 'আস্তে চালান জীবন বাঁচান' SAVE DRIVE SAFE LIFE শুধু পোস্টার হিসেবে থেকে যাবে। ভাবুন তো, না হলে নিজের জীবন নিজেই বাজি রাখে? নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য অন্যকে উপদেশ দিতে হচ্ছে তাও সে শুনছে না। কেন?
ঠিক একই অবস্থান অনেক সংসারে ছড়িয়ে পড়ছে।
বাবা মা বলছে, শিক্ষক বলছে, প্রতিবেশী বলছে কিন্তু ছেলেমেয়ে শুনছে না। আবার বাড়ির বয়স্ক বলছে কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক শুনছে না।
এই একের ভাল কথা অন্যকে শোনানোর জন্য শিক্ষা দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় ভাবনায় এই পদক্ষেপ নেওয়া খুব জরুরী। আপনি বলতেই পারেন ওই তো বললাম শুনলো না তো কি করব? তা কিন্তু নয়। শুনলে যতটা লাভ না শুনলে ততটাই ক্ষতি। কিন্তু দুটো ক্ষেত্রে সবটাই দায় সংসারের ক্ষেত্রে আপনার আর রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের।
কেন না, কেন শুনছে না সেই ব্যাপারটা ভেবে দেখেছি কি? সেই ব্যাপারে পর্যালোচনা করেছি কি? সংসারের বা রাষ্ট্রের বলার যেমন রাইট আছে তেমনি যাদের শোনার কথা তাদেরও না শোনার রাইট আছে। সংসারের ক্ষেত্রে বা রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে কোনটাকেই আপনি অ্যাভোয়েড করতে পারেন না। বক্তা ও শ্রোতা দুটোকেই গুরুত্ব দিলে সমাধান সূত্র মিলবে।
এবং এর জন্য বক্তা ও শ্রোতা উভয়ের অবশ্যই শিক্ষা প্রয়োজন। এখন এই শিক্ষা কেন পায় নি তার সম্পূর্ণ দায়ভার কিন্তু বক্তার। এখানে সংসারের মালিকের এবং রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র প্রধানের। তাই রাষ্ট্রীয় ভাবনা সংসারের পাদপৃষ্ঠে এবং সাংসারিক সেণ্টিমেণ্ট অনুযায়ী আর্বতিত হলে সংসার ও রাষ্ট্র উভয়ই ভাল চলবে।
রাষ্ট্রে যেমন রাষ্ট্রপ্রধানের স্বীকৃতির উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র চলে। অর্থাৎ যে যাই মত দিক না কেন রাষ্ট্রপ্রধানের একক স্বীকৃতি না হলে সেই কাজ সম্পন্ন হয় না। অর্থাৎ মত অনেক কিন্তু মাথা একটি। তাহলে রাষ্ট্র তার পদ মর্যাদায় চলতে পারবে।
ঠিক একই রকমভাবে সংসারের ক্ষেত্রে মাথা একটি থাকা উচিত। তা হল সংসারের প্রধান। যে যার মত দিতে পারে কিন্তু প্রধানের স্বীকৃতি পাওয়া জরুরী। যে যার মত চললে সংসার ছিটকে যেতে পারে। অনেক সময় ভুল হোক ঠিক হোক বিনা বাক্যব্যয়ে সংসার তা মেনে নেয়। কিন্তু সময়ের ধারাপাতে যদি ভুল থাকে বা অতি উত্তম হয় তাহলে সংসারের প্রধান নিজেকেই নিশ্চয় বদলে নেবে। তার জন্য সময়ের প্রয়োজন। অযথা অনেক মাথা হয়ে গেলে পদাধিকারী হয়ে উঠলে সংসার ভেসে যায়।
রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে প্রধান আছে কিন্তু অত শোনার কি আছে? যে যার মত ভালমন্দ হাতে তুলে নিলে রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা বাড়ে।
আবার এক একটা সংসার নিয়েই একত্রে রাষ্ট্র। সংসার ঠিকঠাক পরিচালিত হলে রাষ্ট্রও এগিয়ে চলবে নিজের মর্যাদায়। কারন রাষ্ট্রের একক সংসার। রাষ্ট্রে কর্তব্য যেমন সংসার ধরে রাখা তেমনি সংসারের প্রধানের কর্তব্য সংসারের বাবা মা ছেলে মেয়ে ও অন্যান্য সম্পর্ককে ধরে রাখা। এবং সম্পর্কদেরও সংসারের প্রধানকে তার পদমর্যাদার স্বীকৃতি দেওয়া।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৯৩৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২২/০৭/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast